লবণ জলের রেখা
সরু পথ ধরে হেঁটে যে দিগন্ত রেখা তুমি পাবে
তার পাশে বোমারু বিমান এফ সিক্সটিন ওড়ে
রূপালি জ্যোৎস্নার রাত বলে কিছু নেই
মাছেরাও ভালোবাসে চালশে জলের স্রোত
সৌন্দর্য তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে
যেমনটা গিয়েছিল কবি উৎপলকুমার বসুর কাছ থেকে
উৎসবে আগুনে যে পতঙ্গ এখনও কাঁপে
তার পাশে ড্রোন আর শিকারী শকুন
লবণ জলের রেখা আঁকে।
গুহার ভাস্কর্যে যে নেতানো হাত পড়ে আছে
অন্ধকার শুষে নিয়ে
তাকে ধরো
তাকে বলো, এখনও শেষ চিহ্ন আঁকিনি দু’পায়ে
এখনও জেগে আছে হিম হিম সন্ধ্যা তারা
পৃথিবী বদলে দেবে বলে…
গৃহান্তর
নিঃশ্বাসের ভেতর দিয়ে উড়ে আসা বাতাসটুকুই
ধরতে চেয়েছিল সে ।
সূর্যের গভীরতা ছুঁয়ে আকাশ পাড়ি দেয়ার কথা ভাবেনি ঘুণাক্ষরেও
বরফ দিনের ভয়ে সমুদ্র পাখিরা উড়ে গেছে দূরে
লাল সাদা বৃত্তের ভেতর আশ্বিনী রাত একা
সেও গৃহান্তরে যাওয়ার কথা ভাবে..
শূন্য জলাশয়ে আকাশের প্রতিবিম্ব নেই
মাছরাঙা পাখিটির ধ্যান তাই ভেঙে গেছে, ভোরে
পাখার অন্ধকারে দু’ঠোঁট, দু’চোখ লুকিয়ে
পাখিটি কাঁপে, কাঁদে…
ভাদ্রের বৃষ্টিতে পাখিটির পিঠে নামে চাবুকের ক্ষয়
তবু ঠায় দাঁড়িয়ে সে
আশ্বিনী রাতের মতো তার কোন গৃহান্তর নেই।
পাতানো সাম্য
পাতানো সাম্যের কথা আজ থাক
এসো, মুখোমুখি হই
হেঁটে যাই
নিঝুম নিদ্রায়
পাতানো সাম্যের কথা শুনেছি অনেক
গৃহবোধ ভেঙে ভেঙে কতো আর
পোড়াবো দু:স্বপ্ন
লতানো হুঙ্কার?
পাতানো সাম্যের কথা বলো না তো আর
বরং এখন
চুম্বনে জড়াও জিহ্বা
পুড়ুক অনন্তে
আমাদের বিন্যস্ত দু’ঠোঁট।
মৃতদের গল্প
আকাশ যে নীল নয়
এ কথা জেনে গেছে মৃতরাও
তারাও ওড়াতো ঘুড়ি এতোকাল
রঙধনু কেটে কেটে ভাসাতো ধীবরকালে
কতো শতো সাতরঙা নাও।
নেবুলা গুঞ্জনে আকাশ কি আজ ফালা ফালা?
শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেছে মৃতদের?
আকাশ যে নীল নয় এ কথা জানার পর
মৃতরাও পালালো শহর ছেড়ে
আকাশের গল্প নিয়ে সেই থেকে
খেদ নেই কারো আর
শুধু গোঙানো কান্নার রাতে
মিল্কিওয়ে ঘুরে ঘুরে
একাকী জোনাকি শুধু জ্বলে আর নেভে।
পাখিগুলো
সভ্যতার বুলি শেখা পাখিগুলো সাজানো অরণ্য ছেড়ে
কেবলই সমুদ্র পাড়ি দিতে চায়
বালিয়াড়ি ঘুম চোখে
ঋতুর পাতায় ছড়াতে চায় লেলিহান আগুনের শোক
লাল নীল উৎসবের দিন আরো কাছে এলে
পাখিগুলো ঠোঁটে তোলে নির্বাক ফড়িঙের স্বপ্নসুর।
শ্যাওলা জড়ানো কচ্ছপের পিঠে সভ্যতার ক্রোধ আরো তপ্ত হলে
পাখিগুলো চোখ ঢাকে, কাঁপে
একদিন
মৌন ইশারায় সমুদ্রও বদলে বদলে যায়
পাখিগুলো পড়ে থাকে, ডানাহীন
গোধূলির চিত্রল শূন্যতায়।