Site icon বাংলা রিভিউ

৭ই নভেম্বরের সিগনিফিকেন্স : মিলিটারি, ডেমোক্রসি ও পলিটিকাল পাওয়ার

ইমরুল হাসান

………

[ক]

৭ই নভেম্বরের ঘটনাটারে খুবই ন্যারো জায়গা থিকাই এতদিন দেখা হইছে এবং এখনো দেখা হইতেছে বইলাই আমার ধারণা।

এস্টাবলিশড নেরেটিভটা হইতেছে যে, স্বাধীনতার পরে আওমিলিগের দুঃশাসন, লুটপাট ও একদলিয়-শাসনের (বাকশালের) কারণে কয়েকটা মিলিটারি ক্যু হইছিল, যার মধ্যে ৭ই নভেম্বর একটা; এই ক্যু’র ভিতর দিয়া জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসেন, জাসদের লগে বেঈমানি করেন। আর্মি’র উপর লেভেলের অফিসাররাই খালি এই মিলিটারি ক্যু করে নাই, বরং সাধারণ জওয়ানরা এইটারে সার্পোট করছিল। মানে, আলাপটা শুরু হয় আগের অন্য ক্যু’গুলার লগে মিলায়া, তার আগ পর্যন্ত যাওয়া হয় না। আমার মনেহয় যাওয়াটা দরকার। এটলিস্ট মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত।

মুক্তিযুদ্ধ তো ছিল একটা একটা সিভিল ওয়ার। কিন্তু যুদ্ধটা শুরু হইল কিভাবে? পাকিস্তানের দিক থিকা এই যুদ্ধ শুরু হইছিল ২৫শে মার্চের রাতে ক্রাকডাউনের ভিতর দিয়া; কিন্তু বাংলাদেশের দিক থিকা দেখবেন ১৯৫২ সাল থিকা হিস্ট্রি টাইনা আলাপ শুরু হয়, তারপরে ১৯৬৬, ১৯৬৯,১৯৭০-এর পলিটিকাল ঘটনাগুলারে হাইলাইট করা হয়; অবশ্যই এই ঘটনাগুলার কন্ট্রিবিউশন ছিল, কিন্তু এই ঘটনাগুলার কোনটাই যুদ্ধের জায়গাতে যায় নাই, এমনকি যাইতেও চায় নাই। মানে, বাংলাদেশের সাধারণ মানুশ যুদ্ধ কইরা দেশ স্বাধীন করার জায়গাটাতে বাধ্য হয়াই গেছে, ২৫শে মার্চের পরে; কারণ এইটা ছাড়া আর কোন রাস্তা ছিল না তখন। কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থিকা ফার্স্ট রিভোল্টের ঘটনাটারে বেশিরভাগ সময়ই লুকায়া রাখা হয়। এইটা ফার্স্ট শুরু করছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান, চিটাগাংয়ে তার সৈন্যদের নিয়া বাইর হয়া আসার ভিতর দিয়া।

মেজর জিয়াউর রহমান খালি স্বাধীনতার ঘোষক-ই ছিলেন না, উনি ছিলেন ফার্স্ট পারসন টু রিভোল্ট। তখনকার পলিটিকাল নেতারা ইন্ডিয়াতে পালায়া গেছিলেন, এবং আনটিল ১৭ই এপ্রিল কোন পাবলিক ডিক্লেয়ারেশন আমরা পাই না। পাকিস্তানের ডেমোক্রেটিক ক্রাইসিসের পলিটিকাল সলিউশন না কইরা যখন মিলিটারি ফোর্স ইউজ করা হইল; পাকিস্তান আর্মিতে যারা বাংলাদেশের লোক ছিলেন, তারা-ই মোটামুটি ফার্স্টে এই যুদ্ধটা শুরু করছিলেন।

আমি বলতে চাইতেছি, পলিটিকাল মুভমেন্ট’টা যখন যুদ্ধের জায়গাটাতে গিয়া ঠেকছে, তখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু করছেন এবং পরবর্তীতে এর সিগনিফিকেন্ট অংশ হয়া উঠছেন মিলিটারির লোকজন। (এবং অবশ্যই যখন বাংলাদেশের সব ধরণের মানুশ এই যুদ্ধে যোগ দেয়, তখন একটা টোটাল ওয়ার শুরু হয়। কিন্তু মিলিটারির) এই যে সিগনিফিকেন্সের জায়গাটা – এইটা হাইলাইট করা হয়-না না, বরং একভাবে এড়ায়া যাওয়াই হয়, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এগজিসটিং নেরেটিভে; যার ফলে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তি ঘটনাগুলারে মিলাইতে পারা যায় না, বা ইরিলিভেন্ট কথা-বার্তা বলা হয়।

যুদ্ধ শেষে, পলিটিকাল নেতারাই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ক্ষমতাতে বসেন; এবং রক্ষি-বাহিনি তৈরির ভিতর দিয়া পলিটিকাল-এলিটদের সাথে মিলিটারি-এলিটদের একটা কনফ্লিক্টের শুরু হয়; কিন্তু এইটাই ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টের ক্যু’র ঘটনার মেইন কারণ না, বরং অন্য অনেক ঘটনার পাশাপাশি এইটাও একটা ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ কইরা থাকার কথা। কিন্তু অই ক্যু’র পরেও মিলিটারি-সরকার গঠন করা হয় নাই, একটা বে-সামরিক সরকারই ছিল ক্ষমতায়। মিলিটারি বরং এই ক্যু’র ভিতর দিয়া সরাসরি পলিটিকাল পাওয়ারের একটা অংশ হয়া উঠে। এর পরের ঘটনাগুলা অনেক বেশি মিলিটারি-ডিপেন্ডেড হয়া উঠে।

[খ]

অনেকের বর্ণনাতে পাইবেন যে, চেইন অফ কমান্ড বইলা কিছু ছিল না তখন বাংলাদেশের মিলিটিারিতে। এর পরের কয়েকটা ক্যু এবং পাল্টা-ক্যু’র ভিতর দিয়া বাংলাদেশের পলিটিকাল সিচুয়েশন আরো ভারনারেবলই হইতেছিল। এইরকম অবস্থাতে ৭ই নভেম্বরের ঘটনাটা ঘটে। যেইখানে নিচের লেভেলের মেজর’রা না খালি সিপাহিরা বরং ড্রাইভিং-ফোর্স হিসাবে এমার্জ করেন। আরো অনেক কন্সপিরেসির কথা তো আছেই এইখানে।

কিন্তু পলিটিকালি এই জায়গারেই আমি হাইলাইট করতে চাইতেছি যে, পাকিস্তান আর্মি’র হাত থিকা রক্ষা পাইয়া বাংলাদেশের মানুশ রক্ষি-বাহিনির কবলে পড়ছিল, যেইখান থিকা আরেকটা মিলিটারি-শাসনরে এড়ানো যাইতেছিল না, এবং ৭ই নভেম্বরের ভিতর দিয়া মিলিটারি প্রো-পিপল ফোর্স হিসাবে পলিটিকাল ক্ষমতার জায়গাটাতে নিজেদেেরকে বসায়া নেয়। আর এইটা শেষ ক্যু ছিল না, কিন্তু ৭ই নভেম্বরের ক্ষমতা সাসটেইন করার ভিতর দিয়া পরবর্তীতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতির শুরু হইতে পারে; যেইটা ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠনের ভিতর দিয়া বন্ধ হয়া গেছিল। ৭ই নভেম্বরের সিগনিফিকেন্স এই জায়গাটাতেই আসলে। রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ ডেমোক্রেসি স্বাদ ১৯৭১’র পরেও পায় নাই, যেইটা ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বরের ঘটনার কারণে তৈরি হইতে পারছিল। যেই কারণে দেখবেন, সো-কল্ড কমুনিস্টদের সবচে বড় হেইট্রেট এই ৭ই নভেম্বরের দিকে, বুর্জোয়া আওমি-লিগরেও এরা এতোটা শত্রু ভাবে না!*

এবং এই ওভারঅল ঘটনাটাতে, বাংলাদেশের পলিটিকাল হিস্ট্রিতে মিলিটিারির যেই সিগনিফিকেন্স সেই জায়গাটারে এড়ায়া যাওয়ার বড় একটা টেনডেন্সি আছে, আমাদের পলিটিকাল হিস্ট্রির আলাপে। এইটাই আমার বলার পয়েন্ট’টা।

২.

হিস্ট্রির যেই জায়গাগুলারে আমি রি-কন্সিডার করার জন্য বলতেছি সেইগুলা এইরকম –

১. রাষ্ট্র হিসাবে পাকিস্তানের সময়টা (বাংলাদেশ যতদিন পুব-পাকিস্তান হিসাবে এর অংশ ছিল তার) মোটামুটি পুরাটাই ছিল সামরিক-শাসন, যেইখানে বাংলাদেশের মানুশের ডেমোক্রেটিক রাইটস ছিল না। আর সেই পলিটিকাল সমস্যাটারে মিলিটারি পাওয়ার দিয়াই সলিউশন করার উপায় হিসাবে ১৯৭১ সালের যুদ্ধটা চাপায়া দেয়া হইছিল বাংলাদেশের মানুশের উপরে।

২. বাংলাদেশের দিক থিকা মুক্তিযুদ্ধের শুরু মিলিটারি রিভোল্টের ভিতর দিয়া, দেশের সাধারণ মানুশ এতে সামিল হওয়ার পরে সেইটা টোটাল ওয়ার পরিণত হয়।

৩. স্বাধীনতার পরে পলিটিকাল লিডার’রা দেশে একটা ডেমোক্রেটিক শাসন-ব্যবস্থা কায়েম করতে ব্যর্থ হয়, এমনকি একদলিয় শাসন-ব্যবস্থা ‘বাকশাল’ চালু হয়। পলিটিকাল-এলিটদের সাথে বিজনেস-এলিট এবং মিলিটারি-এলিটদের কনফ্লিক্ট’টা বড় হইতে থাকে।

৪. ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্টের ক্যু’র পরে বে-সামরিক সরকার গঠন হইলেও মিলিটারি (আবার পাকিস্তান পিরিয়ডের মতো) রাজনীতিতে ও রাষ্ট্র-ক্ষমতাতে রিলিভেন্ট হয়া উঠে।

৫. অন্য ক্যু’গুলার চাইতে ৭ই নভেম্বরের সিগনিফিকেন্স হইতেছে, মিলিটারির সিপাহীরা এইখানে রিলিভেন্ট হয়া উঠেন। এবং প্রো-পিপল একটা জায়গা তৈরি হয়। যার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে ডেমোক্রেটিক-শাসনের বেইজ তৈরি হইতে থাকে।

৬. এই ডেমোক্রেটিক শাসন আবারো বাধাগ্রস্থ হয় এরশাদের ক্ষমতা দখলের ভিতর দিয়া; আর ১৯৯১ সালের ইলেকশনের ভিতর দিয়া মিলিটারি-শাসনের অবসান ঘটে বাংলাদেশে।

৭. ডেমোক্রেটিক শাসনের প্রক্রিয়া আবারো হুমকির সামনে পড়ে ২০০৭ সালের ১/১১-এর ঘটনায়। মিলিটারি, সরকারি আমলা ও নিউজ-মিডিয়া একটা প্যাক্টের মাধ্যমে পলিটিকাল ক্ষমতার জায়গাতে এক ধরণের ইভিল-সার্কেল তৈরি করে।

[গ] 

৮. ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬শে ফেব্রুয়ারি “বিডিআর হত্যাকান্ড”র ভিতর দিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে মিলিটারি পাওয়ারের জায়গাটারে অনেকটাই নিউট্রাইলজড করা হয়।

৯. কিন্তু এর পরে, আমরা একটা ডেমোক্রেটিক শাসন-ব্যবস্থা পাই নাই, বরং এক ধরণের নিউ ফেসিস্ট – ‘নয়া বাকশালের’ শাসন-ব্যবস্থার ভিতরে আমরা আছি।

৩.

আমি বলতে চাইতেছি, ৭ই নভেম্বর’রে একটা পাল্টা মিলিটারি ক্যু হিসাবে মিনিমাইজ করা, বা একটা ব্যর্থ বিপ্লব হিসাবে গ্লোরিফাই করার চাইতে পলিটিকাল পাওয়ার এবং ডেমোক্রেসির জায়গাটাতে মিলিটারির রোল’টা কি ছিল এবং কিভাবে ছিল – সেইটা রিলিভেন্ট একটা আলাপ হইতে পারে।

বিপ্লব-চিন্তারে না, বরং যখন পিপলরে আমরা আমাদের চিন্তার বেইজ হিসাবে নিতে পারবো, তখনই এইটা সম্ভব হইতে পারবে আসলে।

[*সুদীপ্ত কবিরাজ এই জিনিসটা খুব রাইটলি আইডেন্টিফাই করছেন যে, ইন্ডিয়ার বাংলা-প্রদেশের কমিউনিস্টদের মেইন ফেইলওর হইতেছে, উনারা ডেমোক্রেসির জায়গাটারে কিভাবে ডিল করবেন – সেইটা ডিসাইড করতে পারেন নাই; গণ-বিপ্লবের মধুর চিন্তার ভিতরে মাছির মতন ডুবে গেছেন; এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্টরাও যেহেতু বাংলা-প্রদেশের কমিউনিস্টদেরই একটা উপ-দল, উনারাও একই ধরণের নেরেটিভের কান্ডারি; যার ফলে উনারা খালি কলকাতা-বেইজড সাহিত্যেরই পূজারি না, ডেমোক্রেটিক-শাসনের জায়গাটারও ঘোর বিরোধি। এই থিওরেটিকাল কারনে উনারা, ‘ব্যর্থ বিপ্লব’র সাথী ও সারথি’রা পরে নয়া বাকশালের সহযোগি হইতে পারছেন, ইজিলি।]

[৭/১১/২০২৩]

[ঘ]

বাংলাদেশের পলিটিকসে ৭ই নভেম্বরের সিগনিফিকেন্স

একটা লেখা তো একবার লেখলেই শেষ হয়া যায় না, বরং সময়ের সাথে অনেক কিছু অ্যাড, এডিট ও ডিলিট করার দরকার পড়ে, তো ৭ই নভেম্বর নিয়া গত বছরের লেখাটাতে আরো ৩টা জিনিস অ্যাড করতে চাই আমি — 

১. মিলিটারি-হেইট্রেট ও বাংলাদেশের বাম-রাজনীতি: মিলিটারি’রে ভালোবাসার কিছু নাই, বাংলাদেশে কিছু ম্যাসোকিস্ট লোকজন যেমন বাসেন, যে মিলিটারি আসলে সবকিছু ঠিক হয়া যাবে! কিনতু এর বিপরিতে, ভালো-রকমের একটা মিলিটারি-হেইট্রেট চালু আছে বাংলাদেশের পলিটিকসে, ইসপেশালি বাম-রাজনীতির জায়গা থিকা, যাদের অনেকেই আবার ‘সশস্ত্র-বিপ্লব’ করতে চান! মানে, উনাদের অনেকেই মনে মনে মিলিটেন্ট, এমনকি মিলিটারি’র ‘বন্ধুত্ব’-ও চান, কিনতু মিলিটারি’রে ঘৃনা করেন… মেবি এইটার একটা ট্রিগার পয়েন্ট হইতেছে ৭ই নভেম্বর

জাসদ তো বিপ্লব কইরাই ফেলছিল, যদি জিয়াউর রহমান পল্টি না মারতেন! মানে, বাকশাল হটায়া আরেকটা একনায়কতন্ত্র যে প্রতিষ্ঠা করা হইলো না – এইটা নিয়া মোটামুটি সব বামপন্থীদের (ভাসানি মেবি একমাত্র একসপেশন) মনেই খেদ, গোস্বা বা বলা ভালো হেইট্রেট আছে জিয়াউর রহমানের উপর… 

বাংলাদেশে ‘বিপ্লবি’ হইবেন, আর বিএনপি বা জিয়াউর রহমানরে ঘৃনা করবেন না – এইটা মোটামুটি ইম্পসিবল ঘটনাই; যেই কারনে, বাংলাদেশে ডেমোক্রেসির দিকে তাকাইতে গেলেও জিয়াউর রহমানরে একজন আইকন হিসাবে পাইবেন; এবং আন-ফরচুনেটলি বাংলাদেশে বিপ্লব ও গনতন্ত্র দুইটা আলাদা আলাদা ঘটনাই আমাদের চিন্তাতে, এখনো

মানে, আমি বলতে চাইতেছি বাংলাদেশে বাম-রাজনীতি’তে যে মিলিটারি-ঘৃনা সেইখানে ৭ই নভেম্বরের একটা ক্রুশিয়াল রোল আছে 

২. বাংলাদেশের মিলিটারি শাসন: তো, এইটা খালি ৭ই নভেম্বরের ঘটনাই না আর কি, পরবর্তিতে এরশাদের শাসন এবং তার আগে পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের শাসন ও ইয়াহিয়া খানের মিলিটারি ম্যাসাকারের মেমোরিও একটা ঘটনা; বাংলাদেশে একটা বড় সময় আমরা মিলিটারি শাসনের মধ্যে ছিলাম, কিনতু এইটারে খুব লিনিয়ার ওয়ে’তে রিড করলে ভুলই হবে আসলে; ৩টা সময় নিয়াই ব্রিফলি বলি – 

ক. আইয়ুব খান আসছিলেন সিভিল-ডেমোক্রেটিক ফেইলওরের কারনে, জিন্নাহ মারা যাওয়ার পরে পাকিস্তান ছিল একটা এলিট-বুরোক্রেটিক কেওস… যেই কারনে আইয়ুব খান এলিট-বুরোক্রেসির কান্ধে ভর দিয়া অনেকদিন টিইকা থাকতে পারছিলেন

খ. ইয়াহিয়া খান ছিলেন একটা ডিজাস্টার, আইয়ুব খান মিলিটারি হিসাবে যেইরকম এলিট-বুরোক্রেসিরে ইউজ করছেন, ইয়াহিয়া খান বরং মিলিটারি হিসাবে পশ্চিম পাকিস্তানি এলিট-বুরোক্রেসি দিয়া ইউজড হইতে রাজি হইছেন; বাদবাকি জিনিস তো আছেই…

গ. এরশাদের ঘটনা সিগনিফিকেন্টলি আলাদা, এরশাদ হইতেছেন ফার্স্ট মিলিটারি ডিক্টেটর implented by ইনডিয়া; (খালেদা মোশাররফ তা ছিলেন না বইলাই আমি মনে করি) এবং এরশাদের ভিতর দিয়া বাংলাদেশে সাকসেসফুল ইনডিয়ান ইনভেশনের শুরু… এর দীর্ঘমেয়াদি এফেক্ট এখনো বাংলাদেশের স্টেইট ও সিভিল-সোসাইটিতে ব্যাপক… 

মানে, বলতে চাইতেছি, সব পলিটিকাল দল – বিএনপি আওমি-লিগ যেমন একই ঘটনা না, সব মিলিটারি শাসনের বেপারগুলাও একইরকমের না; ডিফরেন্সগুলা করতে রাজি হইতে পারলে ভালো

৩. জিয়াউর রহমান: তো, এইখানে জিয়াউর রহমান কেন এবং কিভাবে আলাদা? এই নিয়া তো বই-ই লেখা দরকার, উনারে হিরো বা ভিলেন বানানোর বাইরে… ৭ই নভেম্বরের পরে উনি এমন একটা কি-রোলে চলে আসছিলেন, যেইখানে একজন ব্যক্তির ডিসিশানে অনেক কিছু ডিপেন্ড করতো, এবং পলিটিকালি উনি ‘বিপ্লবি’ না হয়া ‘ডেমোক্রেটিক’ হওয়ার ডিসিশান নিছিলেন – যেইটা ক্রুশিয়াল এবং মোস্ট সিগনিফিকেন্ট একটা ঘটনা, বাংলাদেশের পলিটিকসে

আর এই জায়গাটারে আমরা যত ক্লিয়ারলি লোকেট করতে পারবো, তত বেটার…

[৭/১১/২০২৪]

………

লেখক : কবি-গবেষক-রাজনৈতিক বিশ্লেষক। ঢাকা, বাংলাদেশ। 

Exit mobile version