অভিজ্ঞান
…….
দৌড়লব্ধ অভিযোজন শেষে
যে পরমার্থ বোধ জন্ম হলো , তার —
জন্মরেণু ছড়িয়ে দিলাম লোকালয়ে ।
ছড়িয়ে দিলাম অস্থি ও মজ্জায় ;
মগ্নতার কোষে কোষে।
ফলহেতু, এমন অধীত মহাকালে —
বোধিবৃক্ষ মৌণকথা বলে :
সুখী হও ।
প্রশান্ত হও ।
হে মুমূর্ষু নদী, পুনরুত্থিত হও।
হে জগৎ, কুঁড়িদৃশ্যে জাগো।
ফোটো পুষ্পদৃশ্যে সভ্যতা হে!
ফুটে ওঠো ।
আলসেমি করো না।
ফোটো হে মানব-ফুল।
অন্তর্ভেদী চোখছুঁয়ে ফোটো।
চোখের রূপকল্পে জাগুক যাপনের ঢেউ।
শিশুর চিৎকারের মতো নেমে আসবেন মহামান্য রোদ।
১ এপ্রিল ২০২৪
ফেরা
……
ফিরে আসছে চর্চিত ঘুম ;
যেমন আসে রাত সবুজ বাতাসে ভর করে —
যেমন আসে মস্তিষ্কের ভেতর ঈপ্সিত প্রণয় ।
মধ্যবিত্তের উচ্ছ্বাস।
ফিরে আসে যাবতীয় পাখি পাখি দেশ ;
সুচরিতাসু সূর্যোদয়।
হাতের মুঠোয় উঠে আসে ধান ধান ধন্যবাদ ;
বিগলিত বাস্তু ধারণা।
ফিরে আসে নদী ;
আবহমান চিরুনির মতো চিরদিন।
ফিরে আসে চরের ঘাসলতা ;
যেরকম আসে প্রেমিকার দৃষ্টিগ্রাহ্য ছায়া ।
মনের ভেতর
রোদের ভেতর
শয্যার ভেতর ।
ফিরে আসে করতলে ধরে রাখা মহাকাল।
ঘৃণাও ফিরে আসে ।
বিপরীতে অপরিহার্য যুদ্ধ ফিরে আসে ।
শাশ্বত সত্য এই–
ভালোবাসা ফিরে আসে বারবার
সূর্যের মতো।
১৫ এপ্রিল ২০২৪
ধানের কলেমা
………
ধানের কলেমা পড়ি–
এই বাক্যে শ্রমণ নিয়েছি।
শান্তি শান্তি বলো তুমি;
বলো প্রেম তারে। বলো তারে অস্তিত্বের গুঞ্জরন।
মর্মরিত ঢেউ।
বিস্তার করবে ডানা —
যেমন জিবরিল ছড়িয়ে দেয় মহীয়ান পাখা—
আর পৃথিবীতে নেমে আসে ছায়ার আড়ত;
আজানুলম্বিত মুগ্ধপ্রায় পানের বরজের মতো ভোর।
হিংসা, রক্তপাত মুছে দেখা দেয়
মানবিক সব উত্তাপ
কোনো এক আগামী দিনের।
পরিচয় হোক তাই বয়ে যাওয়া বাতাসের সাথে;
ধানের নিবিড় গন্ধছোঁয়া
এই আদিগন্ত উল্লাসের সাথে।
তোমার মুখের আদলে গড়া
চুম্বনের দাগসহ স্থিরতা থেকে
অন্য এক আনন্দের দিকে।
পড়ো তবে ঐশ্বর্যের মতো এই ধানের আয়াত;
বিনীত হতে হতে পড়ো।
সোজা হয়ে দাঁড়াতে দাঁড়াতে তুমি পড়ো।
কেউ কেউ জিঘাংসার পক্ষে অস্ত্র তাক করবে এবং
মরে যাবে সহজ সুন্দর;
অসুখ অসুখ বলে হাহাকার করবে কেবলই!
তুমি তাকে কলমা শেখাও।
বলো, এ অসুখ সেরে যাবে।
যদি ভালোবাসা চাও;
যদি দেখতে চাও অনন্ত সুন্দর–
পড়ো। পড়তে থাকো হৃদয় প্রসারিত করে উৎসবের মতো।
বারবার আবৃত্তি করো ধানের কলেমা।
হয়তো আবার ছায়া হবে;
প্রাণময় ধান হবে
মানুষের পৃথিবীতে।
পড়ো একবার এই ধানের কলেমা।
বলো প্রেম তারে।
প্রেম বলো। প্রেম!
১৭ এপ্রিল ২০২৪
তুমি
……
অনুমান করি, কিছুটা হাহাকার মিশেছিলো চোখের তারায়;
ঠোঁটের নিকট দূরত্বে
আর ভূগোল জুড়ে ব্যাপ্ত
পাটাতনে ;
সেহেতু, দেখা যাচ্ছে গ্রীবায়–
পুঁজ ও রক্তের যৌথ দাগ।
এইভাবে, বেঁচে আছো
কতো ফিলিস্তিন হয়ে !
তোমার ভেতরে আছে ন্যূনতম পঞ্চাশ বর্ণ মালা;
দেড়লক্ষ শব্দের বিপুল সমাহার —
দুঃখশাস্ত্রের অনন্য এক অভিধান।
আহ্, আর্তনাদভরা রোদনতত্ত্ব আমার!
বিষাদে বিষাদে ফুটলো না আকাঙ্ক্ষা-ফুল!
তবু পাঁচটি ফুলের নাম: গোলাপ, জবা, টগর, বেলী, তুমি।
২১ এপ্রিল,২০২৪