আবু তাহের সরফরাজ
পুঁজিতন্ত্রের ছত্রছায়ায় প্রতিপালিত হচ্ছে আজকের সভ্যতা। প্রতিমুহূর্তে বেঁচে থাকার দরকারে মানুষ নানা জটিল-চক্রে ঢুকে পড়ে ঘুরপাক খাচ্ছে। কেউ সামান্যে খুশি। কারণ, তারা তো সামান্য লোক। আবার, কারো ভোগের আকাঙ্ক্ষা বাড়তেই থাকে। তারা নিজেদেরকে সামান্য লোক ভাবতে অপছন্দ করে। সমাজে তারা একটু প্রভাব খাটিয়ে চলতে ভালোবাসে। এজন্য তাদের দরকার হয় রাজনৈতিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক ছত্রছায়া। কারণ, এই দুটি প্রতিষ্ঠানটি নিয়ন্ত্রণ করে পুঁজি। সভ্যতার প্রধান উপাদান শিল্প-সংস্কৃতি। যে রাষ্ট্রে শুদ্ধ শিল্পচর্চা হয়, সেই রাষ্ট্র সভ্য বলেই আমরা স্বীকার করে নিই। কিন্তু আজকের বাংলাদেশে বেশির ভাগ শিল্পচর্চাকারীদের ভোগবাদী বৃত্তি এতই প্রবল যে, তারা পুঁজির ছত্রছায়ায় বসে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট কুড়িয়ে খাচ্ছে। তারা এখন পুঁজিপতিদের দালাল। বাণিজ্যিক দুনিয়ায় এটাই নিয়ম। আত্মসম্মান বিকিয়ে দিয়ে মাছেভাতে বেঁচেবর্তে থাকাই আজকের শিল্পীদের জীবন।
আমাদের দেশে সাহিত্যের পরিমণ্ডল রাজনীতি ও প্রতিষ্ঠান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সাহিত্যিকদের বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট রয়েছে। দেশের প্রতিটি সেক্টর যেমন গুটিকতক সিন্ডিকেট দখল করে রেখেছে, একইভাবে সাহিত্যও এসব সিন্ডিকেটের দখলে। কবিতার সিন্ডিকেটে রয়েছে পীর-কবি ও মুরিদ-কবি। কে কবি আর কে কবি নয়, সিন্ডিকেটের পীর-কবিরা সেই লাইসেন্স নানাভাবে দিয়ে বেড়ান।
১৯৯৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর খোলা জানালার ৪৮তম সংখ্যায় কবি আবু হাসান শাহরিয়ার সমকালীন সাহিত্যচর্চা প্রসঙ্গে ১৯টি খণ্ডচিত্র তুলে ধরেছিলেন, যেগুলো খুবই তাৎপর্যময়। সেখান থেকে দুই নম্বর চিত্রটি আমি এখানে উল্লেখ করবো।
“বেশিরভাগ বড়কাগজের সাহিত্য সাময়িকী তকমাধারী মুষ্টিমেয় লেখকের উপনিবেশে রূপান্তরিত হয়েছে। ওইসব সাময়িকীতে তকমাধারীদের জন্য শতকরা আশিভাগ স্থান বরাদ্দ থাকে। বাকি মাত্র কুড়িভাগ স্থান নতুন বা নিভৃতচারী লেখকদের জন্য।”
আবু হাসান শাহরিয়ারের সহযোগী হিসেবে একটি দৈনিক পত্রিকায় আমি কাজ করেছি। দেখেছি যে, কী সাংঘাতিক মর্মভেদী তার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা। শিল্পবোধ ও রুচিতেও তিনি অনন্য। ১৯৯৮ সাল পেরিয়ে আমরা এখন অবস্থান করছি ২০২৪ সালে। আজকের সময়ে এসে দৈনিকের সাহিত্য সাময়িকীগুলোর অবস্থা আরও কর্পোরেট হয়ে গেছে। দৈনিকগুলো সাহিত্যিকদের মানচিত্র তৈরি করে নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান মনে করে, তাদের তৈরি করা মানচিত্রের বাইরে আর কোনো সাহিত্যিক নেই। বইমেলা এলে বইয়ের যে সংবাদ তারা প্রচার করে সেখানেও তাদের মানচিত্রের বাইরের কোনো লেখকের বইয়ের হদিস থাকে না। অথচ তারা যাদেরকে সাহিত্যিক হিসেবে প্রচার করছে তাদের কারো কারো সাহিত্য খুবই নিম্নমানের। তাদের যোগ্যতা হচ্ছে, হয় তারা রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতাধর, না-হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। এই ডামাডোলে বঙ্গের সাহিত্যদেবি এখন রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ছত্রছায়ায় প্রতিপালিত। সাহিত্যিকদের প্রত্যেকটি সিন্ডিকেটের এক একটি প্রচারপত্র আছে অন্তর্জালে। এরই পাশাপাশি, প্রধান দু’চারটে জাতীয় দৈনিকের সাহিত্যপাতারও রয়েছে আলাদা আলাদা সিন্ডিকেট। তবে মজার হলো, সকল সিন্ডিকেটের ভেতরই গুটিকতক পরিচিত মুখ ঘুরেফিরে থাকছেই। থাকছে কারণ, ওই মুখের মানুষগুলো প্রত্যেক্যেই কোনো না কোনোভাবে ক্ষমতাবান।
ক্ষমতার প্রবল ঝঞ্ঝায় নিরাপদে সরে গেছেন সাহিত্যদেবি। নিরালায় বসে তিনি এখন সিন্ডিকেটগুলোর অপকীর্তি দেখছেন। গণমাধ্যমের প্রভুত প্রচারণা। গণমাধ্যমে সাহিত্যিক হিসেবে বারবার প্রচারিত নামগুলোই সাধারণ পাঠকের মুখস্ত হয়ে গেছে। ফলে পাঠক মেনেই নিচ্ছে, এনারা বিশিষ্ট সাহিত্যিক। না-হলে তাকে নিয়ে এত এত প্রচারণা কেন? আসলে সাহিত্যিক ও ক্ষমতা একজন আরেকজনের পিঠ চুলকে দিচ্ছে। চুলকা-চুলকির এই দৌরাত্ম্যে পাঠকরুচিতে এখন দগদগে ঘা। সাহিত্য আর অসাহিত্যের বিবেচনাবোধও পাঠকের এখন তলানিতে। নানা মাধ্যমের প্রচারণায় পাঠক এখন প্রভাবিত।
কবিতার পাঠক হয়ে উঠতে হলে পাঠকের প্রস্তুতির দরকার আছে। নিজের বিচারবোধ দিয়ে কবিতার শিল্পকে উপলব্ধির দরকার আছে। এই অর্থে আমাদের বেশিরভাগ কবিতার পাঠক আসলে পাঠক নয়, গুজবের অনুসারী।
“ব্যক্তি প্রতিভার পরিশ্রম এবং সৃজনশীল কাজের মূল্যায়ন আমাদের দেশে সহজে কেউ করতে চায় না। অথচ আমাদের সাহিত্যে যত বৈচিত্র্যপুর্ণ ঘটনা ঘটে যাচ্ছে, তার উদ্ভব হচ্ছে কোনো দলীয় বা সংঘবদ্ধ প্রয়াসের দ্বারা নয়। হচ্ছে ব্যক্তি-বিশেষের দ্বারা। এসব ব্যক্তিকে সাহিত্যের অঙ্গনে যারা স্বতঃস্ফূর্ত অভিনন্দন জানাতে পারতেন, তারা কেউ কোনোদিন স্বতন্ত্র ব্যক্তি-প্রতিভার কাজের কোনো স্বীকৃতি দেননি।” ‘ব্যক্তি ও প্রতিভার স্বীকৃতি’—আল মাহমুদ।
আল মাহমুদ যে সম্পাদকের কথা বলছেন, সেই সম্পাদক পুঁজির সাহিত্যে দুর্লভ। অথচ একদা এ দেশের সাহিত্যে রেঁসেনার সৃষ্টি হয়েছিল। দীর্ঘদিন দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক পদের দায়িত্ব পালন করে স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সাহিত্য অঙ্গনে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করেন। তিনি অনেক নতুন মেধাবী কবির পরিচর্যা করেছেন। তাদেরকে ঠাঁই দিয়েছেন সাহিত্যপাতায়। ক্ষমতার ছিটেফোঁটা পেতে তিনি কখনোই অমেধাবী কোনো ক্ষমতাবানের কাব্যপ্রয়াস নিজ সাহিত্যপত্রে জায়গা দেননি। তিনি ছিলেন সাহিত্যিক তৈরির কারিগর। সাহিত্যবোধ সকল তরুণ কবির ভেতরই আছে। আহসান হাবীব সেই বোধকে পরিচর্যা করতেন স্নেহের সঙ্গে। প্রকৃতির মতো বিশুদ্ধতা তাঁর অন্তঃকরণে ছিল। প্রমাণ পাওয়া যাবে তার কবিতাগুলো পড়লে। কী নিবিড় প্রকৃতি-বর্ণনা। প্রকৃতির প্রাণের স্পন্দন ঢেউ তোলে আহসান হাবীবের কবিতায়। কবিতা লেখা আর সম্পাদনা, দুটোতেই তিনি অনন্য। বলা চলে, তার কৃতিত্ব বিরল। ষাটের দশকে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ‘কণ্ঠস্বর’ ঘিরে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের সাহিত্যের আরেকটি রেনেসাঁ। মহতী এসব সম্পাদক ছাড়াও নানা সময়ে নানা সাহিত্যপত্র সম্পাদনা হয়েছে আমাদের দেশে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে তখন বের হচ্ছে সাহিত্যের ছোটকাগজ। সেইসব কাগজে লিখছেন তারা। আড্ডা দিচ্ছেন। একজন আরেকজনকে বলছেন কবিতা নিয়ে তার ভাবনার কথা। এইভাবে বাংলা কবিতার উত্তুঙ্গ একটি সময়ের প্রতিনিধি হয়ে ওঠেন নব্বই দশকের কবিরা। এরপর প্রথম দশকের কবিদের আবির্ভাব। তারাও কয়েক বছর ছোটকাগজ কেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চার সুযোগ পেয়েছিল। এরপর চলে এলো অনলাইন প্রযুক্তির যুগ। আস্তে-ধীরে কমে যেতে লাগল ছোটকাগজের প্রকাশনা। বিচ্ছিন্ন হতে শুরু করলো কবিরা। কমে যেতে লাগলো আড্ডা।
‘ব্যক্তি ও প্রতিভার স্বীকৃতি’তে আল মাহমুদ লিখছেন, “থেমে নেই বগুড়ার লিটলম্যাগ ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য’ এর সম্পাদক সাজ্জাদ বিপ্লবের উদ্যম। বহুদিন ধরে সম্পূর্ণ একাকী সাজ্জাদ ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য’ নামক একটি সম্পূর্ণ কৌতূহল-উদ্দীপক লিটলম্যাগ বের করে যাচ্ছেন। তার প্রাণভোমরা হলো তার ওই ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য’। সাহিত্যে অনেক অন্যায়ের প্রতিবাদ ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য’ দ্বারা সম্পাদিত হয়েছে। নির্ভীক এই সম্পাদক নানা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে এবং ব্যক্তিগত শত্রুতার তীব্র শ্লেষের মধ্যে ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য’ বের করে চলেছেন। অনেক বড় সাহিত্য-পত্রিকা যা পারেনি, ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য’ সেই কাজ করে চলেছে। তার কাজের নাম— সাহিত্যে ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠা।”
আল মাহমুদ এই গদ্য লেখেন অনেক আগে। এর আগে ও পরে আরও কয়েকটি সাহিত্যপত্র সম্পাদনা করেছেন সাজ্জাদ বিপ্লব। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য: ‘পঙক্তি’, ‘বিকেল’, ‘লিমেরিক’ ও ‘বাংলা রিভিউ’। দীর্ঘ বছর হলো সাজ্জাদ বিপ্লব পরিবারসহ বসবাস করছেন আটলান্টায়। সেখানে বসেও চলছে তার সম্পাদনার কর্মযজ্ঞ। সাহিত্যে ন্যায়-বিচার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা থেকে বর্তমানে সম্পাদনা করছেন অনলাইন সাহিত্য পোর্টাল ‘বাংলা রিভিউ’। সাহিত্যের কোনো সিন্ডিকেটে সাজ্জাদ নেই। শিল্পের যথার্থ আস্বাদ পাঠক যেন পায়, সাজ্জাদ সেই চেষ্টাই নিরলস করে যাচ্ছেন। ‘ব্যক্তি প্রতিভার পরিশ্রম এবং সৃজনশীল কাজের মূল্যায়ন’ সাজ্জাদ করে চলেছেন ‘বাংলা রিভিউ’তে। শুদ্ধ শিল্পচর্চাই তার ব্রত। সম্পাদক হিসেবে সাজ্জাদ বিপ্লব আহসান হাবীব কিংবা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মতোই কীর্তিকর্মা। বিভিন্ন সিন্ডিকেটের সাহিত্যিকরাও ‘বাংলা রিভিউ’তে উপস্থিত থাকছেন। মহৎ সম্পাদকদের মতো সাজ্জাদও ডামাডোলের বাইরে থাকা সাহিত্যসেবীদের খুঁজে নেন স্নেহের মমতায়। বাংলা রিভিউয়ের প্রতিটি কনটেন্ট শিল্পশৈলিতে অনন্য। সাহিত্যের নানা শাখায় মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে গদ্য-প্রবন্ধ লিখছেন সব শ্রেণির লেখক। সাজ্জাদ বিপ্লব তার সম্পাদনায় সিন্ডিকেট ভেঙে সাহিত্যের একটি প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ করতে চেয়েছেন তা হচ্ছে, ‘শিল্প হয়ে উঠুক’। এই ধরনের সম্পাদিত সাহিত্য পোর্টালের পাঠক খুব বেশি থাকার কথা নয়। কারণ, ঝাঁকের কৈ মাছের দিকেই সকলের চোখ। ‘বাংলা রিভিউ’তে ঝাঁকের কৈ মাছের কেউ কেউ থাকলেও এর বাইরের ঝাঁকের সাহিত্যিকও রয়েছেন। যারা শিল্পে নিবিড়ভাবে মগ্ন। সাহিত্যের বাজারেরর হই-হট্টগোল যাদের ভালো লাগে না। সাধারণ একটা জীবন কাটিয়ে যেতেই পারলেই যাদের শান্তি। এমন অনেক সাহিত্যিক ‘বাংলা রিভিউ’তে নিয়মিত নানা বিষয়ে লিখে যাচ্ছেন। সেসব লেখায় থাকছে বিশ্লেষণী গদ্য-প্রবন্ধ। সাহিত্যের প্রত্যন্ত অঞ্চল নিয়ে খুঁটিনাটি আলোচনা করছেন কেউ কেউ। কী নিয়েই না কাজ করছেন সাজ্জাদ, সেটাই ভেবে দেখার। সাহিত্যর পাঠক যেহেতু সিন্ডিকেট দ্বারা প্রভাবিত, সেহেতু খুব বেশি পাঠক বাংলা রিভিউ পড়ে না বলেই আমার ধারণা। যারা পড়ে তারা বোদ্ধা পাঠক। সাহিত্যের বোঝাপড়া যাদের শাণিত। মানে, আরসব সাহিত্য-পোর্টাল থেকে ‘বাংলা রিভিউ’ বিশিষ্ট। মানে, আরসব সাহিত্য-সম্পাদক থেকে সাজ্জাদ বিপ্লব বিশিষ্ট।
একটা সময়ে আমাদের দেশে এমন কিছু শিক্ষক ছিলেন যারা সন্ধের পর বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খোঁজ-খবর নিতেন। বিনে পয়সায় তাদেরকে বাড়িতে পড়াতেন। নানা রকম সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ রাখতেন। দরকার পড়লে আর্থিক সাহায্য করতেন। আজকের শিক্ষার্থীদের কাছে এসব শিক্ষক রূপকথা। একইভাবে রূপকথা হয়ে আছেন সম্পাদক হিসেবে আহসান হাবীব কিংবা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। গভীর পর্যবেক্ষণ থেকে আমি উপলব্ধি করেছি, সাজ্জাদ বিপ্লব মহৎ সম্পাদনার ঐতিহ্য এখনও প্রতিপালন করে চলেছেন। পুঁজিতন্ত্রের মেকি সাহিত্যপাড়ায় তার মতো দৃঢ়চেতা সম্পাদক আজকাল চোখেই পড়ে না। একইসঙ্গে ‘বাংলা রিভিউ’ এর লেখকদের প্রতি তার রয়েছে হৃদ্য টান। শিল্পের শুদ্ধতা থেকেই তিনি লেখক ও তার মাঝে মমতার সাঁকো তৈরি করেন। তিনি মেধাবী লেখক খুঁজে বের করেন। এরপর তাকে দিয়ে নানা বিষয়ে লেখান।
২০০০ সালের ৩ জুন সাজ্জাদ বিপ্লবকে চিঠিতে আবদুল মান্নান সৈয়দ লিখছেন, “কী করে যে পত্রিকা বের করো, ভেবে অবাক হয়ে যাই। আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি, লিটল ম্যাগাজিনই আমাদের সাহিত্যের মুক্তিদাতার ভূমিকা পালন করতে পারে। সেক্ষেত্রে তোমাদের ভালোবাসাই ভরসা— যার জোরে তোমরা গাঁটের কড়ি খসিয়ে পত্রিকা বের করে যাচ্ছ একটার পর একটা।”
মান্নান সৈয়দ ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য’ প্রসঙ্গে লিখেছেন। কারণ, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, সম্পাদক হিসেবে সাজ্জাদ বিপ্লব মহৎ ঐতিহ্যের উত্তরসূরী।
খুব সুন্দর পর্যবেক্ষণমূলক একটা লেখা। ভাল লাগলো। তবে লেখার পরিধির তুলনায় ভূমিকাটা কি একটু বেশী বড় হয়ে গেলো?
লেখাটিতে তথাকথিত কেন্দ্রকাতর ও সেখানে বসে ফাটা ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফোটানোয় কসরতরত একধরনের সিন্ডিকেট লেখকদের মুখোশ উন্মোচনের প্রয়াস রয়েছে। আর একজন নিরলস ও আন্তরিক সম্পাদক হিশেবে সাজ্জাদ বিপ্লবকে নিয়ে যে মূল্যায়ন করা হয়েছে, তা যথার্থ। সুদূর আটলান্টা থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে আমার কবিতা, গদ্য ও সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে তিনি নিজের তীক্ষ্ণ, সজাগ মননের পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর সম্পাদিত বাংলারিভিউ প্রকৃতই নতুন কালের সাহিত্যপোর্টাল হয়ে উঠছে।
গদ্যটাতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কালের সাহিত্য জগতে ঘটে চলা নিন্দনীয় ও অনভিপ্রেত সিন্ডকেটবাজির হালচাল তুলে ধরার চেষ্টা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। সেই সঙ্গে কবি ও সম্পাদক সাজ্জাদ বিপ্লব-এর কাজের সুন্দর মূল্যায়ন করা হয়েছে লেখাটিতে। সুদূর আটলান্টা থেকে তিনি আমার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে যে আন্তরিক আচরণ করেছেন এবং আমার কবিতা, গদ্য ও সাক্ষাৎকার ছেপেছেন, তা অতুলনীয়।
সাজ্জাদ বিপ্লব একজন প্রবাসী লেখক।প্রবাসে থেকেও জাতীয় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন শিল্প সাহিত্যের অঙ্গনে।সম্পাদনায় রেখে যাচ্ছেন গৌরবময় ভূমিকা।জুলাই বিপ্লবে তার বাংলারিভিউর কাজ ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে গৃহীত হবে। অনলাইন প্রচারগুলো পৃন্টেট হোক এটি সময়ের দাবী।তাকে নিয়ে লেখার জন্য লেখককেও ধন্যবাদ।
ছোট কাগজ সম্পাদনায় সাজ্জাদ বিপ্লব ভাইয়া যে মুন্সিয়ানা দেখাইছেন তাঁকে সমকালে স্পর্শ করার সক্ষম এমন সম্পাদক পাওয়া সত্যি সত্যিই দুরূহ,
” অভিবাদন হে প্রিয় অগ্রজ!!! “
কবি আবু তাহের সরফরাজ একজন প্রকৃত কবি – সম্পাদকের পরিচয় তুলে ধরেছেন।
মূলত কবি সাজ্জাদ বিপ্লবক নব্বই দশকের
কবিদের নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁর ” স্বল্পদৈর্ঘ্য”
পত্রিকার মাধ্যমে।
এই অবদান অক্ষয় হয়ে থাকবে।
অনলাইন পত্রিকা ” বাংলা রিভিউ” তাঁর আরেক অবিস্মরণীয় কীর্তি।