spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদগদ্যমুর্তজা বশীর (জন্ম : ১৭ আগস্ট ১৯৩২--মৃত্যু : ১৫ আগস্ট ২০২০)

লিখেছেন : মুনীরা বশীর

মুর্তজা বশীর (জন্ম : ১৭ আগস্ট ১৯৩২–মৃত্যু : ১৫ আগস্ট ২০২০)

মুনীরা বশীর

আজ আমার বাবার মৃত্যুবার্ষিকী। বাবা চলে গেছেন আমাকে ছেড়ে কিন্তু আমার হৃদয়ে আজীবনের জন্য একটি স্থায়ী স্থান রেখে গেছেন। বাবাকে স্মরণ এবং সম্মান করি চোখের অশ্রুর সাথে। 

এটা বিশ্বাস করা কঠিন যে আজ বাবার মৃত্যুর ৪ বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু মনে হয় এটা গতকাল ছিল। এমন কোন দিন যায় না যেদিন আমি বাবাকে নিয়ে ভাবি না। বাবার সম্পর্কে চিন্তা করা, আমাদের ভাগ করা সময়গুলো মনে করে আনন্দদায়ক মুহূর্তগুলিকে সব সময় স্মরণ করি৷ বাবাকে হারানোর আঘাতের স্তর এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি। বাবা যেভাবে চলে গেলেন প্রতিটি দিন এখনও স্পর্শ করে। আমি এখনও সকালে ঘুম থেকে উঠে ভাবি এটি একটি দুঃস্বপ্ন এবং বাবা সত্যিই চলে যাননি। রাতে আমি আকাশের দিকে তাকাই এবং আমি যে উজ্জ্বল নক্ষত্রটি দেখি আমি বিশ্বাস করি সেটা আমার বাবাই!

আমি এখনও বাবাকে ভয়ঙ্করভাবে মিস করি। আমি বাবাকে সুস্থ করার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা এবং অনুনয় করেছিলাম। বাবার জীবনের শেষ দিকে আমি এত রাগান্বিত ছিলাম যে বাবা যখন মারা গেলেন তখন আমার শোক এতটাই অপ্রতিরোধ্য এবং আমার দম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যে অনেকবার আমি নিশ্চিত হয়েছিলাম যে আমিও মারা যাচ্ছি। আমার হৃদয় এত ভারী ছিল এবং ব্যথা অসহ্য ছিল। বাবা আমার জীবনে একটি প্রধান ভূমিকা পালন করতেন এবং এখন বাবা চলে গেছেন। আমার পুরো অস্তিত্ব জুড়ে বাবা।

বাবা, আমি সর্বদা দুঃখিত এবং দুঃখিত থাকবো আম্মার চলে যাওয়ার পর আপনি জীবনে এত একা অনুভব করেছিলেন এবং আমি তা বুঝতে পারিনি। আপনার ক্ষত কতটা গভীর ছিল তা হয়তো আমি অনুভব করতে পারিনি, আরো বেশী করে আপনাকে সময় দেইনি। আম্মাকে হারানোর পর আমি আপনার হৃদয় ভাঙার শব্দ শুনতে পায়নি। সব সময় এই আফসোস করবো। আমি কখনই ভুলতে পারবো না আপনি কি ভাবে আম্মার নিঃস্বার্থভাবে যত্ন নিয়েছেন এবং তা আমি দেখেছি। আপনার এবং আম্মার সত্য, নিঃশর্ত ভালবাসা দেখতে কেমন তা আপনি দেখিয়েছেন। আম্মার, আপনার আর সুজাতের চলে যাওয়াটা আমার জন্য একটি হৃদয়বিদারক, বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতা।

বাবা আমি আপনাকে ভালোবাসি। আমরা ভাগ করে নেওয়া সমস্ত ভাল এবং সুখী সময়গুলিকে আমি আমার মধ্যে গভীরভাবে ধারণ করি। আমি আমাদের সম্পর্কের কঠিন সত্য, গভীর বেদনা, দ্বন্দ্ব এবং আঘাতের সময়গুলো মনে করে চোখের পানি ফেলি। আমার জীবনের  টানাপোড়নে জায়গায় আমার শক্তি ছিল বাবা। আমি বাবাকে বাঁচাতে পারিনি। এই অপরাধবোধ, হতাশা এবং যন্ত্রণার সাগরে বসবাস করা থেকে নিজেকে ক্ষমা করতে পারি না।

বাবা ছিলেন আমার জীবনে সবচেয়ে বড় অবলম্বন। একজন বাবা হলেন তিনি যিনি তার মেয়েকে জীবনে পথ দেখান এবং এখন মৃত্যুতেও আপনি আমাকে পথ দেখান। আপনি ক্রমাগত আমাকে দেখাচ্ছেন যে ভালবাসা কখনই মরে না। আপনি আর আমি এখনও কথা বলি। এবং যদি আমি ঘনিষ্ঠভাবে শুনি তবে আমি এখনও আপনার গম্ভীর কন্ঠ শুনতে পাই। আপনার মৃত্যু আমার জন্য অনেক বেদনাদায়ক এবং শোকের। আমি জানি জীবনের শেষ প্রান্তে একটি রহস্যময় দরজা আছে। সেই দরজা যখন আমার সামনে খুলে যাবে আমি আর বাবা আবার মিলিত হবো তখন আমার হৃদয়ের ব্যথা শেষ হয়ে যাবে। আবার আমি আমার বাবাকে দেখতে পাবো। আমার সুপার হিরো সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ। যে মানুষটি আমাকে বড় করেছেন, যে মানুষটি আমার প্রথম প্রেম এবং আমার সেরা বন্ধু। বাবা আমি সর্বদা আপনার ব্যথা এবং কষ্ট আমার হৃদয়ে বহন করবো। 

বাবা আমাকে শিখিয়েছেন কীভাবে জীবনকে ভালোবাসতে হয় এমনকি যখন জীবনে একটি ভয়ঙ্কর এবং কঠিন সময় আসে। আমি শিখেছি জীবন কতটা মূল্যবান। আমি বাবার চলে যাওয়ার চার বছর পরে যখন বাবাকে স্মরণ করছি, তখন আমার অত্যন্ত অসুস্থ বাবার শেষ কথাটা কানে বাজছে “যুই আমি মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকবো তো?” যদিও আমি আর বাবার কন্ঠ শুনতে পাচ্ছি না, তবুও আমি বাবার মুখ দেখি এবং ভালোবাসা অনুভব করতে পারি। বাবা এখনও আমার সাথে, আমার হাসিতে, আমার কান্নায় এবং আমার লেখায়। ভালোবাসা কখনো মরে না, এটি কেবল বিকশিত হয়। বাবা আপনাকে ভালবাসি সবসময়। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি যে বাবা শান্তিতে থাকুন এবং স্বর্গের ফুলের বাগান থেকে আম্মা আর সুজাতের সাথে আমাদের সকলকে দেখতে থাকুক!

রাব্বির হাম-হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগিরা।

২.

বাবা, মৃত্যু জীবনের শেষ পরিণতি নয়। একমাত্র আল্লাহই অবিনশ্বর। অবশিষ্ট সব সৃষ্টি নশ্বর। আল্লাহ ছাড়া সব কিছু তার নির্দিষ্ট হায়াত পূর্ণ হওয়ার পর নিঃশেষ হয়ে যাবে। এ নিশ্চিত ধ্বংসের কথা অনেক সৃষ্টিই জানে না।

আপনি ১৫ আগস্ট ২০২০, সকাল ৯:১০ এ ৮৮ বছরে পদার্পন করার ২ দিন আগে আমাকে ছেড়ে মহাপ্রস্থানের পথে চলে গেলেন। ১৭ আগস্ট আপনার জন্মদিন। 

বাবা আপনি বলতেন ‘আমাকে তত দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকতে হবে, যত দিন না আমি মারা গেলে লিড নিউজ হই। আমাকে সেভাবেই প্রস্তুত হতে হবে। এমন কিছু কাজ করতে হবে, যেন আমি মৃত্যুর পরও বেঁচে থাকি’…

বাবা আপনি আমাকে সব সময় বলতেন ‘মৃত্যুকে অতিক্রম করে বেঁচে থাকতে চাই। বলতেন যুই আমার মৃত্যুর খবর পত্রিকার front page এ আসবে তো? বাবা আপনি যা চেয়েছিলেন তাই হয়েছে। ২০২০, ১৫ আগস্ট আপনার অনন্তলোকে যাত্রার খবর প্রথম আলো front page প্রকাশিত হয়েছিল। আপনি শিরোনাম হয়েছেন। দেশের অন্যান্য জাতীয় পত্রিকার front page এ শিরোনামে আপনি ছিলেন। Print media, Electronic media, আপনার শুভাকাঙ্ক্ষী থেকে শুরু করে, যারা আপনার সান্নিধ্য এসেছে, আপনার প্রস্থানে আপনাকে যে সম্মান যে আবেগ, ভালবাসা দিয়েছে, যেমন আপনার জীবিতকালে তারা দিতো…

ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌কে তাঁর সন্তানেরা অমর করে রাখেননি। 

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌র কাজ শহীদুল্লাহ্‌কে অমর করে রেখেছে। বাবা আপনি অন্তরালে আছেন হারিয়ে যাননি, যাবেনও না।  আপনি মৃত্যুর পরেও বেঁচে থাকবেন আপনার তিন সন্তানের অতীতে নয়, বর্তমানে, ভবিষ্যৎ। বেঁচে থাকবেন আঁকা, লেখালেখি। বাংলার হাবসি সুলতান কিংবা পশ্চিমবঙ্গের মন্দিরের টেরাকোটা নিয়ে আপনার গবেষণাই আপনাকে বাঁচিয়ে রাখবে। আপনি ডাকটিকেট আর মুদ্রাবিশারদ হিসাবে বেঁচে থাকবেন। 

বাবা আপনার চেয়ারটা শূন্য ঠিকই। খাটটাও শূন্য…তাতে কি?

কিন্তু ‘বাবা’ ছাড়া পৃথিবীটা শূন্য মনে হচ্ছে না কেন? কেননা শারীরিক ভাবে আপনি আমার সাথে নাই ঠিকই। কিন্তু আমি জানি আপনি আছেন আমার সাথে, আমার আত্মায়, আমার অন্তরের অন্তস্তলে, আমার স্মৃতিতে আমার সত্তায়…

বাবা ১৫ আগস্ট ২০২০ এ আমার জীবনে বয়ে যাওয়া প্রথম সুনামির ধাক্কা। আজকে ১৫ আগস্ট ২০২২ আপনার ২য় মৃত্যু বার্ষিকী শক্ত মনোবল নিয়ে অতিক্রম করতে চেষ্টা করছি। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ এ আমার জীবনে বয়ে যাওয়া দ্বিতীয় সুনামির ধাক্কার জন্য নিজের সাথে নিজে যুদ্ধ করছি বাবা। ‘The Show Must Go On’…তাই না বাবা!

বাবা আপনাদের বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করি। আমার বাবা, আম্মা আর সুজাতের জন্য দোয়া প্রার্থী। 

আল্লাহ আমাদের সহায় হন।

৩.

বাবা দিবসে বাবার জন্য ভালবাসা…পৃথিবীতে একটি মেয়েকে তার বাবার চেয়ে কেউ বেশি ভালোবাসতে পারবে না…আপনাকে অনেক ভালবাসি বাবা…

প্রিয় বাবা, 

২২ মাস হয়ে গেলো যুই বলে ডাকেন না, আমার শারীরিক ও মানসিক দুর্বলতা নিয়ে উদবিগ্ন হন না…সকালের নাস্তা, দুপুর আর রাতের খাবার আর এক সাথে নানাবিধ গল্প করতে করতে খাওয়া হয় না…

আমার কাছে আপনি ছিলেন আমার বন্ধু আর ছেলের মত…বাবা মনে পরে আপনাকে যখন বকা দিতাম, রাগ করতাম, বলেই নিতাম বাবা আমি কিন্তু এখন আপনার মা হয়ে যাচ্ছি…এখন আমি আপনার মেয়ে না…আপনি হাত ধরে টেনে নিতেন কাছে আর বলতেন “তোর রাগ খুব বেশী…”

বাবা আমি আর আগের মত রাগী নাই…সুজাত ও চলে গেছে…

কার সাথে রাগ করবো…আম্মা চলে যাবার পর আমার বেঁচে

থাকার অবলম্বন আপনি ছিলেন…আপনি চলে গেলেন, মনে করলাম সুজাত আর কুটটু তো আছে…সেই সুজাত ও আপনার চলে যাবার ২৮ দিন পরে আমাকে একা রেখে চলে গেলো…

অথচ আমি এখনও বেঁচে আছি…

বাবা আপনাকে, আম্মাকে আর সুজাতকে একটি বার দেখার জন্য হৃদয়টা হাহাকার করে…বাবা আপনি আমার সুপার হিরো…আমার শরীর খারাপ হলে সব সময় আপনি শঙ্কিত থাকতেন…এখন আর কেউ শঙ্কিত হয় না…আপনি চলে যাওয়ার পর শিখেছি অনেক বাস্তবতা, দেখেছি অনেক নিষ্ঠুরতা…আমার যত আবেগ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, গর্ব সব আপনাকে ঘিরে…কত স্মৃতি চোখে ভাসে…আজকে আপনি ছাড়া আমি অনেক অসহায় বাবা…

আম্মা যখন ৫৪ বছর এক সাথে চলার পর ২০১৭, ১৩ মে বাবার হাত ছেড়ে চলে গেলেন পরপারে…বাবাকে দেখেছি নীরবে আম্মার জন্য চোখের পানি মুছতেন…আমার চোখে ধরা পড়লে বলতাম – কাঁদছেন কেন? আমি বাবার চোখের পানি মুছে দিতাম আর situation normal করার জন্য বলতাম…বাবা আম্মার জন্য এত ভালবাসা!!! বাবা আমার হাত দুইটা চেপে ধরে হাসতেন আর বলতেন এত দিনের বন্ধন…তোর আম্মাকে খুব মিস করি…তখনও ঘুণাক্ষরে বুঝতে পারিনি এত অল্প সময়ে আমার situation একই রকম হয়ে যাবে…আম্মার আর বাবার জন্য বিশেষ করে সুজাতের জন্য অঝরে চোখের পানি ঝরে…বাবার মত আমিও বলি বড় মিস করি তোমাদের…বড় ভালবাসি…

সন্তানের প্রতি শুধু মায়ের নয় বাবার ভালোবাসা, করুণা ও মমত্ববোধ আল্লাহর অশেষ কুদরতেরই নিদর্শন…আমার বাবাও এর ব্যতিক্রম নয়…বাবার দেখাশুনার জন্য বাবার বাসায় দিনে রাতে কয়েক বার আমাকে আসতে হয়…আমাদের শেলটেক মনিহার এপার্টমেন্ট নং ২ এ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঈদের রাতে একজন আংকেল মারা গিয়েছিলেন…

এপার্টমেন্ট নং ৬ এবং ৮ এও করোনা ভাইরাস ঢুকে পরেছিল… এরপর থেকে আমার জন্য বাবার দুশ্চিন্তার শেষ নাই…বাবা বলতেন: ‘তুই এতবার আমার এখানে আসিস…তোর কিছু হলে আমাকে কে দেখবে? তোর চিন্তায় আমি রাতে ঘুমাতে পারি না…’ আমাকে না জানিয়ে আমার সুরক্ষার জন্য পিপিই কিনে আমাকে দিয়ে বললেন: ‘এটা পরে আসিস…আমি নিশ্চিত হবো…’ আমি পিপিই পরার বিরোধী ছিলাম…আমার ৩ নং বিল্ডিং থেকে বাবার ৭ নং বিল্ডিং এ যাবো…এতে কি আর এমন হবে…বাবাকে বলার পর মন খারাপ করলেন…অগত্যা বাবাকে দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে বাবাকে বললাম: ‘তথাস্তু বাবা আমি পিপিই পরবো…’ শুধু  আমার জন্যই নয়…সুজাত আর কুটটুর জন্যও কিনে এনেছিলেন…

বাবা গত ২০-২৫ বছর আগে কয়েকটি মৌলিক গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ লেখার পরিকল্পনা করেছিলেন…তার জন্য বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে নোটও করেছিলেন…এ ছাড়া ভিন্ন আঙ্গিকে তার আত্মজীবনী লিখছিলেন যা অসম্পূর্ণ রয়ে গিয়েছে…

বাবা খ্রিস্ট পূর্ব ৫০০০ বছর থেকে ১২০০ শতাব্দী পর্যন্ত ভারতের সামাজিক ইতিহাস লেখার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন…এই জন্য বেদ, মহাভারত, রামায়ণ, গীতা এবং নানাবিধ পুরাণ ছাড়াও হিন্দু শাস্ত্র মনু, নারদ, বৃহস্পতি, বিষ্ণু এবং বৌদ্ধ শাস্ত্র বশিষ্ঠ, বৌদ্ধায়ন, সুত্ত বিভঙ্গ, অস্পষ্ঠসম্ভা, গৌতম, বৌদ্ধ সূত্র, ধর্মপদ, কুলাবগ্গ, মহাবগ্গ ও জাতক অধ্যয়ন করেন…বাবা এই গবেষণা করার জন্য সহায়ক গ্রন্থ হিসাবে বইয়ের দীর্ঘ তালিকা তৈরি করেছিলেল…কিন্তু এই তালিকার বেশীর ভাগ বই না পাওয়াতে এই উচ্চ বিলাসী গবেষণাটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হননি…এই জন্য বাবার মনে অনেক দুঃখ ছিল…

১৯৭৩ সালে প্যারিস থেকে আসার পর বাবার জীবনের প্রথম স্থায়ি চাকরি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে…অ্যাসিস্টান্ট বা অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের বেতনে সংসার চলে না…ফলে ছবি আঁকতে হতো…কমার্শিয়াল কাজ বা বইয়ের প্রচ্ছদ, ইলাস্ট্রেশন আমার বাবা করতেন না…সংসার চালানোর জন্য অতিরিক্ত অর্থের জন্য অনেক সময় ইচ্ছার বিরুদ্ধে আঁকাআঁকি করতেন…এর আগে তিনি করাচী, লাহোর ও রাওয়ালপিন্ডিতে চিত্র প্রদর্শনী করে জীবিকা নির্বাহ করতেন…

বাংলার মন্দিরে টেরাকোটা শিল্প…বাংলার স্বাধীন সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের একটি মুদ্রার উপর নতুন আলোকপাত…এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে বাবা মুদ্রা ও শিলালিপি আলোকে বাংলার হাবশী সুলতান গ্রন্থটি রচনা করতে ২/৩ বছর সময় নিয়েছিলেন…বাবা বলতেন “পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মুদ্রা ও শিলালিপির আলোকে বাংলার হাবশী সুলতান ও তৎকালীন সমাজ এই গবেষক পরিচয়ে বেঁচে থাকলে খুশি হবেন…”

মন্দিরে টেরাকোটা শিল্প মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষন করার জন্য বাবা ভারতের আইসিসিআরের অর্থায়নে পশ্চিম বংগের ৯টি জেলায় ১৯৯৩ সালে ১২৫টি গ্রাম ও ১৯৯৭ সালে ১৫০টি গ্রামে অনুসন্ধান করেন…

এ ছাড়া ২টি ভিন্নধর্মী গবেষণা বৈদিক সংহিতা ও কোরআন ভিত্তিক প্রবন্ধ রচনার পরিকল্পনা করেছিলেন…কিন্তু নানা কারণে লেখা হয়ে উঠেনি…এ কারনে তার মনে আক্ষেপ রয়ে গিয়েছিল…

হে আমার রব! তাঁদের প্রতি দয়া করো যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাদের প্রতিপালন করেছিলেন…

হে আল্লাহ…তুমি আমাদের হেফাজত করো…তুমি আমাদের ওপর দয়া করো…আমাদের তোমার রহমত ও দয়ার ছায়ায় ঢেকে নাও…হে আল্লাহ…আমাদের যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করো…আমাদের তুমি নিরাপদে ও শান্তিতে রাখো…হে আল্লাহ!  তুমি আমাদের প্রার্থনা কবুল করে নাও…আমীন…

আপনার যুই…

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

কাজী জহিরুল ইসলাম on ‘প্রথম আলো’র বিকল্প
পথিক মোস্তফা on মানবিক কবি ফররুখ আহমদ
মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন on ক্রান্তিকাল
এ্যাডঃমনিরুল ইসলাম মনু on গুচ্ছ কবিতা : বেনজীন খান
পথিক মোস্তফা on সাক্ষাৎকার : নয়ন আহমেদ
সৈয়দ আহমদ শামীম on বাংলা বসন্ত : তাজ ইসলাম
Jhuma chatterjee ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি on গোলাপ গোলাপ
তাজ ইসলাম on রক্তাক্ত স্বদেশ
আবু বকর সিদ্দিক on আত্মজীবনীর চেয়ে বেশি কিছু
ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি। on জন্মদিনের কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
দিশারী মুখোপাধ্যায় on গুচ্ছ কবিতা : গোলাম রসুল
দিশারী মুখোপাধ্যায় on নির্বাচিত ১০ কবিতা : কামরুজ্জামান
তাজ ইসলাম on Menifesto of the Inevitable Revolution
কাজী জহিরুল ইসলাম on দীর্ঘ কবিতা : তাজ ইসলাম
দীপশিখা পোদ্দার on গুচ্ছ কবিতা : কাজল সেন
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on গুচ্ছ কবিতা : তাজ ইসলাম
নয়ন আহমেদ on রবীন্দ্রনাথ
নয়ন আহমেদ on কিবরিয়া স্যার
বায়েজিদ চাষা on গুচ্ছ কবিতা : অরুণ পাঠক
আবু আফজাল সালেহ on দীর্ঘ কবিতা : অভিবাসীর গান
কাজী জহিরুল ইসলাম on রবীন্দ্রনাথ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on গুচ্ছ কবিতা : হাফিজ রশিদ খান
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
নয়ন আহমেদ on আমার সময়
মোঃবজলুর রহমান বিশ্বাস on গুচ্ছ কবিতা : দিলরুবা নীলা
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
কাজী জহিরুল ইসলাম on অক্ষয় কীর্তি
Quazi Islam on শুরুর কথা
আবু হেনা আবদুল আউয়াল, কবি ও লেখক। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, নওগাঁ সরকারি কলেজ নওগাঁ। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
নয়ন আহমেদ on ফেলে আসা ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
পথিক মোস্তফা on ঈদ স্মৃতি
Sarida khatun on ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদ স্মৃতি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on দীর্ঘ কবিতা : আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ
পথিক মোস্তফা on শৈশবের ঈদ : একটি স্মৃতি
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on আমার ঈদ
নয়ন আহমেদ on ঈদের আনন্দ
শাদমান শাহিদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
নয়ন আহমেদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on সাম্প্রতিক কবিতা : নয়ন আহমেদ
মুস্তফা জুয়েল on আমি আর আমার গাযালি
কাজী জহিরুল ইসলাম on গুচ্ছ কবিতা : মুর্শিদ-উল-আলম
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on অপদার্থবিদ্যা
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on দেশপ্রেমের ১০ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on নির্বাচিত ২৫ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on প্রিয়াংকা
প্রত্যয় হামিদ on শাহীন খন্দকার এর কবিতা
মহিবুর রহিম on প্রেম ও প্যারিস
খসরু পারভেজ on কাব্যজীবনকথা
মোঃ শামসুল হক (এস,এইচ,নীর) on সুমন সৈকত এর কবিতা
এম. আবু বকর সিদ্দিক on রেদওয়ানুল হক এর কবিতা