spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদগদ্যআরশি নিকেতন : ১৬

ধারাবাহিক আত্মজীবনী : তৈমুর খান

আরশি নিকেতন : ১৬

তৈমুর খান

১৬

কবিতার পুরস্কার

নিতাই দত্ত, দ্বারিকানাথ পাল, বিশ্বময় মুখার্জি তিনজন সহপাঠী আশ্বাস দিয়েছিল আমার হোস্টেল খরচ লাগবে না। বাড়ি থেকে শুধু খাবারের খরচটুকু কোনোরকম যোগান দিতে পারলেই একসঙ্গে এমএ পড়াশোনা করা যাবে। সুযোগ-সুবিধাও মিলবে। আমরা সকলেই এই আশ্বাস পেয়েছিলাম আমাদের রামপুরহাট কলেজের অধ্যাপক সুনীলবরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। সুনীলবরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহপাঠী পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান শিবেশ চ্যাটার্জি আজিমগঞ্জের লোক। মা তারার দর্শনে এসে সুনীল স্যারের বাড়ি আসেন। আর সেখানেই সবার সঙ্গে পরিচয় হয়ে যায়। ১৯৯০ সালে আমরা তখন চারজনেই পাটনা রওনা হয়ে যাই। ভর্তির পর প্রথম দিনেই নিতাই দত্তের নাক দিয়ে এতই রক্তপাত হয় যে আমরা প্রায় তার বাঁচার আশা ছেড়েই দিই। তড়িঘড়ি একটি নার্সিংহোমে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা করিয়ে পরের ট্রেনেই তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসি রামপুরহাটে। হাসপাতালে বেশ কিছুদিন থাকার পর তাকে সুস্থ করে আবার রওনা দিই। পাটনায় শিবেশ চ্যাটার্জি ছাড়াও যে স্যারদের পেয়েছিলাম, তাঁরা হলেন—ললিতা সান্যাল, দেবনারায়ণ রায়, পূর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, প্রতিমা ঘোষ, ইন্দ্রানী ঘোষ প্রমুখ। স্যারদের ছাড়াও আগের বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের আন্তরিকতা ও সহযোগিতায় আমাদের হোস্টেল পেতে যেমন কোনো অসুবিধা হয়নি, তেমনি একসঙ্গে রান্না করে থাকা ও খাওয়ার ক্ষেত্রেও সুব্যবস্থা হয়েছিল। বিশাল লাইব্রেরি থেকে যেমন বইয়ের জোগান পেতাম, তেমনি সব বিষয়ে নিজেরা পড়ে পড়ে নোটস তৈরি করেও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতাম। গঙ্গাতীর, শোনপুরের মেলা, বাংলা অ্যাকাডেমি সময় পেলেই আমরা ঘুরে আসতে পারতাম। পড়াশোনার মধ্যেও একটি প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছিল—কে ভালো রেজাল্ট করতে পারে তাই ছিল দেখার।
প্রতি মাসে হোস্টেল খরচ প্রায় দুশো টাকা হলেই হয়ে যেত। কিন্তু সেই টাকাটিই বহু কষ্টে আমাকে সংগ্রহ করতে হতো। প্রতিবেশীর বাছুর পালার তখন চল ছিল। কোনো মাসে সেই পালা বাছুর বাবদ দুশো টাকা পেলেই আমাকে পাঠাত। বাবার কাকাতো ভাই আবুল খায়ের কোনো কোনো মাসে তিনিও পাঠাতেন। দীর্ঘ ছুটিতে বাড়ি এলে কয়েকদিন কাজকর্ম করেও কিছু টাকা উপার্জন করতাম। ইউনিভার্সিটির ফি হাফ করে দিয়েছিলেন শিবেশ চ্যাটার্জি। তাই আমাদের পক্ষে সুবিধা হয়েছিল।
পাটনায় পাওয়া যেত মহিষের দুধের চা। একটা চা মানে এক গ্লাস। আর পাওয়া যেত লেট্টি। ভুট্টার ছাতু দিয়ে কয়লার আঁচে সেঁকে সেঁকে চাটনি সহকারে পরিবেশন করত। তা খেয়ে খেয়ে অভ্যাস হয়ে গেছিল। স্থানীয় বহু সহপাঠী বিভিন্ন উৎসবে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানালে আমরা সবাই দল বেঁধে যেতাম। সেদিন আমাদের আর অন্য খাবার খেতে হতো না। আমাদের আগের ব্যাচের নুরুল হক ছিলেন খুব দিলদার মানুষ। পাকুড়ে বাড়ি। জলা জমিতে তার বোনা ধানের চাল উৎপাদন হলে তা বস্তায় ভরে মাথায় করে নিয়ে যেতেন। সেই চালের ভাত মাঝে মাঝে আমিও খেতাম। পাটনার বিভিন্ন স্থানে তার সঙ্গে ঘোরার সুযোগও পেয়েছিলাম।
১৯৬৩ সালে এই পাটনা থেকেই এমএ পাস করে মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলাদেশের ঢাকায় সাইন্স কলেজের অধ্যাপক হয়েছিলেন। বেশ কিছুদিন অধ্যাপনা করার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। তাঁর মুখে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে অনেক কথা শুনেছি। তখন বাংলা ডিপার্টমেন্টের প্রধান ছিলেন প্রমথনাথ বিশী। আমরা গিয়েও দেখেছি, শিক্ষার ক্ষেত্রে কোনো কোনো অংশে বিহারও বাংলা থেকে এগিয়ে আছে। এখানে আধুনিক বাংলা কবিতার পাঠ দিতেন পূর্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। তাঁর কাছেই কল্লোল যুগের কবিদের সঙ্গে মনের একটা নিবিড় সংযোগ ঘটে যা আজও ভুলতে পারি না। শুধু বাংলা সাহিত্য নয়, ইংরেজি সাহিত্য, ফরাসি সাহিত্য, গ্রিক সাহিত্যের বিভিন্ন দিগন্ত তিনি আমাদের সামনে উন্মোচিত করতেন। কবিতাকে এত ভালবাসা যায়, কবিতাকে এতটা হৃদয় ও মেধা দিয়ে স্পর্শ করা যায় তা তাঁর কাছেই পেয়েছিলাম।
বিকেলের শেষ সূর্যরশ্মি গঙ্গার পানিতে পতিত হলে একটা অদ্ভুত দৃশ্য তৈরি হতো চোখের সামনে। ছোট ছোট মাছ ধরা ডিঙিগুলি দূরে দূরে মিলিয়ে যেত এক একটি বড় রাজহাঁসের মতো। রংবেরঙের কপোত-কপোতি গঙ্গার তীরে বসে বসে প্রেম-আলাপ করত। আমরা উদাস হয়ে নির্জন সেই কৈলাশের দিকে চেয়ে থাকতাম , যেখানে শিবের ধুম্রজাল জটা থেকে গঙ্গার উৎপত্তি। হঠাৎ করে কোনো অচেনা যুবতীর মায়া ভরা চোখে চোখ পড়ে গেলে মুখটা রাঙা হয়ে উঠত। মাথা নিচু করতাম। মনটা কেমন করত যেন। কিছু কি বলতে চেয়েছিল? ভাবতে ভাবতে হয়তো কোনো কবিতার কাছে নিজের হৃদয় ভার নামিয়ে রাখতাম।
দুটি বছর পর যেদিন পরীক্ষার রেজাল্ট হলো, সেদিন সবচেয়ে বেশি নাম্বার পেলাম আমিই। ৭২•১% যা বাংলা ডিপার্টমেন্টের সমস্ত অতীত ইতিহাসকে অতিক্রম করে গেছে। নিতাই পেয়েছে ৭১%। ললিতা সান্যাল আমাকে ডেকে বললেন, “এই ইউনিভার্সিটিতেই পার্ট টাইম লেকচারারে যোগদান কর। পার ক্লাস পিছু ৪০০ টাকা।”
কিন্তু আমি রাজি হতে পারলাম না। সবাই তখন বিহার ছেড়ে চলে এসেছে। মনটাও ভারাক্রান্ত। বাড়ি এসে বিএড করার জন্য সবারই পরামর্শ পেলাম।
কিন্তু বিএড করব কোথায়? সর্বত্রই খরচ আছে। বহু জায়গায় তবু দরখাস্ত করে রাখলাম। তখন জুন-জুলাই মাসেই বিএড এর সেশন শুরু হতো। প্রায় সব জায়গাতেই বিএড করার সুযোগ এলো। খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম মালদহ গভর্নমেন্ট ট্রেনিং কলেজে বিএড করলে মাসে একশো টাকা স্টাইপেন্ড পাওয়া যাবে। এটাই একটা সুযোগ। কিছু টাকা বহু কষ্টে জোগাড় করেই মালদহ ট্রেনিং কলেজে ভর্তি হলাম। রামপুরহাটে স্টেট বাস ধরে মালদহতে নামলে ১৯৯৩-৯৪ সালে মোট ভাড়া লাগত কুড়ি টাকা। মাসে হোস্টেল খরচও প্রায় দুশো টাকা হলেই হয়ে যেত। মালঞ্চ পল্লিতে বিএড হোস্টেল। এলাকাটাতে উদ্বাস্তু মানুষের ভিড় বেশি। প্রতিদিন পায়ে হেঁটেই কলেজে যাওয়া আসা করতাম। হোস্টেলে আমার রুমে আরও দু-জন রুমমেট ছিল—উত্তর দিনাজপুরের এক অঙ্কের স্যার আব্দুল বাকী এবং ইতিহাসের স্যার কালাচাঁদ মালো। তারা যেহেতু চাকরি করত তাই হোস্টেলের টিফিন খরচ আমাকে আর বহন করতে হতো না। সাধারণ বিষয়গুলির নোটস তৈরি করতাম তিনজনে মিলেই। ওদের দুজনের বাড়ি কাছাকাছি বলে ওরা ঘনঘন বাড়িও যেত। আর বাড়ি থেকে নিয়ে আসত অনেক রকম খাবার-দাবার। বলতে গেলে কী, এত দুঃখ কষ্টের মধ্যেও বিএড করাটা ছিল খুব আনন্দের। অধিকাংশ ট্রেনিং নিতে আসা নারী-পুরুষ চাকুরীজীবী বলে মুক্তমনে তারা পছন্দমতো সঙ্গীদের প্রেম নিবেদনও করত। বহু রাত জেগে হোস্টেলের বহু জনকে লিখে দিতে হতো প্রেমপত্র। প্রেমের কবিতা। কলেজে বাংলার শিক্ষক ছিলেন না। তাই বাংলা বিষয়টা নিজের মতো করেই পড়তাম। পত্রিকার সম্পাদনারও দায়িত্ব পেয়েছিলাম। প্রায় সাড়ে তিনশো ছাত্রছাত্রীর সকলের কাছেই পরিচিত হয়ে উঠতে পেরেছিলাম। তবু এর মাঝেই একটি দুঃখের সংবাদ হলো—আমার রুমমেট কালাচাঁদ বাবু একদিন কাঁদতে কাঁদতে হোস্টেলে এসে বলল, “আমার সর্বনাশ হয়ে গেছে গো! আমি কী করে আর ট্রেনিং করব!”
আমরা জানতে চাইলাম, কী হয়েছে?
কালাচাঁদ বাবু বলল, “আমার বউ একজনকে ছেলে পাতিয়েছিল, ধর্মপুত্র হিসেবেই আমার বাড়িতে আসত, আদর-যত্ন পেতো। এই সপ্তাহে বাড়ি গিয়ে দেখি, বউ তার সঙ্গেই পালিয়েছে। তারা নাকি নতুন সংসারও পেতেছে। এখন আমার কী হবে!”
আমরা তাকে সান্ত্বনা দিলাম, বললাম, ওরা বেশিদিন একসঙ্গে থাকতে পারবে না। আবার ফিরে আসবে চিন্তা করবে না।
কালাচাঁদ বাবু সে কথা মানতে পারল না, সেদিন আবার রাত্রেই ফিরে গেল বাড়ি। আর কয়েক মাস পরেই পরীক্ষা ছিল আমাদের। কিন্তু সে পরীক্ষাও দিতে পারল না। শেষ পর্যন্ত তার কী হয়েছিল সে খবরও সংগ্রহ করতে পারিনি। মানুষের চরিত্র যে কত বিচিত্র হতে পারে তা সেই দিনই বুঝেছিলাম। মা যে পুত্রকেও তার শয্যাসঙ্গী করতে পারে তা চিন্তারও অতীত। হোক সে পুত্র পালিত। আরেকটি বিষয়ও এই হোস্টেলে দেখতে পেতাম। ট্রেনিং নিতে আসা অনেক বয়স্ক শিক্ষকও রাত্রে সুন্দরী মেয়েদের ভাড়া করে আনতেন। সারারাত থেকে তারা সকালবেলায় চলে যেত। একদিন এক শিক্ষককে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “কোথায় মেয়ে পাওয়া যায় ভাড়া?”
শিক্ষকটি আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল, “ওই তো মোড়ের পানের দোকানদারকে বললেই হবে। বহু কলেজ ছাত্রীই তো আসে।”
জিজ্ঞেস করেছিলাম, “একরাতে তাদের রেট কত?”
উত্তরে জানিয়েছিল, “তিনশো টাকা। অবশ্য এর কমেও পাওয়া যায়।”
ছোটবেলায় স্কুলে পড়াকালীন ভাবতাম, শিক্ষক মহাশয়রা অন্য মানুষদের মতো হন না। তারা কখনো অবৈধ কাজ করতে পারেন না। কেননা চরিত্র গঠনই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। তাই সমাজ তাদেরকে দেখে শেখে। কিন্তু ট্রেনিং করতে এসে আমার এই ভুল একেবারে ভেঙে গেছিল।
তবু মালদহের সেই কয়েকটা দিন আমার ভালো লাগার কারণ ছিল ভিন্ন। পুষ্পজিৎ রায় মালদহ কলেজের অধ্যাপক সম্পাদনা করতেন ‘জোয়ার’ পত্রিকা। তাঁর ডাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারতাম। সেই সব অনুষ্ঠানই পেয়েছিলাম নজরুল গবেষক ডক্টর আজাদকে। পেয়েছিলাম রফিকুল হককেও। রফিকুল গাজল কলেজের অংশকালীন অধ্যাপক। চমৎকার কবিতা লিখত। তার মাটির কোঠাপাড়া বাড়িতে গিয়ে কতদিন কাটাতাম। কবিতা শুনতাম। তুলাদি-কে নিয়ে লেখা খুব মরমি কবিতা। চা মুড়ি ঘুঘনি, কখনো আলুর দমের সঙ্গে লুচিও খেতে পেতাম। গাছপালায় ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশে মন জুড়িয়ে যেত। মালদহের কয়েকটি অনুষ্ঠানে দেখেছিলাম ত্রিদিব গুপ্ত এবং অনিন্দিতা গুপ্ত রায়কেও। গল্প-কবিতায় জমাটি অনুষ্ঠানে তাঁরা মন জয় করে নিয়েছিলেন। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেই এক নিঃসীম শূন্যতা সর্বদাই আমাকে উদাসীন করে দিত।
১৯৯৪ সালে এই কলেজে থাকাকালীনই মধুমঙ্গল বিশ্বাস চিঠি লিখে দশটা কবিতা চেয়েছিলেন। ‘দৌড়’ পত্রিকার উদ্যোগে তরুণ কবিদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করবেন এরকম একটি পরিকল্পনা হয়েছিল। আর সেই পরিকল্পনায় প্রথম সুযোগটি পেয়েছিলাম আমিই। তাই পড়িমরি করে এক রাতেই দশটা কবিতা লিখে ডাকযোগে পাঠিয়েছিলাম ‘দৌড়’ দপ্তরে। এই দশটা কবিতা থেকেই একটা কবিতার একটা পংক্তি চয়ন করেছিলেন কবি তীর্থঙ্কর মৈত্র। সেই পংক্তিটি ছিল ‘কোথায় পা রাখি’। এটিই হলো কাব্যের নাম। প্রায় মাসখানেকের মধ্যেই কাব্যটি প্রকাশিত হয়ে আমার কাছে এলো। একশো কপি কাব্য আমি কলেজেই বিক্রি করে ফেলেছিলাম। পার কপির দাম ছিল তিন টাকা। উজ্জ্বল ঝকঝকে সাদা মলাটে বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘কোথায় পা রাখি’ তার নিচেই আমার নাম। কলেজেও প্রথম জানতে পারল সবাই আমার এই কাব্যচর্চার কথা। একদিন দোতলা থেকে সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতেই মৃদুলা তার চুম্বন উদ্যত মুখ নিয়ে এগিয়ে এলো আমার মুখের পাশে, আমি হকচকিয়ে গেলাম। এটাই যে কবিতার পুরস্কার ছিল অনেক পরে বুঝেছিলাম। মৃদুলা আমাদের আগের ব্যাচের এমএ ক্লাসের ছাত্রী। যথেষ্ট সুন্দরী ছিল সেইসময়ের। ওকে তাই দিদি বলে ডাকতাম। একসঙ্গে ট্রেনিং এ ভর্তি হয়েছিলাম। তার সেই পুরস্কার আমি কোনোদিন ভুলতে পারব না।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ