শহীদ কাদরী
(কবি শহীদ কাদরী’র জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি)
………
কে বলেন, শহীদ কাদরী
বাড়ি নেই!
নিউ ইয়র্কে ব্যস্ত সময় থমকে দিয়ে–
এইমাত্র একজন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে বললো, ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা..’
মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনের পাশে আলোঝলমল করে উঠলো, ‘একটি কবিতা সন্ধ্যা’
লা গার্ডিয়া এয়ারপোর্ট ছেড়ে আসা সুন্দরী ডেল্টা, হার্টসফিল্ড-জ্যাকসন স্পর্শ করতেই
সিকিউরিটি গার্ড ব্যাগেজ চেকিং ভুলে যাত্রীদের হাতে তুলে দিলো পিচ ও চেরি
কবি রুদ্র শংকর ছুটলেন গ্লোবাল মল
জীবন্ত হয়ে উঠলো, কফি হাউস, রাস বিহারী এভিনিউ, রেক্স, বিউটি বোর্ডিং, বোদলেয়ার, বুদ্ধদেব বসু, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ…
আর, শহীদ কাদরী’র অমর, অজর
‘উত্তরাধিকার’ সমূহ
………
ফাইভ পয়েন্টস স্টেশন, আটলান্টা।
সিরাজুর রহমান
………
যুগে যুগে বহমান
সত্য ও মিথ্যার দ্বন্দ্ব
বহমান মানুষের ভাষা ও আশা
এ কালেও একটি কণ্ঠ একটি স্বর
ছিল সাহসিকতা ও আন্তরিকতায় ভরপুর
ছিল স্রোতোবাহী ও বলিষ্ঠ
আমাদের ভাষা ও আশার সাগরে
ছিল একজন-ই অনবদ্য ও ভদ্র
সিরাজুর রহমান*
[ *বি.বি.সি খ্যাত সাংবাদিক ]
………..
আটলান্টা, জর্জিয়া।
আবদুল মান্নান সৈয়দ
…………
সহজতার দিকে গিয়েছিলেন
আবদুল মান্নান সৈয়দ–
শেষ কালে।
সেই যে আশ্চর্য দরোজাটি
যেটি ধরে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন–
আমাদের জন্য
কত মণিমাণিক্য, হীরে ও জহরত
কত গুপ্তধন কত চিত্রকল্প কত মাছ
বেড়াতে এলো আমাদের নগরে!
কত তারা-রা পড়লো খ’সে
কত সূর্যও উদিত হলো আস্তাবলে
তারপর…
আমরা পেলাম লাল চোখ স্বপ্ন।
শিল্পী নভেরা
.……….
তিনি ছিলেন ভাস্কর্যে
না-কি ভাস্কর্য ছিলো তার মাঝে
এ অবাক সম্পর্ক
ছেদে-বিচ্ছেদে জাগে–
আজ বাংলাদেশে।
আমাদের ভাষা, আমাদের আশা
আমাদের যত বিদ্রোহ ও আন্দোলন
যত ভালোবাসা–
আমরা করি লালন
যুগে যুগে।
এ বুকে
এ ভাটি বাংলায়।
কুঁড়েঘর, নকশি কাঁথা, লাউয়ের ডগা
কিম্বা পুইয়ের জাংলায়–
বেড়ে ওঠা স্বপ্ন
তার অন্যতম এক
কারিগর ও ধাত্রি এবং পথিকৃৎ
ও সেরা–
ছিলেন আমাদের জগতজয়ী
নভেরা…
আহমদ বাসির
[অকালে ঝরে যাওয়া তরুণ কবিবন্ধু]
……….
কোন কোন তারা
দূর আকাশেই থাকে
ডাকে মিটি মিটি।
আবার কোন কোন তারা
এ হৃদয়ের গহীনে, ডাহুকের মতো।
বাসির, এমন-ই এক
ভাই আমার।
‘ যারা আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাৎ বরণ করে, তোমরা তাদের মৃত বলো না…’
আমরা বাসিরকেও মৃত বলিনি।
আমরা ভুলি না আমাদের
আত্মার আত্মীয়।
……….
আটলান্টা, জর্জিয়া।
সবকটিই অনন্য ।
সাজ্জাদ বিপ্লবের কবিতা বরাবরই ভীন্ন আমেজের সবগুলো নিবেদিত কবিতা দারুণ হয়েছে।
কবিতায় ভিন্ন স্বর শুনতে পেলাম। ছিন্ন বিছিন্ন চিত্রকল্পের আড়ালে এক বিপন্ন বিস্ময় সর্বদা ক্রিয়াশীল। খুব ভালো লাগলো। উচ্চারণ করতে করতেই এক ভিন্ন জগতে চলে গেলাম:
“সেই যে আশ্চর্য দরোজাটি
যেটি ধরে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন–
আমাদের জন্য
কত মণিমাণিক্য, হীরে ও জহরত
কত গুপ্তধন কত চিত্রকল্প কত মাছ
বেড়াতে এলো আমাদের নগরে!
কত তারা-রা পড়লো খ’সে
কত সূর্যও উদিত হলো আস্তাবলে”
মাছ তো এলো… মাছের ন্যায়…!
অন্যরকম উপস্থিতি…। শুভেচ্ছা।