spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদকবিতাদেবালয়ে কবি পুরোহিত ও অন্যান্য কবিতা : গুলবার ফাহিম

দেবালয়ে কবি পুরোহিত ও অন্যান্য কবিতা : গুলবার ফাহিম

১.
দেবালয়ে কবি পুরোহিত
…………

সিতারার বাহক হয়ে নেমে আসে কবি
গ্রহ নাই তার, বনালির শাখ, ছায়াখানা মূর্ত ছবি—
বিচূর্ণ গ্যালাক্সির কণায় জমিন, সাজায় শিলান্যাস
আল্লা’র পরে শ্রেষ্ঠ যিনি, তারপরে বিন্যাস।
বিনাশের নাশ, তুরুপের তাস, ক্ষুব্ধ কবির আঁখি,
সন্ধ্যের পানাহ, সুবহের শাম, পূর্ণমিনতি ডাকি!
বিকুলিত কোকিলের স্বর ঢেকে আগুনযুবক
এলাহির পদরেখা ভালে নিয়ে পহেলা সবক,
গলার তাবিজ খুলে বুকধরা ভরসার মুষ্টি
কদমে কদম কবি ইশারায় আদেশের যষ্টি।

সমুদ্র শুকায়, প্রাণে হাসে মৃত মহাচর
কবি দিগন্তে দৈত্ত্য, আকাশে ধরণীর ধর!

অবরোধ প্রথা, অনশন ভেঙ্গে জাগে অপূর্ণতা
ইলহাম রোধ, বিকল্প বোধ কবি-কুশলতা!
নৈঃশব্দের ধ্বংস লয়ে উড়ে আসে ‘দাঁড়কাক’,
নির্জন শহরে বিরাজের মহাধুম, তুঙ্গে শোর হাঁক!
ফেরদাউসের থেমে যায় নহর, লুটে পড়ে স্বর্গনাজ
অধিপতি কিবা পত্নীরা পালাচ্ছে ফেলে লাজ।
দেবালয়ে কবি পুরোহিত সাজে, বলিদান হয় শির;
পণ্যের বাজারে উঠেছে মস্তকগলা ক্ষীর!
খাজারীর খাজ, বাজে সুপেয়ধারার কল
অবগুণ্ঠন হয় নাই দুনিয়ার মরিচীকা বল?

প্রণাম কবি পুরোহিত মম, প্রীতি মহার্ঘ!
হাঁটুতে মাখি তব অশেষ কৃপার অর্ঘ্য!

২৩.০৩.২০২৪

২.
মাতৃস্বর
………..

সব ভাষা হয় যদি আমার মাতৃস্বর
পিয়ে নিব অতল সাগর
সুপ্ত আকর,
জ্ঞানের সকল হায় নেব চিনে
কোথা আর রবে মিঠা জল আমার মশক বিনে?
পাহাড়ও বা যদি হয় একটি কেতাব
সুধাময় পৃথিবীটা বিনিময়, দেব স্বর্ণকাবাব!

লহু জপ শোন মহাকাল ভ্রমণের
আসে বহর চেপে তেপান্তরের গ্রন্থালয়, দুল কনের
দজলার কালিজল তুলে আনি, শুষে নিই তার হরফ
ভূস্বামীদের পায় জড়ায়ে দেখি ফেরদৌসের দফ!
সব ভাষা হয় যদি আমার মাতৃস্বর
পিয়ে নিব অতল সাগর
সুপ্ত আকর।

০১.০৪.২০২৪

৩.
হারিরির কবিতা
………….

ক. সুপ্রিয় কথা

সে এসেছিল!
আমি উৎসুক হয়ে চাইলাম—
সরিয়ে দাও আড়াল করে রাখা লাল বধূয়া ঘোমটা,
শুনাও আমায় সেই প্রত্যাশিত সুপ্রিয় কথা!

তারপর—
সত্যিই! সে সরিয়ে দিল আলোকচন্দ্রিমা ঢেকে ফেলা
লালাভ দিগন্ত!
আর খুশবুমাখা মুখে প্রণয়ের ফুল ছিটিয়ে
প্রাণমুগ্ধ করল আমায়।

খ. বিরহ কথা

বিচ্ছেদের দিন ঘনালো
এসেছিল প্রিয়া সেদিন
বিরহ-শোকের কালো পোশাক গায়
লজ্জায় নির্বাক অবুঝের মত
এসেছিল প্রিয়া সেই দিন!

ভোরের শুভ্রকানন গোলাপী চেহারায়
নেমেছে রাতের মলিনতা! আঁধারকায়া!
“দেহডালে” ফুটে আছে এইসব হুঁল!
মুক্তার মতো অপূর্ব দাঁতে
নিশ্চুপ কেটে গেলো কাঁচসম আঙ্গুল!

(কত অপ্রস্তুত লাজমাখা হুরের নিষ্পাপ মুখচ্ছবি!
হৃদয় ক্ষত করে জেগে ওঠে কল্পনায়)

………….
কবি— আবু মুহাম্মদ হারিরি*
ভাষান্তর— গুলবার ফাহিম

*এই কবিতাটি প্রাচীন এক আরব্য কবির প্রায় নয়শ’ বছর আগের লিখিত কাব্য। কবির জন্ম আরবীয় ক্যালেন্ডারে ৪৪৬ হিজরী, মৃত্যু ৬১৫ হিজরী।
অনুবাদের তারিখ : ১৩ আগষ্ট ‘২২

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

কাজী জহিরুল ইসলাম on বাংলা একাডেমির মুখোস উন্মোচন
কাজী জহিরুল ইসলাম on বাংলা একাডেমি এবং আমার গ্লানি
কাজী জহিরুল ইসলাম on ‘প্রথম আলো’র বিকল্প