প্লাবন-প্রতারণা
সালেম সুলেরী
…………..
প্লাবন কি পলিটিক্স?
নিজেরা বাঁচার জন্যে অন্যকে ডোবাও।
ভেসে যায় বিশ্বাসের বাগান, জবা’ও।
বন্যায় সবচে অসহায় গরিবানা, ফুল,
গৃহপালিত পশু ও পাখি, যেন
সকলেই সাঁতার না জানা শিশু, হুলুস্থুল।
নোটিশ না রেখে হঠাৎ প্লাবন, গেটখোলা ঢল,
প্লাবন কি হয়রানি? দমন কৌশল?
এসো হে সেবক পাশে, সর্বধর্ম, হে আদর।
জলে-স্থলে অন্তরীক্ষে উদারত্ব, ত্রাণ-সমাদর।
ঠেকাও প্লাবন-প্রতারণা, খোলো তার রহস্য-চাদর।
আগস্ট ২০২৪
…………
জলের নিচ থেকে উঠে দাঁড়াবেই বাংলাদেশ
কাজী জহিরুল ইসলাম
………….
প্রমত্ত জলের নিচ থেকে উঠে দাঁড়াবেই বাংলাদেশ,
তখন ঐক্যের বাংলাদেশ এতো উঁচু হয়ে দাঁড়াবে যে
ওর মাথা তো দূরের কথা,
হাঁটুও স্পর্শ করতে পারবে না ষড়যন্ত্রের নির্মম ছোবল।
উদ্দিপ্ত আঠারো কোটি মানুষ মহাঐক্যের এক সুবৃহৎ বৃক্ষছায়াতলে আজ এসে দাঁড়িয়েছে;
মুসলিম যুবক পাহাড়া দিচ্ছে হিন্দুর মন্দির,
হিন্দু এসে দাঁড়িয়েছে শহীদের জানাযায়,
শুধু কন্ঠে নয়, পাহাড়ি, খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ মানুষের
পবিত্র কালবে আজ
উচ্চারিত হচ্ছে দেশপ্রেমের অভিন্ন মন্ত্রবীজ, “আমরা সবাই বাংলাদেশী”।
এমন ঐক্যের চেয়ে শক্তিশালী পৃথিবীর কোন দানব-দুর্যোগ? কোন ষড়যন্ত্র?
মানবিক বোধে উজ্জীবিত মা এসে বলেন,
আমার গলার হারগাছি নাও, বাঁচাও বন্যার্তদের,
উৎকণ্ঠায় প্যাডেলে চাপ দিয়ে টিএসসিতে ছুটে আসেন রিক্সাশ্রমিক,
ছাত্রদের হাতে সমস্ত দিনের উপার্জন তুলে দিয়ে
বলেন কাতর কণ্ঠে, বন্যার্তদের বাঁচান মামা,
তরুণ মন্ত্রীরা তুলে দিচ্ছেন প্রথম মাসের বেতন।
সেনাবাহিনীর চপারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে
ছুটছে ব্যবসায়ীর সুসজ্জিত হেলিকপ্টারসমূহ,
প্রবাসীরা হাত খুলে পাঠাচ্ছেন কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা,
বাঁচাতে হবেই ভয়ঙ্কর জল-কবলিত শিশুদের,
অসহায় মায়েদের, আমাদের কন্যা সাহসীকা, ফলবতী জায়াদের,
নিস্তেজ, দুর্বল যারা, যারা বয়োবৃদ্ধ নাগরিক,
ফুসে ওঠা বেনোজল-থাবা থেকে তাদের বাঁচাতে হবে,
ভয়াল জলের ঘুর্ণিপাক থেকে টেনে
তুলতেই হবে এই নতুন বাংলাদেশ।
লাল-সবুজের পতাকা আমরা এতো উঁচুতে ওড়াবো,
অবাক বিস্ময়ে পৃথিবীর মানুষ দেখবে আর
তখন জানাবে লম্বা এক সশ্রদ্ধ স্যালুট।
ডালাস, টেক্সাস। ২২ আগস্ট ২০২৪
………..
বন্ধুরাষ্ট্র
সাজ্জাদ বিপ্লব
………..
এই চোখের ভাষা যদি পড়তে পারো–
হে বন্ধুরাষ্ট্র, দেখবে, আগামীর বাংলাদেশ, কি করে জ্বলে ওঠে।
কোন বন্যা নয়, তুমি গুষ্টিশুদ্ধ ডুবে যাবে
তোমার অন্যায়ে, পাপে।
আমাদের ঘৃণা–অভিশাপ তোমার পাথেও…
তছনছ হয়ে যাবে তোমার সাজানো ঘর।
পুড়ে যাবে তোমার উত্তর-দক্ষিণ-পূর্ব-পশ্চিম।
ভেঙে যাবে তোমার সাত বোনের সংসার।
অন্ধকার হয়ে যাবে তোমার আগামী।
তোমার ভবিষ্যত মানচিত্র, লেখা হয়ে গেছে এই দৃষ্টিতে
৮.২১.২৪
আটলান্টা, জর্জিয়া।
দ্রোহ, ক্ষোভ আর আগুনের ভাষায় রচিত এই তিনটি কবিতা।
খুব ভালো লাগলো।