মাঈন উদ্দিন জাহেদ’র ‘পাশের জানালা’ প্রবন্ধগ্রন্থটি এবার অমর একুশে বইমেলায় ‘দ্বিমত’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। মাঈন উদ্দিন জাহেদ মূলত কবি হলেও দীর্ঘদিন থেকে সাহিত্য বিষয়ের প্রবন্ধ রচনা করে আসছেন। ইতোমধ্যে তাঁর ‘মনন মৌমাছি’ নামে একটি প্রবন্ধগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। গ্রন্থটি প্রবন্ধপ্রেমী পাঠকদের চিন্তন জগতে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে। ‘মনন মৌমাছি’ গ্রন্থটির মাধ্যমে মাঈন উদ্দিন জাহেদ নিজেকে একজন প্রাবন্ধিকরূপে মননশীল পাঠকের সামনে বিশেষভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছেন।
সমাজ থেকে আহারত নানা বিষয়- আশয়ের নির্যাসটুকু নিজস্ব চিন্তন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমকালের পরিপ্রেক্ষিতে যৌক্তিক এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গঠনমূলকভাবে বিশ্লেষণ করতে হয়। নিজের যুক্তিকে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য প্রয়োজনে বিভিন্ন মনীষীদের মন্তব্য প্রবন্ধে ব্যবহার করা যায়, তবে মনীষীদের একাধিক মন্তব্যের ভারে আক্রান্ত হয়ে প্রবন্ধে নিজের চিন্তা যেন হারিয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। ‘পাশের জানালা’র প্রবন্ধকার এ ব্যাপারে সতর্ক ও সজাগ।গ্রন্থটির নামকরণ যথার্থ হয়েছে। সচেতন পাঠকসমাজ সূচিপত্র দেখলে তা বুঝতে পারবেন।
‘পাশের জানালা’র প্রথম লেখাটি মাওলানা জালালুদ্দিন রুমির ওপর। এতে রুমির কাব্যদর্শন এবং জীবন-যাপন সম্পর্কে প্রাবন্ধিক পাঠকদের ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কাশ্মীরের লোককবি হাব্বা খাতুন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা উপস্থাপন করেছেন এবং সমকালের মননের সঙ্গে সমন্বয় সাধন করে হাব্বা খাতুন’র লোকজ ধারার প্রেমগীতগুলো ব্যাখ্যা করেছেন প্রাবন্ধিক নিজের মতো করে। এছাড়াও ‘পাশের জানালা’য় গ্রন্থিত হয়েছে- দাগ দেহলভি, জিগর মুরাদাবাদি, ফারসি কবি ফরিদ উদ্দিন আত্তারসহ এ উপমহাদেশের আরও কজন।
আশা করা যায়, মাঈন উদ্দিন জাহেদ’র আলোচ্য গ্রন্থটি সাহিত্যপ্রেমী প্রযুক্ত প্রজন্মের পাঠকসহ অন্য পাঠকদের নতুনভাবে ভাবতে সাহায্য করবে।
শাহিদ হাসান
কবি ও কথাসাহিত্যিক