জাকির আবু জাফর
প্রত্যেক কবিরই একটি নদী থাকে। আল মাহমুদ এর নদীর নাম– তিতাস। তিতাসের পারেই লুকিয়ে আছে তার শৈশব-কৈশোর। লুকিয়ে আছে তার ছোট বেলার দিনগুলি। তিতাসের ঢেউ ছিলো তার আনন্দের! নদীর বুকে পালতোলা নাও দেখতে দেখতে কেটেছে তার জীবনের অনেকটি সময়। দূর থেকে পালতোলা নাওয়ের ধীরে ধীরে নিকটের হয়ে ওঠা ছিলো এক ধরনের রহস্যময়। চাচী খালা ফুফুরা নাইয়র যেতেন। যাওয়ার মুহূর্তগুলো তার কাছে ছিলো খুব কৌতুহলের। নদীর উজান দেখেছেন। জোয়ার ভাটার বিস্ময়ে অভিভূত হতেন। নদী ভাঙন দেখেছেন। ভাঙনের তীব্রতায় কাতর হতো তার কিশোর মন। গরীব দুখীর ঘরের চালা ভেসে যেতে দেখে বেদনায় কাতর হয়েছেন। জমিদারকে সহসা নিঃস্ব হতে দেখে মন ভারী হয়ে উঠতো। অল্প সময়ে সম্পদশালী হয়ে গেছেন পথের মানুষ। এভাবে নদীর বিচিত্র জীবনের ছাপ পড়ে যায় তার কিশোর মনে। নদীই তাকে নদী ভালোবাসতে শিখিয়েছে।
ফুলের গন্ধ শুঁকে মন ভরাতেন তিনি। কত রঙ! কত রূপ! কত বৈচিত্রে ফুটতো ফুলের ডালি। রঙ রূপ যেমন আলাদা। গন্ধও একেক ফুলের একেক রকম। বাতাসে কম্পিত ফুলের দোলানী তাকে আনমনা করে তুলতো।
বৃক্ষের সাথেও ছিলো তার বন্ধন। ছিলো আন্তরিক টান। পাতার সবুজ জুড়িয়ে দিতো তার মন
কিশোরকালেই উদাসী মনের ছিলেন আল মাহমুদ। প্রকৃতির নিঝুম সবুজে ছেয়ে থাকা গ্রামের বনানীর বুক তাকে টানতো। ভীষণ আকর্ষণে ছুটতেন এ বন থেকে ও বন। এ গ্রাম থেকে ও গ্রাম। ঘুরে বেড়াতেন একাকী। পিছু নিতেন পাখির। কৌশলে ধরার চেষ্টা করতেন পাখিদের। তার জীবনে এমন কাহিনি বেশ জমজমাট। সকাল হলেই ছুটতেন। ভর দুপুরে ঘুঘুর কণ্ঠে আলোড়িত হতেন। বিকেলের মিষ্টি আলোয় ফড়িং ধরার আনন্দে মেতে উঠতেন। কমলারঙ রোদে ঝিংগে মাচায় বিচিত্র রঙের প্রজাতির পাখা দেখে বিস্মিত হতেন। এভাবে তার উদাসী মনের ভাবনা গভীর হতে থাকলো। প্রকৃতি তাকে ক্রমাগত ঠেলতে থাকলো বিস্ময়ের দিকে। তিনিও দ্বিধাহীন নিজেকে উজিয়ে দিচ্ছিলেন আনন্দের সাথে। এ আনন্দের ঘোরই একদিন তাকে জানান দিলো– তিনি একজন কবি। তার ভেতর ছন্দের ঝংকার আছে। তার ভেতর মিলের খেলা আছে। জীবনের আনন্দ প্রকাশ করার ভাষা আছে। প্রকৃতির ভাষা অনুবাদ করার ক্ষমতা আছে। হঠাৎ লিখেও ফেললেন কবিতা। নিজের লেখায় নিজেই চমৎকৃত হলেন। বুকের ভেতর অন্য আনন্দ দুলতে থাকলো। তার ভেতর জগৎ তাকে ডেকে বললো– তুমি কবি। তুমি ছন্দের গন্ধ খুঁজে জোড়া দাও শব্দের সাথে শব্দ। তাই করলেন তিনি। শুরু হলো তার জীবনের নতুন অভিযাত্রা।
জগতে এমন মানুষেরা জন্ম থেকেই উদাসীন। জীবনের দিকে কোনো মোহ কাজ করে না এদের। সম্পদ সংগ্রহে থাকে না কোনো আগ্রহ। অর্থের দিকে লোভের জিহবা লকলক করে না। পদ পদবিতেও থাকে না কোনো আকর্ষণ। জীবনের জন্য ভীষণ জরুরি এমন কিছুই থাকে না। এটি খুব দরকারী, ওটি ভীষণ প্রয়োজন, অন্যটি না হলে নয় –এমন কিছুই বিচলিত করে না তাদের। সব কোলাহল থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন তারা। এড়িয়ে চলেন জগতের যাবতীয় জঞ্জাল। তারা নির্মোহ। তারা নির্লিপ্ত। তারা নির্জনতা প্রিয়। তারা নিসর্গের মৌনতায় একাত্ম। একাকীত্বের কোনো যন্ত্রণা থাকে না তাদের। সময় তাদের সঙ্গ দেয়। প্রকৃতি তাদের সঙ্গী হয়ে ওঠে। নৈশব্দের গভীরতায় ডুবে থাকার কৌশল জানেন তারা। ডুবে থাকেন খুব। চারিদিকের হলাহল তাদের কাছে স্থূলতা ছাড়া কিছু নয়। মানুষের ছোটাছুটি দেখে তারা কৌতুকবোধ করেন। সম্পদের হাহাকার দেখে বিস্মিত হন। খ্যাতির তৃষ্ণা দেখে অবাক হন। বড় ঠুনকো মনে হয় মানুষের কীর্তি কলাপ। দৃষ্টি মনে হয় ভীষণ খাটো। ঠিক তখন এসবকে উপেক্ষা করেন তারা। সাধারণ আনন্দে তাদের কোনো অনুভূতি জাগে না। সবাই যা করে তাতে তাদের কোনো পরিতৃপ্তি থাকে না। সাধারণ অনুভূতিসহসা ফিকে হয়ে ওঠে। অগভীর কিছুই টানে না তাদের। স্থূলতায় ভীষণ অনাগ্রহী তারা। মনের অজান্তেই তারা হয়ে ওঠেন গভীর জলের।
আল মাহমুদ এ গোত্রের লোক। এমনই বৈশিষ্টে উজ্জ্বল তিনি। জীবনকে গভীর থেকে অনুভব করার তৃষ্ণায় কাতর ছিলেন আজীবন। যখন ছন্দের গন্ধ পেয়ে গেলেন মনের গভীরে, পাখা না থাকলেও পাখির মতো হয়ে উঠলেন তিনি। জীবনের ভাষাগুলো ছন্দে আবদ্ধ করার স্বপ্ন তাকে চঞ্চল করে তুললো। তিনি নিজেকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখতে থাকলেন। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয়ে উঠলো তার স্বপ্নের পরিধি।
এর মধ্যে একটি কঠিন সময়ের মুখোমুখি হলেন তিনি। ১৯৫২ র ভাষা আন্দোলনের তুমুল সময়। মাতৃভাষা রক্ষার রক্তাক্ত সংগ্রাম চলছে। ভাষা রক্ষার দাবীতে মিছিল মিটিং স্লোগান। আন্দোলনের প্রবল ধাক্কায় কম্পিত সারাদেশ। ২১ ফেব্রুয়ারির অগ্নিগর্ভ দিন। ভাষার দাবীতে শহীদ হলেন অনেকেই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ভাষা বিষয়ে প্রকাশ হলো একটি লিফলেট। এ লিফলেটে ছাপা হলো আল মাহমুদ এর একটি কবিতা। ভাষার পক্ষে এ কবিতা ভীষণ নাড়া দিলো সেখানকার স্থানীয় শাসক শ্রেণিকে। ফল হলো প্রশাসনের রোষানলে পড়লেন আল মাহমুদ। পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগলো তাকে। যে কারণে নিজের জন্মস্থান ছাড়তে হলো তাকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দ্রুত বেরিয়ে পড়লেন তিনি। বেরিয়ে চলে এলেন মেঘনা নদীর পাড়ে। এখানে একটি ছোট চাকুরী নিলেন। চাকুরীটি মেঘনার বুকেই। পানির গজ মাপার এ চাকুরীটি তাকে খেটে খাওয়ার পথ করে দিলো। পুলিশের খাতায় তিনি ফেরারি। কিন্তু জীবনের খাতায় হয়ে উঠলেন কবিতার মানুষ।
আল মাহমুদ তখন বারো বছরের দুরন্ত কিশোর। কিশোর হলেও নিজের দায়িত্ব নেবার মনটি মজবুতই ছিলো। সেই মজবুতি নিয়েই গ্রামের সবুজ সম্ভার ছেড়ে উঠে এলেন ইট পাথরের ঢাকায়। সালটি ১৯৫৪। এ বয়সেই কবিতার ঘূর্ণিতে উতলা মন। ভুবন দেখছেন নিজের মতো করে। বইয়ের ফাঁক দিয়ে প্রকৃতির বিরাট রাজ্য দুলে উঠলো মনের গহনে। প্রজাপতির ডানার বৈচিত্রে বিভোর হলেন তিনি। পাখির পাখায় আকাশ ছোঁয়া শূন্যতার দিকে দৃষ্টি উড়ে যেতো। প্রকৃতির লীলায়িত সংরাগে কৌতূহলী হলেন। ফলে ছন্দের ঝংকারে চঞ্চল হলো তার ভেতর জগৎ। নদীর বুকের কাছে ঢেউয়ের উত্তাল আছড়ে পড়ার আনন্দ। অথবা বৃষ্টির ঝরণীর শব্দে ছন্দের গন্ধ শুঁকে আনন্দ নিতেন তিনি। এমনই চঞ্চল মনের কিশোরটিকে হাতছানি দিলো ঝলমলে ঢাকা। সিদ্ধান্ত নিলেন ঢাকার আকাশে নিজেকে হাজির করবেন। করলেনও। চলে এলেন বুড়িগঙ্গার পারে অবস্থিত কিংবদন্তি ঢাকায়।
ঢাকা চিরকালই রহস্যের নগরী। মোগলদের প্রাচীন রাজধানী এটি। বাংলাদেশের প্রাচুর্যের কেন্দ্র। ঢাকা কেন্দ্রিক জনতার স্রোতও সবসময় তীব্র। গ্রাম ছেড়ে নিজেকে একটু আলগা করে দেখলেই চোখ ধাঁধানো ঢাকা আরাধ্য হয়ে ওঠে সবার। স্বপ্নটা খানিক বড় করে তুললেই সহসা আসে ঢাকার হাতছানি। তখন পেছনে পড়ে থাকে গ্রাম। গাছালির সবুজ মমতা তাকে বাঁধতে পারে না আর। গ্রামের সরল জীবনটি তাকে মোটেই আটকাতে পারে না। নির্মল আকাশের উদার নীলও তাকে টেনে রাখে না। তার চোখে তখন নিয়ন বাতির ঝিলিমিলি। গভীর রাতের নক্ষত্রের মায়াবী চোখের চেয়ে তার কাছে নিয়ন আলো আকর্ষণীয়। এভাবেই রাজধানী হয়ে ওঠে স্বপ্নের কোষাগার। মানুষ হয়ে ওঠে ঢাকার নাগরিক।
আল মাহমুদও নাগরিক হলেন ঢাকার। যদিও ঢাকায় আসার আরও যৌক্তিকতা ছিলো তার। তবুও বুকের কোনে বড় কবি হওয়ার স্বপ্নটি তাকে টেনেছে প্রবলভাবে। সেই টানে তিনি হয়ে উঠলেন ঢাকার নাগরিক।
ঢাকা এলেন আল মাহমুদ। যখন এলেন সঙ্গে তো কিছু না কিছু আনবেন। আনলেনও। একটি ভাঙা টিনের সুটকেস। সুটকেসটির গায়ে আঁকা ছিলো গোলাপফুল। শুনলে হয়তো বিস্ময়ের এটি। কিন্তু এইতো আল মাহমুদ এর ঢাকা যাত্রার সাদা কথা। গায়ে খদ্দরের পাঞ্জাবী। পায়জামাটিও খদ্দরেরই। পায়ে রাবারের স্যান্ডেল। লিকলিকে শরীর। মুখে তেমন মাংসও ছিলো না। যাকে নেহায়েতই ভাঙা গাল বলা চলে। ঠিক অনাহারী না হলেও অভাবের চিহ্ন ছিলো চেহারায়। কিন্তু এসবকিছু ঢাকা পড়েছিলো তার দুরন্তপনার আবরণে।
হলে কি হবে! গ্রাম থেকে উঠে আসা একটি কিশোর, পোশাক আশাক আর চেহারার নিরিখে নিজের গা থেকে গাঁয়ের গন্ধ কিছুতেই তাড়াতে পারছিলেন না। অবয়বেও তিনি একদম গ্রামীণ। যে কারণে আল মাহমুদ এর বন্ধুরা তাকে ‘গেঁয়ো’ বলে ডাকতেন। মুখের ভাষাও গাঁয়ের উর্ধে ওঠেনি। ঢাকাইয়া জীবনের আধুনিকতার স্পর্শ গ্রামে ছিলো না। একদমই না। ফলে ঢাকার জীবনের সাথে খাপ খাওয়া তো দূর কথা! ধারেকাছেও ছিলেন না তিনি। ফলে গেঁয়ো থেকে কেউ কেউ গাঁইয়াও ডাকতেন। নীরবে হজম করতেন এসব তীর্যক ব্যাঙ্গ! কোথাও প্রতিবাদে জড়াননি। আধুনিক জীবনের কোনো লোয়াজিমা ছিলো না তার কাছে। না পোশাকে। না চেহারায়। না মুখের ভাষায়। আর না অবয়বে।
কিন্তু একটি জিনিস ছিলো প্রচণ্ডরকম । সে হলো ‘জিদ’। একটি চূড়ান্ত জিদ দখল করেছিলো তার ভেতর জগৎ।
গ্রাম পেছনে ফেলে এলেন তো এলেনই। জীবনের যে অংশ ফেলে এলেন ঢাকায় আর ফিরবেন না সেখানে। কোনোভাবেই না। গ্রামীণ জীবনের দাগগুলো ভাঁজ করে বোগলের নীচে রেখে দিলেন। একইভাবে ঢাকার আধুনিকতাকে জয় করার নেশা পেয়ে বসলো তাকে। সে যত কষ্টই হোক, হোক। যত বেদনারই হোক তবুও। জয়ী তাকে হতেই হবে। অতিক্রম করতেই হবে ঢাকার জীবনের বাঁকগুলো। এমনই জিদ থেকে শুরু হলো নতুন দিনের যাত্রা। যাত্রা তো শুরু! এগিয়ে যাওয়া কি সহজ! নিজেকে আমূল বদলে নিতে হবে। এ বদলে নেয়াটা কঠিনই নয় শুধু। প্রায় অসাধ্যও। এমনই অসাধ্য পথের পথিক হলেন তিনি। শুরু হলো নতুন জীবনের সাধনার। শুধু অবয়ব বা পোশাক আশাকের বিষয় নয়। নয় শুধু মুখের ভাষার! বরং জ্ঞানরাজ্যের বিষয়টিও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। একটি গ্রামের ছেলের পড়াশোনার দৌড় আর কত! ফলে জ্ঞানের ভাণ্ডারও সমৃদ্ধ করতে হবে তাকে। একসাথে এতো আয়োজন! সত্যি কঠিন! বড় কঠিন!
কবিতাঙ্গণে যে ঝাঁকে এসে পড়লেন তিনি সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। এ ঝাঁকের কবি ছিলেন– শামসুর রাহমান, ফজল শাহাবুদ্দীন, শহীদ কাদরীসহ পঞ্চাশের তুমুল তুখোড় কবিরা। শামসুর রাহমান এর কবিখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে প্রায়। ফজল শাহাবুদ্দীন এবং শহীদ কাদরীও একই কাতারে। এদেরই সঙ্গী হয়ে উঠলেন আল মাহমুদ। ব্যঙ্গ বিদ্রুপ সহ্য করে পাথরী পিলারের মতো দাড়িয়ে ছিলেন তিনি। শামসুর রাহমান, ফজল শাহাবুদ্দীন এবং শহীদ কাদরীর মধ্যে শহীদ কাদরীর জ্ঞানের বহর ছিলো দীর্ঘ। অসম্ভব পড়ুয়াও ছিলেন তিনি। বিউটি বোর্ডিং এর আড্ডার মধ্যমণি ছিলেন শহীদ কাদরী। বাঁকি সব দিক থেকে ফেলে দিলেও কবিতার ধারে থেকে যেতেন আল মাহমুদ। তবুও কবিদের তালিকায় আল মাহমুদ এর নাম ছিলো ত্রিশ বা একত্রিশ কিংবা বত্রিশ এ। এক নম্বরটি শামসুর রাহমান এর। মাঝখানে আরও ত্রিশ একত্রিশ জন কবির পরে লেখা হতো আল মাহমুদ এর নাম। স্বপ্ন এবং সাধনার নিড়ানিতে আল মাহমুদ ছাড়িয়ে উঠলেন বিস্ময়করভাবে। তালিকায় হয়ে গেলেন শামসুর রাহমান আল মাহমুদ।
কথা উঠলেই আল মাহমুদ এর বন্ধুরা সেই আগমনের কথা বলতেন। বলতেন– ভাঙা টিনের সুটকেস, খদ্দরের পাঞ্জাবী এবং রাবারের স্যান্ডেলের কথা। বিষয়টি মোটেই লুকোতেন না আল মাহমুদ। জবাবে তিনি বলতেন — হ্যা আমার বন্ধুরা একবিন্দুও মিথ্যে বলেননি। প্রকৃত পক্ষে আমি এভাবেই ঢাকা এসে হাজির হয়েছিলাম। এসেছিলাম কবি হতে। হয়েছিও। আমি আমার ভাঙা সুটকেসের ভেতর নিয়ে এসেছিলাম বাংলাদেশের সবগুলো নদী,পাখি, পতঙ্গ, নৌকা, নর–নারী অর্থাৎ বহমান আস্ত একটি বাংলাদেশ!