কুয়ায়ন
দ্যাখো-বয়েসী পাইনের আন্তঃমহাদেশীয় চোখে বেগুনি
হলুদ বিস্ময় জাগিয়ে কেমন ছোট হয়ে আসে পৃথিবী!
প্রান্তরের সাঁঝের মতন চেপে এসেছে ঐ দিগন্তের দেয়াল
সে-দেয়ালে চোখ রেখে পড়ে নিচ্ছি আজ–
এ মেরু ও মেরু, আকাশ-পাতাল, সাত-সমুদ্র দশ-দিগন্ত–
যা আগে ডাগর কাঁচ-নয়নেরও অনায়ত্ব ছিলো ।
আহা কী সুখ, দার্শনিক অনিদ্রায় রাত জেগে কষ্টকল্পনার
কষ্ট থাকছে না আর! এই সুযোগে শামুকের কাছে প্রাইভেট
পড়ে শিখে নিচ্ছি গুটিয়ে নেওয়ার পাঠ;
কেননা, যেমন খাপটি– তেমনটি তলোয়ার !
ও ভাই ব্যাং, ও বোন কুয়ো,–এই কান ধরলাম,
আর গালি দেওয়া নয়,
দ্যাখো- ইতোমধ্যেই কতখানি ছোট হয়ে এসেছি আমি!
এই আমি
চেয়ে দেখি-সবখানেই আমি। আমি। এবং আমি।
কবে যে বড় হলাম?
কেউ কি আমাকে হাত ধরে হাঁটতে শিখিয়েছিল?
কিছু মনে নেই।
চারপাশে কাউকে দেখি না।
আমার সামনে উদ্ভাসিত আমারই একক মূর্তি।
আহা, তালগাছ হয়ে আমি উঠে যাই ওপরে;
আমার নিচে না ছায়া-না আম কুড়োনোর ধুম।
সুদখোর দুপুরের রোদে পুড়ে উঠি আমি নিজেও।
গালে হাত দিয়ে আমাকে দেখে ডালপালাময় অতীত।
জ্বর
জ্বর আসে -জ্বর যায়
ডাক্তার বলেনি
তবে জেনে গেছি–
প্রিয়তম-দিন নয়
এইদিন–
থার্মোমিটার হাতে সাদা অ্যাপ্রন-পরা নার্স।
মাফ করো মেডিনোভা
মাফ করো স্কোয়ার–ড্রাগ ফ্যাক্টরি,
ভুলে যেতে চাই
তাই-
আমি আর চাইনাকো–
দীর্ঘশ্বাসে তপ্ত কোনো জ্বরের দুপুর!
কুড়ালের হাসি
চারপাশে কেউ নেই–
কেউ নেই চারপাশে
এই প্রত্যয়ন
দশজন প্রত্যক্ষদর্শীর।
অতএব কুড়ালই হিরো।
আঁটি কাঁধে নিয়ে
ঘরে ফেরা–হুর রে…!
আর দ্যাখো–
কুড়ালের হাসি থেকে
ঝরে পড়ছে
বিবর্তনবাদের আলো!
বাঘ–হরিণের সংসার
শুধু এতটুকু সবুজ আড়াল-শুধু এতটুকু শুদ্ধছায়া
আড়ালে থাবার দাগ–, দৃষ্টিতে বিধ্বস্ত ছায়া।
শুধু এতটুকু তৃণভূমি–শুধু এতটুকু জলাশয়
তৃণভূমি রেঙে যায় লালে–,
খুলিতে ও কংকালে ভরে ওঠে জলাশয়।
তো হরিণ যাবে কোথায়? কোথায় থাবাহীন
সেই বনভূমি?
চিড়িয়াখানার জীবন্তকবর তার নয়,
তার দৌড়;
দৌড় শেষে মৃত্যু, তবু দৌড়ই তার জীবন।
অথচ অভিযোগ–অভিযোগ—এবং অভিযোগ–
বাঘ সাম্রাজ্যবাদী– বাঘ কর্তৃত্বপরায়ণ,
বাঘের পায়ে লংঘিত সীমানা
আরে ভাই কীসের নোম্যান্স ল্যান্ড!
দ্যাখো–বাঘ কেড়ে নেয়-
মৌরসি পিপাসার ঘাট,
নৃত্যের উঠোন– ধূপছায়া স্বপ্নের আকাশ!
আহা বাঘের কী দোষ! এত এত শক্তি নিয়ে
সে তো বাঘ ছাড়া অন্যকিছু হতেও পারে না!
জলের অথই নিয়ে সমুদ্র কি হতে পারে
শান্তজলের সোনাদিঘি!
আর এত যে ডাক্তার
এবং এত যে খুলি-বিশেষজ্ঞ,
জঙ্গলের দরবারে জ্বলজ্বলে শতরত্নসমাহার,
পুরস্কৃত মেধায় তারা কি পারে বানাতে বাঘকে অ-বাঘ?
অতএব- জাতিসংঘ না মানুক,
তুলে রাখুন শেয়াল সেমিনার,
একথা শোণিতসত্য –বাঘ ও হরিণের সংসার ঘ্রাণ-তফাতে।
প্রাচ্যের অসুখ
এটা কোনো প্রাচ্যতত্ত্ব নয়, অপ্রিয় বাস্তবতা এই যে
প্রাচ্যের শরীরে এক কঠিন রোগের আনাগোনা আজ;
সে-রোগ সংক্রমণে দিনদিন মানব-জঙ্গল হয়ে উঠছে
শত সভ্যতার সূতিকাগার—-পূবের দুনিয়া! অথচ
প্রথমদিনের সূর্য একদিন উঠেছিল এখানেই ছড়িয়ে
দিতে তার আদি প্রভাতের আলো আর টর্চ হাতে
সভ্যতাও রেখেছিল প্রথম পা। আর আজ মহামনিষীরা
জন্মরুদ্ধ; শুধু গড়পড়তা কোলাহল আর মণিধারী সাপ!
দ্যাখো দূরে–মধ্যপ্রাচ্যে-আফ্রিকায়
দ্যাখো কাছে—দুপাশের পড়শি ভূগোলে
ভেসে যায় প্রেম!
ভেসে যায় অহিংসা!
ভেসে যায় শান্তি!
ভেসে যায় ন্যায়বিচার!
বানে ভেসে যাওয়া শস্যের উপমা এর চেয়ে ভালো
আর কোথায় পাবে?
আর বনের আকাশে ওঠা চাঁদের পিঠে চড়ে দ্যাখো–
দুর্বলদের ভেড়া জ্ঞানে নিজেদের নেকড়ে-ভূমি
রচনায় তৎপর সনখর সবলের দল!
কোনো মানবীয় ঘ্রাণ নয়,
অলৌকিক খোশবুও নয়,
তাদের শরীর থেকে বের হয়ে আসে
জিঘাংসা ব্রান্ডের বিকট গন্ধ
যা হারামেন মদিনা কিংবা টমফোর্ড ওদ উড স্প্রে করেও
চাপা থাকে নাকো!
কসমেটিক কোম্পানি, তাহলে তোমাদেরও ব্যর্থতা আছে!
এবং কোনো ধর্মগুরু নয়, চিকিৎসাবিজ্ঞানীও নয়
ধর্মের নিতম্ব থেকে–
এই রোগের জীবাণু আবিস্কার করেছেন
মহামান্য রাজনীতিবিদগণ; ছড়াচ্ছেনও তারাই ।
জঙ্গলায়ন
দ্যাখো–এক থাবার নগ্ন সাফল্যে উজ্জীবিত আরো
এক থাবা; উভয় ক্ষেত্রেই থাবাগুলো সংখ্যাগরিষ্ঠতার
আর তাদের আঘাতে স্বভূমে সমুলে উৎপাটিত
বাতাসের সঙ্গীত শুনে বেড়ে ওঠা দুই ভূগোলের
সংখ্যালঘু বৃক্ষরাজি যারা দিয়ে এসেেছ ফল ও ছায়া,
শোভা ও অম্লজান, দিনের পর দিন, যুগের পর যুগ।
কি দোষ তাদের? হায়, তাদের র্পূব-প্রজন্ম নাকি পড়শি
ভূগোলের আমবাগান ছিল অপ্রমাণিত কোনো এক কালে!
অতএব তাদের শাখায় থাবা, সমূহ শেকড়ে দাঁত!
মানুষ নেকড়ে হলে বৃহত্তম গণতন্ত্রও জঙ্গল হয়ে ওঠে।
নেফারতিতির সঙ্গে
“And the Heiress, Great in the Palace, Fair of Face,
Adorned with the Double Plumes,
Mistress of Happiness,
Endowed with Favors, at hearing whose
Voice the King rejoices,
The Chief Wife of the King, his beloved,
The Lady of the Two Lands,
Neferneferuaten-Nefertiti,
May she live for Ever and Always”
এবং মুখোমুখি সেই উপচে পড়া প্রাণ- সেই উদ্বেলিত বাসনা!
একদিকে তুতেনখামুন, আরেকদিকে নেফারতিতি; কিন্তু আমি যে
নেফারতিতিকে চেয়েছি, গ্রেট ফারাও আখেনাতেনের রাজরানী,
একদিন নিজেই ফারাও হয়ে রাজত্ব করেছেন দুইহাতে, তিনি তো
পাথর ছিলেন না! কোথায় পটে আঁকা চোখকে হার মানানো
সেই যাদুকরী চোখ যেখানে খেলা করতো জোছনারাতের নীলনদ
আর চোখাচুখির চোখগুলো হারিয়ে ফেলতো কূলকিনারা?
কোথায় সেই মোহন স্তনের ওঠানামা যা দেখে রাজপ্রাসাদের
লোকজন গ্রীষ্মের পারদ হয়ে উঠতো ভূমধ্যসাগরে স্নান করে
আসা শীতের বাতাসেও? আর কোথায় সেই হংসিনী-গলা থেকে
উঠে আসা মোহময়ী কণ্ঠস্বর যা শোনামাত্র লোহিতসাগরের হাওয়ায়
দোলায়িত নীলনদ হয়ে উঠতেন যুবকসম্রাট যেমনটি হয়েছেন
পরবর্তীকালের শ্রোতারা গান শুনে উম্মে কুলসুমের! আমি খুঁজেছি
ফারাও-যুগের নুরজাহানকে যার জোছনাময়ী ব্যক্তিত্বের কাছে
হেরে গিয়েছিলেন সম্রাটের আর সব নারী, সম্রাট নিজেও!
হে লেডি অব দি টু ল্যান্ড, তোমার নাকি মৃত্যু নেই; তাই তো
তোমাকে খুঁজে ফেরা। তোমার সৌন্দর্যের যতখানি দেখেছিলেন
বিদ্রোহীসম্রাট, তারচেয়েও বেশি ভাস্কর-সম্রাট থুতমোস; লুক্সোর
থেকে প্রত্নচোরেরা চুরি করে নিয়ে গেছে তোমাকে, চোরের বউয়ের
গয়নার মতো তুমি এখন ভিনদেশি যাদুঘরে দ্যুতি ছড়াচ্ছো,
ডিএসএলআর এর ক্লিক হয়ে তোমার ওপর পড়ছে রোজ লক্ষ
চোখের বিস্ময় নজরপাত: ‘ওয়াউ!’’ কিন্তু সেটা আজকের ফটোশপকে
হার মানানো কেবল তোমার আবক্ষ মূর্তি- সৌন্দর্যে অনুপম
আর তোমাকে জীবিত সবটুকু দেখার নেশায় আমার মিসর সফর।
হে রানী, হে সুন্দরতম মুখের অধীশ্বরী, মিসরের যেখানেই গেছি,
সবখানেই দেখেছি তোমার সেই অনন্য আবক্ষমূর্তির রেপ্লিকা;
ধূর্ত দোকানির হাতে দিয়ে ঈজিপ্শিয়ান পাউন্ড মুগ্ধ পর্যটকগণ
নিয়ে যায় নিজ নিজ দেশে যেভাবে মক্কা থেকে পুণ্য কিনে নিয়ে
যায় তীর্থযাত্রীরা! আলেকজান্দ্রিয়া সী বীচে ঢেউয়ের নাচন
দেখতে দেখতে আমিও কিনেছি দুবার; পাথর চোখের মধ্যে
গ্রীষ্মের ভূমধ্যসাগর, উদ্বেলিত মন খুঁজেছে আলেকজান্দ্রিয়া বাতিঘর;
আলেকজান্দ্রিয়া বাতিঘর থেকে গেছি আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরী-
যা তোমার পুরুষ্ট ঠোঁটের মতো প্রসিদ্ধ, যেখানে ঘুমিয়ে আছে
ভাষার সমুদ্র শব্দের জোয়ার হয়ে ওঠার প্রস্তুত প্রতীক্ষায়; সেখানেও
তোমার নাম কিন্তু তুমি নেই; সেখানে অবশ্য ক্লিওপেট্রাকে চেনে
কেউ কেউ। লাইব্রেরীর পাঠ চুকিয়ে আমাদের গাড়ি চলেছে
পিরামিডের বাড়ি; আহা খুফু! জীবনকে কত ভালোবাসতে
তুমি! পাষাণে নির্মিত পিরামিড ভুল বাসনার শুদ্ধতম শিল্প;
দুরন্ত জীবনের সোনারকাঠিস্পর্শে মৃত্যুর অমরত্ব লাভ! আর
তোমার নৌকায় গায়ে লেগে আছে নীলনদের শতসহস্র ঢেউ;
তোমার নৌকার ছই ছুঁয়ে ঘুমিয়ে আছে সহস্র হাওয়ার ঝাপটা;
মনে হয় একটু ধাক্কা দিলে খুলে যাবে স্রোত, শুরু হবে ঢেউ!
যুবতীরানীর বক্ষের মতো হয়ে উঠবে পাল! নেফারতিতি, হে বিউটি
অব নাইল, তুমি কি কখনো এই নৌকায় যাত্রী হয়েছিলে
চাঁদনীতে ঝলমল নীলনদের জলে? বারতিনেক এই নৌকায়
ছইয়ে উঁকি দিয়ে খুঁজেছি। পাইনি। তবু জয় হয়েছে জেদের;
আর জেদ হয়েছে ইঞ্জিনের অকটেন; নেফারতিতি, সেই অকটেনে
ভর করে ছুটে গেছি সুয়েজ খাল যা তোমার জননাঙ্গের মতো
সজল ও উর্বর; সুয়েজের নীলকালো পর্দায় চোখ মেলে দেখেছি-
নৈসর্গিক সৌন্দর্যের রানী নেফারতিতি ডুব দিয়ে বসে আছে ভূমধ্য-
সাগরে, চোখদুটি খোলা, তার চোখের মণি ছুঁয়ে পরিশুদ্ধ হয়ে নেমে
আসছে স্রোত। জল এত সুন্দর হয়- স্রোত এত মায়াবি হয়, ষড়ঋতুর
লীলামঞ্চ সহস্রনদীর দেশের লোক হয়েও একথা জানতাম না আগে।
হে ভুবনমোহিনী, সন্ধ্যায় নীলের জল যখন তীরবর্তী আলোয় ঝলমল
করে উঠেছে, নিচ আকাশে ঝুঁকে এসেছে চাঁদ, অভিজ্ঞ জলে ভেসেছে
অন পেমেন্ট মারকিব, আরবিগানের উচ্ছলতায় দোলা জেগেছে
শরীরে ও মনে, মনে পড়েছে তোমার কথা; মনে হয়েছে কত নৌভ্রমণই
না করেছো তুমি সম্রাট আখেনাতেনের সাথে! জলের কলকল শব্দে
শুনেছি অতীতের গুঞ্জন, ফেলে আসা হাসির রেকর্ড। তুমি তো জানো,
আমি এযুগের মানুষ, আমাকে যেতে হয়েছে শহরের এখানে ওখানে,
নামিদামি শপিং মলে; আমরা গিয়েছি আরব বসন্তের সূচনাবিন্দু তাহরির
স্কোয়ারে যেখানে লম্বা আশাভঙ্গের গোল বেদনা নীরব হয়ে বসে আছে
আকাশে উড়তে থাকা নিঃসঙ্গ পতাকার নিচে যেভাবে চুপ হয়ে যায়
রেফারির ভুল সিদ্ধান্তে বাতিল হওয়া বিজয়সূচক গোলের উল্লাস; এবং
আরও কত স্থানে পা ফেলা! কোথাও তোমার সাথে কথা হয়নি মুখোমুখি।
অথবা এমনও হতে পারে– দেখা হয়েছে কায়রোর কোনো শপিংমলে
স্মার্ট সুন্দরীদের মাঝে অথবা আল আজহারের বিকেলের রোদরঙা
যুবতীদের ভিড়ে দেখেছি তোমাকে; সালাউদ্দিনের ডেরায় শেষবিকেলের
রোদরঙা যে যুবতীর সাথে ‘হাই’ বিনিময় হয়েছিল, সে কি তুমি ছিলে?
হোটেলে ফিরে এসে ভাটির শরীরে উজানের উত্তেজনা অনুভব
করেছি; জোয়ারের মনে ফ্লাশব্যাক হয়ে ফিরে এসেছে পূর্ণিমা-তিথি;
প্রিয়ামিশায় ফাইভ স্টার রাত শুনেছে এক আশ্চর্য সঙ্গমের শীৎকার
ঘরময় উম্মে কুলসুমের গানের মতো যা ছড়িয়েছিল অনিঃশেষ রেশ।
ব্যর্থতায় শ্রান্ত মন নিয়ে দেশে ফিরে এসে আজ ক্যানন ডিএসএলএর
মজুদ খুলতেই বিস্ফারিত চোখ, বিস্মিত মন: আহা, আমার প্রতিটি
যুগলছবির সাথে তুমি, এমনকি স্যামসাঙ জে ফাইভে তোলা আমার
সেলফিতে গলা জড়িয়ে তুমি; তোমার পুরুষ্ট-রক্তিম অধরে আমার
আড়াই যুগের ধারাবাহিক চুম্বনের এমবোস সীল! আজ সেই তুমি কি
আমাকে নতুন ভাবনার কবিতা লেখাও যে একদিন আখেনাতেনের
শাসনকালকে ভরে দিয়েছিলে শিল্প-ভাস্কর্য-বিশ্বাসের নবজাগরণে?
লুডবিগ বোর্কাতের মনে বিস্ময়-জাগানো তোমার মোহনীয় চোখ
আমার চোখের সাথে চেয়ে আছে বিকেলের রোদে সোনা হয়ে ওঠা
পিরামিডের চূড়ায়। আচ্ছা, তোমাকে কি দেখেছিলেন আমাদের
সঙ্গে থাকা দুই নারী শোভা আর জোহরা? তাহলে কি জোহরার
রহস্যময়ী চাহনি সহজাত অভ্যাসের পুনরাবৃত্তি ছিল না মোটেও?
নেফারতিতি, হে মিসট্রেস অব হ্যাপিনেস, তুমি কি তবে বহু
জনমের অধিকার লাভ করেছো, ঘুমুতে যাওয়ার আগে যার স্বপ্ন
নিয়ে পাথরের বুকে প্রাসাদ রচতেন দি ভ্যালি অব কিং এ ঘুমুতে
যাওয়া তুথমোসিস-রামেসেসের দল? অবয়বহীন চারহাজার বছর
নীলনদে ভেসে ভেসে তুমি কি পুনর্জন্মের মাটি খুঁজে পেয়েছো
রূপবান-মধুবালার গাঙ্গেয় অববাহিকায়? কি লাভ সত্যের মুলা খুঁজে?
অতএব ঘটনা যা-ই হউক, অথবা রহস্য, তোমাকে স্যালুট হে সম্রাজ্ঞী!
——-০০০——
*********************
আমিনুল ইসলাম
জন্ম : ২৯ ডিসেম্বর ১৯৬৩ চাঁপাইনবাবগঞ্জ ।
নব্বইদশকের কবি-প্রবন্ধিক-নজরুল গবেষক।
প্রকাশিত গ্রন্থ
কবিতা
তন্ত্র থেকে দূরে-(২০০২); মহানন্দা এক সোনালি নদীর নাম-(২০০৪); শেষ হেমন্তের জোছনা(২০০৮); কুয়াশার বর্ণমালা (২০০৯); পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি-(২০১০); স্বপ্নের হালখাতা(২০১১); প্রেমসমগ্র-(২০১১); . জলচিঠি নীলস্বপ্নের দুয়ার-(২০১২); শরতের ট্রেন শ্রাবণের লাগেজ-(২০১৩); কবিতাসমগ্র-(২০১৩); জোছনার রাত বেদনার বেহালা : (২০১৪) ; তোমার ভালোবাসা আমার সেভিংস অ্যাকউন্ট ( ২০১৫) প্রণয়ী নদীর কাছে (২০১৬), ভালোবাসার ভূগোলে(২০১৭); নির্বাচিত কবিতা ( ২০১৭); অভিবাসী ভালোবাসা ( ২০১৮) , জলের অক্ষরে লেখা প্রেমপত্র (২০১৯) ( বাছাই কবিতা ( ২০১৯), প্রেমিকার জন্য সার-সংক্ষেপ ( ২০২০), হিজলের সার্কিট হাউস(২০২১); রমনার কোকিল (২০২২); মহানন্দা থেকে মধুমতী (২০২৩)।
ছড়া
১.দাদুর বাড়ি-(২০০৮); ২. ফাগুন এলো শহরে-(২০১২) ৩. রেলের গাড়ি লিচুর দেশ (২০১৫)।
প্রবন্ধ
বিশ্বায়ন বাংলা কবিতা ও অন্যান্য প্রবন্ধ-(২০১০)।
গবেষণা
নজরুল সংগীত : বাণীর বৈভব ( বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত)
পুরস্কার/সম্মাননা
(১) রাজশাহী সাহিত্য পরিষদ সাংগঠনিক সম্মাননা ২০০৪;
(২) বগুড়া লেখক চক্র স্বীকৃতি পুরস্কার ২০১০ ;
(৩) শিশুকবি রকি সাহিত্য পুরস্কার ২০১১ ;
(৪) নজরুল সংগীত শিল্পী পরিষদ সম্মাননা ২০১৩
(৫) এবং মানুষ সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭ ;
(৬) দাগ সাহিত্য পুরস্কার ২০১৮
(৭) কবিকুঞ্জ পদক ২০২১;
(৮) পূর্বপশ্চিম সাহিত্য পুরস্কার ২০২১;
(৯) গ্রেস কটেজ নজরুল সম্মান ২০২৩
(১০) বিন্দু বিসর্গ পদক ২০২৩ ।