spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদগল্পচারটি ঝুরো গল্প

লিখেছেন : কাজল সেন

চারটি ঝুরো গল্প

কাজল সেন

……………
অসামাজিক
……………

নিজেকে কখনও এতটা অসহায় ও বিপন্ন এর আগে মনে হয়নি রত্নেশ্বরের। দীর্ঘদিনের পাকা খেলোয়াড়। আজ পর্যন্ত যে কত মহিলার সঙ্গে সে যৌনক্রীড়ায় অংশগ্রহণ করেছে, তার কোনো হিসেব রাখেনি। তবে কেউ তাকে অভিযুক্ত করতে পারবে না যে, কখনও কোনো মহিলাকে সে বাধ্য করেছে তার যৌনসঙ্গীনি হতে। জীবনে কখনও ধর্ষণের মতো অপরাধও করেনি। শুধুমাত্র স্বেচ্ছায় যে মহিলারা তার ঘনিষ্ঠ দৈহিক সান্নিধ্য কামনা করেছে, তাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
তবে এই সমীকরণ কিছুটা পরিবর্তিত হয়েছে, যখন থেকে রত্নেশ্বর বিভিন্ন নিষিদ্ধপল্লীতে যাওয়া শুরু করেছে। বলা বাহুল্য, নিষিদ্ধপল্লীর সব মহিলাই তাদের জীবন নির্বাহের তাগিদে দৈহিক সম্পর্কে মিলিত হয়, সেখানে অন্য কোনো তাগিদের অনুপ্রবেশ ঘটে না। আর তাই, কোনো মহিলার আমন্ত্রণে নয়, বরং একান্তই স্বইচ্ছায় সে নিষিদ্ধপল্লীর মহিলাদের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। একরৈখিক মিলন।

বন্ধু নিরঞ্জন তাকে মাঝে মাঝেই আক্রমণ করে, তুই এভাবে বাউন্ডুলে লম্পটের মতো জীবনটা নষ্ট না করে সহজ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারিস না? একটা সংসার, ছেলেমেয়ে, নাতিনাতনি?
রত্নেশ্বর হাসে, তুই ব্যাপারটা ঠিক বুঝতে পারিস না, তাই একথা বলছিস!
–কী বুঝতে পারি না? আমি বিয়ে করে সংসার করছি তো!
–তোর আর আমার জীবন কখনই এক নয় নিরঞ্জন। আমি বিয়ে করলে বৌকে প্রতারণা করতাম। সে সুখী হতে পারত না। আমিও না। আমি তো কাউকে কখনও ঠকাতে চাইনি নিরঞ্জন। কোনো মহিলার সঙ্গে কখনও খারাপ ব্যবহার করিনি, অত্যাচার করিনি। আসলে তোর কী মুশকিল হয়েছে জানিস, তুই যে সামাজিক কাঠামো বা প্যাটার্নে নিজেকে মানানসই করে তুলেছিস, যে প্রচলিত সমাজ-মানসিকতায় নিজেকে আদর্শ-পুরুষ বলে ভেবে নিয়েছিস, আমার শরীর ও মন সেই ছাঁচে গড়ে উঠিনি। আমাকে তুই বোহেমিয়ান বাউন্ডুলে লম্পট যাই বলিস না কেন আমি তোর তথাকথিত সামাজিক কাঠামোকে কখনও বিড়ম্বিত করিনি, আঘাতও করিনি, শুধুমাত্র আমি আলাদা হয়ে থেকেছি। আমি আমার মতো, কারও জীবনযাত্রায় কোনো বিঘ্ন না ঘটিয়ে নিজের জীবনটা উপভোগ করছি।
নিরঞ্জন এত যুক্তি-তর্ক বোঝে না। তার সাধারণ বুদ্ধিতে সে সমাজে বসবাসকারী মানুষকে সরাসরি দুভাগে ভাগ করে, সামাজিক ও অসামাজিক। তার বিচারে তাই রত্নেশ্বর অবশ্যই অসামাজিক।

কিন্তু রত্নেশ্বর ভাবতেও পারেনি, তার জীবনে এমন একটা সংকট-মুহূর্ত আসতে পারে, যার মুখোমুখি হয়ে তার এতদিনের লালিত যাপন ও ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়বে। সেদিন একটু রাত করেই রত্নেশ্বর গেছিল মালতীর ঘরে। মালতী অবশ্য তার আদৌ বাঁধা-মহিলা নয়। সবার ঘরেই যায় রত্নেশ্বর। মালতী বলল, তুমি আজ আমার কাছে এসেছ, কিন্তু সত্যি বলছি আজ আমার শরীর ভালো নেই। তুমি অন্য কারও কাছে যেতে পারো। কথাটা বলেই হঠাৎ মনে পড়ায় মালতী বলল, অবশ্য তুমি চাইলে আমার ঘরে নতুন একজনকে ডেকে দিতে পারি। তোমার অপছন্দ হবে না।
রত্নেশ্বর বলল, আপত্তি নেই।
একটু পরেই যে মহিলা ঘরে প্রবেশ করল, রত্নেশ্বরের নির্ভুল দৃষ্টি চিনিয়ে দিল, এই মহিলার নাম সহেলী। নিরঞ্জনের স্ত্রী।

……………
উচ্চাকাঙ্ক্ষা
…………….
তারাপদ হাজরা সেই কাঁচা বয়সে ওয়েল্ডিঙয়ের কাজ শিখে সারাটা জীবন ওয়েল্ডারের চাকরি করেই কাটিয়ে দিল। অথচ চাকরিতে তার বিশেষ মন ছিল না। সে ব্যবসার কথা ভাবত। যে কাজ সে জানে সেই কাজের যদি একটা দোকান খুলে ব্যবসায় নামা যায়, তাহলে তার উপার্জন যাবে অনেকগুণ বেড়ে। সে তখন মালিক হয়ে বসবে সেই ওয়েল্ডিংশপে। কয়েকজন কাজ জানা ছোকরাকে মায়নে দিয়ে রাখবে তার অধীনে। নিজে তখন আর বিশেষ কাজ করবে না, বরং বিভিন্ন ছোটবড় কোম্পানিতে ঘুরে ঘুরে কাজের অর্ডার নিয়ে আসবে।

যেদিন থেকে শম্পার সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে, সেদিন থেকেই শম্পা জেনেছে, তার বর বেশিদিন আর চাকরি করবে না, সারাটা দিন খেটে সামান্য কিছু টাকা মায়নের জন্য জীবনপাত করবে না। বরং নিজে সুখে থাকার জন্য, শম্পাকে সুখে রাখার জন্য খুব শিগগিরি ব্যবসায় নামবে। তারাপদর উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা জেনে শম্পা একদিকে যেমন খুশি হয়েছিল, তেমনি উত্তেজিতও হয়ে পড়েছিল। কিন্তু তারপরই তার মনে সংশয় জেগেছিল, তারাপদকে প্রশ্ন করেছিল, ব্যবসা করবে তো বলছ, কিন্তু ব্যবসা করতে হলে কত টাকার দরকার, তা ভেবে দেখেছ? তারাপদ তার বৌয়ের নির্বুদ্ধিতায় হেসে বলেছিল, সে কী আমি ভাবিনি নাকি? খুব ভেবেছি। আর সেজন্য টাকা সঞ্চয়ও করছি। তারাপদর কথায় শম্পা আশ্বস্ত হয়েছিল। যাক, তাহলে মানুষটার বিচার-বিবেচনা আছে, নিজের ভবিষ্যত গুছিয়ে নেবার মতো বুদ্ধিও যথেষ্ট আছে। কিন্তু সেইসঙ্গে তার মনে অন্য ভাবনাও এলো, যে ব্যবসাটা করবে বলে ঠিক করেছে তারাপদ, তা শুরু করতে কতটাকা দরকার! আর এখনও পর্যন্ত মোট কত টাকা সঞ্চয় সে করেছে! মনের মধ্যে ভাবনাটা সেদিন খুব বেশি ছটপট করতে শুরু করলে, প্রথমরাতে বাচ্চাটাকে ঘুম পাড়িয়ে মধ্যরাতে তারাপদর শরীরে নিজের শরীর পিষে ফেলতে ফেলতে হুট করে প্রশ্নটা করে বসেছিল, আচ্ছা, তুমি এখনও পর্যন্ত কতটাকা জমিয়েছ? জমানো টাকা কোথায় লুকিয়ে রেখেছ? ইচ্ছে করলে তুমি আমার কাছে টাকাটা রাখতে পারো। আমি সাবধানে রাখব। তারাপদ বৌকে হতাশ না করে শান্তস্বরে বলেছে, তুমি চিন্তা কোরো না শম্পা, আর কিছুদিনের মধ্যে ব্যবসা শুরু করলে তুমি সব জানতে পারবে।

কিন্তু দিন গেল মাস গেল বছর গেল, বাচ্চা বড় হলো, শম্পা প্রবীণ হলো, তারাপদর মাথায় টাক পড়ল, কিন্তু সেই জমানো টাকার কোনো হদিশ যেমন শম্পা পেল না, তেমনি ব্যবসা শুরু করারও কোনো উদ্যোগ-আয়োজন দেখতে পেল না। জিজ্ঞেস করলে তারাপদ একই কথা বলে, আর বেশি দেরি নেই, এখনও আরও কিছু টাকার দরকার, না হলে ব্যবসাটা ঠিকমতো শুরু করা যাবে না।

শম্পা সারাটা বাড়ি আতিপাতি খুঁজেছে। ব্যাংকের কোনো পাসবই পায়নি। মানে ব্যাংকে টাকা রাখেনি। আবার ঘরের আলমারিতেও রাখেনি। অথচ তারাপদ মিথ্যেকথা বলার মানুষও নয়। শম্পার খুব অভিমান হয়। নিজের স্ত্রীকে কি তাহলে বিশ্বাস করে না তারাপদ? আর ঠিক এই পরিস্থিতিতে সেদিন দুঃসংবাদটা এলো। দুর্ঘটনায় তারাপদ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখন কোমায় আছে।

………….
টানাপড়েন
………….
এত সামান্য কথায় বিচলিত হবার বান্দা নয় সুপ্রকাশ। লোকে তো অনেক কথাই বলে! সব কথায় কান দিতে নেই। কান দিলেও বিশ্বাস করতে নেই। এমনকি কথাটা যদি বিশ্বাসযোগ্য বলেও মনে হয়, ঘাবড়ে যেতে নেই। সুপ্রকাশ এই থিয়োরি মেনে চলে সবসময়। আর তাই তার ল্যাংয়োটিয়া বন্ধু বাপ্পা যখন তাকে চৌরাস্তার মোড়ে দেখা হতে জব্বর কথাটা জানালো যে, সুপ্রকাশের অনুপস্থিতিতে তার বৌ রঙ্গনা সুপ্রকাশেরই আরও এক ল্যাংয়োটিয়া বন্ধু রূপেশের সঙ্গে পালিয়েছে, তখন সুপ্রকাশ তার দীর্ঘদিন লালিত থিয়োরি মেনে, কোনটাকে প্রায়োরিটি দেবে, তা চিন্তা করতে লাগলো। প্রথমত সব কথায় যদিও কান দিতে নেই, কিন্তু বাপ্পার কথাটা যেহেতু তার কানে ঢুকেই গেছে, তাই আর কিছুই করার নেই। দ্বিতীয়ত বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের ব্যাপারটা। তা বাপ্পার কথাটা একইসঙ্গে বিশ্বাসযোগ্য, আবার বিশ্বাসযোগ্য নয়। সুপ্রকাশ তাই কথাটা পাত্তা না দিয়ে বলল, তুই মাইরি একটা হারামি খচ্চর! ফালতু ইয়ার্কি মারছিস।

বাপ্পা পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করে সুপ্রকাশকে একটা দিল, নিজেও একটা ধরালো। বলল, অফিসের কাজে এবার তুই কোথায় গেছিলি যেন! সুপ্রকাশ সিগারেটে টান মেরে বলল, দিল্লী! কেন তুই তো জানিস! বাপ্পা বলল, হ্যাঁ, তা তো জানি। তা রঙ্গনাকে সঙ্গে নিয়ে যাসনি কেন?
সুপ্রকাশ অবাক।
–অফিসের কাজে রঙ্গনাকে নিয়ে যাব? এটা একটা কথা হলো? আমাকে তো প্রায়ই যেতে হয়!
বাপ্পা বলল, তুই নিয়ে যাসনি, ফাঁকতালে রূপেশ নিয়ে গেল।

সুপ্রকাশ এবার সত্যি সত্যিই একটু ঘাবড়ে গেল। বাপ্পা কি সত্যি বলছে, নাকি চ্যাংড়ামি করছে? এমন চ্যাংড়ামি মারতে বাপ্পা অভ্যস্ত। আসলে বাপ্পা এটা করে তার মনোকষ্ট থেকে। একসময় রঙ্গনার সঙ্গে বাপ্পার একটা মাখোমাখো সম্পর্ক ছিল। রঙ্গনাকে বাপ্পা বিয়ে করতে আগ্রহী ছিল, রঙ্গনাও অরাজী ছিল না। কিন্তু সুপ্রকাশ মাঝখানে টপকে পড়ে ছোঁ মেরে তুলে নিয়েছিল রঙ্গনাকে। এই নিয়ে সেসময় বিস্তর ঝামেলা করেছিল বাপ্পা। বাপ্পাকে তখন ঠেকিয়েছিল রূপেশ। বুঝিয়েছিল, আমরা তিনজন বচপনের দোস্ত। বৌ নিয়ে মারামারি করতে নেই। বাপ্পা চুপ মেরে গেছিল। এবং এভাবেই সুপ্রকাশ আর রঙ্গনার বিয়ে পাঁচটা বছর পেরিয়েও গেছিল।

সুপ্রকাশ সিগারেটে ঘন ঘন টান মেরে চিন্তা করছিল, রূপেশের সঙ্গে রঙ্গনার সম্পর্কের রসায়নটা কীভাবে গড়ে উঠল! একথা ঠিক যে, যেদিন সন্ধ্যায় সুপ্রকাশের ঘরে কষামাংস ও মদের আসর বসে, বাপ্পা ও রূপেশ দুজনেই থাকে। রঙ্গনাই মাংসরান্নার দায়িত্ব নেয়। আনুষঙ্গিক আরও কিছু ঠেকনার জোগাড়ও করে। মদের নেশায় ঝিমোতে ঝিমোতে সুপ্রকাশ কখনও সখনও খেয়াল করেছে, ইদানীং রঙ্গনা বাপ্পাকে একেবারেই পাত্তা দেয় না। বাপ্পা অবশ্য রঙ্গনার মনোযোগ আকর্ষণের খুবই চেষ্টা করে। তবে রূপেশের প্রতি যে রঙ্গনার একটা টান আছে, লক্ষ্য করেছে সুপ্রকাশ। কিন্তু সেটা যে প্রেম সম্পর্কিত, তা মনে হয় না তার। না, রঙ্গনা রূপেশের সঙ্গে পালিয়ে যাবে, তা কখনই হতে পারে না! বাপ্পা নিশ্চয়ই তাকে ভড়কে দেবার জন্যই এমন ঢপ মারছে!

সুপ্রকাশ বাড়ির দিকে পা বাড়াল।

………..
পিতৃত্ব
………..
চৌরাস্তায় অটো থেকে নেমে প্রশান্ত বলল, না আমি যাব না। তুই যা!
সুপর্ণা অবাক। প্রশান্তর মুখের বিরক্তি লক্ষ্য করে বলল, তুই যা মানে? তুই যাবি না?
প্রশান্ত বলল, না, আমি যাব না। সমস্যা তোর। অভিষেকের সঙ্গে তোর মনোমালিন্য। আমি তার মধ্যে যেতে রাজি নই। তোদের স্বামী-স্ত্রীর ক্যাচালের মধ্যে আমাকে টানাটানি করছিস কেন?
সুপর্ণা এবার রেগে গেল। প্রশান্তকে প্রায় গিলে খাবার মতো চোখ বড় বড় করে বলল, সমস্যাটা আমার আর অভিষেকের মধ্যে হলেও সমস্যার মূলে তো তুই! তোর জন্যই তো এই ক্যাচাল! এখন আমাকে টানাটানি করিস না বলে তুই তো সরে যেতে পারিস না কিছুতেই! তোকে যেতেই হবে অভিষেকের কাছে!
প্রশান্ত বুঝে উঠতে পারল না, তার এখন কী করা উচিৎ। অভিষেকের সঙ্গে দেখা করে কী বলবে? আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলবে, অভিষেক তুমি যা ভাবছ তা ঠিক নয়, তুমি শুধু শুধুই সুপর্ণাকে দোষারোপ করছ, সুপর্ণার জরায়ুতে যে নতুন প্রাণ এসেছে, তার প্রাণদান তুমিই করেছ, আমি নই?
সুপর্ণা প্রশান্তকে ঠেলা দিল।
কী রে! যাবি না? আমি কিন্তু অভিষেককে বলে এসেছি, আজই তোমার ভুল ভাবনার সমাপ্তি ঘটবে। আমি প্রশান্তকে তোমার মুখোমুখি দাঁড় করাব। প্রশান্ত নিজের মুখেই বলবে যে, বাচ্চাটা কার! তোমার না প্রশান্তর!
প্রশান্ত পালটা প্রশ্ন করল, কিন্তু আমার কথা অভিষেক বিশ্বাস করবে কেন? অভিষেক তো বলতেই পারে, আমি মিথ্যে কথা বলছি! নিজেকে আর তোকে বাঁচানোর জন্য এসব কথা বলছি!
সুপর্ণা একটু চুপ করে থেকে বলল, হ্যাঁ, তা হতেও পারে। অভিষেক তোর কথা বিশ্বাস করতে নাও পারে। কিন্তু সমস্যাটা তো সামলাতে হবে! আমার পেটের এই বাচ্চাটা যে কার, তা আমিও জানি না, তুইও জানিস না। এখন একমাত্র উপায় ডি-এন-এ পরীক্ষা। কিন্তু আমি রাজী নই।

প্রশান্ত বোঝার চেষ্টা করছিল, অভিষেকের আসল সমস্যাটা কোথায়? সে কি শুধু সুপর্ণার গর্ভের বাচ্চার বাবার পরিচিতি জানার জন্য ব্যগ্র, নাকি একইসঙ্গে নিশ্চিত হতে চায় সুপর্ণার পরকীয়ার ব্যাপারেও? অভিষেকের সঙ্গে সুপর্ণার নিতান্তই সম্বন্ধ করে সামাজিক বিয়ে। আর সামাজিক বিয়েতে বিয়ের আগে পাত্র ও পাত্রী সম্পর্কে দু’পক্ষই খোঁজখবর নেয়। অভিষেকও নিশ্চয়ই সুপর্ণার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিল। এবং প্রশান্ত নিশ্চিত, তার সঙ্গে সুপর্ণার সম্পর্কের কথা অভিষেক অবশ্যই জেনেছিল। এবং জেনেশুনেই সুপর্ণাকে বিয়ে করেছিল। আর তাই এখন সুপর্ণার পরকীয়া নিয়ে সন্দেহ করার বা প্রশ্ন তোলার তো কোনো যুক্তিই থাকতে পারে না!
কিছুটা বেপরোয়াভাবে প্রশ্নটা করেই বসল প্রশান্ত, আচ্ছা সুপর্ণা, তোর আসল মতলবটা কী বল তো! তুই আমাকে অভিষেকের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে কী প্রমাণ করতে চাইছিস?
সুপর্ণা অধৈর্য হয়ে বলল, এককথা তোকে কতবার বলব? বলেছি তো, আমার পেটের বাচ্চাটা যে তোর নয়, তাই বলবি।
প্রশান্ত বলল, আর তোর সঙ্গে আমার সম্পর্কের কথা?
সুপর্ণা হেসে বলল, অভিষেক জানে। তোকে শুধু বলতে হবে, তোর রমণের কোনো ক্ষমতাই নেই।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

নয়ন আহমেদ on কবিতাগুচ্ছ