তৌফিক জহুর
তার কবিতা দূরগামী। সাধারণ কোনো চিন্তায় তার কবিতার শরীর স্পর্শ করা যায় না। তার চিন্তার এন্টেনা এতোটাই দীর্ঘ যা এই প্লানেট ছাড়িয়ে অন্যলোকে আমাদের টেনে নিয়ে যায়। আমরা যারা নব্বই দশকের কবিতার ট্রেন জার্ণিতে শামিল হয়েছিলাম, তাদের মধ্যে তিনি সম্পূর্ণ আলাদা। একটা ঘোরের মধ্যে দিয়ে তিনি ক্রমাগত সামনের দিকে পথ চলেন। আমরা যখন আশ্চর্য প্রদীপ জ্বালানোর বাসনায় দু-হাতে গড্ডালিকার স্রোতে সাঁতার কেটেছি,তখনও দেখেছি তিনি ভাবছেন। একাকী। নিভৃতে। নিরালায়। চট জলদি তার কবিতার অন্দরমহলে প্রবেশ করা দুঃসাধ্য ব্যাপার। তবে, তার কবিতা আবিষ্কার চমকে দেয়, নিজের মনকে আকৃষ্ট করে। বুঝতে পারি আমাদের দৈন্যতা। তার কবিতার অন্দরমহল রহস্যময়। আমি এতোক্ষণ ধরে কথা বললাম নব্বই দশকের কবি মুহম্মদ আবদুল বাতেন প্রসঙ্গে।
মুহম্মদ আবদুল বাতেন রাতারাতি নয়, ধাপে ধাপে অগ্রসর হয়েছেন, সময়ের পাথরে পা ফেলে ফেলে তৈরি করেছেন তার রহস্যময় কবিতার শরীর। তার কবিতার শরীরে উত্তর আধুনিক ডিকশনে আবৃত। তার ব্যক্তিমন নির্লিপ্ত ও নম্রতার চাদরে আবৃত। কিন্তু সবসময়ই তার পরিমার্জিত ব্যক্তিত্বের সুরভি টের পাওয়া যায়। তার কবিতায় কল্পনার রঙ আঁকা হয়েছে বিজ্ঞান দিয়ে, বাস্তবতা সরাসরি না এসে এসেছে অ্যাবস্ট্রাক্টে রঞ্জিত হয়ে। তিনি এমন এক কবিতা জগত নির্মাণ করছেন যা নব্বই দশকের সমসাময়িক থেকে আলাদা। আমার কৌতূহলী চোখ সে জন্যই তার কবিতার অন্দরমহলে প্রবেশ করতে চায় বারে বারে।
আমরা কয়েকটি কবিতা লক্ষ্য করি :
১. গোল্লাছুট
যা হারিয়েছে এবং যা হারাবে নিশ্চিত
তার সারাৎসার রয়ে যাবে
হৃদয় নীলিমা জুড়ে।
বস্তু জ্ঞানে অন্ধ কিভাবে ডুবে আছে
লোনাজলে, মাছেরা জেনেছে যা-
আমি বক্ষদীর্ণ করে দেখি
ছুটছে সব ঘূর্ণি স্রোতে।
লোহিত প্রবাহে তুমি শ্বেতকণিকা
পাথরে পাথর ঘসে জন্মেছে
যে আগুন, সমুদ্রে তা নেভে না।
ডুমুরের ছায়ায় তিনটি তারা একজোটে
খেলছে নিরন্তর গোল্লাছুট।
২. বাবলাগাছ
একটা গাছ আরেকটা গাছকে টপকে যেতে চায়
এইতো গাছের রাজনীতি, জীবনের আগে ফুরিয়ে
যাওয়া একটা দৌড়ে, হীম রাত্রির স্বপ্নের মধ্যে
বরফকুচি, গলনাঙ্কের কাছাকাছি ঘুম ভেঙে যায়।
না এটা মৃত্যু কিন্তু মনে হবে ভেসে উঠছে মহাকাল।
একটা নদী আরেকটা অতিক্রম করতে চায়, এটা
তার জীবন, নাকি নিয়তি এই মিমাংসার আগে
সমুদ্র এসে তাকে সীমানা মুছে দিয়ে নিয়ে যায়।
একটা মানুষ দৌড়াচ্ছে সারাজীবন, বিরতিহীন
নিজের ছায়ার মধ্যে একটা লোভী হায়না তার
পিছুপিছু হা্ঁটছে, ছায়া দীর্ঘ হতে হতে পথ প্রান্তরে
মিশে গিয়ে সন্ধ্যায় একটা ব্লাকহোলে ঢুকে পড়ে।
না বৃক্ষ, না নদী, পৃথিবীতে শুধু মানুষের কবর-
যেখানে স্বেচ্ছায় ঘাসেরা ঢেকে রাখে যাবতীয়
অন্ধকার, উপরে ঝুলে আছে হিজলের গুচ্ছ ফুল
জোনাকিরা নিঃশব্দে আলো জ্বেলে রাখে, দূরে
নিভুনিভু ছায়াপথ, শিথানে একটা বাবলাগাছ।
৩. অন্ধকার বৃক্ষ
‘আমি একটি বন, এবং অন্ধকার বৃক্ষের একটি রাত্রি:
কিন্তু যে আমার অন্ধকারকে ভয় পায় না,
সে আমার সাইপ্রেসের নীচে
গোলাপে পূর্ণ উজ্জ্বল স্তবক পাবে।’
নিটশের জবানে এইভাবে জরাথুস্ত্র
বলেছিলেন।
দুর্গম ও জনবিরল বিচ্ছিন্নতার মধ্যে
আমি যে শূন্যতার অঙ্কুরোদগম দেখছি
তা বর্তমান ও ভবিষ্যতের দূর প্রান্তে
মনে হবে ভাসমান লাইট হাউজ।
গতির তীব্রতায় নিকটবর্তী সব কিছু
ভেঙে পড়ে, মাত্রা বদলে যাওয়ার নিয়মে।
সেই আগুন- যার বর্ণালী নীলাভ, ঘোর
কালো,
ধোঁয়া ও ভষ্ম ছাড়া কেবল ছড়ায় মৃত্যুহীন আলো।
আর এই স্ট্রিং রজ্জু, অনমনীয় তেঁতুলের
ডালে ঝুলে আছে বিপন্ন পৃথিবী।
আমি একটি বন এবং অন্ধকার বৃক্ষের একটি রাত্রি।
~~~
৪. ওয়ান ওয়ে জার্নি
দূরে অন্ধকারে কসমিক ইনফার্নো,
পানির ভেতর আকাশ আর নিজের মুখ,
এই আমার আলোর আয়নায় নিজেকে
দেখা, স্টোন এজ থেকে পরাদেহ এখন
ভেসে চলেছে কোয়ান্টাম লিপে।
মেঘ কুন্ডলি পাকিয়ে উপত্যকা,
এক জায়মান গ্যারিসন,
বিচ্ছুরিত শীতল আলোকণা আমার
এই ড্রিম নিরালোকে ভাসিয়েছে।
সময়ের কালো একটা ভয়েড
নতুন দুনিয়ার-
রাতের ফাঁকা স্টেশন, লোহার
বেঞ্চিতে তিনি শুয়ে আছেন একা,
কিছুক্ষণ আগে চাঁদের আলো এসে
পড়েছে হীম পাথরের শরীরে।
সাথে ঠান্ডা একটা হাওয়া,
সাদা চাদরের ওপর আলো
একটা ঝর্না ধারায় মিশে যায়।
তখনও ছায়া ঢেকে ছিল প্রান্তদেশ।
ঘাসের ওপর থেকে সরে এসে সূর্য
তাকে করেছে চুম্বন। চারদিকে
মাইক্রোওয়েভে ডুবে আছে অজস্র
বেতার স্টেশন, একটা মাত্র টুইন।
মেঘমল্লার এই রাত্রির কুহকের ভেতর
শূন্যতা ভেদ করে যায় মেন্টর ঝলক।
কেউ কিন্তু জানে না, কোথা থেকে
আসে এবং কোথায় যায়।
জটা বটের ডালে বসে আছে ভুতুম ভূত ;
নির্জন মাঠ থেকে অন্ধকারে দেখছি
দূরে কসমিক ইনফার্নো।
~~~
৫. তুমি তার নিরক্ষীয় মাঝি
ঘাসেরা শুয়ে শুয়ে বহুকাল আকাশ দেখছে,
উল্কাবৃষ্টির মতো বিস্ময়বোধ জাগে-
প্রান্ত খুঁজে না পাওয়া কোন বহুভুজ দিগন্তে-
উড়ন্ত মাছি, স্থানাঙ্কহীন একা একা-
কিনারে ভেড়ে না কখনো যে ডিঙ্গা
তুমি তার নিরক্ষীয় মাঝি।
এ নদীর ভেসে ওঠা সব মাছ নিয়ে যায়
নয়া শতাব্দীর ট্যারা ঈগল।
দূরে পাকা রাস্তায় মোটরযানের
শব্দ, চোখে বিজলির মতো কখনো
কখনো আলো এসে পড়ে।
অন্ধকারে কোন কুয়াশার জগতে ডুবে
থেকে পূর্বপূরুষগণ কল্পনায় সেইসব
ফড়িংয়ের খেলা দ্যাখে, যাদের পাখার
কম্পন ঘাসের তড়িৎ স্পর্শে ক্রমাগত
ভেসে যায় আরো জীবন–আরো মুত্যু–
সীমানা পেড়িয়ে। রঙ ও গন্ধহীন অদৃশ্য
ধাতবে ডুবে থেকে পূনর্বার স্বপ্ন দ্যাখো
আবার যদি আনবিক ধূলিমেঘ থেকে
জন্ম নেয় নতুন ঘাসের জীবন।
আগন্তুক পূর্বপুরুষগণ আমার মতো
পৃথিবীকে ভালোবাসতো খুউব
কেউ কেউ হয়তো ছিলেন কবি ও প্রেমিক।
ভোরের কোমল ঘাসে প্রথম নক্ষত্রের আলো
ব্রেইন এটলাসের ভেতর ছড়িয়ে দেয় ক্রান্তীয়
উষ্ণ হাওয়া, পূর্ণিমার সমস্ত রাত জেগে জেগে
এঁকে যাই প্রজাপতির সেই নীল ডানা ।
৬. হানি বুজার্ড
পৃথিবীর এক ঋতু, মৃত্যুময়তার দিকে অবিচল;
পথ হারায়ে দিক খুঁজতে সূর্যের পেছনে
ছুটছে, মধু মাতাল বাজপাখি।
ভাষা যে ম্যাজিক কিছু প্রকাশ করে
কিছু অবশ্যই আড়াল করবে,
দূর-যাত্রায় এই নেভিগেশন সিগনাল
জানিয়ে দেয় আমি কোথায় আছি।
আমরা তার গতি ও শব্দের কম্পাংক
বিষয়ে জানি না, ঠিক এই মুহূর্তে কোথাও
বৃষ্টি, আবার কোথায় খরায় নাকাল হলো।
স্মৃতি পেছনে টানে, অপেক্ষমান অনিশ্চয়তা-
কবির ঘুম আর জাগরণ সমান্তরাল যাত্রা
আমি ওই হানি বুজার্ড, দ্রাঘিমা রেখায় এক
উড়ালে ছুটছি গোলার্ধ থেকে গোলার্ধে।
একজন কবিকে বুঝতে হলে তার লিখিত একটি বা দু’টি কবিতা পাঠ করলে তার কবিতা মন মননের বৈচিত্র্যের ভিন্নতা টের পাওয়া যাবে না। আমি কয়েকটি কবিতা পরপর বসিয়ে দিলাম বিষয়টা সম্বন্ধে বোঝার জন্য। ছয় নাম্বার কবিতার প্রথম তিনলাইন পাঠ করলে শিহরিত হওয়া ছাড়া গতন্তর নেই। মৃত্যুই ধ্রুব সত্য। পৃথিবীর কোন ঋতু দিক হারিয়ে মৃত্যুময়তার দিকে অবিচল এবং পথ হারিয়ে দিক খুঁজতে সূর্যের পেছনে ছুটছে এক মধু মাতাল বাজপাখি। আশ্চর্য এক চিত্র এঁকেছেন কবি। হানি বাজার্ড কিসের জন্য ছুটছে গোলার্ধ থেকে গোলার্ধে? দান্তে যেমন স্বর্গ যাত্রার পথে নরকে প্রবেশ করেছিলেন, টি এস এলিয়টও তেমনি নতুন বিশ্বাসের সঞ্জীবনী ধারায় পূর্ণতর মানবতাকে পুনরুজ্জীবিত করবার আশা নিয়ে ‘ পোড়োজমিতে’ প্রবেশ করলেন।ব্যক্তিসত্তার চূর্ণবিচূর্ণ পরমানু নিয়ে অতীত-বর্তমানের ঐতিহ্য সমন্বয় করে আবার নতুন সত্তা রচনা করা যায় কিনা এই ছিল তার অন্বিষ্ট। আমি শুরুতেই বলেছিলাম, নব্বই দশকে যারা কবিতার ট্রেনে যাত্রী হয়েছেন প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা কবিতার পথ নির্মাণের প্রকৌশলী। কবিতা যে স্বরাট কোনো বাহ্যিক প্রয়োজনের উপর নির্ভরশীল নয়, শুধু ব্যক্তিগত আর পরীক্ষার নির্যাস এবং কবি কোনো নীতির প্রবক্তা বা সমাজ সংস্কারক নন,তিনি দ্রষ্টা, বিশ্বজগতের লুকানো সম্বন্ধসমূহের আবিষ্কর্তা। তত্ত্ব ও ইজম নিয়ে বিদগ্ধজনের দৃষ্টি ও সৃষ্টি মাঝেমধ্যে কবির সৃষ্টির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। কবি ঠান্ডা মাথায় কোনো দর্শন লালন করে কবিতা লেখেন না। তার সৃজিত কবিতা কখনো কখনো কোনো কোনো মতবাদ, দর্শনে মিলে যায়। উত্তর আধুনিক কনসেপ্টে মুহম্মদ আবদুল বাতেনের অনেক কবিতা মিলে যায়। সেজন্যই আমি শুরুর বয়ানে বলেছিলাম, উত্তর আধুনিক কনসেপ্টের কবি। বাল্মিকী, ভার্জিল, সাফো কেউই অর্থ আর মোক্ষের প্রগতি আনেননি। কাব্য সৃষ্টির পশ্চাতে নেই ব্যর্থকাম বা বিফলা অহমিকা। ত্রিশ বছর কবিতার জার্ণিতে এটুকু,বুঝতে শিখেছি, কবিতা সৃষ্টির জন্য প্রয়োজন এ স্বেচ্ছাব্রত আত্মদহন। সারাজীবন দুর্বার পাপ-পন্কিলে দগ্ধ এ পৃথিবীর জমিনে নতুন ঋষিদৃষ্টির সাধনা করে রূপ-রস- গন্ধ — স্পর্শময় অনুভূতির যে আলো কবি প্রজ্জ্বলিত করেন, তা ক্ষণিকের বেদনা ও গভীরতায় এমনভাবে প্রকাশ পায় যা হয়ে ওঠে অবিনশ্বর।
মুহম্মদ আবদুল বাতেন দরকারী কবি :
ত্রিশের পঞ্চ পান্ডবের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং ‘পৌষের চন্দ্রালোকিত মধ্যরাত্রির প্রকৃতির মতো তাঁর কাব্য কুহেলিকুহকে আচ্ছন্ন। স্বভাবোক্তি অলংকার ও বাক্ প্রয়োগের দেশজ রীতির মিলনে সৃষ্ট তার আপাতসুবোধ্যতার অন্তরালে এক দুজ্ঞেয় রহস্য বিরাজিত’। তিনি জীবনানন্দ দাশ। জন্ম বরিশাল। নব্বই দশকের কবি মুহম্মদ আবদুল বাতেনও বরিশাল। আশ্চর্য হয়ে যাই, বরিশালের মাটি সৃষ্টিকর্তা সম্ভবত কবি পয়দা করার জন্য নির্ধারণ করে রেখেছেন। নইলে বরিশালের কবিদের কবিতা সব সময়ই আলাদা মননশীলতায় আচ্ছাদিত। মুহম্মদ আবদুল বাতেনের কবিতা হৃদয়ে আলোড়ন তোলে,শেষ পর্যন্ত মনে হয় অর্থের দুর্বোধ্যতা, ফ্রী ভার্সে অভিনবত্ব, শব্দের বৈচিত্র্য অপেক্ষা চিন্তার রহস্যভেদ অনেক বেশি দুরূহ। এবং তিনি হেঁটে চলছেন মিস্টিকের পথে। সেজন্য তাঁর কবিতার দ্বন্দ্ব চলেছে অন্তর্লোকে এবং আধ্যাত্মজগতে। আধুনিক এই যুগে ধনে শক্তিতে জ্ঞানে, বিজ্ঞানে ঐশ্বর্যের কমতি নেই। মুহম্মদ আবদুল বাতেনের কবিতার মধ্যে এই বিষয়গুলি খুঁজে পাওয়া যায় বিধায় তিনি দরকারি কবি। উপরে উল্লেখকৃত চার নাম্বার কবিতা ” ওয়ান ওয়ে জার্ণি” একবার চোখ বুলাইলে কিচ্ছু বোঝা যাবেনা। রীতিমতো চোখ স্থির করে তাকিয়ে থাকতে হবে শব্দগুলোর দিকে। প্রথম পাঁচ লাইন বুঝতে পারলে কবিতাটি ধীরে ধীরে তার দুয়ার খুলবে। এজন্য থাকতে হবে আধুনিক বিজ্ঞানের সর্বশেষ জ্ঞান। সৌরজগত ছাড়িয়ে বিজ্ঞানের গবেষণা এখন যে পর্যায়ে উন্নীত কবি কথা বলছেন সে জায়গা থেকে। যার বিষয়বস্তু ও চিত্রধর্ম আমাদের ফিউচারিস্ট গতিবাদকে জানার জন্য কৌতূহলী করে তোলে। একই কবিতার শেষ পাঁচ লাইন পাঠ করলে আমাদের একটানে উঠিয়ে নিয়ে যায় অলৌকিক শক্তির কাছে। এক নম্বর উদাহরণ ” গোল্লাছুট ” কবিতাটি কবি লিখেছেন। কিন্তু আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে দেখি তা আমাদের নিয়ে যাচ্ছে এমন এক মতাদর্শের দিকে যা কবিতায় ব্যবহৃত শব্দগুলো সম্প্রসারণশীল ও বহুমুখী ব্যবহার যোগ্য। উত্তরাধুনিক মতাদর্শের দিকে ইংগিত দিচ্ছে। কিন্তু মুহম্মদ আবদুল বাতেন কি চিন্তা করে এই মতাদর্শের দিকে ধাবিত হয়েছেন? এর উত্তরে বলা যায়, কবি একটা ঘোরের মধ্যে দিয়ে সৃষ্টির আকন্ঠ নেশায় নিজেকে ডুবিয়ে রাখেন। তাঁর অবচেতন ঘোরের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া শব্দরাজি কখন কোথায় কোন দর্শনে কোন মূল্যবোধকে নাড়িয়ে দেবে তা আগাম বলা কবির জন্য মুশকিল।
আধুনিক জীবনে বুদ্ধিবৃত্তিক ভিশনটাই ভবিষ্যৎকে আশ্রয় করে নতুন দুয়ার খুলে দেয়ার যে পদক্ষেপ নব্বই দশকের কবি মুহম্মদ আবদুল বাতেনের কবিতায় লক্ষ্য করি তা তার চর্চার পরিচ্ছন্ন নিজস্ব স্বপ্নের জগৎ এবং একটা নিজস্ব বিশ্বাসের রঙ কে আশ্রয় করে তিনি এগোচ্ছেন। এখানেই কবির বিশিষ্টতা।
৩০ অক্টোবর, সোমবার, মোহাম্মদপুর,ঢাকা