………….
বিষণ্ণ ওই কাঁঠালচাঁপা
…………..
বরফ তোমায় পোড়াতে আমি হলাম আগুন
পুড়ছি আমি তোমার চেয়েও বহু বহু গুন
আমার ধোয়া আমার ছাইয়ে
বিষণ্ণ ওই কাঁঠালচাঁপা
জোড়া শালিকও পুড়ে গেছে
ঘাসের ওপর স্মৃতি ছাপা
বরফ আগুন-আগুন বরফ
সূর্য চাঁদের আলিঙ্গনে
আমি ছিলাম মাটির মানুষ
মাটির ঘরের বাউল গানে
পাথরও মাটি পাথরও আগুন
আমি কেন ভালোবাসা
ভালোবাসায় আগুন লেগে
পুড়তে পুড়তে সর্বনাশা
…………
শরীরে শিরশির
…………
তাও সুন্দর, তাও সুন্দর, তাও নদীর তীর
তোমার কথা ভাবলে আমার শরীরে শিরশির
শেকড় মাটি- মাটি শেকড় পাতার ফাঁকে পাখি
স্মৃতিটুকু ছিড়ে গেছে চোখের জলে আঁকি
ঘুম আসে না ফুলের মতো সারা রাতই ঘ্রাণ
বৃষ্টি হয়ে মরে গেছে নীল মেঘেদের প্রাণ
ময়ূর পালক, কাকের পালক, বকের পালক নেই
শকুনগুলোর কাছে আমার হৃদয় খেতে দেই
…………..
তোমার শুচি, তোমার স্নান
…………..
মোমবাতিকে নিভে যেতে বলি না দিয়ে ফু
অন্ধকারে কবুতরের সাদা পালক যায় না দেখা
মৃত শালিক পড়ে আছে ঘাসের ওপর শিশির মেখে
গত রাতের জোছনাটুকু খুঁজতে থাকি পাপড়ি জুড়ে
নদীও যায় শিখতে সাঁতার দূর সাগরে
ঘড়ির কাটায় তুষার পড়ে জমে আছে
শেষ হয় না অপেক্ষা আর
দিক পাল্টায় হাওয়ার গতি
পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শুধু মেঘের কাশি
হাসি দিয়ে বাঘ খেয়েছে হরিণের চোখ
পুড়ছি আমি ফুটছে জল টগবগ করে
কুসুম কুসুম গরম জলে
তোমার শুচি, তোমার স্নান
……………
পাল্লাতে নয় পালকিতেই প্রেম মাপা যায়
……………
শুকনো গাছে, শুকনো ডালে, শুকনো পাতার ফাঁকে
সবুজ দিয়ে আলতো করে পাখির বাসা আঁকে
পাখির বাসা- পাখির বাসা- আকাশ তো নয় খাঁচা
জীবনটাকে বাঁচিয়ে রাখার সবাই করে আশা
আশা ছিল মাটির সাথে বাঁধবো মাটির ঘর
জোয়ার ভাটা মাথায় নিয়ে হবো নদীর চর
শিল কুড়াবো, ঢাক বাজাবো, তুলবো কাশের ফুল
চাঁদ গলিয়ে রূপার মতো বানাবো নাকফুল
সে কথা যে সত্য হবে ফুটলে ভোরের আলো
পাল্লাতে নয় পালকিতেই প্রেম মাপা যায় ভালো
………….
দেশের ভেতরে ভয়
…………..
এক পাল মহিষেরা কাদা জলে ডোবা
কালো কালো কাকগুলো হয়ে গেছে বোবা!
শিয়ালেরা ডাক দেয় দুপুর কি রাতে
পাখিদের ডানাগুলো খুলে দিলো হাতে!
কীর্তন কীর্তন ঢোল বাঁশি তবলা
মেঘেদের আকাশে নেই আর কবলা!
চোখগুলো শকুনের, দাঁতগুলো হায়নার
মানুষের দেহ মন মেইড ইন চায়নার!
আয় আয় হারগিলা, ঈগলের মা মাসি
মানুষের দামে কেনে ছাগল গরু খাসি!
প্রেম নেই, প্রেম আছে প্রেমেতেই সংশয়
দেশের ভেতরে দেশ- দেশের ভেতরে ভয়!
…………….
তুমি আমার ছিলে কে
……………..
মাটির মাছটি জল পেয়েছে
জল পেয়েছে জংলী ফুল
জল পেয়েছে মেঘ গুড়গুড়
গোধূলি বেলায় ওড়ে না ধুল।
জল পেয়েছে আমার নয়ন
বিরহে তোমার ঝর্ণা যে
একটা জীবন তোমার সাথে
তুমি আমার ছিলে কে?
আমিও তোমার কেউ হই না
হবার তবু স্বাদ ছিল
এক আয়নায় দুজনের মুখ
দেখার আগেই ভেঙে দিল!