১. আপনার প্রথম প্রকাশিত বই কোন টি? কবে প্রকাশিত হয়েছিলো? প্রথম বই প্রকাশের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি কেমন ছিলো?
◆ আমার প্রথম প্রকাশিত বই ‘পালক খসা বলাকার আর্তনাদ’। এটা প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দে। তখন সাহিত্যপত্র ‘অববাহিকা’ সম্পাদনা করতাম। প্রকাশিত হত অববাহিকা সাহিত্য পরিষদ থেকে। এই সাহিত্য সংগঠন থেকেই আমার প্রথম বই প্রকাশিত হয়। ছাপা হয় লেটার প্রেসে, নিজেদের পয়সায়। দুই ফর্মার বই। আবেগ ছিল প্রচণ্ড। প্রথম বই, অনুভূতি ছিল রোমাঞ্চকর। সেটা আসলেই তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ভরা। কবিতা কতটুকু ছিল, সন্দেহ হয়। ১৯৮৬ তে প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘নিহত বিভীষিকা নিরুদ্দেশে’। প্রকৃতপক্ষে এটাই আমার সুসংহত প্রকাশ। এই বইটির প্রচ্ছদ করেছিলেন বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান।
২. সাহিত্যে আপনি কার উত্তরাধিকার বহন করেন?
◆ কোনো বিশেষ কবি বা লেখকের নয়, আমরা যারা লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত, তারা সবাই আমাদের পূর্বসূরিদের উত্তরাধিকার বহন করছি, এমনই আমার ধারণা। ভাষার উন্নতির সঙ্গে সাহিত্যের উন্নতি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আমাদের পূর্বসূরিরা বাংলা ভাষা-সাহিত্যের উন্নতির জন্য যে শ্রম, ত্যাগ স্বীকার করেছেন; আমরা তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রিয় বাংলা ভাষার উন্নতির জন্য, রক্তের বিনিময়ে পাওয়া মাতৃভাষার উত্তরাধিকার বহন করছি, এমনটি বলতে পারি। এই উত্তরাধিকার বহনের মধ্য দিয়ে নিজেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্মাণের চেষ্টা করে চলেছি।
৩. এ যাবৎ সর্ব মোট আপনার কতটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে? এর মধ্যে কোনটি বা কোন-কোন কাজকে বা কোন বইকে আপনি আপনার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি বলে মনে করেন?
◆ এ পর্যন্ত আমার ৩৮টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ২২ টি কবিতার বই। ৮টি গদ্য ও গবেষণা গ্রন্থ। অনুবাদ ১ টি। সম্পাদিত গ্রন্থ ৭টি। আরও চারটি বই যন্ত্রস্থ।
আসলেই লেখকের কাছে সব রচনাই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রন্থ তো লেখকের সন্তানতুল্য। কোনো সন্তানকে পিতা ভিন্ন চোখে দেখেন না। তবু পাঠকের বিবেচনায় কখনও কখনও দুএকটি গ্রন্থ বিশেষ গুরুত্ব পায়। আমার চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ ‘ভালোবাসা এসো ভূগোলময়’ আমার কাব্যচেতনার চুম্বকচিহ্ন বলে অনেকে মনে করেন। তবে আমি আমার ‘ ধর্ষণমঙ্গল কাব্য’কে আমার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি বলে গণ্য করি। মূলত দ্রোহ-প্রতিবাদই আমার মানসসূত্র। অন্যায়-অবিচার-অমানবিকতা, রাষ্ট্রযন্ত্রের পীড়ন, নৈতিক স্খলন, রাজনৈতিক অসহিষ্ণুতা সবকিছুর বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদ ঝলসে উঠেছে এই কাব্যে। এই গ্রন্থ পাঠ করে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একবার বলেছিলেন, “এই একটিমাত্র কাব্যগ্রন্থ থেকেই খসরু পারভেজের কবিত্বশক্তি বিচার করা সম্ভব।” মনে আছে, আপনিও আমার এই কাব্যগ্রন্থ নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন।
আপনি হয়ত জানেন, আমি মাইকেল মধুসূদন দত্তকে নিয়ে কাজ করি। মধুসূদনকে নিয়ে আমার গবেষণাধর্মী গ্রন্থ ‘মধুসূদন : বিচিত্র অনুষঙ্গ’। এই বইটি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে বছরের সেরা বই হিসেবে বাংলাদেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার ‘আইএফআইসি ব্যাংক সাহিত্য পুরস্কার’ ও ‘মহাকবি মধুসূদন পদক’ অর্জন করেছে। দশ বছর ধরে দেশ-বিদেশে এই বইটি প্রচুর গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে আসছে। আমি এই বইটিকেও আমার উল্লেখযোগ্য কাজ বলে মনে করি।
৪. সম্প্রতি প্রকাশিত আপনার নতুন বই সম্পর্কে বলুন।
◆ আমার সর্বশেষ তিনটি কাব্যগ্রন্থ ২০২৩ এর অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে। এই তিনটি কাব্য হল ‘কুড়িয়ে পাওয়া কবিতা’ ; ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ এবং ‘হিন্দুবাদী কবিতা অথবা একাবিংশ শতাব্দীর প্রার্থনা’। আর এ মাসেই প্রকাশিত হতে যাচ্ছে ‘আমার হাইকু’। এছাড়া আমার মধুসূদন বিষয়ক প্রবন্ধের সংকলন ‘মধুসূদনচর্চা : নির্বাচিত প্রবন্ধ’ও প্রকাশিত হচ্ছে।
সর্বশেষ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘হিন্দুবাদী কবিতা অথবা একাবিংশ শতাব্দীর প্রার্থনা’ সম্পর্কে দুটি কথা বলা যায়, এই কাব্যটিও স্যাটায়ার। হিন্দুবাদী কবিতা মানে হিন্দুবাদী চেতনার কবিতা নয়। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর নির্যাতন, পাশাপাশি ভারতে মুসলিম নির্যাতন, সীমান্ত হত্যা ইত্যাদির প্রতিবাদে এই কাব্যগ্রন্থ। ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে, মানবিক সম্প্রীতির সপক্ষে লেখা এই বইটি এরই মধ্যে ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। বইটি ইবুক হিসেবেও প্রকাশিত হয়েছে।
৫. আপনি নিজেকে কোন দশকের কবি-লেখক বলেন? কেন?
◆ কবিকে কোনো দশকের গণ্ডিতে আবদ্ধ করা যায় না। তাই আমি দশকপ্রথায় বিশ্বাসী নই। তারপরও ত্রিশের দশক থেকে কবি-লেখকদের সনাক্তকরণের এই ধারা চালু হয়েছে। সেই হিসেবে আমি আশির দশকের কবি।
এই দশক বাংলা কবিতার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য দশক। বাংলা কবিতায় যে মৃত্তিকাসংলগ্নতা, জীবনঘনিষ্ঠতা, শিল্পের প্রতি দায়বদ্ধতা এসব ধারণ করে আশির দশকে আমি আমার চেতনার বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হয়েছি।
৬. আপনার সমকাল নিয়ে বলুন।
◆ আমার সমকাল প্রতিবন্ধী। কথা বলার অধিকার, মন খুলে লিখবার অধিকার কোনো কালে, কোনো সময়ে এতখানি প্রতিহত হয়েছে কিনা আমার জানা নেই।
পাশাপাশি নির্লজ্জ মিডিয়াবাজি, দলবাজি, পদক বাণিজ্য, একে অন্যের পিঠ চুলকানোর সংস্কৃতি প্রবলভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। চারপাশে আত্মপ্রকাশের বেহায়া উন্মাদনা। যুদ্ধপীড়িত, অধিকার বঞ্চিত, মানবতা পর্যুদস্ত এ এক কলঙ্ককাল।
মিথ্যার চকচকে মার্বেল পেপারে মোড়ানো আমার সমকাল বড় অস্থির, বড্ড মেকি।
৭. সাম্প্রতিক কালে কারা ভালো লিখছে বলে মনে করেন?
◆ অনেকে ভালো লিখছেন। কিন্তু এই ভালো শব্দটা আপেক্ষিক। আমার কাছে যা ভালো, অন্যের কাছে তা মন্দ। তাই কারা ভালো লিখছেন, তাদের নাম বলে আমি অন্যদের বিরাগভাজন হতে চাইছি না। তবে আমি যদি কবিতার কথা বলি, সাম্প্রতিক কালে পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে উদ্ভট,দুর্বোধ্যতার সীমাহীন চর্চা তরুণদের মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে, যেটা কবিতাকে আবারও পাঠবিমুখ করে তুলেছে। আশি ও নব্বইয়ের দশকে আমাদের কবিতা পাঠকের কাছে যে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল, এমনকি শূন্য দশকেও, সেখান থেকে কবিতা সরে এসেছে। এটা স্বাভাবিক ঘটনা। কেননা, কবিতা সর্বদা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না। কিন্তু কবিতার সংজ্ঞা নেই, এই অজুহাতে শুধু শব্দসর্বস্ব, প্রাণহীন, জীবনবিমুখ কবিতার জন্ম হবে, এটা দুঃখজনক।
৮. কোথায় আছেন? কি করছেন? পারিবারিক পরিচিতি জানতে চাই।
◆ শহর ছেড়েছি অনেক আগেই। যশোরের গ্রামেই আমার বসবাস। বাংলাদেশের বৃহত্তম ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের চাকরি থেকে সম্প্রতি অবসর নিয়েছি। সাহিত্যের অনেক কাজ ব্যাংকের কাজের জন্য করতে পারিনি। সেগুলো করছি। গবেষণাধর্মী কিছু কাজে হাত দিয়েছি। নিজে একটি প্রকাশনা করেছি। লেখালেখি, বই-পত্র প্রকাশ এসব নিয়েই আছি। ব্যক্তি জীবনে একা হয়ে গেছি। স্ত্রী প্রয়াত হয়েছেন। এক কন্যা, এক পুত্র। ওরা লেখাপড়া শেষ করেছে। ওদেরকে বিয়ে দিয়েছি। ওরা ওদের মত আছে। কন্যা লেখালেখি ও বাচিকশিল্পে সম্পৃক্ত । পুত্র সাংবাদিকতায় পড়াশুনা করেও পেশা হিসেবে গ্রহণ করেনি। ব্যবসায় সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করছে।
৯. স্বাধীনতা পূর্ব ও স্বাধীনতা উত্তর বাংলা সাহিত্য–কোন ধারায়? কীভাবে প্রবাহিত হয়েছে– হচ্ছে–বলে আপনি মনে করেন?
◆ স্বাধীনতাপূর্ব সাহিত্যের কথা প্রথমেই বলতে হয়। আমাদের সাহিত্য বরাবরই স্বাধীনতা চেতনায় উজ্জীবিত। যখন ব্রিটিশ শাসানাধীনে আমরা ছিলাম তখন আমাদের সাহিত্যে স্বদেশী আন্দোলনের ধারাটি সুস্পষ্ট ছিল। ব্রিটিশরা তাদের চক্রান্তে উপমহাদেশে প্রভাবশালী দুটি ধর্মীয় সম্প্রদায় হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টিতে সফল হলে মুসলমানদের জন্য আলাদা ভূখণ্ডের দাবিতে পাকিস্তানের সৃষ্টি হল। তার আগে আমাদের অধিকাংশ সাহিত্যিকরা সেই পাকিস্তানের পক্ষে কলম ধরেছিলেন। কেউ কেউ ইসলামী চেতনাকে সাহিত্যের উপজীব্য করে অগ্রসর হয়েছিলেন। মনে করা হয়েছিল পাকিস্তানীরা আমাদের সকল স্বার্থ সংরক্ষিত করবে। তা হয়নি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে বিভিন্ন গণআন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীকারের প্রশ্নে জন্ম হয় বাংলাদেশের। তাই আমাদের স্বাধীনতাপূর্ব সাহিত্যে বিপুলভাবে ভাষাপ্রীতি ও স্বাধীনতা আন্দোলনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছে। আর আমাদের স্বাধীনাত্তোর সাহিত্য স্বাধীনতা প্রাপ্তির আনন্দ-উচ্ছ্বাস, অপ্রাপ্তির বেদনাবোধ বিপুলভাবে উৎসারিত। রাজনীতির মাঠের মত,আমাদের সাহিত্যেও দুটি ধারা খুব স্পষ্টত চোখে পড়ে, একটি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের ধারা, অন্যটি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ধারা। আমাদের সাহিত্যের যেসব লেখকরা ইসলামী চেতনায় বিশ্বাসী, তাঁরা সবাই যে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সেটা কিন্তু নয়। আবার যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, তাঁরা যে সবাই ইসলামবিরোধী তাও নয়। অনেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ইসলামবিরোধী বলে ভাবতে অভ্যস্ত। আমি মনে করি ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি কখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিপক্ষ নয়। সমস্যা হল পাকিস্তানী চেতনা পন্থা। আপনি স্বাধীন বাংলাদেশে বসবাস করে পাকিস্তানী চেতনার কথা বলবেন, সেটা হতে পারে না। মনে রাখতে হবে পাকিস্তান মানে কখনও ইসলাম নয়। ইসলাম যে সাম্যবাদ, সমতা, শান্তির কথা বলে পাকিস্তান কখনও তা পালন করেনি। এখনও নিজেদের দেশে তার ছিটেফোঁটাও বাস্তবায়ন করতে পারেনি।
আমাদের সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যে ধারা তা টিকে থাকবে। তবে মুক্তিযুদ্ধের লেবেল এঁটে যারা ফয়দা লুটতে এসেছেন, তারা নিক্ষিপ্ত হবে নর্দমায়।
১০. আপনি কখনো কি কোন পত্রিকা বা লিটল ম্যাগাজিন অথবা সংকলন সম্পাদনা করেছেন? বিস্তারিত বলুন।
◆ সম্পাদনা আমার একটি প্রিয় বিষয়। আমি মনে করি, সম্পাদনাও একটি সৃজনশীল কর্ম। প্রথম যৌবনে আশির দশকে সম্পাদনা করেছি সাহিত্যপত্র ‘অববাহিকা’। ছয়টি সংখ্যা বের হয়েছিল। এরপর সম্পাদনা করেছি ‘ভাঁটফুল’ ; ‘মধুমৈত্রী’ ; ‘সুসংস্কৃতি’ ; ‘পত্রপুট’ ; সবই ক্ষণজীবী। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আমার প্রথম ম্যাগাজিন সম্পাদনা ‘স্মরণ’। তখন খেলাঘর করতাম। মধু খেলাঘর থেকে এটি প্রকাশিত হয়েছিল। তারপর থেকে এ যাবৎ সাইত্রিশটি মধুসূদন স্মরণিকা-সাহিত্যপত্র সম্পাদনা করেছি। এগুলো প্রকৃতপক্ষে লিটল ম্যাগ নয়, সাময়িকী। নব্বইয়ের শুরুতে ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য সাময়িকীও সম্পাদনা করেছি। আর সংকলন তো করেছিই। মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমকাল থেকে নব্বই দশকের কবিরা, যাঁরা মধুসূদনকে নিয়ে বা নিবেদন করে কবিতা লিখেছেন, সেসব কবিদের কবিতা নিয়ে একটি সংকলন সম্পাদনা করেছি। তাছাড়া মধুসূদনের মেঘনাদবধ কাব্য প্রকাশের সার্ধশতবর্ষে একটি বড় সংকলন করেছি। শিল্পী এস এম সুলতানের সাক্ষাৎকারসমূহ নিয়ে একটি সংকলন সম্পাদনা করেছি। আর একটি সংকলনের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়, সেটি হল করোনাকালের কবিতা সংকলন। দেশের ও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় দুইশত কবিদের কবিতা নিয়ে একটি বিশাল সংকলন সম্পাদনা করেছি। ‘কথা প্রকাশ’ থেকে প্রকাশিত সংকলনটি ২০২২ সালে বেস্টসেলার গ্রন্থের তালিকায় ছিল।
১১. লিটল ম্যাগাজিন এর সংজ্ঞা কি? এ নিয়ে আপনার ভাবনা বলুন।
◆ যে সব পত্রিকা প্রথাবিরোধী, স্রোতের প্রতিকূলে অবস্থান করে সেগুলোই লিটল ম্যাগাজিন। সেখানে থাকতে হয় বিদ্রোহ, থাকতে হয় সাহস।
বাণিজ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে লিটল ম্যাগাজিনের বিকাশ। লিটল ম্যাগাজিনের পথ কণ্ঠকময়। পুঁজি নেই, কিন্তু অন্তরের ঐশ্বর্য আছে। সাধ্য কম কিন্তু স্বপ্ন অসীম। বিধ্বংসী নয়, তবে আছে ভেঙে ফেলার প্রবণতা। কাজটি কঠিন। সাহিত্যের জন্য নিবেদিত না হলে এই কঠিন ব্রতে টিকে থাকা যায় না। একমাত্র অনিবার্য তারুণ্যই পারে এই ব্রত ধারণ করতে। একটি লিটল ম্যাগাজিন কত শ্রম, কতখানি ত্যাগ স্বীকার করে প্রকাশ করতে হয়, সেটা একজন নিবেদিত লিটল ম্যাগ কর্মী জানেন। জেনেছি, কাউকে দেখিছি কোনো বিজ্ঞাপন ছাড়াই, পকেটের টাকা খরচ করে, কখনও মায়ের গহনা চুরি করে, পিতার পকেটের টাকা চুরি করে, ধার করে, ধার পরিশোধ করতে না পেরে পালিয়ে বেড়িয়ে, প্রেসে ছাপার খরচ বাকি রেখে অনেক কষ্টে, অনেক জ্বালা, অপমান সহ্য করে এই কাজটি করতে । সম্পাদকের বেকারত্ব, দারিদ্র্য, এক নৈরাজ্যকর অবস্থার মধ্য দিয়েই জন্ম হয় লিটল ম্যাগের। কেন এই কষ্ট স্বীকার? এই কষ্ট মেনে নেওয়া শুধুমাত্র অকুতোভয় আত্মপ্রকাশের তাগিদে। যে কথা অন্যেরা বলে না, সাহিত্যের মধ্য দিয়ে সে কথাটি বলার জন্যে। সকল প্রকার প্রথাকে অস্বীকার করে নতুন ধারার সাহিত্যের জন্ম দেওয়ার জন্যে। লিটল ম্যাগাজিনের অবৈতনিক সম্পাদকের আপোষহীন প্রাণশক্তি থাকে বলেই লিটল ম্যাগাজিন আলোর মুখ দেখে।
বড় বা প্রতিষ্ঠিত পত্র-পত্রিকা সবসময়ই গতানুগতিক ধারাকে পৃষ্ঠপোষকতা করে। তাই সেগুলোর মধ্য দিয়ে সাহসী লেখকের বিকাশ কখনও ঘটে না। প্রতিষ্ঠানকে অস্বীকার করে লিটল ম্যাগ থেকেই উঠে আসে প্রকৃত প্রতিভাবান লেখক।
ষাটের দশক থেকেই বাংলা সাহিত্যে লিটল ম্যাগাজিনের ব্যাপক চর্চা শুরু হলেও আমাদের দেশে
লিটল ম্যাগাজিনের নির্দিষ্ট কোনো চারিত্র্য গড়ে ওঠেনি। আশির দশকে সারা দেশে লিটল ম্যাগ প্রকাশের যে প্রাবল্য ছিল, সেটা আজ আর নেই। প্রকৃতপক্ষে আমাদের প্রতিষ্ঠান বিরোধী সংঘবদ্ধতা গড়ে ওঠেনি। কোনো কোনো লিটল ম্যাগাজিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা নিজেরাই একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। জন্ম দিয়েছেন নব নব গোষ্ঠীর। এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আর এক গোষ্ঠীর অপপ্রচার – বিষোদগার। এরাই আবার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কথা বলেন, আবার বিজ্ঞাপনের জন্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে ধর্না দেন। বড় পত্রিকায় বা দৈনিক পত্রিকার বিরুদ্ধে গালি দেন, আবার লিটল ম্যাগ প্রকাশিত হলে তা দৈনিকের সাহিত্য দপ্তরে পাঠিয়ে আলোচনা প্রকাশের জন্য তদ্বিরে মেতে ওঠেন। দৈনিকের লেখকদের বাজারী লেখক বলে গালি দেন, বেশ্যার সাথে তুলনা করেন, আবার সেই বাজারী লেখকদের নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেন।তাহলে কোথায় রইল লিটল ম্যাগাজিনের আদর্শ? আমি দেখি, এখন দৈনিক পত্রিকার লেখকরা লিটল ম্যাগাজিনে দেদারসে লিখছেন। বাজারী প্রকাশকরা যাঁদের বই ছাপছেন, তাঁরাও লিখছেন লিটল ম্যাগে। এমনকি দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদকও দৈনিকের লেখকদেরকে নিয়ে যে পত্রিকা প্রকাশ করছেন, সেটাকেও তিনি বলছেন লিটল ম্যাগাজিন। প্রকৃতঅর্থে আমাদের লিটল ম্যাগাজিনগুলো ক্রমে ক্রমে সৌখিন সাহিত্যপত্রে পরিণত হচ্ছে।
আর একটা বিষয় উল্লেখ করতে চাই, লিটল ম্যাগাজিনে সেই প্রথাবিরোধী সাহসী লেখা প্রকাশ হচ্ছে কই? বিগত দশ বছরে লিটল ম্যাগ থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন এমন চারজন লেখকের নাম জানতে চাইলে বলতে পারবেন না কেউ।
এখন অনেকে বায়োডাটায় ক্রেজ বাড়ানোর জন্য যেনতেন ভাবে সংকলন করে লিটল ম্যাগাজিন বলে দাবি করছেন। যদি লিটল ম্যাগাজিনকে প্রতিষ্ঠানবিরোধী, প্রথাবিরোধী বলতেই হয়, তাহলে বলব, আমাদের দেশে চার থেকে পাঁচটি লিটল ম্যাগাজিন ছাড়া কোনো লিটল ম্যাগাজিন নেই। আছে অসংখ্য ছোট বড় সাহিত্য পত্রিকা।
তাই বলে নতুন সাহিত্য, নতুন দৃষ্টিভঙ্গিজাত লিটল ম্যাগাজিনের জন্য স্বপ্ন দেখব না, তা কী করে হয়! আমি স্বপ্নবান মানুষ। স্বপ্ন দেখি, আমাদের মূল্যবোধের পতন রোধে, নবতর মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য, কর্পোরেট অহংকারকে গুড়িয়ে দিতে জন্ম হবে নতুন নতুন লিটল ম্যাগাজিনের।
১২. আগামী দিনের সাহিত্য কেমন হবে? আপনার কল্পনায়।
◆ ভবিষ্যৎ বলাটা কঠিন। তবে ধারণা করি, আমাদের সাহিত্যে যে মানবভজনার নামে যে বিকৃতি, আগামীতে তার অবসান হবে। মানুষ সৃষ্টির সেরা, এই প্রচলিত তত্ত্বকথা থাকবে না। মানুষ শ্রেষ্ঠ, তবে কোন মানুষ শ্রেষ্ঠ ; তার ক্লাসিফিকেশন জরুরি হয়ে উঠবে।
মানুষ থেকেই তো মানবতা শব্দটি এসেছে। কোথায় এখন মানবতা? আপনি যে দেশে অবস্থান করছেন, সে দেশের প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে ফিলিস্তিনে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। হাসপাতালে বোমা ফেলা হচ্ছে। হাজার হাজার শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। আমরা মানুষের জন্য কিছুই করতে পারছি? পারছি না। সাহিত্য হয়ত এই নিষ্ঠুর সমকালকে ধারণ করবে। কিন্তু কী লাভ? যদি পৃথিবীতে মানুষ না থাকে, সাহিত্য দিয়ে কী হবে?
আমি হয়ত আমার আক্ষেপের কথা বলছি, হতাশার কথা বলছি। বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষের যুগে এসেও আগামীতে আমাদের সৃজনশীলতা বলে কিছু থাকবে কিনা, সন্দেহ জাগে। আপনি নিশ্চয়ই জানেন, মানুষের সৃজনশীলতাও হাতছাড়া হতে চলেছে। এটা নিয়ে আমি আগেও বলেছি। আবার সেটি উল্লেখ করছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা লিখে দেবে কবিতা,গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ফিচার। লেখককে মাথা খাটাতে হবে না।
বলছি চ্যাট জিপিটির কথা। ২০১৫ সালে গুগলকে টেক্কা দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছে এই চ্যাটের। এটি লঞ্চ করার এক সপ্তাহের মধ্যে এর ব্যবহারকারী জুটে যায় দশ লাখ। যেখানে টুইটারের লেগেছিল দুই বছর, নেটফ্লিক্সের লেগেছিল সাড়ে তিন বছর, ফেসবুকের দশ মাস, ইনস্টাগ্রামের তিন মাস। তাহলে বুঝুন, ব্যাপারটি! কত দ্রুত এই চ্যাট জিপিটি আমাদেরকে গ্রাস করে চলেছে।
এটি হল, জেনারেটিভ প্রাক-প্রশিক্ষণ ট্রান্সফর্মার। এটাও এক ধরনের রোবট। ওপেন এ আই দ্বারা তৈরি এটা একটি ভাষা মডেল। গবেষক ও প্রকৌশলীদের দ্বারা গঠিত একটি কৃত্রিম গবেষণাগার। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যার উদ্ভাবনী শক্তি।
চ্যাট জিপিটিতে ইন্টারনেটের টেক্সট ডাটাবেস ভরা। ইন্টারনেটের ওয়েব পেজ, ওয়েব টেক্সট, বই, উইকিপিডিয়া, আর্টিকেলসহ বিভিন্ন সোর্স থেকে বিপুল ডাটাসমৃদ্ধ এই চ্যাট । এতে আছে ৩০০ বিলিয়ন শব্দের অবিশ্বাস্য বিশাল ভাণ্ডার। যেখান থেকে সমাধান মিলবে আপনার প্রশ্নের। প্লে স্টোর থেকে অ্যাপস নামিয়ে ওপেন করে প্রশ্ন করলেই হল। পেয়ে যাবেন উত্তর।
ধরুন, আপনি এখন একটি কবিতা লিখতে চান। চ্যাটকে বলতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে লিখে দেবে। যেমন ,আমি নিজেই এটা করে দেখেছি। ভাবলাম, প্রেম-ট্রেম জাতীয় সস্তা কিছু চাইব না। একটি কঠিন কিছু চাইব। ওকে বললাম, ”আমি একটি কবিতা লিখতে চাই ‘অচল মুদ্রা’ নিয়ে। লেখা যাবে কি?” ও বলল, ”আসুন চেষ্টা করা যাক।” শুরু করল লেখা। সে লেখাটি এরকম:
অচল মুদ্রা
” শীতল বাতাসে ঝড়-তুফান হয়ে যায়,
জড়তারিত সঞ্চার করেন আমাদের অচল মুদ্রা।
জ্বলজ্বলকর অগ্নিধারা যেন তার আঁধার,
সামনের মাঝে একা স্থান নিতে প্রসব করে সে যদি চাই কোন স্বপ্নের মতো জীবন।
অচল মুদ্রা বলে কিছু না কিছু,
কিছু না কিছু মনে থাকে সদা
এ বাঁশির নাদের মত সুর।
কিছু না কিছু ভেবে কখনোই সমাপ্তি না হলেও
সমাপ্তি হতে পারে পাইকারির সমুদ্রে।
অচল মুদ্রার আঁচল যেন আলোকিত জাগরণ,
শিশির পুকুরে হানা স্নেহের ঝর্না।
পৃথিবীর ছায়াতলে উপস্থিতির মাঝেও
সানার আলোকে বসন্তের ফুলের রঙিন প্রজনন।
স্বপ্নের কোল সঠিক দিশায় নামাতে
অচল মুদ্রার মুখে থাকে সদা পরীক্ষা।
কষ্টদায়ক স্বপ্নগুলোও ধারালপততায়
আশা ভীষণ করে দেখানো সে সবটি নাকি।
ঊর্ধমন্ডলে সূর্যের মাঝে কেসার জাতি রঙের,
সেই রঙে উন্মুক্ত করে দেয় সে নিত্য যাত্রায়।
অচল মুদ্রার স্বপ্নে সে স্বর্ণের মত উৎসাহে
নিজে অবদান করে তাঁর ঘোষণা হয়ে যায় স্থায়ী জীবনের সন্ধানে।”
দেখুন, চ্যাটবট কবিতাটি লিখে দিল। স্পেসও করে দিল। কিছু অসংলগ্নতা তো আছেই। তারপরও দেখুন, চিত্রকল্পের ছোঁয়াও রয়েছে কোথাও কোথাও। যেটুকু নিজে একটু বুদ্ধি খাটিয়ে একটু এদিক-ওদিক করে নিলেই তো হয়ে গেল কথিত কবিতা! কথিত বললাম, এজন্য যে, ইদানীং এমন উদ্ভট, অর্থহীন কবিতা তো লেখা হচ্ছেই। যেখানে জীবন নেই, হৃদয় নেই। সন্দেহ জাগে, চ্যাট থেকে কবিতা নিয়ে অনেকে ফেসবুক বা পত্রিকার পাতা ভরছে কিনা! সম্প্রতি চ্যাট দিয়ে লেখা অন্তত দুটি উপন্যাস রচনার কথা বাতাসে ভাসছে।
চ্যাট বটে প্রশ্ন করলে, যেখানে সে অপরাগ, সেখানে সে কখনও বলে, ”আমি এখনো শিশু, সময় দিন।” কখনও বাংলায় লিখতে লিখতে হিন্দি বা হিব্রু লিখে ফেলবে। জিজ্ঞাসা করলে বলবে, “ইংরেজি হলে ভালো পারতাম।” এসব সত্ত্বেও ক্রমে ক্রমে সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠছে চ্যাট জিপিটি। শিশু অবস্থায় যদি এমনটি হয় ; ম্যাচিউরড হলে কী হবে!
এটা কী মানবজাতির জন্য আশীর্বাদ, না অভিশাপ? এরই মধ্যে এর খারাপ দিকটি নিয়ে আলোচনায় সরব উন্নত বিশ্বের সচেতন মানুষেরা। এর প্রভাব পড়বে প্রযুক্তি নির্ভর চাকুরি,গণমাধ্যম, আইন পেশা, মার্কেট রিসার্চ এনালিস্ট, শিক্ষকতা,আর্থিক খাতের চাকুরি, পুঁজি বাজার, গ্রাফিক্স ডিজাইন, হিসাব রক্ষণের কাজ, গ্রাহকসেবা প্রভৃতিতে। সব চ্যাট করবে। মনুষ্য শ্রমের দরকার কী! ত্রিশ জন কর্মচারী ত্রিশ দিনে যে কাজ করবে, দুই দিনেই সেটা করে দেবে চ্যাট। সাশ্রয় হবে অর্থ ও সময়ের।
তবে এর ভয়াবহতা সুদূরপ্রসারী। এটা বুঝতে পেরে, এরই মধ্যে আমেরিকা, ফ্রান্সের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এটার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিভিন্ন দেশে এটা নিয়ন্ত্রণে আইন করা হচ্ছে। তারপরও থেমে থাকবে কি!
সবই তো মানুষের সৃষ্টি। মানুষই তো মানুষকে হত্যার জন্য মারণাস্ত্র, বোমা তৈরি করে। সম্প্রতি রোবটরা সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেছে,–” তারা কখনও মানবজাতির জন্য বিদ্রোহ ঘোষণা করবে না এবং মানুষের কর্মসংস্থান কেড়ে নেবে না।” তারপরও মানুষের তৈরি এই রোবট, চ্যাট জিপিটি যদি একদিন মানুষেরই ঘাড় মটকে খায়, আশ্চর্য হওয়ার কিছুই থাকবে না।
কবিতাটির দিকে খেয়াল করে দেখুন, এখানে আবেগ নেই, আন্তরিকতা নেই, হৃদয়ের সংযোগ নেই। কবিতা শুধু কি বুদ্ধিমত্তা দিয়ে লিখলে হয়! না, কবিতা লিখতে হয় হৃদয় দিয়ে। আপনি যদি সৎ ও সত্যকবি হন, নিশ্চয়ই চ্যাটের কাছে কবিতা চাইবেন না। অপেক্ষা করবেন স্বতোঃস্ফূর্ত উৎসারণের জন্য।
চোর তো রয়েছেই। বই, ফেসবুকের পাতা থেকে হুবহু চুরি হচ্ছে। কিছু চোর ব্যাটবটকে বন্ধু করে নেবে। এত নেতির মধ্যে আশা জাগে, কৃত্রিম কবিতা থাকবে না। যা অকৃত্রিম, সহজাত তাইই টিকে থাকবে।
ধারণা করি, আগামীর সাহিত্য হবে এই অতি অগ্রসর বিজ্ঞান আর মানববৃত্তির অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রকৃত মানস বিকাশের সমন্বয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিগত সাহিত্য। তবে তা জীবন থেকে কখনও বিচ্ছিন্ন হয়ে নয়।
—–
১৫ নভেম্বর ২০২৩
সাক্ষাৎকার গ্রহণে : সাজ্জাদ বিপ্লব
আপনি সত্যিই অসাধারণ!
অসাধারণ লেখনীর হাত আপনার!!
বলার ভাষাও তেমনি প্রাঞ্জল, মাধুর্যময়!!!
নিতান্তই একজন স্বভাবকবি, অনন্য মানুষ!!!!