…………….
মুহাম্মদ (সা)
মুর্শিদ-উল-আলম
…………….
ভোরের আকাশ মুগ্ধ হয়ে দেখে যাঁকে,
দর্শনের অপেক্ষায় অপেক্ষায় রাত
কেটে যায়- তবু নক্ষত্ররা চেয়ে থাকে
সেতো অপরূপ এক জ্যোতির প্রপাত!
তাহাজ্জুদের অজুর পানি ছুঁয়ে মাটি
শিহরিত হয় ষোড়শী নারীর রঙ্গে
চুম্বনে চুম্বনে ভরে দেয় পূত পা’টি
শতরূপ হাসে স্নেহে, সে মাটির অঙ্গে।
যাঁর জন্য ভালোবাসা হৃদয় চূড়ায়
(শ্রদ্ধার সোনালী থাল মহাকাশ জুড়ে
তাঁকে উপহার দিতে তারকা কুড়ায়)
সেতো গোলাপ-বকুল চেতনার কুঁড়ে।
চোখের অচেনা, আদর্শের চেনা চিনি
জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে গেঁথে আছে তিনি।
………….
হে রাসুল আমার
জাকির আবু জাফর
…………..
সেই মহারজনীর কথা ভাবি–
যা একবারই নেমেছিলো পৃথিবীর মরু-আঙিনায়
যখন ধ্যানস্ত তুমি হেরাপর্বতের আশ্চর্য গুহায়!
পৃথিবীর বাতাসেরা কেমন করে ছুঁয়ে গেলো তোমার শরীর!
আজও কি সেইসব নক্ষত্র উদয় হয়
আকাশের কোনো অতলান্ত বুকের কাছে, যেগুলো জ্বলতো তোমার চোখের সায়রে
আমার মতন তারাও কি খোঁজে তোমার সেই মুখ
যা চাঁদের চেয়ে উজ্জ্বল সরোবর থেকে স্বচ্ছল এবং জোছনার চেয়ে মায়াবী!
দিগন্ত বিশারী মরু-তারকার চোখ
যখন নামতো তোমার চোখে,
কাবার ওপর ঝরতো তারা-বৃষ্টির মধ্যরাত
সেই বৃষ্টিতে বিমোহিত তুমি হঠাৎ
আলোর ঝলকানির বিস্ময়ে বিভোর
আকাশ থেকে গুহার অভ্যন্তর ভেসে যাচ্ছিলো প্রবল নূরের জোয়ারে
অকস্মাৎ বেজে উঠলো সেই মাহা সম্মানিত বিশ্বস্ত দূতের দৃঢ কণ্ঠস্বর- “পাঠ করো তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন …”
মহান আরশের কাছে মর্যাদাবান সেই ফেরেশতার আলিঙ্গনে নড়ে উঠলো তোমার ঠোঁট, পাঠ করলে তুমি-
“ইকরা বিসমে রাব্বিকাল্লাজি খালাক”
সেই থেকে শুরু আমাদের পাঠের পালা
হৃদয় উপুড় করে পাঠ করি আজও
পাঠ করে মানবজাতির পবিত্রতমরা
পৃথিবীর সর্বশেষ বিশ্বাসীও পড়তে থাকবে-
সেই বাণী, সেই মহান রবের শ্রদ্ধেয় কালাম
পাঠ হবে পৃথিবী বিলয় অবধি!
পাঠের ললিত সুরে মহান স্রষ্টাকে তুমিই চিনিয়েছো লোকে লোকে!
তোমাকে সালাম হে রাসুল আমার!
…………..
আরবের এই ফুলে
নয়ন আহমেদ
……………
আরবের এই ফুলে
মুগ্ধ এ বিশ্ব ;
এই ফুল ছাড়া ঘর–
রিক্ত ও নিঃস্ব ।
এই ফুলে জান্নাত ;
এই ফুলে হর্ষণ ।
ঢালে রে জগৎ ওই–
সুধাবারি বর্ষণ ।
এই ফুল নবিফুল ;
রঙ -ভরা ; রঙ্গন ।
এই ফুলে হয় ভোর ;
সোনাঝরা অঙ্গন ।
নবিফুলে মালা গেঁথে–
কেউ পরে গলাতে ।
খোঁপা করে রাখে কেউ —
এ হৃদয় দোলাতে ।
এই ফুলে রোদ হাসে ;
হাসিটা কী মৌলিক !
তার রঙে পৃথিবীটা —
পরে জামা দৈনিক ।
ভালোবাসি এই ফুল ;
ভালোবাসি হররোজ ।
মিথ্যার দোর ভাঙি —
সত্যের করি ভোজ ।
১৬ জানুয়ারি,২০২৩
……………
হেরার আলোয় আলো আল আমিন
ফরিদ ভূঁইয়া
…………..
অন্ধকার; ভীষণ গভীর কালো
বিপন্ন বিলাপে না ফোটে আলো;
মানুষ, মানুষ শুধু—নয় কৃতদাস
কে শেখালো, কে ছড়ালো মুক্তির আভাস ?
অন্ধকার দূরীভূত, আলোকিত হয়েছে সেখানে
নিরাকার যিনি, অদৃশ্য আছেন প্রভূ শুধু এক
তিনি ছাড়া নেই কেউ, জাগালো বিবেক
কৃষ্ণকায় কৃতদাস বেল্লালের ভীতিহীন আদর্শ আজানে!
উদ্ভট কৌলিন্যে সমাজকে মেনে
মেয়েকে জীবন্ত পুঁতে পিতা যখন নিজেকে চেনে
তীব্র অনুশোচনায় সে সমাজ বদলাতে সর্বহারার গরিমা
দাহিয়াতুল কালবি পড়েছেন পবিত্র কালিমা
যুদ্ধমোহ ও দেহলাস্যের রোমাঞ্চকর কত-শত
কবি ইমরুল কায়েসের জয়জয়কার;
সেখানে কে শোনালো মানবিক হতে
কাব্য মাধুর্য মেখে
আর-রাহমান। আল্লামাল কুরআন।
খালাকাল ইনসান। আল্লামাহুল বাইয়ান…।
গোত্রপ্রীতি থেকে কাল থেকে কাল
রক্তের বহতাচিত্রে বিভীষিকাময় আরব জাহান—
কতিপয় বনেদী কথিত প্রভূর প্রতিমা হাতে
মানবিক সব কেটে মেরে তৃপ্ত ঘাত-সংঘাতে;
ক্ষয় অবক্ষয়—কিছুতেই তা ঘোচে না
স্বার্থের জটিল চালে চেনাও অচেনা…;
বিদ্বেষ ও ঘৃণা সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বত্রে
অর্থ, অস্ত্র চক্রে ধূর্ত শিয়াল নেপথ্যে…
আসে নাতো কোনো ভালো
প্রতিশোধ থেকে প্রতিশোধে—শুধু রক্তে আগুন ধরার গান… !
মুক্তির মানসলোকে পরিলক্ষিত
দেবতা হুবাল বেজায় অর্থহীন;
মেষের চারণভূমি ছেড়ে ওইতো দূরের
হেরাগুহা থেকে অলৌকিক নূরে
কে চমকালো—আল-আমিন আল-আমিন!
২৬ আগস্ট ২০২৩
…………….
সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি
তাজ ইসলাম
…………….
বৃষ্টিরা নেমে আসে ফোঁটায় ফোঁটায়
কলাপাতা দুলে ওঠে বাতাসে বাতাসে
আজ প্রিয় রাসুলের শুভ জন্মদিন
সকলে সমস্বরে জশনে জুলুসে
গেয়ে ওঠে রাসুলের নামের দরুদ
সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি।
দাদাজান ধ্যানমগ্ন মিলাদে কিয়ামে
অশ্রু গড়িয়ে ভিজে তার শুভ্র দাঁড়ি
মিলাদের মজলিশে আশেকে রাসুল
পর্দার আড়ালে বসে কাঁদে দাদীজান
গোলাপজলের ছিটায় ওঠে মিহি রোল
বুকের অলিন্দে বাজে রাসুল রাসুল
সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি।