spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদগদ্যআতাহার খান

লিখেছেন : কাজী জহিরুল ইসলাম

আতাহার খান


কাজী জহিরুল ইসলাম

আজকাল কবি আতাহার খানের নাম কারো মুখে শুনি না। আতাহার খান সত্তুরের দশকের প্রথম দিকের একজন কবি। কবিতার প্রতি তাঁর নিষ্ঠা এবং প্রেম আমাকে মুগ্ধ করেছে। নিরন্তর তিনি শুদ্ধ ছন্দে কবিতা লেখার চেষ্টা করেন। পড়াশুনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, বাংলা সাহিত্যে। একাত্তুরে যোগ দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে। আতাহার খান একজন অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধা। এক যুদ্ধে ১২ জনের মধ্যে তাঁর ১১ জন সহযোদ্ধা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান, একমাত্র তিনিই অক্ষত ছিলেন। শত্রুরা তাঁকে ধরতে পারেনি, তিনি নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে ডুব সাঁতার কেটে পালিয়ে আসেন, এসে পৌঁছে যান নদীর অন্য তীরে, আমাদের কাছে, কবিতার কাছে, স্বাধীন বাংলাদেশে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে এসে পড়াশোনা শেষ করেন, যোগ দেন সাপ্তাহিক রোববার পত্রিকায়, কবি রফিক আজাদের অধীনে। কিছুদিন পর ইনকিলাব গ্রুপ সাপ্তাহিক পূর্ণিমা পত্রিকা প্রকাশ করলে তিনি নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে পূর্ণিমায় যোগ দেন। তখন সাপ্তাহিক বলতে বিচিত্রা আর পূর্ণিমা। ঈদ সংখ্যাগুলো যখন বেরুতো সবাই পূর্ণিমার ওপরই হুমড়ি খেয়ে পড়তো। সব ঈদেই পূর্ণিমা সার্কুলেশনে শীর্ষে থাকতো। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আতাহার ভাই ইনকিলাব গ্রুপে কাজ করেন কেন? এই প্রশ্ন আমার মাথায় সব সময় ঘুরতো। তাঁকে আমার কাছে সবসময়ই রক্তাক্ত প্রান্তরের ইব্রাহীম কার্দি মনে হত। আতাহার খানের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দেন সাংবাদিক দুলাল খান। অমায়িক ব্যবহার এবং মানুষকে সম্মান করার অসাধারণ গুণ এই মানুষটির প্রতি আমাকে আগ্রহী করে তোলে এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তিনি আমার প্রাণের মানুষ হয়ে ওঠেন। আতাহার ভাইয়ের জন্যই, আমি প্রথমে কন্ট্রিউবিউটর এবং পরে, খন্ডকালীন স্টাফ হিসেবে যোগ দিই পূর্ণিমায়। আমাদের পূর্ণিমা-সন্ধ্যা ছিল আলোকিত কবি/লেখকদের মুখর আড্ডায়। এই আড্ডার সফল আয়োজক ছিলেন আতাহার খান। তিনি বাংলাদেশের প্রায় সব কবিকে কথাশিল্পী বানিয়ে ছেড়েছেন। আতাহার খানের জন্ম না হলে আবদুল মান্নান সৈয়দ, আল মাহমুদসহ বেশ ক’জন বড় কবির হাত দিয়ে অনেকগুলো সফল উপন্যাস এবং গল্প বেরিয়ে আসতো না। প্রতি বছর ঈদ সংখ্যা প্রকাশের দুই মাস আগে থেকে পূর্ণিমা অফিসে লাইন করে বসতেন কবি/লেখকেরা। তাঁরা এখানে বসেই লিখতেন তাঁদের ঈদের উপন্যাস। প্রতিদিনের লেখা শেষ করে এখানেই পান্ডুলিপি রেখে চলে যেতেন আর রোজকার লেখাটা রোজই টাইপ হয়ে যেত।

আমার প্রথম দিকের দায়িত্বটি ছিল টিভি সাংবাদিকতা। সেটা ‘৯১ সালের কথা। পূর্ণিমার চার পৃষ্ঠায় থাকতো টিভি সংবাদ, সেই সংবাদ সংগ্রহের জন্য আমাকে প্রায় রোজই যেতে হতো বিটিভিতে। এরপর আতাহার ভাই আমাকে বলেন, আপনি লেখকদের সাথে মাঝে মাঝে কথা বলবেন এবং তাঁদের ওপর কিছু মজার রিপোর্ট করবেন। লেখকদের ওপর রিপোর্ট করতে গিয়ে আমার একটি ভিন্ন চোখ খুলে যায়। এখন আমি একজন মানুষকে দূর থেকে দেখেও এক স্লিপ রিপোর্ট করে ফেলতে পারি। একদিন দূর থেকে দেখে পীযুষ বন্দোপাধ্যায়ের ওপর একটি রিপোর্ট করি। পীযুষ দা আতাহার ভাইয়ের বন্ধু, ফোন করে জানান, কে এই দার্শনিক সাংবাদিক যে আমার মনের খবর জানে? তিনি লেখাটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। একদিন আতাহার ভাই আমাকে বলেন, জহির, আপনার জন্য একটি ভালো খবর আছে। আমি বলি, কি খবর আতাহার ভাই, আমাকে ফুল টাইম সাংবাদিক বানাবেন? আতাহার ভাই হাসেন। সেটা আপনার জন্য ভালো হবে না। ফুল টাইম এনজিওতে কাজ করেন, এটাই ভালো। আবদুল মান্নান সৈয়দ আপনার বেশ প্রশংসা করেছেন। আমাকে বললেন, ছেলেটার যত্ন নেবেন আতাহার, অসাধারণ গদ্যের হাত। ওর হাত থেকে খুব বড় কিছু বেরিয়ে আসতে পারে। আমি খুব খুশি হলাম এবং নিজের গদ্যের প্রতি আরো বেশি যত্নশীল হলাম।

এবার আতাহার ভাই আমাকে লেখকদের বাড়ি বাড়ি পাঠাতে শুরু করলেন। যান, ইন্টারভিউ নিয়ে আসেন। আমি ইন্টারভিউ আনতে লেখকদের বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করি। একদিন মিলন ভাইয়ের ইন্টারভিউ আনতে তাঁর গেন্ডারিয়ার বাসায় যাই। মিলন ভাই আমাকে যথেষ্ঠ সম্মান করেন। তখন তাঁর নূরজাহান প্রথম খন্ড মাত্র বেরিয়েছে। আমাকে নাম লিখে নূরজাহান উপহার দেন। আমি নূরজাহানের একটি রিভিউও লিখেছিলাম। কিছুদিন পর এক সন্ধ্যায় আমাকে আতাহার খান বলেন, জহির কর্তৃপক্ষ আপনার ওপর খুব খুশি। তাঁর এ কথা শুনে আমিও খুশি। তিনি বলেন, আপনাকে কিছু বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে। আমি আগ্রহে গলা বাড়াই। ইনকিলাব দুটি নতুন পাতা বের করবে। একটি ‘প্রবাসের কথা’ অন্যটি ‘পাঁচমিশালি’। সপ্তাহে একদিন। চালাতে পারবেন না? আমি কিছু না বুঝেই বলি, পারবো। আতাহার ভাই বলেন, এজন্য আপনাকে প্রতি মাসে বাড়তি ২ হাজার টাকা দেওয়া হবে। বাংলাদেশের কোনো দৈনিক সেই প্রথম প্রবাসীদের জন্য একটি পূর্ণ পৃষ্ঠা বের করে। যেটি আমি সম্পাদনা করতাম, যদিও আমার মাথার ওপর আতাহার ভাই ছিলেন কিন্তু তিনি অন্যদের কাছে আমাকে এই বলে পরিচয় করিয়ে দিতেন, জহির পাঁচমিশালি এবং প্রবাসের কথা পাতা দুটির সম্পাদক।

একবার ইনকিলাব গ্রুপ আমার অনুমতি ছাড়া তাঁদের পক্ষে কোনো একটি বিবৃতিতে আমার নাম ছেপে দেওয়ায় আমি ইনকিলাব গ্রুপের সাথে আমার সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করি। একসময় আমি চাকরি নিয়ে বিদেশে চলে যাই। ইনকিলাবের সাথে জড়িত না থাকলেও আতাহার ভাইয়ের সাথে আমার সুসম্পর্ক সব সময়ই ছিল। নতুন কোনো কবিতা লিখলে আতাহার ভাই আমাকে ফোনে শোনাতেন, আমিও আতাহার ভাইকে শোনাতাম আমার নতুন কবিতা। একসময় আতাহার ভাই ইনকিলাব ছেড়ে যোগ দেন ‘দৈনিক আমার দেশ’ পত্রিকায়। আমাকে কলাম লিখতে অনুরোধ করেন। আবারও, আতাহার ভাইয়ের জন্যই, আমি কলাম লিখতে শুরু করি আমার দেশ পত্রিকায়। কিন্তু আমার দেশ-এর স্বার্থবিরোধী একটি লেখার জন্য মাহমুদুর রহমান রেগে যান। সেই লেখায় আমি তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরীর প্রশংসা করেছিলাম। তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী ছিলেন আমার সহকর্মী, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলে। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদানের কথা আমি জানি। তিনি নিজের মুখে আমার অফিস কক্ষে বসে মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতিচারণ করেছেন। সেই সব কথা আমি লিখবো না কেন? আতাহার ভাই তখন ‘আমার দেশ’ ছেড়ে চলে গেছেন, যোগ দিয়েছেন সকালের খবর -এ, সম্পাদক হিসেবে। তাঁর স্থালাভিষিক্ত হন সঞ্জীব চৌধুরী। সঞ্জীব দা আমাকে ফোন করে বলেন, মাহমুদ ভাই খুব রাগ করেছেন, আপনার লেখা আর আমরা ছাপতে পারবো না। আমিও হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। আতাহার ভাই নেই, আমিও আর ওখানে লেখার কোনো তাগিদ অনুভব করছি না।

‘৯৫ সালের কোনো এক সময় হবে। মুক্তি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী। মাস্টার্স করছে। আমার সঙ্গে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ঘুরে বেড়ায়। হাতে-কলমে সাংবাদিকতা শিখতে চায়। একদিন আতাহার ভাই আমাকে বলেন, এই মেয়েটি কে? আমি বলি সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রী। আর কোনো প্রশ্ন না করেই হঠাৎ বলে উঠেন, বিয়ে করে ফেলেন। সত্যি কথা বলতে কি আতাহার ভাইয়ের এই, ‘বিয়ে করে ফেলেন’ আমাকে কিছুটা প্রভাবিত করেছিল। সেই সময় আমি তাঁকে এতো ভালবাসতাম, তাঁর সব উপদেশ/ পরামর্শ আমার জন্য যে কল্যাণকর হবে, এ নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র সন্দেহ ছিল না।
আমরা ১৯৯৬ সালের ২৯ মার্চ কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলি।

আতাহার ভাইকে নিয়ে এতো কথা বলছি, অথচ তাঁর কবিতা নিয়ে তো কিছুই বললাম না। আমার প্রিয় কবিদের একজন আতাহার খান। তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থ “শিরোস্ত্রাণ খোলো যুবরাজ” আমার বেশ প্রিয় বই। তিনি খুব কম লেখেন কিন্তু লেখেন পরম যত্নে, পরম মমতায়। তাঁর একটি কবিতা থেকে কয়েক পঙক্তি তুলে দিই :

মেয়েটির পাশ দিয়ে হেঁটে গেলে নাকে এসে লাগে
তার ত্বক থেকে ঝরে পড়া ভরা নদীর বাতাস
নেশায় মাতাল হয়ে ওঠা কামুক পুরুষ সব
ঝাঁপ দিয়ে শরীর ভেজাতে চায় সেই নদীর পানিতে
ওড়নায় জড়িয়ে কি নিশ্চিন্তে এঁকে বেঁকে
ছুঁয়ে যায় গন্তব্যের দিকে
[অধরা]

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

এ্যাডঃমনিরুল ইসলাম মনু on গুচ্ছ কবিতা : বেনজীন খান
পথিক মোস্তফা on সাক্ষাৎকার : নয়ন আহমেদ
সৈয়দ আহমদ শামীম on বাংলা বসন্ত : তাজ ইসলাম
Jhuma chatterjee ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি on গোলাপ গোলাপ
তাজ ইসলাম on রক্তাক্ত স্বদেশ
আবু বকর সিদ্দিক on আত্মজীবনীর চেয়ে বেশি কিছু
ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি। on জন্মদিনের কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
দিশারী মুখোপাধ্যায় on গুচ্ছ কবিতা : গোলাম রসুল
দিশারী মুখোপাধ্যায় on নির্বাচিত ১০ কবিতা : কামরুজ্জামান
তাজ ইসলাম on Menifesto of the Inevitable Revolution
কাজী জহিরুল ইসলাম on দীর্ঘ কবিতা : তাজ ইসলাম
দীপশিখা পোদ্দার on গুচ্ছ কবিতা : কাজল সেন
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on গুচ্ছ কবিতা : তাজ ইসলাম
নয়ন আহমেদ on রবীন্দ্রনাথ
নয়ন আহমেদ on কিবরিয়া স্যার
বায়েজিদ চাষা on গুচ্ছ কবিতা : অরুণ পাঠক
আবু আফজাল সালেহ on দীর্ঘ কবিতা : অভিবাসীর গান
কাজী জহিরুল ইসলাম on রবীন্দ্রনাথ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on গুচ্ছ কবিতা : হাফিজ রশিদ খান
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
নয়ন আহমেদ on আমার সময়
মোঃবজলুর রহমান বিশ্বাস on গুচ্ছ কবিতা : দিলরুবা নীলা
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
কাজী জহিরুল ইসলাম on অক্ষয় কীর্তি
Quazi Islam on শুরুর কথা
আবু হেনা আবদুল আউয়াল, কবি ও লেখক। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, নওগাঁ সরকারি কলেজ নওগাঁ। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
নয়ন আহমেদ on ফেলে আসা ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
পথিক মোস্তফা on ঈদ স্মৃতি
Sarida khatun on ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদ স্মৃতি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on দীর্ঘ কবিতা : আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ
পথিক মোস্তফা on শৈশবের ঈদ : একটি স্মৃতি
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on আমার ঈদ
নয়ন আহমেদ on ঈদের আনন্দ
শাদমান শাহিদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
নয়ন আহমেদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on সাম্প্রতিক কবিতা : নয়ন আহমেদ
মুস্তফা জুয়েল on আমি আর আমার গাযালি
কাজী জহিরুল ইসলাম on গুচ্ছ কবিতা : মুর্শিদ-উল-আলম
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on অপদার্থবিদ্যা
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on দেশপ্রেমের ১০ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on নির্বাচিত ২৫ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on প্রিয়াংকা
প্রত্যয় হামিদ on শাহীন খন্দকার এর কবিতা
মহিবুর রহিম on প্রেম ও প্যারিস
খসরু পারভেজ on কাব্যজীবনকথা
মোঃ শামসুল হক (এস,এইচ,নীর) on সুমন সৈকত এর কবিতা
এম. আবু বকর সিদ্দিক on রেদওয়ানুল হক এর কবিতা