spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদসাম্প্রতিকআবু সাঈদের প্রতি গণহত্যাকারী, গণহত্যার দোসর মিনিয়ন এবং গণহত্যা অস্বীকারকারীদের এতো ক্ষোভ...

লিখেছেন : আমান আবদুহু

আবু সাঈদের প্রতি গণহত্যাকারী, গণহত্যার দোসর মিনিয়ন এবং গণহত্যা অস্বীকারকারীদের এতো ক্ষোভ কেন?

আমান আবদুহু

উর্মি নামের আওয়ামী ম্যাজিস্ট্রেটটি বিভিন্ন রকম কথাবার্তা বলে গত কয়েকদিন আলোচনায় এসেছে। সে মূলত আওয়ামী লীগের পরিচালিত গণহত্যাকে অস্বীকার করেছে। মাত্র দুই মাস আগে সারা পৃথিবীর সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে যেসব ঘটনা ঘটলো, এগুলোকে এখন সে মানতে চায় না। আওয়ামী লীগাররা এরকমই হয়। দুই হাজার চব্বিশের গণহত্যা তার কাছে প্রমাণিত কোন বিষয় না, কিন্তু শেখ মুজিব তার বাবা এবং তার জাতের বাবা হয় অথবা একাত্তর সালে ত্রিশ লক্ষ মানুষ মারা গেছে, এগুলো না কি তার কাছে মীমাংসীত সত্য। ড. ইউনুসের রিসেট বাটন নিয়েও তার মন্তব্য আছে। তবে ডাইনি হাসিনার অনুসারী ছোট এ ডাইনিটির নানা কথাবার্তার মাঝে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে বিষয়টি খেয়াল করার মতো, তা হলো সে শহীদ আবু সাঈদকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়েছে। বাংলাদেশের যে কোন মানুষকে এই কথাটা আঘাত করার মতো একটা বক্তব্য। 

আবু সাঈদের প্রতি খুনীদের একটা বিশেষ ক্রোধ আছে। আওয়ামী মন্ত্রী আরাফাত তাকে মাদকগ্রস্থ হিসেবে বর্ণনা করেছিলো। আওয়ামী বিচারপতি মানিকও তাকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী বলেছিলো। সুতরাং আওয়ামী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মি নতুন কিছু করে নাই। সে একজন আওয়ামী অমানুষ হিসেবে অমানুষসুলভ কথার পুনরাবৃত্তি করেছে মাত্র। এরা শেখ হাসিনার অনুসারী। এদের মুখ দিয়ে যে কোন কিছু বের হয়।

কিন্তু কেন আবু সাঈদ বারবার এই অমানুষদের টার্গেট হয়? কেন বিশেষ করে আবু সাঈদের প্রতি এদের এতো রাগ? আবু সাঈদ নামের কুৎসা রটাতে পারলে কেন এদের বেদনার কিছুটা উপশম হয়? 

কারণ আবু সাঈদ বাংলাদেশের নতুন স্বাধীনতার স্বার্থক প্রতীক। আবু সাঈদের সাথে বাংলাদেশের সব মানুষ নিজেদের মেলাতে পারে। আবু সাঈদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে। যারা মানুষের বাকস্বাধীনতাকে সহ্য করতে পারেনা, আবু সাঈদ তাদের সবচেয়ে বড় শত্রু। আবু সাঈদকে ছোট করতে পারলেই তারা আবার পায়ের নিচে মাটি খুঁজে পায়। 

শহীদ আবু সাঈদ বাংলাদেশের মানুষের ঐক্যের প্রতীক। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত দেশের এই সংকট মূহুর্তে সবার ঐক্যের জন্য বাকি সমস্ত স্বার্থ কোরবানী দেয়া। আবু সাঈদ যেখানে নিজের জীবন পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছে, সেখানে আমরা যদি আবু সাঈদকে নিজেদের কুক্ষিগত করতে চাই, আবু সাঈদের বাংলাদেশী স্বাধীনতা সংগ্রামী পরিচয়ের চাইতে কোন দলীয় পরিচয়কে বড় করে দেখতে চাই, তাহলে আমরা নতুন বাংলাদেশের সমস্ত সম্ভাবনার শেকড়ে কুঠারাঘাত করবো। আমরা ক্ষুদ্র স্বার্থের চিন্তায় মগ্ন, কিন্তু আবু সাঈদ ও আবু সাঈদের মতো দুই হাজার শহীদ কোন স্বার্থ চিন্তা করেনাই। তাই ওদেরকে আওয়ামীরা সহ্য করতে পারেনা। আবু সাঈদ এখন শুধু একজন মানুষের নাম হিসেবে আর নাই, বরং গণহত্যার শিকার দুই হাজার মানুষের সবার প্রতিনিধি আবু সাঈদ।

আবু সাঈদের প্রতি খুনীদের এই ক্ষোভকে যদি আমরা বুঝতে পারি, তাহলে আমরা এও বুঝতে পারবো, বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করার আন্দোলন এখনো চলমান। ডাইনি উর্মিদের ক্ষণে ক্ষণে আস্ফালন এটাই প্রমাণ করে যে আবু সাঈদ যে সংগ্রাম শুরু করেছে, সেই সংগ্রাম এখনো শেষ হয় নাই।

শহীদ আবু সাঈদকে বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেয়া প্রয়োজন। তার যে ত্যাগ তা অমূল্য। বরং আমাদের নিজেদের স্বার্থেই প্রয়োজন। তাহলেই বুঝা যাবে বাংলাদেশের মানুষ দুই হাজার চব্বিশের স্বাধীনতাকে আত্মস্থ করতে শুরু করেছে। আপনারা যারা বলেন ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির আন্দোলনে আপনাদের ‘স্কিন আছে’, আপনাদেরকে প্রমাণ করতে হবে আপনারা এই মুক্তির উপযুক্ত। এই প্রমাণের একটা উপায় হলো শহীদ আবু সাঈদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করা।

আরও পড়তে পারেন

1 COMMENT

  1. দেশ মূলত আওয়ামী ডাইনিতে ভরে গেছে।
    এদের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে হবে ‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ