ফিলিস্তিন: খাঁচার ভেতর উড়বার স্বাধীনতা চেয়ে যুদ্ধ করা পাখি
হে ঈশ্বর, কোথায় আপনি বলুন?
আপনি কি দেখছেন না বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিন।
আকাশভর্তি পারমাণবিক খাঁচা।
উড়ন্ত বুলেটের পাশে—
খাঁচার ভেতরেও নেই পাখিদের উড়বার স্বাধীনতা।
পাখিরা কোথায় উড়বে বলুন?
সমুদ্রে?
সেখানেও হায়েনা ব্যাঙ।
পাখিরা কোথায় উড়বে বলুন?
মগজে?
সেখানেও মহাকালের স্যাঁতসেঁতে আঁধার।
পাখিরা কোথায় উড়বে বলুন?
যদিও আপনি বাধ্য নন, তবুও—
আপনাকে বলতেই হবে।
খাঁচার ভেতর উড়বার স্বাধীনতা চেয়ে—
পাখিরা আর কতকাল যুদ্ধ করে মরবে?
ওঁরা
মৃতদের স্মরণে আমি এক মিনিট নীরবতা পালন করিনি বলে ওঁরা আমাকে খুন করলো। অতঃপর আমার মৃত্যুতে আমার পাগলি মা নীরবতা পালন করেনি বলে ওঁরা আমার মা’কেও খুন করলো। এভাবে খুন করতে করতে ওঁরা নিশ্চয় একদিন পুরো পৃথিবীটাকেই নীরবতা পালনে বাধ্য করবে জানি। এমনকি ঈশ্বরও যদি দৃশ্যমান হয়— এবং অমান্য করে নীরবতা পালনের নির্দেশ। আমি জানি, ওঁরা ঈশ্বরকেও খুন করতে ছুঁড়ে দেবে খুনি মিসাইল।
নিয়তি
মহাকালের অন্ধকারে ডুবে থাকা আমাদের বিচ্ছিন্ন বেদনার সামাধির ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে বুলেট ছুঁড়ছে অদৃশ্য রাইফেল। আনন্দে বাঁচার জন্য আমাদের এখনই মরে যাওয়া দরকার। কিন্তু কীভাবে? মরবার অধিকারটাও তো আমাদের নেই।
কামরাঙাগাছ থেকে ঝরে যাওয়া প্রতিটি ফুলের সাথে ঝাঁকেঝাঁকে আত্মহত্যার কাছে পরাধীন পাখি ঝরে যেতে চেয়েও পারছে না ঝরে যেতে। মুখ থুবড়ে পড়ছে রক্তাক্ত জমিনে। হামাগুড়ি দিয়ে পূণরায় বসছে— বুলেটের অপেক্ষায়, বিষাদের ডালে।
আত্মঘাতী বুলেট হবো প্রানঘাতী রাইফেলের বুকে
আমি জানি হে ফিলিস্তিনি পাখি
তোমাদের অশ্রুতে কতখানি আগুন
আর কতখানি পানি
জানি বারুদের জালে ঘেরা পৃথিবীতে পাখিদের স্বাধীনতা আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যাওয়া জাহাজের কেবিনে বন্দী। সূর্যহীন ভোরে আগাছার নামে হৃদয়হীন কাঠুরে কাটছে নীড় বাঁধা ডাল। তোমাদের প্রতিবাদকে কিচিরমিচির বলে উড়িয়ে দিচ্ছে জাতীয়তাবাদের খাঁচা নির্মাণ সংঘ।
তবু জেনে রেখো হে দুঃসাহসী পাখি, ক্ষমতাসীন পৃথিবী তোমাদের পক্ষে থাকুক বা না থাকুক, কবিরা তোমাদের সহোদর ভাই। তোমাদের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া প্রতিটি বুলেট এসে বিদ্ধ করে কবিদের বুক। কথা দিচ্ছি তোমাদের স্বাধীনতা অর্জিত না হলে কবিতা লেখা ছেড়ে অচিরেই জেনে নেবো বোমা বানানোর বিদ্যা। আত্মঘাতী বুলেট হবো প্রাণঘাতী রাইফেলের বুকে।
সবিনয় নিবেদন
আমাকে খুন করতে খুন করতে হবে না, ভালোবাসুন। ভালোবাসায় খুন হয় যে শত্রু, তার জন্য ম্যারিকা থেকে অস্ত্র কেনার প্রয়োজন নেই। পথশিশুদের থেকে ফুল কিনুন।
যুদ্ধ না হোক—
যুদ্ধ হলে পথশিশুরা ফেরি করে ফুল বেঁচবে কী করে?
আটচালা, নওগাঁ।