মুসতাইন জহির
বাইতুল মোকাররমের খতিব মুহতারাম মুফতি আবদুল মালেক কে আপনারা চিনেন? পেহেচান আপনাদের সাথে ওনার কিভাবে হইতে পারে? তা নিয়া ইত্যবসরে একটু ভাবা দরকার।
তিনি মধ্যবিত্তের মানসপটে নাই। যাদেরকে জাতীয় বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক বইলা অহর্নিশি কদমবুসি কইরা চইলা গেল আমাদের এতএত বছর, তাদের যেকারো চেয়ে কয়েকগুণ বেশি এলমের সাধনায় তিনি নিয়োজিত আছেন। পাঁচটা ভাষায় তিনি দক্ষ, জ্ঞান চর্চা করছেন, গবেষণার জন্য বৈশ্বিক পরিসরে পরিচিতি। একজন শিক্ষাবিদ, আলেমে দ্বীন। তিনি বাংলা ভাষায় লিখে চলছেন বহুদিন। একটি বহুল প্রচারিত মাসিক পত্রিকা ‘আল কাউসার’র সম্পাদক। এতএত পরিচয় তাঁর, অর্জন ও অবদান অথচ মিডিয়ার কাছে একটা ছবিও সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না। কি করুন, হাস্যকর তথাকথিত এইসব জাতীয় দৈনিক, গণমাধ্যম!
একটা আত্মজিজ্ঞাসা আমাদের শুরু করা দরকার। নমুনা হিসেবে উনি দস্তুর।
এই জনবহুল ঘনশ্যাম দেশে পরস্পরের গায়ে গা লাগিয়ে ঠেলাঠেলি করে আমরা প্রতিদিন চলছি। কিন্তু একটা দেশের মধ্যে দুইটা ভূবন, আর আমরা তার দ্বিধাবিভক্ত বাসিন্দা। আমাদের একটা অভিন্ন রাষ্ট্রসত্তা তৈরি হবার ভাষা-চিন্তা আয়োজন নাই। আমরা শুধু পরস্পরের প্রতি অ-পরিচয়জনিত অজানা ভয় ও আতঙ্কের হরর মুভি দেখছি।
আমরা মুখ তুলে তাকাই, কিন্তু দেখি না,
পরস্পরের কাছে বসছি না। আমরা জামাতে কোলাকুলি করি, কিন্তু আমাদের শরীরগুলো আত্মাকে স্পর্শ করে একাত্ম হবার কাফেলায় শরিক হচ্ছে না।
আগে হয় নাই। তাই বলে এখনো যদি না করি তাহলে কখনোই শুরু হবে না। বাংলাদেশের সবগুলো পত্রিকা, টেলিভিশন, গণমাধ্যমের উচিত উনি এবং উনার মত আরো যারা এদেশের বিপুলাংশের শিক্ষক তাদের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদায় জনপরিসরে সকলের কাছে তুলে ধরা।
বাংলাদেশের জন্য নতুন সূচনায় এই দীনহীনের একটি প্রস্তাবনা আছেঃ এখন থেকে প্রতি জুমাবার জাতীয় মসজিদে প্রদত্ত উনার খুতবাটা, নিদেন পক্ষে খুতবায় আলোচিত মৌলিক বিষয়গুলো তুলে ধরে সবগুলো গণমাধ্যম তা প্রচার করবে। যাতে সারাদেশের মানুষের কাছে সপ্তাহে অন্তত একবার জাতির এই মুরুব্বির কথা পৌঁছায়। তিনিও যেন কওমের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করতে পারেন। সমসাময়িক বিষয়ে বয়ান রাখবেন। ইনসাফ, কল্যাণ ও জনস্বার্থ হেফাজতে রাষ্ট্রের ভূমিকার গণমুখী পর্যালোচনার একটি রেওয়াজ তিনি তৈরি করবেন। তাহলে, সমাজে নৈতিক কর্তৃত্বের একটি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ গৃহীত ও জনসমাদৃত হয়ে ওঠবে।
সেই সেতুটি রচনার এখনই সময়।
………
ছবি : আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ