শাকিল রিয়াজ
ডিসেম্বরের সন্ধ্যা। কনকনে ঠাণ্ডা আর ভয়াল অন্ধকার চারপাশে ভিড় করে আছে। উত্তর গোলার্ধের এই হতভাগ্য ঋতুতে নৈরাশ্য এসে আঁধারকে আরও নিকষ করে তোলে। নিঃস্ব করে দেয় স্বপ্ন, বসবাস। একাত্তরের নয়টি মাস কি এমন ছিল? এত দমবন্ধ?
নোটিফিকেশনের চাঁপা আওয়াজ কানে এলো। কনকনে আওয়াজ। কেউ কি কোন আলো ট্যাগ করলো! কিছু রোদ্দুর? মনে মনে হাসলাম। আমাদের স্বাধীনতা ট্যাগের নয়, ত্যাগের। আমরা অর্জন করেছি, কিনেছি প্রাণের কড়কড়ে নোট দিয়ে।
নোটিফিকেশনে আঙ্গুল ছোঁয়ালাম। আঙ্গুল ঠেলে কবি মাহবুব হাসানের একগুচ্ছ নতুন কবিতা উঁকি দিলো। মাহবুব হাসান নিউইয়র্ক থাকেন। ওখানে এখন দুপুর। আমি হঠাৎ আলোর আভাস পেলাম। আমি তবে কোন আলোর আভাস পেলাম?
পাঠক, নিশ্চিত থাকুন, এ আলো নিউইয়র্কের নয়। আমেরিকা কখনও দেখেনি এই আলো। বরং আরও আঁধারগামী হয়েছে দেশটি। আমি তবে কোন আলোর আভাস পেলাম?
নক্ষত্রের নাম মাহবুব হাসান। মুক্তিযোদ্ধা কবি মাহবুব হাসানের একগুচ্ছ কবিতা আমার জন্য আলো নিয়ে এসে দাঁড়ালো জানালায়। আমি জানালা খুললাম।
১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ শুধু আমাদের জাতিসত্তাকে আকার দেয়নি, আমাদের শিল্প সাহিত্যকে দিয়েছে নতুন অভিজ্ঞতা। সত্তর দশকের গোড়াপত্তনকালের সেই বুলেট আর বারুদ যুদ্ধশেষে আশ্রয় নিয়েছিল কলমের নিবে। কবিদের মধ্যে সত্তরে যাদের উন্মেষ ও বিকাশ তাদের কবিতা তাদের পূর্বপুরুষদের মতো নয়। একাত্তরের ছুরিতে দ্বিখণ্ডিত হল বাংলা কবিতা। স্বার্থবাদী, আত্মসুখ আর আত্মনিমগ্নতার কবিতাকে কেটে পাশে রাখা হল। আর পাশ ফিরে তাকাল যে নতুন কবিতা তার চোখে অঙ্গীকারের ভাষা, সমগ্রের স্বর, মুক্তির কলরব। যে ক্রোধ, প্রেম, ঘৃণা, অঙ্গীকার কবিতায় ভাষা পেলো সেই ভাষা আমাদের অচেনা ছিল। সে ভাষা গড়েছেন, নিশ্চিত অর্থেই, সত্তরের কবিরা। অন্য এক সলতে জ্বেলে দিলেন বাংলা কবিতার উঠোনে। কবি মাহবুব হাসান এদেরই একজন।
প্রথম বই বেরয় দেরি করে, আশির মাঝামাঝি। নাম ‘তন্দ্রার কোলে হরিণ’। তীব্র রোম্যান্টিক ভাবধারা, ভিন্নধর্মী উপমা আর কল্পচিত্রের সফল ব্যঞ্জনায় নিজেকে উপস্থাপন করলেন বাংলা ভাষায়। তার সেসময়ের কবিতায় আমরা পাই “ন্যাড়া জ্যোস্নার” সাক্ষাত, “কলমীর মতো নরম” গ্রাম্যবালার উপস্থিতি, “বাতাসে রোদ ভাসানোর” ইমেজ। তিনি দেখলেন ‘মানুষের আহাজারি/গাছের বাকল ছিঁড়ে বেরিয়ে এলো/রক্তমাখা হাওয়ায়’। ত্রিশ বছর পরের কবিতায়ও আমরা ইমেজের সেই কারিগরকেই যেন ফিরে পাই নতুন রূপে;
কাল সকালে বৃষ্টি আনলাম আঙুলে। ভিজতে দিলাম পৃথিবী-প্রকৃতি বেদনা আর কষ্টের হাঁসফাঁস।
সেই বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে যমদূত এসে দাঁড়ালো আমাদের পরবাসী বোধের দরোজায়।
আমি তাকে বললাম তোমার চেহারা যেন কোথায় দেখেছি!
সে হেসে বললো আজরাইল।
গতকাল তার মেহমান হয়েছিলাম। সে আমাকে ঘাম দিয়ে শাদাভাত আর শাহাদাতের বাণী মিশিয়ে
খেতে দিয়ে মহাকাশে ত্রিশঙ্কু হয়ে গেলো।
আমি জলের জন্য আকাশ চাইলাম,
সে আমাকে আকাশের বজ্র-বিদ্যুতের নহরে ছেড়ে দিয়ে উধাও!
আমি বলি এই গল্পটিকে আমের আচারে কয়েক কোটি বছর ভিজিয়ে রাখো।
সে বললো আমি জল খেতে এসেছি।
আমার গলায় আটকে আছে গোটা পৃথিবী। আমি শ্বাস নিতে পারছি না।
আমি মরে যাবো। আমাকে বাঁচাও, জল দাও।জল দাও।
আমি হেসে উঠি আকাশ যেমন বজ্র-বিদ্যুতে হেসে ওঠে।
মৃত্যু এখন মরণ যন্ত্রণায়, আর আমি জ্যাকসন হাইটসের দিকে যাবো সাবওয়ের অন্তরে উঁকি দিতে।
আমার জন্য জ্যামাইকা অপেক্ষা করছে প্রেমিকার উৎকণ্ঠাকে গলার হার বানিয়ে।
সে বললো, আমি যমদূত, আমাকে এড়াতে পারো না।
আমি বললাম সে তো হিন্দুদের জন্য। আমি তো মুসলমান। আর থাকি খ্রিস্টান পৃথিবীর অন্তরের রাজধানীতে,
তুমি অন্য পথ দেখো।
সে নাছোড় ভীষণ যেন সে বিভীষণ এক আগলে দাঁড়িয়েছে আমার পথ।
আমি তাকে একপাত্র পানি দিলাম।
সে বললো পানি না, জল।
আমি খলবল করে উঠলাম, তুমি শালা মওতের চাকর হয়েছো,
জল আর পানির পার্থক্য বোঝো না।
পথ ছাড়ো। নাহলে কপ কল করবো ৯১১-এ ডায়াল করে।
শুনেই তার পিলে চমকে গেলো।
যমদূত পানি খেলো জলের সুষমা নিয়ে এবং মুহুর্তে উধাও।
আমি হাঁটতে হাঁটতে জুকারকে বললাম এই কবিতাটিকে অভ্রতে কম্পোজ করে
পোস্ট করে দিতে। সে আমার মেমরির ভাজি খেতে খেতে উত্তর দিলো
ইয়েস।
(বৃষ্টিতে যমদূত)
কবিতাটি উপমা আর ইমেজে ভরপুর। বলা যায় পুরো কবিতাই রূপকাশ্রয়ী। স্যাটায়ারের ঝকমকে কাঁচ ভেঙে ফেললে যে শক্ত পাথরের দেখা মেলে সেটাই তো আমাদের বহুধাবিভক্ত সমাজ আর শ্রেণীবৈষম্য। মৃত্যুকে নিয়ে এমন স্যাটায়ার করেছিলেন বোদলেয়ার, র্যাবো শুনিয়েছিলেন কবরের অপরূপ গান।
মাহবুব হাসান তার কবিতার গীতলতা থেকে সচেতনভাবে সরে এসেছেন। তিনি নিজেকে ভেঙে ভেঙে নির্মাণ করেছেন, করছেন। দশকের চরিত্রে আটকে না থেকে বরং চরিত্রহীন হয়ে মিশেছেন নতুনের সঙ্গে। কবিতার প্রতিটি বাঁকে প্রতিটি পরিবর্তনে নিজেকে হাজির রেখেছেন। তিনি জানেন যারা এখনও লেখা শুরু করেনি তারা কোন ধারার কবিতা নিয়ে হাজির হবে বছর দশেক পর। নিজেকে বদলানোর, নিজেকে পুনর্জন্ম দেয়ার এই আকুলতা কবি মাহবুব হাসান নিজেই ব্যক্ত করেছেন :
মুহূর্তকে ভেঙে গুড়িয়ে দিলাম,
আর মুহূর্তেই আগুনের শিখা হয়ে উঠলো ফিনিক্স।
আমি ওই ফিনিক্স পাখিতে সওয়ার হয়ে নতুন মানুষ হয়ে উঠি।
আমি যে মানুষ ছিলাম এতোকাল সে ছিলো অচেনা
নতুন মানুষ আজ সূর্যের সারথি হয়ে জ্বলে উঠলো।
আমি পৃথিবীর সমস্ত আলোর উৎসের কাছে জানতে চাই
আমার জন্মের মুহূর্তটিকে আমাকে দাও।
আমি চাইছি,
তুমি আমাকে ফেরাতে পারো না।
(মুহূর্ত ভেঙে)
কবিতার বিষয় পুরনো হয়, আঙ্গিকে মরচে পড়ে, প্রকাশভঙ্গি অভিনবত্ব হারায় কিংবা এপ্রোচ ভোঁতা হয়ে যায়। প্রাচীন হয়ে পড়ে অনুভব, ভাষা। কিন্তু কিছু কিছু বিষয় আছে কখনও অনাধুনিক হয় না। যে কোন আঙ্গিকে যে কোন এপ্রোচে আমাদের সঙ্গে থাকে। মুক্তিযুদ্ধ তেমনি এক প্রসঙ্গ। বাঙালির ইতিহাসের সবচেয়ে আলোড়িত এই নয়মাস কখনও পুরনো হয় না, হবে না। আমাদের কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ তাই প্রাত্যহিক। স্বাধীনতার পয়তাল্লিশ বছর পরেও আমরা মুক্তিযুদ্ধকে হৃদস্পন্দনে টের পাই ; বারুদ, বুলেট এই শব্দগুলো দশকের পর দশক আধুনিক থেকে যায়; কবিতার অভিনব বাঁকেও মুক্তিযুদ্ধ এসে সটান দাঁড়িয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের এই চিরন্তনতা, এই যুগোপযোগিতা রয়েছে বলেই এটি ব্যবসার একটি বড় পণ্যও। মাহবুব হাসান একজন মুক্তিযোদ্ধা কবি। আমরাও ব্যথিত হই যখন তিনি ক্রন্দন করেন :
‘স্বাধীনতা‘ বেচবো না কোনোদিন।
এ নয় পণ্য কোনো সুপার মার্কেটের, নয় ওয়ালমার্ট, মেসি, জেসির খুচরো স্টাফ সে,
নয় কোনো সরকারের বাবা-মা’র সম্পদও, রাজনীতিকের ক্ষুধা মেটাবার রেস্তোরাঁ,
লুটের বাতাশা নয় স্বাধীনতা,
ধর্মের বেসাতির খোলা রাজপথও নয়, মুক্তিযুদ্ধের লাল রক্তাক্ত পতাকা আমার স্বাধীনতা।
(স্বাধীনতা)
কিংবা কবি নিজে যখন স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে স্বীকারোক্তি দেন, “পায়ে শেকল পরিয়ে আমাকে প্রদর্শন করে হাটে-বাজারে” (খাঁচা) তখন সমাজ ও রাজনীতির চরম ধৃষ্টতাই সামনে চলে আসে। কবি তখন ইকারুসের মতো আকাশে আকাশে স্বাধীনতা খোঁজেন।
মাহবুব হাসান এখন প্রবাসী। সুদূর মার্কিন দেশে দিনাতিপাত। সেখানের মেট্রোপলিটান যান্ত্রিকতায়, স্বার্থবাদী পুঁজিতন্ত্রের রাজধানীতে বসে, আধুনিক যুদ্ধ-বর্ণ-সংশয়বাদের সূতিকাগারে শেকড় গাড়তে গিয়ে হৃদয়ে যে ভূখণ্ডের নাম আরও পোক্ত হয়, তার নাম বাংলাদেশ। মূলত প্রতিটি প্রবাসীই একেকটি বাংলাদেশ। একেকজন অ্যাম্বাসেডর। নিজের শেকড় গাড়তে গিয়ে তারা তো বাংলাদেশের শেকড়ই বরং গেড়ে আসেন। মাহবুব হাসান যখন লস এঞ্জেলেসকে বাংলার লোকনৃত্যের মূদ্রায় নাচাতে চান তখন সে ধারণা আরও ঘন হয়। দেশপ্রেমের কি অপরূপ বর্ণনা:
ভেবেছিলাম তোমাকে নাচাবো বাংলার
লোকনৃত্যের মুদ্রায় আমাদের চতুর্থ বাংলার রাজধানীতে,
পাহাড়ি ঝর্ণার মতো তুমি
কোমরে পরে নিয়ে বাংলার প্রকৃতির আলো-হাওয়া,
মেখলার মতো জড়িয়ে নেবে তোমাকে বাংলার মেঘদল,
হে সুন্দরী চঞ্চলা লস এঞ্জেলেস।
(বিজয় বহরের কাব্য)
স্বাধীনতা উদযাপনে, বিজয়ের মিছিলে এই লস এঞ্জেলেসকে তিনি সাথে চান:
আজ এসো আমাদের উচ্ছল মিছিলে, শরিক হও সুন্দরী আমার,
ভাস্কর্যের মতো স্থাণু থেকো না অটল বসে,
তোমার কমনীয় ত্বকের উদ্ভাস দেখাও আমাদের,
শেখাও নতুন কিছু এই রণক্লান্ত, বিজয়ী, ভাস্বর
মগ্নচেতন আমাদের,
এসো সুন্দরী লস এঞ্জেলেস,
সামিল হও আমাদের বিজয় মিছিলে।
(বিজয় বহরের কাব্য)
মাহবুব হাসানের কবিতা সময়ের দর্পণ, সমাজের প্রতিরূপ। তিনি সময়কে আঁকেন তুলির নিখুঁত আঁচড়ে। জীবনের চাওয়া-পাওয়া, সঙ্গতি-অসঙ্গতিকে ভাবনার গভীরে টেনে নিয়ে নিজস্ব মসলায় রন্ধন করে অতঃপর কবিতায় উগড়ে দেন নতুন মহিমায়। পঙক্তির পর পঙক্তি সাজিয়ে কিংবা দুই পঙক্তির মধ্যবর্তী শাদা স্পেসে তিনি অবিরল অভিজ্ঞতা বিলি করে যাচ্ছেন পাঠকের মননে। পাঠক বুঝে নেন দুঃসহ সময়ে আর মাকাল কালে তার করণীয়। বহু আগে পড়েছিলাম তার “ঢাকায় নতুন ভোর” কবিতাটি। সেখানেও তিনি বিলি করে গেছেন শহুরে যন্ত্রণার চিঠি। কিংবা তার “কাক” কবিতাটি। এটি নিছক কোন পাখি বিষয়ক কবিতা নয়। কাকের আত্মকথনে সমাজের অসামঞ্জস্য ও শ্রেণীবৈষম্যের চিত্র এঁকেছেন তিনি। মাহবুব হাসান এই বেলা এসে যখন বলেন, ” হায়! আমাদের এই ডিজিটাল কালও বেঁতো রোগীর মতো হাপায়”, তখন দুই কালের মাহবুব হাসানকে আমরা এক বিন্দুতে মিলতে দেখি। অর্থাৎ সমাজ ও সময়ের ব্যবচ্ছেদকারী। তিনি তার আকাঙ্ক্ষিত সময়কে একটি কবিতার সঙ্গে তুলনা করেছেন, যে কবিতা তাকে ধরা দেয় না:
যায় শেয়ালের ধূর্ত পায় সময়-স্বকাল ;
একটি কবিতার জন্য অপেক্ষার মহাকাল চক্কর খায়,
ফুরায় না,
যায় না মাকাল-কাল ফুৎকারে উড়ে,
চিরতরে
(একটি কবিতার জন্য)
মাহবুব হাসানের কবিতায় অলঙ্কার যেমন ঝকমকে, শাণিত; বিষয়েও নেই গণ্ডিবদ্ধতা। যে কোন বিষয় কবিতা হয়ে উঠতে পারে তার হাতে। লোকজ শব্দ আর গ্রামীণ ইমেজ ব্যবহারে পারদর্শী। মিথ এসেছে সাবলীল স্রোতে। খনা তার নতুন বচন নিয়ে হাজির হয় মাহবুবের কবিতায়। আসে বেহুলা, সীতা। নারীকে তিনি সমর্পণ করেছেন প্রকৃতিতে, প্রকৃতি নারীতে। তিনি যখন লেখেন :
ঋতুর বিচিত্রবীর্য অকাতরে নাও তুমি নারী
মধু মাস শুরু হোক সোম কিংবা অন্য কোনো বারে
রুয়েছি আমার মন ঠোঁট-কাটা খনা যে আমারি
ভরে যাক শালিধানে স্বাদ-ভরা শস্যের সম্ভারে। (আমি নই সোনার পাচারি)
তখন এক আশাবাদী স্বপ্নবাজের দেখা পাই। মাহবুব হাসান এই স্বপ্নের ফেরিওয়ালা। এ স্বপ্ন স্বর্ণরঙা, এ স্বপ্ন কালোবাজারির হাতে তুলে দিতে তিনি রাজী নন : “খনার বচন সত্য, তার চেয়ে সত্য যেনো নারী \ আমার হৃদয়-কাব্য, আমি নই সোনার পাচারি ” (আমি নই সোনার পাচারি)।
‘আমি নই সোনার পাচারি’ একটি প্রথাগত সনেট। চৌদ্দ লাইনের। আঠারো মাত্রার। তিন পর্বের ক্ল্যাসিক কাঠামো (৮ মাত্রা + ৪ মাত্রা + ৬ মাত্রা)। এই ধারায় মাহবুব হাসান বহু সনেট লিখেছেন। সনেট তো ফ্যাশন জগতের সেই ধ্যানসাধ্য হর্টি কচার ট্রেন্ডের মতো। ফিগার তৈরি থাকে, মাপ মতো পরিধান বুনতে হয়। মেদহীন, আঁটসাঁট, শানবাঁধা প্রখর কাঠামো। মাহবুব হাসান এই কাঠামোয় কথা গেঁথে দেয়ার মেধাবী কারিগর।
মাহবুব হাসানের কবিতা দুর্বোধ্য নয়। তার ব্যবহৃত শব্দ, ভাষা, উপমা, চিত্রকল্প সুবোধ্য। কবিতাকে কঠিন না করে শিল্প করেছেন। তার প্রকাশ আলিঙ্গনের মতো মিহি আর একান্ত। নিঃশ্বাসের মতো ঘনিষ্ঠ। মাহবুব হাসানের কবিতা যখন পড়ি, মনে হয় পড়ছি না, কে যেন কানে কানে ফিসফিস করে বলছে।
…..
৫ ডিসেম্বর, ২০১৬