……………
আমি বাঘ দেখিনি : দেখেছি দীপ্তি
……………
এই প্রৌঢ় বয়সে আমি এখনো বাঘ দেখিনি
সুন্দর বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার দুচোখে দেখিনি।
বালক বয়সে দেখেছি মুক্তিযুদ্ধ,–
মুক্তিযোদ্ধা-গেরিলা দেখেছি কিন্তু একটা বাঘ দেখিনি।
এইতো সেদিন আইচ্যানেল আমার চোখ খুলে দিলো,
একটা সুন্দরী বাঘিনী এবং তার গর্জন আমাকে দারুণ জীবন্ত করেছে।
সে একজন একচোখা হরিণ,
কালো সোনা মানিকের চোখে ঠা ঠা বজ্র দীপ্তি ছড়িয়ে
চিতকার করে উঠলো–
‘কোন অধিকারে আমাকে রাজাকার বলছেন,
আমার বাপদাদারা মুক্তিযোদ্ধা’।
ওই বাঘিনীর প্রচণ্ড ছোবলে, বিজুরি দীপ্তির ঝলকে ঝলসে গেলো সে —
লেজ গুটিয়ে পালালো কালো শিয়াল!
আমি রয়েল বেঙ্গল টাইগার দেখিনি
দীপ্তি চৌধুরীকে দেখেছি, বাঘিনী দেখেছি।
জয় দীপ্তি চৌধুরী —
জয় মুক্তিযোদ্ধার উত্তর পুরুষ,
জয় সত্যের বিমল জয়।
……………….
ভয় নেই তাহেরা খাতুন
………………..
অজানা আশংকা করে কেঁপে ওঠে তোমার হৃদয়–
ছেলের দেওয়া ৫০০ পুতির তসবি ছিড়ে গেলো বলে কোন আফসোস করোনা বোন!
বিচ্ছিন্ন পুঁতিগুলোকে আবার একত্রে এক সুতোয় গ্রথিত করো–
জড়ো করো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া সোনার টুকরোগুলো,
সীসা ঢালা প্রাচীরের মতো ওরা আবার দাড়িয়ে যাবে।
কালো জোছনার গ্রাসে ওরা ভীতু নয়,
কালো অন্ধকার, জলপাই রঙের অস্বচ্ছ আবডাল শীঘ্রই কেটে যাবে —
তাহেরা খাতুন, সোনা বোন তুমি পুঁতির স্বর্ণ টুকরো গুলো একত্রিত করে তসবিহ মেরামত করো –
আবার ফু দাও বোন–
আয়াতুল কুরসি পড়ে, সুরা মুলক পড়ে জোরে জোরে ফুক দাও
তসবিহ দানারা আবার লু হাওয়ার মতো ছড়িয়ে পড়বে বহুভুজে, বৃত্তে, তুমুল ত্রিভুজে —
সরল রেখার মতো, মাথা উঁচু করা লম্ব আবার ফুকারি উঠবে!
তুমি অজানা আশংকা না করে বরং জায়নামাজের সবুজ চত্বরে সটান দাড়িয়ে যাও —
পুঁতির দানারা তোমার সন্তান!
মায়ের দোয়া সন্তান সন্ততির জন্য অব্যর্থ ওষুধ —
নিরাময় হবে, অনিবার্য প্রত্যুষের সূর্যোদয় হবে, নিশ্চিত সুন্দরে ভরপুর হবে তোমার আঙিনা!
………………..
আমার বিশ্বাস
………………..
আমার এখনো বিশ্বাস আছে সুদৃঢ় —
আল্লাহ ইচ্ছে করলে রহমতের ফেরেস্তা নাজিল করতে পারেন —
গাজা, খাজা ইউনিস থেকেও আল্লাহ আমাদের প্রতি বেশি দরদী।
শীঘ্রই সাহায্য আসবে আসমান ও জমিন থেকে!
যা ঘটার তা ঘটবেই —
তবুও আমি আল্লাহর সীমাহীন সাহায্যের খুব প্রত্যাশা করি।
হে বিবাদমান মানুষেরা তোমরা পরস্পর ধ্বংস যজ্ঞে জড়িয়ে পড়ো না।
তোমরা তো সকলেই কবরের মাটিতে পঁচে গলে মিশে যাবে–
এত অহংকার এত বাড়াবাড়ি কারো জন্য ভালো নয়!
হাসান আলীম কবিতায় সব সময়ই একটা মান বজায় রাখার চেষ্টা করেন।
এই তিনটা কবিতায়ও তা লক্ষ্য করা যায়।