spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদকবিতাহানি ট্র‍্যাপ ও অন্যান্য কবিতা : সিদ্দিক প্রামাণিক

হানি ট্র‍্যাপ ও অন্যান্য কবিতা : সিদ্দিক প্রামাণিক

………
মাংসাশী ফুল
………

ফুলের মতো তুমিও
বাগানে ফুটে আছো চন্দ্রমল্লিকা।
তোমার শরীরে এখন ফড়িং
প্রজাপতি আর বহুবর্ণিল মৌমাছি
অবসরে উড়ে এসে
কিছুটা সময় দিয়ে যায়।

আবার উড়েও যাচ্ছে পালাক্রমে
অলস দুপুরে তুমি কিচ্ছু বলছো না তবু।
ভেতরে-বাইরে বরং ধীরে ধীরে হয়ে যাচ্ছো
মাংসাশী আর ঈর্ষাপরায়ণ।
আয়ত্তের মধ্যে একটা হরিণ দেখে হিংসাত্মক
দোনলা বন্দুক হাতে
গুলি ছুড়তে ছুড়তে সেইদিকে
আদিম আর অসভ্য সৈনিকের মতো
আচমকা এগিয়ে যাচ্ছো তুমি

……….
হানি ট্র্যাপ

চলো লংড্রাইভে যাই–
হেটেল-মোটেল সমুদ্রের কেবিনে বসে
হাওয়া খেয়ে আসি।
গোপন দৃশ্য ভাইরাল হলে —
প্রচুর ট্রল হবে অন্তর্জালে,
বিদ্রুপের ইমোজি ছড়াবে অনেকেই।

কিছুদিন মুখ ঢেকে চলাফেরা
তবু কেউ কেউ চিনে ফেলবেন,
কাছের স্বজনেরা ফিরিয়ে নেবে মুখ

লিভটুগেদার শেষ হলে
পাখিরাও খুঁজে নেবে সুগার ড্যাডির বাসা,
কিছুদূর এগোলেই হানি ট্র্যাপ।
জানাই যাবে না কোনদিন
কতজন আটকে ছিল মাকড়সার জালে

………
জুতো

নতুন স্যান্ডেল কিনে দেয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ছিঁড়ে ফেলতাম ছোটবেলায়। বাবা কিছুটা হতাশাব্যঞ্জক, চীন-জাপানের শিশুদের উদাহরণ টেনে লোহার জুতো কিনে দেয়ার কথা বলতেন। যদিও এরকম জুতো কোনদিন কিনে দেননি তিনি।
আমার মেয়েটা এখন ক্লাস ফোরে পড়ে, আমার মতোই তাকেও স্যান্ডেল ছিঁড়ে ফেলতে দেখি যখন-তখন। আমিও বাবার মতো লোহার কথা বলি, জুতোর কথা বলি, কিন্তু কখনোই কিনে দেই না তাকে
তারপরও মেয়েটির পা ভারি ওঠে। জড়তা নিয়ে সে হাঁটাহাঁটি করে, বাজারে যায়। ধীরে ধীরে তার পা ছোট হয়ে আসে

……..
মা

দুপুরে ঘুমাচ্ছেন মা।
নিজেকে লুকিয়ে ঘর থেকে বরে হচ্ছি–
ফুটবল হাতে।
তুচ্ছ শব্দেও ঘুম ভেঙে যেত মায়ের
“এই দুপুরে কেউ খেলতে যায়!”

একই রকম দুপুর আজ।
পাতাবাহার আর নির্জনতায় ভরা
মায়ের কবরে অপেক্ষা করছি আমি।

“এভাবে কেউ দাঁড়িয়ে থাকে রোদে”–
অভ্যাসবশত যদি বলে ফেলেন মা!
শুধু এইটুকু শুনবো বলইে
বায়েজিদ বোস্তামীর মতো
দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে করতে অবশেষে
চলে যাচ্ছে রোদ

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

কাজী জহিরুল ইসলাম on কবিতার জন্য নির্বাসন
নয়ন আহমেদ on কবিতাগুচ্ছ