১। বাকস্বাধীনতা
আমার হাত দুটো কেটে নাও
ছিদ্র করে দাও কণ্ঠনালী
পায়ে পরিয়ে দাও শিকল
মুখে লাগিয়ে দাও
সাইলেন্সার।
গোঙানির সুরেও যে
স্বৈরশাসক বলছি তা যেন কেউ
না শুনে!
২। মাইক্রোইনজেকশন
পরিত্যক্ত টয়লেটগুলো জমা হয়েছে সিংহাসনের মাথায়
তিনি ভুগছেন সংকর যন্ত্রণায়!
ইতিহাসের স্বচ্ছ ছবি দেখেন অসচ্ছ প্রতিবিম্বে
যেহেতু তিনি রাষ্ট্র।
ক্লোনিং করে কাঙ্ক্ষিত জীব পাওয়া যায়
আমি আশাবাদী-স্বপ্ন দেখি অনাগত আলোর
ইচ্ছে করে সত্যের মাইক্রোইনজেকশন পুশ করি!
মোড়ে মোড়ে গড়ে উঠবে আলোর মশাল
আলোকিত হবে সংসদ।
৩। পচনের পচা কথা
বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিয়ে বাংলাদেশের না থাকাতে
কোনো আফসোস নেই
আমি পড়েছি ‘গাভী বৃত্তান্ত’
লেজকাটা শেয়াল সবাইকে লেজ কাটার পরামর্শ দিবেই
তবে নেই কোনো প্রজ্ঞাবান!
পত্রিকার অলিতেগলিতে শিশু ধর্ষনের কালোকালি
মায়েরা শঙ্কিত!
বুকের দুধ খাইয়ে আদর যত্নে একএকটা ধর্ষক বাড়ানোর লজ্জা
বাবার দুঃখ আরও গভীরে!
তিনি মুখ লুকিয়েও কাঁদতে পারেন না
বিচ্ছেদের উর্ধ্বসূচক দেখে কেঁপে উঠে সংসার বিশ্বাসী–
অনাগত সংসার!
কাবিননামা আটকে আছে বিয়ের গলায়
অতএব
ডাস্টবিনে পাওয়া যায় গলিত সমাজের নিরেট প্রতিচ্ছবি
নিষিদ্ধ কোলাহলে বেড়ে উঠা নিষ্পাপ নর্দমা
সাংবাদিকের নোংরা দৌড় দেখে হাঁপিয়ে ওঠেছে–
সমাজের লাল শাড়ি
তাদের কোনো শুক্রাণু নেই
স্বাধীন বণ্টনের সূত্র আলোচনা করে কী লাভ?
বাংলাদেশকে স্বর্গ আখ্যা দিয়ে আমরা বিদেশে যাই
আপাদমস্তক লুটিয়ে পড়ি বিদেশি কামনায় !
আমাদের কোনো লজ্জা নেই
পুষে রেখেছি একগুচ্ছ গৃহপালিত বুদ্ধিজীবী…
পরদিন
পত্রিকায় জায়েজ ফতোয়ার ছড়াছড়ি
আমরা হাতিরঝিলে যাই
ঘুরেবেড়ায় পতেঙ্গা সী-বিচ
সংবাদ সম্মেলন করি স্বদেশের সৌন্দর্যকীর্তন করে
পাসপোর্ট নেই বলে
কিন্তু সবাই ভাবে দেশপ্রেমিক
মাননীয় মুকুট আমাদের আদর্শ!
সমস্ত মাতলামো তিনি টিভি পর্দার বাইরে করেন
কিন্তু আমরা দেখি বিটিভি!
দেখতে দেখতে অশ্রু বিসর্জন দিই
তোষামোদ শুনি দুগ্ধপোষ্য চ্যানেলে
আমরা খুব বিনোদনপ্রিয়
তাই কিছুদিন পর পর নির্বাচন দেখতে ভালোবাসি
আমাদের আছে ইসি
হাসতে হাসতে সবাই বলে ছিঃ ছিঃ
তবুও ভোর সকালে কেন্দ্রে যাই
মৃত বউয়ের সন্ধান পাবার আশায়!
তাই বলছি আফসোস করো না প্রিয়,
অন্ধকারেই যখন জীবন
তবে হাতড়িয়ে চলার অভ্যাস করি!
৪। তদন্ত কমিটি
এখন হামেশায় কবর থেকে মুর্দা তোলা হয়
সত্য সন্ধানে অলস প্রচেষ্টা
এভিডেন্স পুড়িয়ে এভিডেন্স খোঁজা
বুঝতে বাকি নেই রিহার্সাল শেষ
যার পরিচালক এক মাতাল ড্রাইভার
যার তিনটি অবৈধ বউ আছে
একটি সন্তান এখন স্বর্গে
আর দু’টি নরকের দরজায়!
ভুক্তভোগীরা আবেদন করে লাশের অক্ষতার স্বার্থে
বিচারব্যবস্থায় আস্থা এদের শূন্যের কোঠায়
এটা তার নীরব প্রমাণ!
মহামান্য বিচারপতি দিনে মাজারে যায় আর
রাতে তাঁর দেহ পাওয়া যায় বারের সোফাসেটে
আইনমন্ত্রী বলে, “তিনি ধ্যান করছেন”
তথ্যমন্ত্রী এর সত্যতা প্রমাণে বিবৃতি দেয়
প্রধানমন্ত্রী তদারকি করে ভিউস্কিনে!
অবশেষে নাটকের অবসানে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে বলে আশ্বস্ত করে
দুর্নীতিবাজ ভিখারি
৫। আসুন ধর্ষণ করি-৪
আসুন শিক্ষিত হই! আদি থেকে একবিংশে
কবিতাকে ধর্ষণ করি প্রতিটি মাত্রায়, অন্ত্যমিলে-অমিলে
যৌনতন্ত্রকে পরিয়ে দিই গণতন্ত্রের মুখোশ
যেহেতু পুঁথিনীতি ধর্ষণ করে জাতীয়নীতি
পত্রিকায় ধর্ষকের মিছিল হয়
রাজকোষ থেকে তৈরি হয় ধর্ষণযন্ত্র
তাইতো রাষ্ট্রীয় শ্লোগান হওয়া উচিৎ – “আসুন ধর্ষণ করি”
গণধর্ষণ! মুখধর্ষণ!!
যেহেতু প্রেমিকার স্তন চুষে বিশ্ব পরাশক্তি
নীল ছবির ছড়াছড়িতে কামাসক্ত দিলে
পুষে উঠে লালায়িত নীলিমা
অবিচারের হাওয়ায় মুছে সব দাওয়াই পাড়ি দিই—
কামাসক্ত বিচারালয়
রাজসভার বাইরে ইসাবেলাকে দেখিনি অন্দরমহলে
আমি পড়েছি তাঁর স্নানকাব্য
এতেও কামনা করি অমাবস্যাতে
৬। অসুস্থ পথচলা
সময়ের অ্যালকোহল পান করে আমরা উল্লাস করি
মানবতার বিপক্ষে
আমাদের মাঝে জেগে ওঠে
জমে থাকা অসুস্থ দানবতা
খুবলে খাই সাজানো গোছানো রমণীর শাড়ি।
নুয়ে পড়া রাইফেল লেপ্টে আছে কামুক জলে
আমাদের আছে দাপুটে দল
দলীয় কনডম
আর কনডমের হিংস্র ব্যবহার।
এখানে কোনো লাল-সবুজ নেই
কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন একাত্তর
বায়ান্নের গলায় ছুরি ধরে বের করি
‘হাউ আর ইউ? ‘
অত:পর …
সেই যে শুরু, থামেনি আর
একে একে ধর্ষণ করেছি প্রতিটি কবিতা
অবশেষে ঠেকেছি ফরসা নারীচিহ্নে।
৭। গেড়ে বসা ক্ষত
কবিতার দু’টি লাইন উদ্ধৃতি করে
ব্যর্থ অতীত স্মরণ করিয়ে দেয়
প্যারালাল বউ!
বর্তমান বলতে যে নীলাভ লবণ পাশে ছিল
সেটিও উপচে পড়েছে অতিরিক্ত ঘনত্বে
এখন পৃথিবী লোনা বৃষ্টিতে আচ্ছন্ন
গুহা থেকে গড়িয়ে পড়ে সুপ্ত দুঃখ
নিঃসঙ্গ কালচে সময় আমাদের নাড়া দেয়
নাড়া দেয় লুকিয়ে থাকা পড়ন্ত বিকেল
কিংবা
যুবক সূর্য
ভেসে উঠে সকালের মোলায়েম আহ্বান
অতএব আমরা
অভিমানী হয়ে ওঠি!
আক্ষেপ আছে, দুঃখ আছে
আছে প্রেমের অমীমাংসিত সিক্ত দাহ
তবুও হেঁটে চলি বালিময় আকাশে
ধূসর নিয়ন আলোয়
৮। দরকারি গালি
আমি তোমাকে মাগি ডাকতে পারি না
কারণ কুড়িতে কারও কুঁড়ি পেরোয় না
তাছাড়া তুমি রাতদিনের মতই সুন্দর
হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন
আমি আমার প্রিয়াত্মার কথা বলছি!
অক্ষত একটি মৃত বটগাছ
কবিতা ভালোবেসে গড়েছে পরকিয়া
তারপর! হ্যাঁ তারপর
আমাকে ভালোবেসে কবিতাকে তালাক দিয়েছে
অসভ্য, না না একটি অসংজ্ঞায়িত উপাখ্যান
এখন কবিতা আর আমি কেউ নাই
হয় তো আছি নিরপেক্ষ ভাগাড়ে
যেদিন থেকে আমাদের যৌথ পথচলা
সেদিন থেকেই ভালোবাসা নদীপথে হেঁটেছে
কখনও কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরে
কখনও বা অনুরক্ত অর্কে
কিংবা লালিমা বুকে চেপে
এখন সমস্ত সময় পরিবর্তিত হয়েছে ঋণাত্বক গোলার্ধে
৯। চুষতে থাকো
আমি বলিনি চুষে নিতে
কিংবা
চুষে খেতে
শুধু বলেছি, মুছো
কিন্তু
তুমি চুষতে চুষতে সাবাড় করলে
অনাগত বর্তমান!
দুর্বল স্পার্মগুলো সাঁতার কাটে না সৃষ্টি সুখের উল্লাসে
নেই কোনো শীত
কিংবা
গ্রীষ্ম
অথবা
ঋতুরাজ
মুর্খ পণ্ডিতের শ্রোতা চালাক বধির!
অতএব নো টেনশন
জঙ্গলে দাঁড়িয়ে মদিনা সনদের কথা বলেছিলে
যেখানে মানুষ ছিল না, নেই!
আমরা মুহুর্মুহু হাততালি দিয়েছি
দানবতা-পাশবিকতার জোড়াতালি বুঝিনি
ডিজিটাল ধারায় এনালগ সংবিধান নিয়ে ফিরে এসেছি
চুপচাপ!!
অতএব নো টেনশন
বিয়ে করেছি বাহাত্তরে
ছেলে আমার মুক্তিযোদ্ধা
বাবা ছিল রাজাকার
এখন চালায় সরকারি কারবার
আহ! কী মেশিন
তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিল কলঙ্কের ভুড়ি!
অতএব নো টেনশন
তুমি চুষতে থাকো
আমি কিন্তু চুপচাপ!!
চুষার একটি বাহ্যিক গুরুত্ব রয়েছে
এবং
আভ্যন্তরীণ পরিবর্তন
এতে উত্তেজিত হয়, ক্ষয় হয়
হ্যাঁ, আমি জনগণের কথাই বলছি
একদিন ফুঁসে উঠে নিভিয়ে দেবে সমস্ত অন্ধকার
১০। বিচার মুক্ত হোক
প্রেমিকার স্তন দেখা পাপ
তাই তো চুমো খাই সংবিধানের নাভিমূলে
জনশ্রুতি আছে, চুমোতে নাকি অ্যালকোহল থাকে
অতএব চোখ সংবরণ অসাধ্য নয়!
একজন কবি রাজমুকুটকে প্রশ্ন করলো-
আপনি নাকি দ্বিচারিণী?
আহত চোখ অভিধানে খুঁজে পাওয়া বড় মুশকিল
যদিও আমরা নিয়মমাফিক বাইরে যাই।
এশট্রেতে লুকিয়ে রাখি ইতিহাসের অনন্ত হিংসা;
আসর জমতো সন্ধ্যা হলে
কিংবা খোলা হত ডিপ ফ্রিজ।
জিভ লম্বা বুর্জোয়ার অধীনে ফুলবাগান
হুতুম প্যাঁচা আজ মগডালে
নেতাজি আজ কোথায় ?
আমরা স্মরণ করি রুটির দোকানের রাখালকে;
প্রেম করি শব্দ আর অশব্দের সাথে।
যদিও অশব্দ বলতে মৌলিক কোনো শব্দ নেই।
সত্যি বলছি মহাত্মা আমি চাই না!
প্রত্যাখ্যাত প্রেমিক ভালোবাসা বিরোধী মিছিল করে না
প্রেমিকারা প্রকাশ করেছে বদরুল!
বখাটের অবৈধ সীৎকারে শিক্ষিকার আর্তচিৎকার
“বাঁচাও, বাঁচাও। এই অন্যায়ের বিচার করো!”
অবহেলিত শিক্ষক আনমনে বলে ওঠে
“বিচার মুক্ত হোক।’’