spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদঅন্যান্যমা তোর বদনখানি মলিন হলে...

লিখেছেন : তাজ ইসলাম

মা তোর বদনখানি মলিন হলে…

তাজ ইসলাম

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। ৫৪ বছরে কয়েকবার দাবী উঠেছে পরিবর্তনের। দাবী উঠলেই কথা বাড়ে। আমরা যারা নিরীহ জনতা তারা চুপ থাকি। আর কথা শুনি। পরিবর্তনের বিপক্ষে যারা তাদের এত যুক্তির দরকার পড়ে না। তাদের এক যুক্তি আইন করে এটিকে জাতীয় সঙ্গীত বানানো হয়েছে এটিই থাকবে। এই যুক্তিই তাদের মূল যুক্তি। এটি থাকবেই এই ধরণের কথা গণতান্ত্রিক কথা নয়।এমন কথাই ফ্যাসিস্টের প্রতিধ্বনি।

যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীন হওয়ার পর এই গানটি জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয়। যুদ্ধের সময়ও এই গান গীত হতো। তবে তখন এটি আর দশটা দেশাত্মবোধক গান হিসেবেই গাওয়া হত। পরিবর্তনের দাবী উঠলেই আমরা কিছু কার্যকারণ জানতে পারি।

এই গানটি কেন জাতীয় সঙ্গীত হল এই প্রশ্নের উত্তরে কেউ কেউ বলেন বিজয়ের পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর চাপে, র এর কৌশলে শেখ মুজিব এটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করেন ।

আবার অনেকের মতে সিরাজুল ইসলাম খানদের মতো দুই তিনজনের প্রস্তাবে তা গৃহীত হয়। সমালোচকদের মতে তারাও ভারতীয় লবিংয়ের লোকই ছিল ।

স্বাধীনতার পরে সাড়ে পাঁচ দশকে বাংলাদেশের মানুষের অভিজ্ঞতা ভারত বাংলাদেশী স্বার্থের অনুকুলের প্রতিবেশী না। ভারতের আধিপত্যবাদী কর্মকাণ্ড, দাদা সুলভ আচরণে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসীরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে ভাবতে পারছে না।
জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হওয়ার ইতিহাসে যেহেতু ভারতের যোগসূত্রের ইঙ্গিত আছে তাই জনগণ তাদের সে সংযোগ সূত্র থেকে মুক্তি চায়।

রবীন্দ্রনাথের অন্য একটি গান ভারতের জাতীয় সঙ্গীত। সচেতন জনগণ একই কবির ভিন্ন আরেকটি গান একটি স্বাধীন দেশের জাতীয় সঙ্গীত থাক তা চায় না।

রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ কবি। তিনি বাংলা ভাষার কবি।বাঙালির কবি। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ।রবীন্দ্রনাথ এই দেশের কবি নন।বাংলা ভাষা ও বাঙালীর কবি হওয়া আর বাংলাদেশীর কবি হওয়া একটু আলাদা।তবু মানুষ তাকে ও তার সাহিত্যকে সম্মান করে ও করবেই।বাংলাদেশীরাও তাকে তার সাহিত্যকে সম্মান করে। তার সাহিত্য কিংবা তাকে বয়কটের কথা বলেনি। তারা তার এই গানটির বিরোধিতা করে।
এর পিছনে যুক্তি হিসেবে হাজির করে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট।

রবীন্দ্রনাথ এই গানটি লিখেছিলেন অখণ্ড ভারতের পক্ষে।রবীন্দ্রনাথের অখণ্ড ভারতের অন্য অংশগুলো বৃহৎ ভারতের অংশ। তার সেদিনের দাবী মোতাবেক এই বাংলাদেশ বিশাল ভারতের অংশ হলে আজ এ দেশবাসীর ভাগ্য হত কাশ্মীর, আসাম বা সাতবোনের মতো।
তাছাড়া যে গানটি এদেশের মানুষের আশা আকাঙ্খা, স্বপ্নকে হত্যার প্ররোচনায় লেখা সে গানকে জাতীয় সঙ্গীত করা হয়েছে। মানুষ যখন ইতিহাস সচেতন হয়েছে তখন ইতিহাসের সত্যকে উপলব্ধি করতে শিখেছে। এই সূত্র ধরেও এই গানটি জাতীয় সঙ্গীত থেকে পরিবর্তন চায়।

রবীন্দ্রনাথের ইতিহাস বৃটিশ বন্দনার ইতিহাস।পূর্ব বাংলার জনগণের স্বার্থের বিপক্ষের ইতিহাস। প্রচলিত আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিপক্ষেও ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এই বিষয়গুলোও মানুষের বিবেকে সঞ্চিত আছে।

জাতীয় সঙ্গীত একটি জাতীর গৌরবের অংশ। গানটির জন্মের ইতিহাসে চুরি বা অনুকরণের কথা চালু আছে। গগন হরকরার গানের সুর,ভাব মেরে দেওয়ার শক্ত অভিযোগ আছে। যে গানের সৃষ্টিতে এমন কালিমাযুক্ত আছে জাতী হিসেবে বাংলাদেশীগণ কালিমাযুক্ত গানকে নিজেদের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে আর রাখতে চায়নি।

এই গানটি যতদিন জাতীয় সঙ্গীত থাকবে ততদিন রবীন্দ্রনাথের চৌর্যবৃত্তির বিষয়টি আলোচিত হবে। এটি জাতীয় সঙ্গীত না হলে এতোটা আলোচনায় আসতো না। তার বিশাল সৃষ্টির নিচে তা চাপা পড়ে থাকতো।গগন হরকরার গানের ভাব মেরে দেওয়ার দাবীকে কেউ অস্বীকার করেনি,খণ্ডনের যুক্তিও কেউ হাজির করেনি। অনেকের মতে রবীন্দ্রনাথের এই গানটি কবির কোন মৌলিক রচনাই না।তাদের মতে এটি একটি প্যারোডি।গগন হরকরার গানের প্যারোডি। একটি প্যারোডি একটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত হতে পারে না।

২৪ এ ছাত্র জনতার আন্দোলন একটি সফল আন্দোলন।আন্দোলনের ফলাফল হিসেবে হওয়ার কথা ছিল একটি বিপ্লবী সরকার। বিপ্লবী সরকার হলে সঙ্গে সঙ্গেই তারা বাতিল করে দিত সাবেক অনেককিছু।এমনকি পূর্বের সংবিধানও।সংবিধানই যদি বাতিল হয়ে যেত তখন জাতীয় সঙ্গীত অটো বাদ হয়ে যেত। হয়তো এটি থাকতো,নতুবা নতুন কিছু যুক্ত হত।
তবে বিপ্লবী সরকার না হলেও সরকারে আছে মূলত বিপ্লবীরাই। তারা ইচ্ছা করলে সংবিধান সংস্কার করতে পারে। সংস্কারের কথা বলতেই চোখ ছানাবড়া হওয়ার কিছু নেই। সংস্কার আওয়ামী সরকার নিজেদের প্রয়োজনে বারবার করেছে। এ সরকারও করতে পারে।পদ্ধতিগতভাবে পরিবর্তনের পদক্ষেপও নিতে পারে। সংবিধান পরিবর্তন বা বাদ দিয়ে নতুন করে প্রনয়ন করলে তখন আলাদা করে জাতীয় সঙ্গীতের কথা বলতে হবে না। নতুন সংবিধানে নতুন জাতীয় সঙ্গীত যুক্ত করে দিলেই হবে।

সংবিধান,জাতীয় সঙ্গীত দেশে দেশে,যুগে যুগে পরিবর্তন হয়। না হওয়ার মতো আসমানী বিষয় না। সঠিক পদ্ধতিতে আগালেই হল।

২৪ এর ছাত্র জনতার বিপ্লবে আওয়ামীলীগ হল প্রতিপক্ষ। খুন,গুম,নির্যাতনে আওয়ামীলীগ সভ্য পৃথিবীর জঘন্য ফ্যাসিস্টের তকমা পেয়েছে।ভারত ছিল এই ফ্যাসিস্টের সহায়ক। পলাতক হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে ফ্যাসিস্টের শেষ ভরসাস্থল হিসেবে হাজির হল। রবীন্দ্রনাথ ভারতের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা।ভারত ফ্যাসিস্টের সহায়ক। জনতা ফ্যাসিস্টের চিহ্ন মুক্তি চায়। এ কারণেও জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন তাদের একটি যৌক্তিক দাবী।

আওয়ামী জনতা,ফ্যাসিস্ট ও তার অনুচররা পরিবর্তনের সরব বিপক্ষে। মাঠে ফেরার মোক্ষম ইস্যু তাদের। ভাসা আবেগী বাংলাদেশীরাও তার সপক্ষে।
বিপ্লবকে ধারণকারী জনতা,সচেতন নাগরিক এখন দেশ সংস্কারে মনযোগী। মানুষ কবি রবীন্দ্রনাথকে সম্মান করতে অনিচ্ছুক না।কিন্ত তাকে সমালোচনা করা যাবে না এ নীতি মানতেও প্রস্তুত না। তার সাহিত্য বলেই প্রশ্নাতীত এমন নীতি আর ধূপে ঠিকবে না।

পরিবর্তনের দাবী কি তারা জানাতে পারে না?
পরিবর্তনের দাবী জানানো কী অযৌক্তিক? রাষ্ট্রদ্রোহিতা? ‘ আমার সোনার বাংলা’ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।এটি মানা সাংবিধানিক আইন।সংবিধানইত পরিবর্তন হয়।পরিবেশ পরিস্থিতিতে সংবিধান পরিবর্তন হয়,সংস্কার হয়, রদবদল হয়। নতুন আইন যুক্ত হয়,সংযোজনের বিপরীতে বিয়োজন হয়। তাহলে জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন, পরিবর্ধন,আলোচনা,সমালোচনা হতে পারবে না কেন? আমার মনে হয় নাগরিক তার মতামত জানাতেই পারে। যারা বলে, না জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে কোন কথা হবে না,যা আছে তাই থাকবে,কিছুতেই পরিবর্তন হতে দেব না,পরিবর্তন হতে পারে না,এ বিষয়ে কথা বলার কোন অধিকারই নাই।’

এটিও ফ্যাসিস্ট আচরণ।
রক্তস্নাত সংগ্রামের পর ফ্যাসিস্ট পালিয়ে গেছে।অনুচররা রয়ে গেছে।তারা কথা বলে ফ্যাসিস্ট ভাষায়।

জাতীয় সঙ্গীতকে অস্বীকার করা যাবে না।অস্বীকার করা আর সমালোচনা করা দুটো ভিন্ন বিষয়। যতদিন তা জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে আছে ততদিন মানতে বাধ্য।প্রস্তাবের পরে বিধিসম্মতভাবে পরিবর্তন হয়ে গেলে নতুন আদেশ মানাই তখন কর্তব্য। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইন বলবত রাখে সংবিধান।জারি রাখে সংসদ।প্রস্তাব,বিতর্ক চলছে।একটা সুরাহা হবেই।বিপ্লবী সরকার যদি জাতীয় সঙ্গীত আইনি প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন করে তখন তাই হবে আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।যদি পরিবর্তন না করে যা আছে তাই আমাদের জাতীয় সঙ্গীত।আমরা গোঁয়ারদের পক্ষে নই।কোন চরমপন্থীর সমর্থক নই। বাদ দিতেই হবে,আবার বাদ দেওয়া যাবেই না,দুটোই উগ্রতা। রাখতে যারা চায় তারা যুক্তি দেখাবে।না রাখতে যারা চায় তারাও যুক্তি দেখাচ্ছে। সচেতন নাগরিক সবই দেখছে।

রবীন্দ্রনাথ হিন্দু, এটা ঠুনকো যুক্তি। সাহিত্য বোদ্ধারা এ যুক্তি তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন।

তারা কথা বলেন ইতিহাস,দর্শন,শব্দের প্রয়োগের প্রেক্ষিতে। তারা মনে করেন রবীন্দ্রনাথের অন্য কবিতা হলেও আপত্তি নাই।রবীন্দ্র সাহিত্য নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব বা বিদ্বেষ নাই।

এই গানটি নিয়ে আপত্তি কেন?
এটির আপত্তি বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে করেছেন। রবীন্দ্রনাথের মতো বিশাল একজন মানুষের একটি প্যারোডি একটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত হওয়া লজ্জাজনক।

তারা কবিতার ‘ তোর ‘ শব্দ প্রয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তুলেন। কবি কবিতায় বলেছেন ‘মা তোর বদনখানি’।
দেশ কবির মা। মা পবিত্র,মা মহান।
বন্ধু- বান্ধব,প্রিয়তমা,সখি,বান্ধবীকে তুই তুকারি করা হয়।বাংলাদেশে,সভ্য নাগরিক কেউ কি কারো মাকে আদর করে,ভালোবেসে তুই, তুকারি করেন? একটি দেশের জাতীয় সঙ্গীতে মাতৃভূমির মাকে বিশ্বের দরবারে তুই,তোর তুল্য করে উপস্থাপন করলেন, এ ভূমিপুত্রদের পরিচয় করালেন বিশ্বদরবার অসভ্য,অভদ্র হিসেবে।

রবীন্দ্রনাথ কি তাহলে বাঙালীকে সভ্য ভাবতে পারেননি! রবীন্দ্রনাথ কি তবে বৃটিশ আদর্শে উদ্বুদ্ধ ছিলেন? বাঙালীর সৌন্দর্যের চেয়ে বৃটিশ প্রেমে মগ্ন ছিলেন?

হয়তো না।তবে কথার পিঠে যুক্তি আছে। তার কবিতায় যখন উচ্চারিত হয় ” রেখেছ বাঙালী করে মানুষ করনি” যার দৃষ্টিতে বাঙালী মানুষই হতে পারেনি তারা আবার সভ্য হবে কীভাবে?
রবীন্দ্র আশেকেরা বলবে
কবিতায় প্রয়োগকৃত শব্দ ‘ তোর’ কবিতার সাবলীলতার জন্য,ছন্দ মাধুর্যের জন্য প্রয়োগ করা হয়েছে। তা হলেও মনে হয় কবি যেন কোন এক বিদ্বেষ থেকেই স্বজ্ঞানেই প্রয়োগ করেছেন।
একই পঙক্তিতে রোপিত আছে পরাধীনতার অক্ষম অথর্ব চরিত্র।

বিশ্লেষণের আগে একটু বিস্তারিত বলি।শুধু বাংলাদেশ না,পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের, যেকোন ভাষার একজন সন্তানের সামনে মা লাঞ্চিত হলে,অপদস্ত হলে বলিষ্ঠ, তেজি,হৃষ্টপুষ্ট একজন সন্তানের প্রতিক্রিয়া কী হয়? এক্ষেত্রে লিঙ্গভেদের দরকার নাই। আজকের বিশ্বে একজন মা কোথাও কারও দ্বারা কোন বিষয়ে আক্রান্ত হলে সে ছেলে হোক,মেয়ে হোক তার প্রতিক্রিয়া কী? আমারতো মনে হয় জ্বলে উঠাই সন্তানের বৈশিষ্ট্য । সন্তানের বুকে রক্ত দ্রোহে গর্জে ওঠাই স্বাভাবিক। মাতৃভূমি মা,কবিও মা মান্য করেই রচনা করেছেন কবিতার পঙক্তি।

কিন্ত চরিত্র!চরিত্র তার বৃটিশ রাজের অনুগত অক্ষম দাসের! হায় দাস!

মা লজ্জিত হবে,মা লাঞ্চিত হবে,মা অপদস্ত হবে,মায়ের মুখ মলিন হবে।আর তার অপদার্থ, বেকুব,ভীরু,কাপুরুষ, অক্ষম,গোলাম সন্তান বলবে হে মা, মাগো আমি কিচ্ছু পারিনি তাই ” মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি( বালিশে মুখ গুঁজে) নয়ন জলে ভাসি”।

১৯০৫ সালে রচিত এই গান। তখনকার বাংলাদেশীর চরিত্র কী এমন ছিল? ইতিহাস তা স্বীকার করে না।বঙ্গভঙ্গের পক্ষে যারা ছিল তারাও সেদিন দ্রোহ করেছিল।যারা বিপক্ষে ছিল তারাও দ্রোহ করেছিল। বৃটিশ সাম্রাজ্যের লর্ডদের মুখের উপরই পেশ করেছিল নিজেদের দাবী। কবিতার কাপুরুষ বাঙালী চরিত্র তখনকার বাঙালী চরিত্রেই মিলেনি। তারপর ইতিহাসে দিন যত গড়িয়েছে বাঙালীর ইতিহাস ততই রক্তদানের ইতিহাস,স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দানের ইতিহাস,গর্জে ওঠার ইতিহাস।আন্দোলনে,সংগ্রামে,আত্মত্যাগে বিতারিত হয়েছে পরাক্রমশালী বৃটিশ। অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। কাপুরুষ কান্নার স্বভাব এ জাতীর না,
এ স্বভাব
বড়জোর কবির ব্যাক্তিগত। তিনি জমিদার ছিলেন।নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিতে চাননি হয়তো। তাই থেকেছেন ক্ষমতার পক্ষে,নিজের স্বার্থের পক্ষে।আবার দেশের জন্যও মন কেঁদেছে। তখন অসহায় নেত্রে সিক্ত হয়েছেন। সে ভাবই ব্যক্ত করেছেন নিজের কবিতায়।
এদেশে নারী পুরুষ মা মাতৃভূমির সম্মানে সংগ্রামে বিলিয়ে দিতে প্রস্তত বুকের তাজা রক্ত।শুধু মাতৃভূমি না মাতৃভাষার সম্মানেও তারা পৃথিবীর বুকে নজিরবিহীনভাবে ঢেলে দিয়েছেন সম্মিলিত তাজা লহু। ৭১ এ তারা বীরবাঙালী,তারপর বাংলাদেশী । তারা আত্মগোপনের অংশীদার নন।কামান,রাইফেল,বোমারু বিমানকে বুড়ো আঙুল দেখাতে দেখাতেই স্বাধীন করেছেন নিজের দেশ। এ জাতীর দ্রোহী চরিত্র, রুখে দাঁড়ানো হিম্মতকে ধারণ করেনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার ভাব। অন্তত এই কবিতার ভাব। আমার কথায় আপনার একমত হওয়ার দরকার নাই।আপনি পেশ করুন পাল্টা মত যৌক্তিকভাবে।

তারা বলতে জানে ‘ শির দেগা নাহি দেগা আমামা”।

জুলাই ২০২৪ এর তারুণ্য আরও একবার প্রমাণ দিল সমগ্র বিশ্বকে। নিজের দেশ,নিজের অধিকার আদায়ের জন্য কুখ্যাত ফ্যাসিবাদ উৎখাতে,তার খুনি চরিত্র ও তার দোসরদের সামনে নিজেদের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছে অকাতরে। তারা তাই ‘ মা তোর বদনখানি মলিন হলে আমি নয়ন জলে ভাসি’ বলে কান্ত দেয়নি,দিতে রাজিও না। সমুদ্রের গর্জন যাদের স্বভাব তারা কেবল ভীরুর মতো, নিরুপায়ের মতো শুধু নয়ন জলে ভাসি বলে তৃপ্ত নন। দাবী এজন্যই ওঠে,ও ওঠেছে। মানতেই হবে কথা এমন না।
। দাবী যখন ওঠছে দূর ভবিষ্যতে আর উঠবে না তাও জোর দিয়ে বলা যাবে না। সমালোচনা ও পরিবর্তনের মতামত যৌক্তিকভাবে রূদ্ধ করা যাবে না।অধিকার ও বিবেকও বন্ধের পক্ষে মত দিবে না। একপাক্ষিক কথা কেবল বলতে পারে ফ্যাসিস্ট ও তার সহচরেরা। আইন মানুষের জন্য,আইন মানুষ প্রণয়ন করে।মানুষই পরিবর্তন করবে। যতদিন পরিবর্তন না হচ্ছে ততদিন আমরা মানছি এবং মানব। ” আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। আছে আছেই,বা থাকবে না,থাকবেই না আমরা দুটোকেই উপেক্ষা করি।আমরা অপেক্ষায় আছি দূর ভবিষ্যতে আইনের। একদিন পক্ষের এরা কথা তুলবে, বিপক্ষের এরাও কথা বলবে।তারপর সুন্দর একটা ফয়সালা বের হয়ে আসবে। তারপর উন্মুক্ত থাকবে মতামত পেশ করার সদর দরোজা । ইনকিলাব জিন্দাবাদ।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

কাজী জহিরুল ইসলাম on ‘প্রথম আলো’র বিকল্প
পথিক মোস্তফা on মানবিক কবি ফররুখ আহমদ
মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন on ক্রান্তিকাল
এ্যাডঃমনিরুল ইসলাম মনু on গুচ্ছ কবিতা : বেনজীন খান
পথিক মোস্তফা on সাক্ষাৎকার : নয়ন আহমেদ
সৈয়দ আহমদ শামীম on বাংলা বসন্ত : তাজ ইসলাম
Jhuma chatterjee ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি on গোলাপ গোলাপ
তাজ ইসলাম on রক্তাক্ত স্বদেশ
আবু বকর সিদ্দিক on আত্মজীবনীর চেয়ে বেশি কিছু
ঝুমা চট্টোপাধ্যায়। নিউ দিল্লি। on জন্মদিনের কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
দিশারী মুখোপাধ্যায় on গুচ্ছ কবিতা : গোলাম রসুল
দিশারী মুখোপাধ্যায় on নির্বাচিত ১০ কবিতা : কামরুজ্জামান
তাজ ইসলাম on Menifesto of the Inevitable Revolution
কাজী জহিরুল ইসলাম on দীর্ঘ কবিতা : তাজ ইসলাম
দীপশিখা পোদ্দার on গুচ্ছ কবিতা : কাজল সেন
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on গুচ্ছ কবিতা : তাজ ইসলাম
নয়ন আহমেদ on রবীন্দ্রনাথ
নয়ন আহমেদ on কিবরিয়া স্যার
বায়েজিদ চাষা on গুচ্ছ কবিতা : অরুণ পাঠক
আবু আফজাল সালেহ on দীর্ঘ কবিতা : অভিবাসীর গান
কাজী জহিরুল ইসলাম on রবীন্দ্রনাথ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on গুচ্ছ কবিতা : হাফিজ রশিদ খান
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on অক্ষয় কীর্তি
নয়ন আহমেদ on আমার সময়
মোঃবজলুর রহমান বিশ্বাস on গুচ্ছ কবিতা : দিলরুবা নীলা
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
তৈমুর খান on অক্ষয় কীর্তি
কাজী জহিরুল ইসলাম on অক্ষয় কীর্তি
Quazi Islam on শুরুর কথা
আবু হেনা আবদুল আউয়াল, কবি ও লেখক। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম, নওগাঁ সরকারি কলেজ নওগাঁ। on আমিনুল ইসলামের কবিতায় বৈশ্বিক ভাবনা
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
নয়ন আহমেদ on ফেলে আসা ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on ঈদের কবিতা
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
পথিক মোস্তফা on ঈদ স্মৃতি
Sarida khatun on ঈদ স্মৃতি
নয়ন আহমেদ on ঈদ স্মৃতি
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on দীর্ঘ কবিতা : আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ
পথিক মোস্তফা on শৈশবের ঈদ : একটি স্মৃতি
পথিক মোস্তফা on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on স্মৃতির ঈদ
নয়ন আহমেদ on আমার ঈদ
নয়ন আহমেদ on ঈদের আনন্দ
শাদমান শাহিদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
নয়ন আহমেদ on শৈশবের ঈদ উৎসব
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on সাম্প্রতিক কবিতা : নয়ন আহমেদ
মুস্তফা জুয়েল on আমি আর আমার গাযালি
কাজী জহিরুল ইসলাম on গুচ্ছ কবিতা : মুর্শিদ-উল-আলম
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on অপদার্থবিদ্যা
সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on দেশপ্রেমের ১০ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
কাজী জহিরুল ইসলাম on বিশ্ববিচরণশীল কবিমানুষ
আবু সাঈদ ওবায়দুল্লাহ on নির্বাচিত ২৫ কবিতা : সাজ্জাদ বিপ্লব
মোহাম্মদ মাহিনুর আলম (মাহিন আলম) on প্রিয়াংকা
প্রত্যয় হামিদ on শাহীন খন্দকার এর কবিতা
মহিবুর রহিম on প্রেম ও প্যারিস
খসরু পারভেজ on কাব্যজীবনকথা
মোঃ শামসুল হক (এস,এইচ,নীর) on সুমন সৈকত এর কবিতা
এম. আবু বকর সিদ্দিক on রেদওয়ানুল হক এর কবিতা