ভাতাপালিত পাখি
………….
শখ করেই পাখিসভায় এসেছিলাম
সবাই চিৎকার করে রব তুলছিল
আমার সে সামর্থ্য ছিল না —
শোরগোলের মধ্যে কূজন করে কিছু বলার
হঠাৎ এক পরপুষ্ট আমার জিব কেটে নেয়;
আমি তো হতবাক!
ময়নাতদন্তের পর ওরা জানতে পারে
আমি আসলে কথাই বলতে পারতাম না।
……………
এনিম্যাল ফার্ম
……………
আবাসিক পথ ভেঙ্গে লাল ট্রাক্টর
খামারে ঢুকে পড়লে
পশুপাখি হট্টগোল ভুলে
সৃজনশীল হয়ে ওঠে
এই যেমন তোতাপাখি
মানুষের বুলি শিখে ভাষাশিক্ষক;
অকেজো গাধাটাও কবি বনে যায়
অর্থনৈতিক পাওয়ার গরুগুলো
মানুষের মতো থেকে থেকে হাসে
খামারের কুকুরগুলো বিদ্যুৎ বন্ধ করে
মাইকে চিকিৎসা করতে থাকে…
……………
ভাতের কষ্ট
…………….
মহানগরে ভাতের কষ্ট বলে
আগুন নিভিয়ে
গ্রামের বাড়িতে আলুর খেতে এসে উঠেছি
এখানে ইঁদুরের এতো উৎপাত!
বিষ ও প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যর্থ হলে
লাঠি হাতে ছুটতে ছুটতে শরীরে
বিপ্লবের উত্তাপ জেগে ওঠে
………………
রক্তাক্ত পথচারী
……………….
কী আর করতে পারি?
যখন হতাশ হয়ে আমার দিকে তাকায়
শ্রমিক,মজুর আর আহত কেরানি
নির্ভার ক্রুশবিদ্ধ ভঙ্গিতে যখন
মরবার জন্য বুক তুলে ধরে ছাত্র
আমার আর কী করবার থাকে তখন
ফেরিওয়ালার চোখেও সন্দেহের ঢেউ
জুতায় দাগ দেখে বুঝে নেয় মুচি
আমার পেছনে লেগেছে ফেউ
রক্তচোখ ঘোরায় রাজনীতিবিদ
অদ্ভুত এক ক্ষত আমাকে পোড়ায়
শ্বাসরুদ্ধ আমি যখন ভুগছি ট্রমায়
কী আর করতে পারি?
কলম গুটিয়ে আঙুল কেটে
আমি এক রক্তাক্ত পথচারী!
……………..
কুমিরের কান্না
……………..
আমরা দুঃখ প্রকাশ করি নিরাপদ দূরত্বে এসে
বুটের শব্দ যখন গলিতে গলিতে ঢুকে পড়ে;
রোদের গায়ে কালো চাদর চাপিয়ে
রক্তের রঙে দেয়ালগুলো লিখতে থাকলে
দুঃখ প্রকাশের চাবি হারিয়ে যায় অন্ধকারে
আমরা কুমিরের কান্না কেঁদে
সেনেটোরিয়ামের আলোতে সংবাদ সম্মেলনে বলি:
দুঃখিত দুঃখ প্রকাশের চাবি হারিয়ে গেছে
……………
হোজ্জালজি
…………….
আমাদের গণিত পরীক্ষায়
৫০ কমলা ১৫ জনে ভাগ করতে গেলে
১০ কমলা প্রায়ই পচে যায়!
শেষে হোজ্জা একাডেমিক চর্চায়
আমরা অনুধাবন করতে পারলাম
কমলা পচবেই; আপেল হলে পচত না
আর অংকটাও সহজ হয়ে যেত
ততোক্ষণে আমাদের ভাবনার গভীরে
পচা কমলালেবুর বিশ্রী গন্ধ বেরিয়ে পড়ে!
……………..
তৃতীয় কান
…………….
রিতা হেমব্রমের বাবা
ব্যবসা বোঝে না, বোঝে বিনিময়
তাই আলুর বিনিময়ে
কাপড় কিনে বাড়ি ফিরতে ফিরতে
শ্লোগান শোনে: তুই রাজা কার?
সে ভাবে, এ কুনো কথা হইলো
রাজা তো হামার,রাজা দেশের!
গভীর —রূপক ও প্রতীকী।