spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদকবিতাকবিতাগুচ্ছ : সালেম সুলেরী

কবিতাগুচ্ছ : সালেম সুলেরী

কে পাহাড়ী কে বাঙালি?
…………….

কে পাহাড়ী কে বাঙালি কিসের এতো হিংসা-দ্বেষ,
বঙ্গমাটির অঙ্গ সবাই– রঙ্গভরা বাংলাদেশ।
চাকমা লুসাই, গারো দ্রাবিড় ত্রিপুরা বা মনিপুরি,
বাংলাদেশের এক পতাকার ঐক্য-সবল বাহাদুরী।

কেউ বা পাহাড়, কেউ সমতল, সবাই সমান অধিকারী
বৈষম্যের চাই না শ্লোগান, হোক উপভোগ গদি-বাড়ি।
আর বোলো না উপজাতি, ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ও,
আদিবাসী বাংলাদেশী– সবাই সমান ‘রাষ্ট্রীয়।’

জঙ্গলে নয় মঙ্গলে সুখ, হাতছানি নয় অন্যদের
সঙ্গে ছিলে সঙ্গে থাকো ‘বীর বাঙালি’ ধন্যদের।
আর নিওনা অস্ত্র কোনো, ভিন্ন দেশের মন্ত্রণা
আর ডেকোনা কঠিন শাসন– দিন যাপনের যন্ত্রণা।

কিসের লড়াই কিসের বড়াই, লড়তে লড়তে জীবন শেষ,
তারচে’ বরং ঐক্যে গড়ো তোমার-আমার বাংলাদেশ।
সবার থাকে ধর্ম-কলা, কৃষ্টি-অতীত সংস্কৃতি,
বাংলাদেশী– এই অভিধায় সবাই গড়ো মানসপ্রীতি।

সব নাগরিক সম্মানিত, অবহেলার নেই অবকাশ.
হে বাঙালি পাহাড়ীদের দাও সাহারা, দাও বিশ্বাস।
এক নদীতে সাতাঁর এবং এক নগরে জীবন যাপন,
পাহাড় মানেই নীল ক্ষমতার হয়না যেন রাতের কাঁপন।

আল্লাহ চাহেন পাল্লা সমান যেমন পাহাড় সমতলে,
এক বাগানের পূষ্প সবাই, কিসের বিরোধ তলে তলে।
ক্ষুদ্র তো নয়, বিশাল ভাবো পহাড়-টিলা‘র আদিবাসী,
বাংলাদেশের সব এলাকাই ডাকছে তোমায় ভালোবাসি।

উত্তরে যাও দক্ষিণে যাও– তুমিও মালিক তুমিও চাষী।

সেপ্টেম্বর, ২০২৪

……………..
পর্দা বিষয়ক
……………..

০১
পৃথিবীর তাবৎ পুরুষ যদি অন্ধ হয়ে যায়
তবুও নারীরা হোক পর্দাময়, দৃঢ় সহমত।
আর সমুদয় নারী যদি উলঙ্গ অধ্যায়–
তবুও পুরুষ খোঁজো ফরজ– দৃষ্টির হেফাজত।

০২
তুমি কি শালীন নারী,
প্রকৃতিও সবুজ পোশাক পরা,
আমার নিমগ্ন চোখ অপলক
পর্দা হোক বিনয়ে নিয়ম ভরা….

নিভৃতে লালিত হোক রূপ– হে অপ্সরা।

০৩
এক হাতে বাজে নাতো তালি,
লজ্জার বসন– সেতো মুগ্ধ আভরণ,
সভ্যতায় কতোটা মানায় সাঁওতালী?
পর্দা সমঝোতা চায়– হে পুরুষ, নারীগণ।

…………..
বাস ও ট্রামের টক্কর
…………..

[ কলকাতায় ঐতিহাসিক ট্রামপ্রথার অবসান হলো]

খবর নেবে জবর খবর টাটকা, পরিশুদ্ধ–
বাসের সাথে ট্রাম বুড়োদের বর্ণপ্রথার যুদ্ধ।
বাস উঠে যায় ট্রামের রেলে, ট্রাম বলে তাই সর্
বাসের তখন উল্টো মেজাজ, চায় দিতে থাপ্পড়।

‘ট্রাম ব্রাক্ষ্মণ’– ঘাম ছুটে যায় লজ্জা-রাগে লাল,
তবুও দেখে ‘ক্ষত্রিয় বাস’ দিচ্ছে নানান গাল।
প্যাঁক্ প্যাঁকা প্যাঁক্ ব্যঙ্গ সুরে বলছে– ওরে ট্রাম,
তুইতো হলি কাছিম গতির চারকোণা এক ড্রাম।
রেল ছাড়া নেই পায়ের গতি, তেল-গ্যাসও নেই, ধুৎ
টানছে গলার কুকুর রশি– মনিব বা বিদ্যুৎ!
একটু রেলে খুঁত অথবা লোড শেডিং-এর জেরে,
উল্টিয়ে চোখ বসেই পড়িস জ্যামমরা আলসেরে…
অথচ দ্যাখ্ আমরা কেমন হেলে-দুলেই ছুটি,
পুরো সড়ক চষতে পারি ট্রাক-বাসে কি জুটি!

অনেক কথার পরে এবার ট্রাম খুলে দ্যায় মুখ–
বাসকে বলে হাঁসের মাসী ঘঁষ-লাগা উজবুক।
ট্রামকে করো গালিগালাজ নিজের দিকে তাকাও
হাঁস-স্বভাবে বিষ্ঠা ছেড়ে ধোঁয়ার ছবি আঁকাও।
ধুলোর কারি ধোঁয়ার প্লেটে বেশতো ভ্রমণ-ভোজন,
অক্সিজেনের বদল বাড়াও কার্বনেরই ওজন।
ধাক্কা মেরে চাক্কা তলে অক্কা খেলা এই তো!
এই আমাদের ভেতর ওসব ফাল-চালাকি নেইতো।
আস্তে-ধীরে চলতে থাকি– গড় নিয়মের ছন্দে,
জলের দামে নগর-ভ্রমণ পুরনো পছন্দে!

এবার বলি নতুন কথা নতুন সংস্করণ–
মাটির ভিতর নতুন ট্রামের ঘটলো অনুসরণ!
বরণ ডালা একলা নিয়ে মেট্রো রেলের ছোটা
বাস মাসীদের, ট্রাক কাকুদের নেই সেখানে খোঁটা।
বয়েস হলে বিদায় হবে, হৃদয় বড়ো উতল–
ট্রাম কাকু তাই মেট্রো হয়ে পথ খুঁজে নিক– ভূতল।

আরও পড়তে পারেন

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ