………..
গল্পটির শেষ থেকে শুরু হবে
……….
ওরা আমাকে ঠিক ততটাই ভালোবেসেছিলেন,
যতটা বোঝা ওরা ঠিক বইতে আর সইতে পেরেছিলেন।
একবার এক চারদশকী রূপসী আমাকে ভীষণরকমের ভালোবাসার গল্পে ভাসিয়েছিলেন। বলেছিলেন– তোমার কী কোনও ক্ষতি চাইতে পারি: দোয়া করি তুমি পৃথিবীর সেরা সুখীদের একজন হইয়ো।সেদিন সেই কথা শুনে আমি কেবলই সাই পুরেছিলাম। বলেছিলাম হুম।গুয়ানতানামো তথা তাদমোরের ভালোবাসায় জড়িয়ে পিরিতের গল্প শুনানোর অপচেষ্টাই ওরা বড়োই ওস্তাদি ছিলেন। দিবাস্বপ্নে বড্ডই বিভোর হয়ে উঠেছিলেন–
অস্তিত্বের শিকড়সমেত মূল উৎপাটিত করার। আমি কবিতার মানুষ কঠিনতার কিছুই বুঝি না; বলেছিলাম চলো জটিলতার জট ছাড়িয়ে ফেলি। তারা আমাকে শেষ দেখে ছাড়ার অভয় জানিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে আরও সঙ্গ দিয়েছিলেন কিছু সভ্য জন্তুজানোয়ারবেশী জন।
আমি আজও সেই শেষটার প্রতীক্ষায় ধৈর্য ধরে আছি।
অতঃপর চলেন আমরা পূর্বের গল্পে ফিরে যায়।আপনারা যারা গল্পটি মনোযোগ দিয়ে শুনছেন দয়া করে কেউ অধৈর্য হবেন না। পূর্বের গল্পটির জন্যও অপেক্ষা করুন।
তার আগে দেখে আসি শেষটার ফলাফল কী হয়।কতদূর যায়।কদ্দূর গোড়ায়। আমি অপেক্ষায় আছি গল্পটি বিস্তারিত টানার।…
…………
অপরের সৌন্দর্য সৎমায়ের মতো
………….
শিশুরা যখন হামাগুড়ি দিচ্ছিলেন
ওঠার প্রচেষ্টায় পড়ছিলেন
তখন আমার মনে পড়ে একদিন আমরা হাঁটছিলাম
হাঁটতে হাঁটতে কবেকার বারে বৃদ্ধ হয়ে নুয়ে গেছি
কৈলাশ থেকে ফেরার পথে টিলার অসুস্থতার কথা মনে পড়ে
অপরের সৌন্দর্য সৎমায়ের মতো,
আমাদের সৌন্দর্যের ঘরে কদাকার বিশ্রীরকম কদর্যের ছাপ
(২)
কোম্পানিগঞ্জের সাদা পাথরের কাছে
পৌঁছানোর আগে পূর্বমুহূর্ত স্মরণে আসে;
ইন্ডিয়ার পাহাড়গুলো নগ্নভাবেই প্রচণ্ডতায় আকর্ষণ করছিলো
যেন তামিল নায়িকাদের গতর বিক্রির মতো গৌরবিণী
আমার দেশের মতো অসুস্থ রোগীর আর সন্ধান মেলেনি
(৩)
লাল সবুজের একটিই দেশ, লালের খেলা অশেষ
যে দেশ নিয়ে অগণিত রহস্য, কোটি কোটি প্রশ্ন
হাস্যরসের কোনো সীমানা জানা নেই, রহস্যের শেষ নেই
আমার দেশের মতো প্রহসন, নেই অন্যকোনো খানে
…………
লাল অভাগীর অন্তরালে
………….
এখনো আমি শৈশব খুঁজে ফিরি আকাশে বাতাসে
নীলাকাশের বিখণ্ডে, মেঘমেদুরের খণ্ডবিখণ্ড রক্তস্রোতে
যেখানে শরৎকাল আর খুঁজতে ইচ্ছে করে না ভুলেও
ছেঁড়া ছেঁড়া সাদা মেঘের পালক সেখানে বিরলে
কাশিপুরে কাশবন নেই, কাশফুল নেই যক্ষ্মাপুরে
তিন পায়ে ঠকঠক, স্বাধীনতার সাধ পাওয়া যক্ষ্মারোগী
কেমিক্যালমিশ্রিত দুগ্ধ ও স্তন্য টানে! নিপলের ব্যথা
অজানা গন্তব্যে ছেড়ে, টেনে হিঁচড়ে চলে সিবেসিয়াস
সবকিছু ভাগ হয়ে গেছে ডালিমের মধ্যে লালে লালে
অথবা নদীমাতৃক বাঙলাদেশের নদ-নদীর বাঁকা চোখে
দুধ, মেঘ, কাশফুলে আজকে হলো কী, শুভ্র চ্যুতি
প্রকৃতিসমেত বিদীর্ণ করে নিভৃত অভাগীর অন্তরালে
নীল আকাশ নীল সাগর ভরে গেছে বিষাক্ত নীলে
নীলাক্ত ভূমিতে চাষাবাদ আমার কেবল জন্মজন্মান্তর
তবে কেন লাল আবাদি ভূমিতে রে বাঁচতে ইচ্ছে করে
জানে না পদ্মবিলের সবুজবীথি খাল বিল সে কথা!
…………
বাঙলা যদি এমন হতো
………….
ঘরের দরজা বন্ধ, বাইরের থেকে সন্দেহের গন্ধ
অথবা উল্টো কিছুটা, আমরা বাতিক দেশেরই লোক
কেউ জানবে উত্তম তারচেয়ে বড় নেই কোনো সত্য
সত্যের চোখে কাঠচশমা, এ পৃথিবীর চোখে মোড়ক
কিছু বলতে বারোবাজারের রূপেশ,
আগলে রাখতে চাবে তোমার চরিত্র লুজে
কেউ নক্ষত্রে আলো জ্বালবে, কেউ সৌর থেকে আলো নেবে; কেউ পেটের চিন্তায়, হাঁড়ির চিন্তায়,
উনুনের উষ্ণতায় মাঠেই ছুটবে
পৃথিবীর চিৎকারে বিষন্নতার বিবেক নীল প্রজ্ঞাপনে
নবরূপে সাজিয়ে সাজিয়ে পসরার হাঁটবাজার খুঁজবেই
কারো কারো হৃদয় সাগর সেই উথলে উথলে যাবে
কারো কারো মাথার ওপর ছাদটা খসে খসে পড়বে-ই
কেউ কেউ দেখবে উৎসুক দৃষ্টি সংস্কারের ভীড়ে
দেখতে দেখতে অস্ততারার সীমানা বাইরে লুকাবে
ঘরের দরজা খোলা, বাইরের থেকে বিশ্বাসের আলো
সবকিছু সহজ সরল সাদাসিধা, বাঙলা যদি এমন হতো!
………..
কুৎসিত আমিত্ব
………..
অবাধ মুক্তিযুদ্ধ চেয়েছিলাম, পাইলাম কী কাঠামো
উত্তম পুরুষোত্তম প্রেসক্লাব কী অতিরিক্ত গাজার ভাণ্ডার
মুখখানা খসে গেলে পূরণ হয় কী জিহবার উত্তেজনা?
আঞ্চলিকতা বনাম আধুনিকতার ভাষা মুখোমুখি বসে
ব্রিটিশ অথবা পাকিস্তান বুঝিনি,প্রাচীন, তাই আজ
বাঙলার এই মুখে আমি, বাঙলাতে মাতি রসনা পূরণে
মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এখন অপ্রত্যাশিত, সংস্কার এগিয়ে
সহযোগিতাও চাইতে আসিনি, পাগলাগারদ মুক্ত হয়ে
গরিবানা সিগারেটে, মুখ থুবড়ে পড়ে বাঙলাজুড়ে।
হৃদয়ে গাঁথা রবীন্দ্রনাথ, আর বাউল আবদুল করিম
কালচার্ডের মধ্যে আনকালচার্ডের জয়জয়কার
সর্বজ্ঞানের উৎসস্বরূপ যেন ঘাপটি মেরে পশ্চাদদেশ
রেষারেষির এই আধিপত্যের পাল্টাপাল্টি বিরুদ্ধ আগুন
কোন আদিত্য থামেনি, তবু্ও চলছে নিজস্ব নিয়মে–
এসো ভোরের বাতাসে খুলি আলগা হাওয়ার দরজা।
………..
গোলাম রববানী, কেশবপুর, যশোর