ত্রস্ত সময়
সালেহীন শিপ্রা
………
হায়েনার হা-মুখের ভেতর
আটকে পড়ে কী দেখতে পায় ত্রস্ত সময়!
গলার দিকে গাঢ় ছায়া
গুম হয়ে যায় পাখিরা অই লকলকানো অন্ধকারে
জংলাপাশে ব্যক্তিগত রক্তমাখা পালক কিছু
ফের পাওয়া যায়।
আলোও আসে
ধারালো দাঁতের ফাঁক গলে
বাতাস সাথে
মাংস-পচা-গন্ধমাখা।
ত্রস্ত সময়
দেখতে কি পায় বন্ধ চোখে!
…………
তুমি জাগলে জাগবে বাংলাদেশ
জাকির আবু জাফর
……….
আফসোস করে ছেড়ে দাও কেনো সব
প্রতিবাদ আজ কেনো এত দুর্লভ!
চারিদিকে লুট, লুণ্ঠন মহামারি
বেদনা ক্লিষ্ট মানুষের আহাজারি!
সম্বলহীন, জীবনের নেই সুখ
ঘাটে ঘাটে ফেও দুর্জন দুর্মুখ!
অত্যাচারীর নিপীড়ন অহরহ
পৃথিবীতে আজ জীবন দুর্বিষহ!
মানুষের প্রতি এ কেমন পরিহাস
দিকে দিকে দেখো উঠছে নাভিশ্বাস!
ভীরুতা কেবল জোগায় দুঃখ গ্লানি
বিবেক তবুও কেনো নয় সাবধানী!
না সরাও যদি লেজুড়বৃত্তি রোগ
ঘুচবে না কভু এ জাতির দুর্ভোগ
উদ্যত করো মহা বিপ্লবী হাত
এ মাটি তোমার তুমি চির অভিজাত
বুকে রাখো তুমি তোমার মাটির ঘাম
বহাও বন্যা রক্তের উদ্যাম।
নিজস্বতায় ধারবে না কারো ধার
নিঃশ্বাসে তলো বজ্রের হুংকার!
নিঃশেষ করো ষড়যন্ত্রের বুক
তোমার আশায় মজলুম উন্মুখ!
জাগ্রত করো নব সূর্যের রেষ
তুমি জাগলেই জাগবে বাংলাদেশ।
……….
এ মিছিলে আমিও ছিলাম
সাজ্জাদ বিপ্লব
……….
এ মিছিলে আমিও ছিলাম
আমিও হেঁটেছি পথে, দিয়েছি স্লোগান
কিন্তু তাড়াতে পারিনি, সেই– ডাইনী, ডাকিনী
তবু, থেমে থাকিনি। বসে থাকিনি।
রাজপথে কেউ বসেও থাকে না, মিছেমিছি
জানি, তুমিও বসে নেই। থাকো না।
রান্নাঘর ছেড়ে, সন্তান-সন্ততি ছেড়ে তুমি আজ রাজপথে, আমার সঙ্গে, আমাদের সঙ্গে, মিছিলে
ডাকিনীদের কোন ঘর থাকে না। পরিবার থাকে না। দেশ থাকে না।
তারা মানুষ বোঝে না।
তারা তোমাকে বোঝেনি। আমাকে বোঝেনি। আমাদের কাউকে বোঝেনি।
শুধু রক্ত হাতে বসে থাকে সাধের রঙ্গভবনে…
৭.১৫.২৪
গ্রেডিহেলথ সেন্টার, ব্রুকহ্যাভেন, আটলান্টা।
………..
শ্লোগান
তাজ ইসলাম
…………
শ্লোগানের উপর নেমে আসছে
একদল হিংস্র লাঠি
গরম জলের আক্রমণ
সুসজ্জিত হেলমেট ।
শ্লোগান পড়ে আছে রাজপথে রক্তাক্ত হয়ে ।
একটু আগে মুষ্টিবদ্ধ যে দুটো হাত
উর্ধ্বে উত্থিত হয়েছিল অধিকারের কথা বলে
সে দুই হাতে চেপে ধরেছে বাংলাদেশের রক্তাক্ত মাথা ।
রক্তের ধারা নেমে আসছে রিকসার সিটে বসা একটি টি শার্টে।
মুহূর্তে টিশার্টটি বাংলাদেশের মানচিত্র হয়ে গেছে।
শ্লোগানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে
রক্ত পিপাসু নির্দেশ
চেয়ার থেকে লাফিয়ে আসছে দাঁতাল শূয়োর
হামলে পড়েছে বৈধ অস্ত্ররা নিরস্ত্র,নিরীহ শেলওয়ার কামিজের উপর।
রোকেয়া হলের মেয়েগুলো নিরুপায়।
অসহায় আর্তনাদে নেমে আসছে রক্ত বৃষ্টি।
সহসা রক্তে কামিজে ভেসে উঠছে লাল সবুজের মানচিত্র হয়ে।
রক্তাক্ত মানচিত্র আমার স্বদেশ।
এই ছেলেমেয়েগুলো আমার আত্মজা ।
ওরা অধিকারের শ্লোগান তুলে আজ আহত।
আমি আমার সন্তানের ন্যায্য দাবীর পক্ষে আছি।
আমি আমার আহত সন্তানের পক্ষে আছি।
তোমাদের শ্লোগান উচ্চকিত হোক ।
গাছের ডাল ভেঙে নিয়ে নাও হাতেহাতে।
প্রতিহত কর জুলুমের লাঠির আঘাত।
আমরা তোমাদের পাশে আছি।
শ্লোগানটি তোমরা ধরে রেখো শক্ত হাতে।
হার্ডলাইনের সামনে দাঁড় করাও আরেকটি হার্ডলাইন।
গর্জে ওঠো বাতাসে ছড়িয়ে দাও ” দূর হ তুই”।
বিতারিত শয়তানের মতো দূর হ তুই।
ধন্যবাদ