spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদকবিতাপ্রেম ও প্যারিস

লিখেছেন : সাজ্জাদ বিপ্লব

প্রেম ও প্যারিস

সাজ্জাদ বিপ্লব

[তসলিমা নাসরিন, আপনাকে]

.…

অনেক দিন পর

…..

অনেক দিন পর, দেখলাম

তুমি ইলিশ রাঁধছো এবং চুল বাঁধছো

রয়্যাল চায়না তে তোমার প্রিয় মেনু

ডিমসুম খাচ্ছো

ম্যাঙ্গো পুডিং খাচ্ছো

শুধু, খাচ্ছো আর খাচ্ছো আর নাচছো

শান্তিতে কি বাঁচছো?

….

নস্টালজিয়া

…..

তাহলে

নস্টালজিয়াও টানে তোমায়?

তুমিও পিছন ফিরে

দেখো!

দেখো, নিজেকে

নিজের পরিবার(?), আত্মীয়জন

পাড়া-প্রতিবেশী

নিজ দেশ–প্রতিবেশ

তুমিও রঙ-তুলি

ধরো

দাও আঁচর

ইজেলে

টানাও ও রাঙাও

ঘর-দোর, মন ও জানালা

টানো বুকে ব্যথার

আঁচল

আড়াল করো

যত সব দু:খ, ব্যথা

অব্যক্ত কথারা

করে ভীর

গোপনে

তোমার কাব্যে

জানি না কবে তুমি

আমার মতো 

ভাববে।

…..

চীন

…..

চীনে গেলে। চীনে চেনা, অচেনা, অল্পচেনা মাও কে দেখলে। সুন্দর সকাল দেখলে। ইউনিভার্সিটি দেখলে। নতুন সিটি দেখলে। ইউনিক ইউনিভার্স দেখলে। পুলিশ দেখলে। সুভেনীর শপ দেখলে। সাপ দেখলে বা শাপ দেখলে কি কোথাও? কিম্বা অভিশাপ? সন্তাপ? মনস্তাপ? মনোচাপ? পাপ?

চীনে গেলে। কিন্তু নিজেকে চিনে গেলে কি!

…..

জন্মদিন

…..

আজ তোমার জন্মদিন

তুমি কয়েক পদ রাঁধবে, সুন্দর ও পরিপাটি করে চুল বাঁধবে

গাইবে, নাইবে

যা বা যা-যা চাও হাত বাড়ালেই হয়তো পাইবে

তোমার কাটার কথা দারুণ একটি দিন।

(সুন্দর করে সাজছো, চুল ছাঁটছো, বমকাই পড়ছো)

কিন্তু, তবু তুমি মলিন।

……

উড়াল পুল অথবা রাজনীতি

..….

থাক না, উড়াল পুলের কথা, রাজনীতির কথা, ভগবানের কথা

এসো, আলাপ করি অন্য কথা, অন্য কিছু

ভয় বা ভীতি কি ছাড়ছে তোমার পিছু-পিছু?

তুমি কি ছাড়িয়ে যাচ্ছো উঁচুনিচু? সকল কিছু? বা নকল কিছু?

তোমার জাল বা ভ্রান্ত চিন্তার মতো! ভ্রান্ত্রির মতো। ক্লান্তির মতো। না-কি বাড়িয়ে যাচ্ছে ক্ষত। কত শত। আমার মতো।

……

হাতি

…….

হাতে তোমার হাতি

সাথে তোমার হাতি

তোমার মাথায় হাতি

হাতি তোমার ঘরেও

তুমি পুড়ে যাচ্ছো

হাতি জ্বরে

কিন্তু কোথাও

হাতি চড়ে যাচ্ছো না

ইচ্ছে করলেই ফুঁ দিয়ে হাতি তুমি

মারতে পারো

কি দয়ালু তুমি

হাতি তুমি মারছো না!

শয়নেস্বপনে হাতি

তবু তুমি  ছাড়ছো না।

…..

রঙ

..…

তুমি রঙ মাখো, ছড়াও আবীর

উদযাপন করো বসন্ত

বাসন্তী, জর্জেট, বমকাই

তোমার চাই-ই চাই!

রঙ তোমার মনে, দেহে

ভিতরে-বাহিরেও তুমি রঙিন

কিন্তু মন তোমার, মিন।

আই মিন, ছোট।

তুমি এদো। পঁচা কাদা।

…..

মেয়ে

…..

তোমার মধ্যে একটি মেয়ে আছে

একজন মেয়েমানুষ আছে ছেলেবেলা আছে   [তুমি তো আবার মেয়েবেলা বলতেই বেশি পছন্দ করো!] ছেলেমি [আমি কি “মেয়েমি” বলবো?] আছে

তোমার খ্যাতি ও কুখ্যাতির মোহ আছে

তোমার সুন্দর [কিন্তু প্রায় ফুরিয়ে যাওয়া একখান রূপ ও সৌন্দর্যময়] দেহ আছে…আপতিক দৃশ্যমান সব আছে

অনেক কিছুই আছে…

কিন্তু তোমার সুন্দর মন নেই!

…..

ভালোবাসতে

…..

তুমি ভালোবাসতে ধলেশ্বরী

তুমি ভালোবাসতে জলেশ্বরী

তুমি হাঁটতে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, 

করতোয়ার তীর ঘেঁসে

তুমি হাত ধরতে

তুমি হাত ধরাতে

হয়তো জড়াতেও আলিঙ্গনে, অঙ্গাঙ্গী

তোমার যা যুদ্ধংদেহী ভঙ্গী!

আসলে তুমি মন ও মননে

একরোখা, একচোখা, একরঙা

একদম আমারি মতো জঙ্গী।

…..

সময়

…..

কে বলে তোমার সময়

দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে!

তুমি ফুরিয়ে যাচ্ছো!!

তোমার রূপ-রস-যৌবন

ঘ্রাণ নিতে বা প্রাণ ফিরে পেতে

তুমি ছুটছো বোগেনভিলিয়ার কাছে

রোদ লাগাচ্ছো হাওয়া খাচ্ছো

বেড়াচ্ছো, হাঁপাচ্ছো, কাঁপাচ্ছো

কাঁপছো

কখনো কি ভাবছো

কি হারাচ্ছো?

…..

বিকেল

…..

তোমারো তাহলে

বিকেল আছে!

তাও আবার মেঘলা

বিকেল–

সকাল এবং সন্ধ্যে

বলো না যেন,

এ বিকেল টা বন্ধ্যে

বলো না আমায়, আবার

আয়, মন দে…

…..

মন ও শরীর

..…

বেশ তো জানো

তোমার শরীরও চাই

মনও চাই

মন ও শরীর কেমন

একে অপরের পরিপূরক

একটি ছাড়া–

অন্যটি নাই

আমিও এমনটি চাই

এমন কি পাই?

এ মন কি পাই?

…..

চা’য়ের দোকানে

……

চা’য়ের দোকানে তুমি

চা পান করো

তারপর যা ইচ্ছে খুশি

তা, পান করো

গল্প করো আনন্দ করো

ভোগ করো, উপভোগ করো

আবার দেশ, মানুষ ও ধর্মকে তুমি

ভাগ করো

কেউ-কেউ যদি তোমার এসব

ভুল ধরে, তবে যে

রাগ করো!

…..

তুমি

..…

তোমার ভাষা তোমার প্রতিবাদ

তোমার কর্ম তোমার ফল

তোমার মন তোমার ধর্ম

তোমার আচরণ তোমার জল

তোমার ছবি-ই তুমি

তোমার ভূমিও তুমি

……

লাল

……

লালে লাল দুনিয়া।

তোমার দুনিয়াও লাল। তুমি লাল। কামাল। তোমার শাড়ি লাল। ভেতর লাল। বাহির লাল।

কিন্তু, তোমার, মন কালো।

…..

জিজ্ঞাসা

……

আর কি করতে চাও

তুমি?

কি-কি করলে মিটবে তোমার

তেষ্টা, চাহিদা ও নষ্টামি?

প্রকাশ্যে রাস্তায় ও রেস্তোরায় চুমু

চাদের আলোয় সমুদ্রপাড়ে সঙ্গম

নিবিড় অরণ্যে সেক্স

এনিম্যালের কাছে তথা পশুদের কাছে

কুকুরের কাছে, বানরের কাছে

বিশেষকরে বনোবোদের কাছে শিখতে চাও যৌনতার পাঠ

সঙ্গমগুলো তোমার কাছে মনে হয় ধর্ষণ

ভালোবাসাগুলো ঈর্ষা

এ-ই তো!

জেনে রাখো, পৃথিবী হাঁটবে পৃথিবীর পথে

এ কূল থেকে ও কূলে

মানুষ মানুষ-ই থাকবে

ভুল করবে ভুল ভাববে তবু ভালোবাসা থাকবে, ভালো ভাষা ও ভাব থাকবে

তুমি হাঁটবে অন্ধকারে

ছন্দ পাবে না ফিরে

কোন অরণ্য বা সমুদ্রতীরে

আজীবন তুমি হারাবে তোমাকে

ফিরে-ফিরে

…..

ইয়ান

…..

রাস্তায় ফেলে দেওয়া কোরিয়ান ইয়ান এর সঙ্গে

তোমার দেখা সুইডেনে

ইয়ান এর কোন পিছুটান নেই, নেই হোম সিকনেস

তোমার আছে কি? হোম অথবা সিকনেস?

সারা পৃথিবী এখন তোমার ঘর

তুমি বসত করো জগৎ জুড়ে

মাটি ফুঁড়ে নিশ্চয় তুমি আসোনি!

তুমি পেয়েছো, খ্যাতি-কুখ্যাতি, প্রচার ও প্রোপাগান্ডা

যা-যা তুমি চেয়েছিলে বা চাও

তার সব টুকু

কিন্তু কোন স্বদেশ পাওনি

…..

ইচ্ছে

..…

কীভাবে তুমি মরতে চাও?

মারতে চাও-ই বা কীভাবে? কেমন করে?

অর্গাজম পেতে-পেতে? (মানে পছন্দমতো সঙ্গম করতে-করতে?), উপন্যাস লিখতে-লিখতে (মানে কেচ্ছা কাহিনী বানাতে-বানাতে?), মঞ্চে কবিতা পড়তে-পড়তে? (তুমি তো মঞ্চের-ই মেয়ে!), না-কি ঘুমের মধ্যে? (দু:স্বপ্ন দেখতে-দেখতে? কেননা, তুমি যা দেখো বা কল্পনা করো তা, দু:স্বপ্ন ছাড়া আর কি?)…

এই-ই তো তোমার ইচ্ছে বা সাধ?

দেখা যাক, তোমার সৃষ্টিকারী কোথায় গিয়ে টানেন তোমার আর তোমার সাথীদের স্বপ্নের, কল্পনার বালির বাঁধ!

…..

প্যারিস

…..

কাল সারা দুপুর সারা বিকেল

তোমার প্রিয় শহর প্যারিসে হেঁটেছো

ডিনার সেরেছো লাঞ্চ সেরেছো

ক্যাফের তেরেসে বসে কফিতে চুমুকও দিয়েছো

মেঘে-মেঘে বৃষ্টিতে ভিজেছো

এ শহরে ছিলে এ শহরে নাই

কত স্মৃতি ভীড় করে সময়ের জানালায়

কত পাখি ওড়ে স্মৃতি জুড়ে

তুমি ছুটে চলো নিরুদ্দেশে

…..

দেশ

..…

বন্ধুরা তোমার দেশ।

তবু, তোমার দেশ আছে, বন্ধুও আছে

হাসি আছে, হাসি মাখা মুখ আছে

দেখলেই বোঝা যায় (বিকৃত হলেও) সুখ আছে

তুমি হয়তো তোমার মতো এ দুনিয়ায় সুখিও আছো

নরওয়ে যাচ্ছো মধ্য রাতের সূর্য দেখতে

(অথচ আমার বুকে আজ সূর্য অস্ত যাচ্ছে)

শুধুই কি সূর্য দেখো?

(আরো কত কি দেখো ও দেখাও, কে জানে!)

সুইডেন ছাড়ছো নিউইয়র্ক ছাড়ছো কলকাতা ছাড়ছো

ঠাঁই নিচ্ছো কি কারো হৃদয়ে?

…..

প্রেম ও প্যারিস

..…

আবারো বললে প্যারিসের কথা

প্রেমের কথা তোমার কথা

সুখে না-সুখে থাকার কথা

দুখি মানুষদের কথাও বললে কি?

তাও বললে একটু-একটু

বুকিনিস্তদের কথা বললে

হেমিংওয়ের কথা বললে

হোমলেস জিপ্সীদের কথা বললে

সুখের নহরে নয়

প্যারিসের পাতাল ট্রেনের নিচে

অসুখিদের ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা বললে

জ্যাঁ-পল সাত্রের কথা উঠলো

সিমন দ্যা বোঁভয়ার কথাও উঠলো

প্রেমের শহর বা কবিতার শহর বলতে

কেউ-কেউ প্যারিসকে বোঝায় (এখনো হয়তো অনেকে তা-ই বোঝায় বা বোঝাতে চায়!), তাও বললে

তোমার সখের কথা কিছু যে বললে না!

…..

অবিশ্বাস

..…

এ এক অদ্ভূত অবিশ্বাস চারিদিকে

ভারী হয়ে আছে আলো ও বাতাস

কালো অন্ধকারে ঢাকা তোমার চতুর মুখ

তুর ইফেল ঘিরে সতর্ক দৃষ্টি

তোমার মায়াবী চোখ ও দেহেও সন্দেহের গন্ধ তাদের

গোলাপি ঠোঁটেও আস্থাহীনতা, অনাত্মীয়তা

নিরাপদ আশ্রয়, আস্থার খোঁজে

আজ তুমি হোমলেস

……

জীবন ও যৌবন

…….

দেখো, জীবন-যৌবন কিছুই বসে থাকে না

কারো জন্য। অন্য কারো অপেক্ষায়।

যায়! চলে যায়। ও একেলা। নিরালায়।

আটপৌরে জীবন। ছন্দ ও বর্ণহীন মন

কেঁদেও পায় না ফিরে।

ইউনিক ক্যামেরা। রিঙ্কেললেস অপশন

কিছুই আটকাতে পারেনি তোমার এ কদর্যতা

তুমি সেল্ফিতে আকর্ষণীয়া, কিন্তু মনে কদর্য।

…..

ঘৃণা ও ভালোবাসা

……

কেউ বাসুক না বাসুক

আমি তোমায় বাসি, ভালো যে বাসি

তোমার চোখ, মুখ, বুক

তোমার রূপ, অপরূপ

কিন্তু ঘৃণা করি

তোমার হৃদয় ও চিন্তা

তা ধিন ধিন তা।

….

যুদ্ধ

….

কে চায় যে যুদ্ধ বলো?

আমি তো শান্তির পক্ষে

পৃথিবী জুড়ে যেখানে যত শান্তি বাণী উচ্চারিত হয়

শিশুর হাতে দোলে সাদা পতাকা

অস্ত্র পরিণত হয় ফুলে

সেখানে আমায় পাবে, সকলের আগে

তোমার সম্মুখে

….

চাওয়া-পাওয়া

…..

খাবো না কেন?

খাবো।

যদি, তুমি দাও

আরো–

চা’বো।

পা’বো কি, না–

পা’বো–

কে, ভাবে?

এভাবে!

আমি তো

ভাবি না

দেওয়া না দেওয়া

তোমার ইচ্ছে, আমার

দাবী না।

……

সাদা’তে

..….

সাদাতেও তোমায়

দারুন মানায়

কি যে সেক্সি লাগে!

আমি কি তোমার প্রেমে পড়ছি?

আমি তো লড়ছি

নিজের সাথে

নিজের স্বার্থে

দেশের এই দুর্দিনে

আমায় কি প্রেমে মানায়

আমি আছি দেখো এক

আজব জমানায়!!

…..

পুরস্কার

..…

জীবনে অনেক পুরস্কার তুমি পেলে

হয়তো আরো পাবে

আরো খ্যাতি, সন্মান ও প্রতিপত্তি

হুমড়ি খেয়ে পড়বে তোমার সদর দরোজায়

দেশ-বিদেশের বিভিন্ন টি.ভি চ্যানেল,পত্র-পত্রিকা, প্রকাশক লাইন দেবে তোমার বাড়ির সামনে

দিকে-দিকে প্রচার হবে তোমার বলিষ্ঠকণ্ঠ

পিঁপড়েরর সারির মতো ফুল ও ফল হাতে আসবে তোমার ভক্তকূল

তোমার নাম লেখা থাকবে পৃথিবীর ইতিহাসে

কিন্তু

মরণের আগে ও পরে তুমি

সুখ পেলে না!

……

থাকা না থাকা

.…..

এখনো আছো

এখনো থাকো

ওগো, ঋতুমতী

যৌবনের কাছাকাছি

দেখো, জীবন ও যৌবন

অনিন্দ্য সুন্দর!

বাঁচো সুন্দর

বাঁচো প্রাকৃতিক

যেমন বাঁচে প্রকৃতি

বাঁচে গাছা-গাছি।

…..

রক্ত ও পাপ

.….

দেখো, তোমার রক্তে

ভেসে যায়

তোমার পাপ

কলমে, তুলিতে, কালিতে

পড়ে থাকে কী সুন্দর

কলঙ্ক ছাপ!

[তসলিমা নাসরিন এর আঁকা ছবি দেখে]

…..

এই যে

.….

এই যে, তুমি আমার

সবটুকু চাচ্ছো

না দেওয়ার টুকু সহ

আমাকে না ভালো বেসেই

আমাকে না ভালো দেখেই

আমাকে প্রেম দিতে চাচ্ছো

প্রেমের নামে হেম দিতে চাচ্ছো

কাম দিতে চাচ্ছো

নাম দিতে চাচ্ছো

সব দিতে চাচ্ছো

সুখি হতে চাচ্ছো

আমি কি চাচ্ছি তোমার সব?

তুমি কি একবারো তা ভাবছো?

……

খিদে

..….

অনেক-অনেক দিন পর তোমার খিদে পেয়েছে

তুমি অপেক্ষা করছো গ্রিল ফিশ ও স্টাফড ভেজিটেবলস এর জন্য

পরনে পুরনো সানগ্লাস নতুন জিন্স- টি শার্ট

তুমি আগের মতোই ধূর্ত, চালাক এবং স্মার্ট

একটুও বদলাওনি। বদলাও না।

আমিও আমার মতো। আগের মতোই।

বদলাইনি। বদলাই না। অপরিবর্তিত।

যার-যার যায়গায়।

যুদ্ধও চালিয়ে যাচ্ছি।

…..

পিঁপড়ে

…..

তারপর হঠাৎ তোমার মনে হলো

এই জীবন, মানুষ জীবন, পিঁপড়ের মতো

সামান্য এবং ক্ষুদ্র

বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের এক ধূলিকণা তুমি

ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে তোমার জীবন তোমার যৌবন

কেউ মনে রাখছে না। রাখবে না।

তুমি চলে যাচ্ছো বা যাবে দর্শক হয়ে

তোমার নতুন এই দর্শন তোমাকে

তবু, শান্তি বা শাস্তি দিচ্ছে না

…..

ফটোগ্রাফি

..…

বহুদিন পর তুমি স্টুডিও গেলে। ফটো তুললে।

ফটোগ্রাফিও দেখলে।

সান্নিধ্য পেলে ফটোগ্রাফারদের।

কত কিছু জানলে। কত কিছু শিখলে।

শেখালেও কত কিছু।

তারপর নিজেই হয়ে গেলে অবাক ফটোগ্রাফি।

……

ফিফথ এভিনিউ

…….

তুমি বিয়ার পান করো

মাঝরাতে ফিফথ এভিনিউ যাও

ঘোরো এপেল স্টোর, টি পার্টির আলাপ করো, ১৯৯৩ সালের ঢাকার ছবি আপ্লোড করো, হিজাবী বাচ্চাদের চুপি-চুপি ছবি তোল…ইচ্ছে স্বাধীন, যা খুশি তাই করো…

বই ও মেলা নিয়ে তোমার আক্ষেপ ও আদিখ্যেতার শেষ নেই…

তুমি নিজেই জানো না

কোন পতঙ্গের টানে তুমি ওড়ো এবং মরো…

……

নেই, কিছু নেই

..….

তুমি লিখলে,’নেই, কিছু নেই’–মা’কে ছুঁয়ে দেখার গল্প

আহবান জানালে, মা’কে পড়তে

মা’কে ভালোবাসতে

মা, মানে– দেশ, মাটি ও সংসার।

জীবনের উৎস। প্রাণের শুরু।

তুমি জীবন বোঝ না। মা’কেও না।

তোমাকে বোঝ কি?

……

ক্লোনিঙ

..….

কার্ডের ক্লোনিঙের কথা বললে

কোপাকাবানা বীচে টাকা খোয়ানোর কথা জানালে

জানালে, তুমি জানতে না ফ্রডের কথা

রিপোর্ট করলে রিও পুলিশ বরাবরেও

ভাবছি, তুমি চলে গেলে তোমার

ক্লোনিঙ সম্ভব কি-না!

আরও পড়তে পারেন

1 COMMENT

  1. দীর্ঘদিন পর কবি সজ্জাদ বিপ্লবের একগুচ্ছ কবিতা পড়ে মুগ্ধ হয়েছি। অসাধারণ বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা মিশ্রিত অনুভূতি কবিতার ছত্রে ছত্রে ছড়ানো। আছে কবির বিশ্বস্ত অনুসন্ধান। নিবিড় পরিচর্যা সমেত জীবন জিজ্ঞাসা। প্রশ্নের পর প্রশ্ন। এটাই কবির দিগ্বিজয়ী মানবিকতা। জয় হোক কবিতার, জয় হোক মানবতার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ