যেখানে মৃত্যুর ঘ্রাণ
শাহীন রেজা
…………..
বাতাস আজ ভারী হয়ে আছে
না সেখানে কাগজী লেবুর ঘ্রাণ নেই
নেই হৃদয় মাতাল করা কামিনী কিংবা বেলীর
চারদিকে শুধু বারুদ আর মৃত্যুর ছড়াছড়ি
একদিন একাত্তরে
তোমার দেহেও এমন ঘ্রাণ ছিল কি’না কিংবা বায়ান্ন’তে
আমার জানা’ই হয়নি
আজ লোবানে লোবানে ভারী ভোরের আজানে
শুধু মৃত্যুর ডাক শুনি
এমন মৃত্যু আমরা কি চেয়েছি কেউ
বন্দুকের নলের সামনে আমার স্বজন
তারপর তীব্র চিৎকার
ফিনকি দিয়ে ছোটা রক্তের ফোয়ারা
নাহ আমি আর সহ্য করতে পারি না
এই কি আমার দেশ
আমার প্রিয় জন্মভূমি
আমি ভাবতেই পারি না।
……….
মৃত্যুঞ্জয়
আমিন আল আসাদ
[ শহীদ আবু সাঈদকে নিবেদিত ]
………..
এই আমি দাঁড়ালাম বুকে গুলি করো
আমি জানি আলোকিত মৃত্যুই বড়ো
সত্যের মৃত্যু যে নেই ওরে ঠোলা!!
যত ছোড়ো বন্দুক কামানের গোলা
এই আমি দাঁড়ালাম ঝেড়ে সব ভয়
হটবো না পিছু আমি আসুক প্রলয়
জেনে রাখ্ আমি হবো মৃত্যুঞ্জয়
শুধু তোর ক্রীড়নক হাত হবে ক্ষয়।।
…………..
হারুন, তুমি কি হেরে গেলে?
ফজলুল হক সৈকত
……………
ডিবি হারুন, তুমি কি ভয় পেয়েছো?
ওরা তো সংখ্যায় মাত্র ১২ জন
ইউনিভার্সিটির শিক্ষক।
তাঁদের সাথে কথা বলার সামান্য সময়ও হলো না, তোমার!
ছাত্রদের হাসপাতাল থেকে ‘হেফাজতে’ নিয়েছো বলে
শুনে, ওরা জানতে গিয়েছিল; পরিবার না-কি তোমরা
কে দিতে পারে আশ্রয় ও নিরাপত্তা!
মনে করে দেখো, হারুন; তুমিও একদিন ছাত্র ছিলে
তোমারও শিক্ষক ছিল। কখনো তাঁরা তোমাকে পাশ কাটিয়ে যায়নি
কখনো তাঁদের পথ আটকে কথা বলার কথা ভাবতেও হয়নি।
আজ, তোমার সাঙ্গরা বলেছিল, তোমার গাড়ি আটকে কথা বলার
জন্য মিনতি করতে।
ওরা কি রাজি হয়েছে?
অথচ, দেখো, তোমার অনুসারিরা ছাত্রদের, শিক্ষকদের পথ আটকে দিয়েছে
বারবার; পথে পথে গুলি ছুড়েছে ওদের বুকে ও মাথায়!
ডিবি হারুন, তুমি তো জানো, জেলায় জেলায় তোমার নাম লেখা আছে
রক্তের অক্ষরে।
তুমি কোন স্কুলে পড়তে হারুন? কোন কলেজে? ভার্সিটিতেও গিয়েছিলে না-কি?
তোমার শিক্ষক কারা ছিলেন? মনে পড়ে?
তোমার শিক্ষকদের সাথেও কি কথা বলার সময় নেই তোমার?
তাঁরা আসেন কখনো তোমার অফিসে?
তুমি তাঁদের খবর রাখো? কেমন আছেন তাঁরা, কী ভাবেন তোমাকে নিয়ে?
ও, তোমার তো মিটিং করতে হয়, বাইরে বেরুতে হয় জরুরি কাজে!
কতো আর্জেন্ট কাজ তোমার!
হারুন, তোমার কাছে হেরে গেল ১২ জন শিক্ষক; নতজানু শিক্ষক-সমাজের
পিঠে এঁরাই কেবল জেগেথাকা ব্যাকবোন
না-কি হেরে গেলে, তুমি, হারুন?
জুলাই ২৭, ২০২৪