রেজাউল করিম রনি
প্রথম আলো’র (অ) শুভ জন্মদিন। যারা তাদের সাংষ্কৃতিক ফ্যাসিবাদকে শক্তি যুগিয়েছে তাদের প্রায় প্রত্যেকের ছবি সংযুক্ত করে একটা ট্যামপ্লেট আলু টিম সোসাল মিডিয়াতে প্রচার করছে। তারাও গর্ব ভরে সেই ছবি শেয়ার করছেন।
২৫ বছর ধরে যে সাংস্কৃতিক ভারতীয় বাঙালি জাতীয়তাবাদী ধারার ফ্যাসিবাদের চর্চা করছে তারই সুফলে আজ আগুন জ্বলছে বাংলাদেশে।
আমি পত্রিকাটির বিনাশ চাই না। এটা টিকে থাকুক। তবে যখন সত্যিই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কায়েম হবে এটার পরিণতি হবে টিস্যু পেপারের সমতুল্য। ফলে এটার টিকে থাকার মধ্যে সমস্যা নাই। সমস্যা হলো এটা যে চরিত্র নিয়ে টিকে আছে তাকে সমূলে বিতাড়িত করার কোন বিকল্প নাই। এর পরে যদি এটা যদি নয়া চরিত্র নিয়ে টিকে থাকে কোন সমস্যা নাই। তবে কথা একটাই। আগে যেটা বলেছিলাম–
বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও প্রথম আলো –দুইটা এক সাথে হতে পারে না।
চলমান আন্দোলনে এটা যে ভূমিকা পালন করছে সাংবাদিকতার নামে তা মনে রাখা হবে। অন্য মিডিয়াগুলা কম বেশি এটাকে ফলো করছে। এটা কিছু ভালো খবর বা আইডিয়াল রিপোর্ট যে করে না তা না। করে। কিন্তু সে যখন সবচেয়ে ভালো সাংবাদিকতা করে তখনও তার চরিত্র (ন্যারেটোলজির দিক থেকে) থাকে নিরপেক্ষ আওয়ামী লীগার হিসেবে। আর যখন চেতনার লাইনে ফিরে যায় তখন ভারতীয় চিন্তার আওয়ামী দালাল হিসেবে কাজ করে। মানে এটার আওয়ামী মাইন্ডসেট চির-অনড় ও দূরারোগ্য ব্যাধিসম।
এটার সর্বময় অস্তিত্ব লীগের রাজনীতির অনুকূলেই গড়ে উঠেছে। এরা সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ভাষায়– এক-একটা ঘোড়া-গোষ্ঠী তৈরি করে এবং তাদেরই প্রতি বছর ছোটায়। এই ঘোড়া-গোষ্ঠী লেখক হিসেবে এক একটা জীবন্ত অপচয়। যদিও নিজেরা এরা খুব গর্বিত।
প্রথম আলো একটা বা একাধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শুধু নয়। এরা যে চিন্তা-প্রক্রিয়ার আলোকে নিজেদের গড়ে তুলেছে এবং সমাজে সেটার আবাদ করে চলেছে তা বাংলাদেশের আত্ম-শক্তি নিয়ে বিকাশ ও টিকে থাকার জন্য হুমকি। ফলে এটাকে পরাজিত করা যে কোন সজাগ মানুষের ( বিশেষ করে লেখক-সংষ্কৃতি কর্মির) অতি প্রাথমিক দায়িত্ব।
আমি কেবল এই দায়িত্ব পালন করি ও অন্যদের মনে করিয়ে দেই। এটাকে পারসোনাল শত্রুতা হিসেবে রিড করার কোন দরকার নাই।
( ৩ নভেম্বর, ২০২৩)
সংযুক্তি:
এখন একদল লোক প্রথম আলোতে লিখতে পারলে জীবন ধন্য মনে করে আবার জনগনের পক্ষের বুদ্ধিজীবীতাও করতে চায়। হাও ফানি।
আবার আর এক দল লোক মনে করে আলু যতোই খারাপ হোক, এটার প্রতিবেদন তো ভালো, সাংবাদিকতার মান ভালো, প্রতিষ্ঠান হিসেবে সফল — ফলে তাদের অনেক সমালোচনা সত্ত্বেও এইটার ইজ্জত রক্ষা করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়। এরা সিম্পলি বুঝতে পারে না– একটা মিডিয়ার তথাকথিত নিরপেক্ষতার চেয়ে সেইটা যে ধরনের ন্যারেশনের মধ্যে ফাংশন করে তাকে আগে চিহ্নিত করতে পারতে হবে।
তথাকথিত মূলধারায় থাকার জন্য, নিজের নাম ফুটানোর জন্য যারা এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের পূজারীতে পরিণত হয় তাদের মানসিকতা মধ্যে হীনমন্যতার লক্ষণ স্পষ্ট। যে সব লেখকরা এইখানে লিখে এইটার বাজার বৃদ্ধিতে সাহায্য করেন আমি তাদের বাংলাদেশের রাজনীতির বিষয়ে বুঝ নিয়া সন্দেহ প্রকাশ করি।