spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদসাম্প্রতিকতবুও তার কথা বলতেই হবে...

লিখেছেন : রেজাউল করিম রনি

তবুও তার কথা বলতেই হবে…

রেজাউল করিম রনি

[ আপনারা কার রাজনীতি করেন…?

“যে সব রাজনৈতিক নেতারা জনগণের কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত না করে শুধু বিলাস বহুল জীবনযাপন করে তাদের জন্য রাজনীতি করাকে আমি কঠিন করে তুলব”
–জিয়াউর রহমান

“সাধারণ মন-মানসিকতার অধিকারীরা সব সময়ই মহান ব্যক্তিদের প্রবল বাধা দিয়েছে”
–আইনস্টাইন ]

তবুও তাঁর কথা বলতেই হবে…

আজকের এই দিনে, মানে ১৯ শে জানুয়ারী, ১৯৩৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সফল জাতির নেতা জিয়াউর রহমান জন্মগ্রহণ করেন। জাতির পিতার কায়েম করা বাকশালী ভায়াবহতার পরে বাংলাদেশকে জনগনের স্বপ্নের পথে পরিচালিত করে যিনি জনগনের প্রাণের সাথে মিশে আছেন –তিনি জিয়া। দলীয় দালালদের অপপ্রচার, কুৎসিত হিংসা ও পাঠ্য পুস্তকে জিয়াকে ভিলেন হিসেবে হাজির করেও কোন লাভ হইল না। হীনমন্যদের শত কুৎসার জবাবে জিয়া’র নামটিই যথেষ্ট। আর কোন দলীল লাগে না। নাম নিলেই পরিস্কার হয়ে যায় তাঁর জায়গা। আর কেন তারা জিয়াকে অপছন্দ করে তার কারণ প্রথম যে লাইন কোট করেছি তাতেই পরিস্কার হয়ে যাওয়ার কথা। রাজনীতিকে পারিবারিক জমিদারি কায়েমের হাতিয়ার যারা মনে করে তাদের প্রধান শত্রুতো জিয়াই হবেন। অথচ এই লাইনটাও বিকৃত করে হাজির হয়। সব বিকৃতির পরেও জিয়া ফিরে ফিরে আসেন –এটাই তো জিয়ার সফলতা।
হে মহান নেতা আপনাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। অনেক কথার মধ্যে ছোট্টা কয়েকটা কথা শেয়ার করি আজ…

বাংলাদেশের জন্য ‘গণপ্রতিরক্ষা’র ধারণাটি প্রথম পরিস্কার ভাবে উঠে আসে জিয়ার আলোচনায়। অথচ কিছু টাউট বুদ্ধিজীবী ( ডুগডুগি বাবা) এটা কখনও স্বীকার করে নাই। স্বীকার না করে নিজের নামে বা বিদেশি লেখকদের রেফারেন্সে তত্ব দিছে ( দেখুন ফরহাদ মহজারের ‘গনপ্রতিরক্ষা’ বইটি–ঐতিহ্য-২০০৬)। গণপ্রতিরক্ষা নামে টাউট বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার বই লিখেছে। জিয়ার কথাগুলাই বলেছে রংচঙ দিয়া, বাট খালি জিয়ার নাম নাই। এমন আরও অনেকে আছেন জিয়ার নাম নিলে মনে করেন, রুটির ভাগে সংকট তৈরি হবে। মূলধারা বুদ্ধিজীবী হতে পারবে না তাই জিয়ার নাম নেয়া ঠিক না। অথচ এই কুলাঙ্গার বুদ্ধিজীবীদের বেশির ভাগই জিয়ার সময় প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন ও কাজের সুযোগ পেয়েছেন।
যেহেতু ভারত আমাদের প্রতিবেশী ও বন্ধু ফলে আর কোন শত্রুর দরকার নাই। এই জন্য জিয়া প্রস্তাব করেছিলেন আমাদের সকল শ্রেণীর নাগরিকদের মধ্যে সার্বভৌমত্বের জন্য একটা সচেতনতা তৈরি করতে হবে। সুসংহত সামরিক সংগঠনের পাশাপাশি– আধা সামরিক ও স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদেরও ক্যাডেট লেভেলের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
[ সূত্র: প্রেসিডেন্ট জিয়া; রাজনৈতিক আত্মজীবনী– মাহফুজ উল্লাহ]

বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য নাগরিক গণফৌজের কোন বিকল্প নাই। আজ, ফ্যাসিবাদের ( পড়ুন লেট ফ্যাসিজম) এই দিনে… জিয়ার কথা মনে পড়ে। দেখেন আরেক নেতা তিনি কি বলেছেন? তিনি বিএনপির লোক না। তার কথাটা দেখেন আজকের দিনেও কত সত্য–

“বাকশালের পুনরাবির্ভাব ঠেকাতে ও ভারতীয় সম্প্রসারণবাদ প্রতিহত করতে জিয়াকে আমাদের সমর্থন দেয়া উচিত”
–কাজী জাফর
{সাপ্তাহিক বিচিত্রার সঙ্গে সাক্ষাতকার, ১৯৭৮, সুত্র: প্রেসিডেন্ট জিয়া; রাজনৈতিক জীবনী–মাহফুজ উল্লাহ}
এখনও এটা সত্য। এখন আরও বেশি করে এটা বলা যায়…
আমাকে যত বড় রজাকার বা যা খুশি বলেন। এমনকি বিএনপির দালাল বলেন তাতেও কোন সমস্যা নাই। তবুও শহীদ জিয়ার কথা বলতেই হবে। উনাকে নিয়ে আমি ইতমধ্যে লিখেছি (দেখুন– জাতির নেতা জিয়াউর রহমান–রেজাউর করিম রনি, জবান ম্যাগাজিন) । এখন লিখছি জিয়া যে ভাবে ফ্যাসিবাদ মোকাবেলা করেছিলেন সেইসব দিক নিয়ে। যা আজকে বিএনপি শুধু নয় বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হলে খুবই কাজের দিক নির্দেশনা দিতে পারবে। এবং উনাকে নিয়ে কথা বলার সময় অন্য কারো সাথে তুলনা করার দরকার নাই। তিনিই প্রথম সফল ও আমাদের স্বপ্নের জাতীয় নেতা। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের কাজ যিনি প্রথম শুরু করেন।
আরও কয়েকটি দরকারী তথ্য পড়ে নেয়া যাক–

“জিয়াউর রহমানের পাঁচ বছরের শাসনে প্রতি মাঘের শেষে বর্ষন হয়েছিল কিনা তা কেউ হিসাব রাখেনি , তবে এই পাঁচ বছরে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি । অতি বর্ষনের বন্যা না , খরা না , জলোচ্ছাস না । দেশে কাপড়ের অভাব কিছুটা দূর হলো । দ্রব্যমূল্য লাগামছাড়া হলো না । বাংলাদেশের নদীতে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পড়তে লাগলো ।
বাংলাদেশের মানুষ মনে করতে লাগলো অনেক দিন পর তারা এমন এক রাষ্ট্রপ্রধান পেয়েছে যিনি সত্‍ । নিজের জন্য বা নিজের আত্নীয়স্বজনের জন্য টাকা পয়সা লুটপাটের চিন্তা তার মাথায় নেই। বরং তার মাথায় আছে দেশের জন্য চিন্তা । তিনি খাল কেটে দেশ বদলাতে চান । জিয়া মানুষটা সত্‍ ছিলেন , এতে কোনো সন্দেহ নেই । লোক দেখানো সত্‍ না , আসলেই সত্‍ । তার মৃত্যুর পর দেখা গেল জিয়া পরিবারের কোনো সঞ্চয় নেই ।”
–হুমায়ূন আহমদ। (দেয়াল, পৃষ্ঠা-১৯৩)

অসুস্থ মওলানা ভাসানীকে হাসপাতালে দেখতে যান তমদ্দুন মজলিশের অধ্যাপক আবদুল গফুরসহ অনেক নেতা। তখন জিয়াউর রহমানকে প্রকাশ্যেই সমর্থন দিচ্ছিলেন ভাসানী। সেদিকে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অধ্যাপক গফুর বলেন :

‘আপনি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রধান নেতা। সেই আওয়ামী লীগ ছিল ক্ষমতায়। প্রকাশ্য জনসভায় আপনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের বলেছেন, দুর্নীতি করলে, জনগণের জন্য কাজ না করলে তোমাদের পিঠে চাবুক মারা হবে। আপনার নিজের দলের নেতাদেরও এমন কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন, আর আজ একজন সামরিক শাসককে আপনি সমর্থন দিচ্ছেন? জিয়ার প্রতি কেন আপনার এই দূর্বলতা?’
মওলানা বললেন : ‘আবদুল গফুর, আমি তোমার বাবার বয়সী। আমি আমার জীবনে তোমার চেয়ে বেশি সরকার ও বেশি নেতাদের দেখেছি। ব্রিটিশ আমলে দেখেছি, পাকিস্তান আমলে দেখেছি, বাংলাদেশ আমলেও দেখেছি। তুমি আমাকে একটা এক্সাম্পল দেখাও, কোন রাজনৈতিক নেতা কম-বেশি দূর্নীতি করে নাই বা দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয় নাই এবং কোন নেতা স্বজনপ্রীতি করে নাই।’
— অধ্যাপক গফুর চুপ করে রইলেন।
মওলানা বললেন : এখন পর্যন্ত জিয়াউর রহমানের ব্যক্তিগত দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নাই। কোনোরকম স্বজনপ্রীতিও তার মধ্যে নাই। তাঁর আত্মীয়-স্বজনকে কেউ চেনে না। তাঁদেরকে সে কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয় না। ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিনেন্টে এ ধরণের শাসককে মানুষ পছন্দ করে। একজন সৎ শাসকের তো প্রশংসাই প্রাপ্য। দেখা যাক কিছুদিন, জনগণের জন্য কী করে। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে নূন্যতম ঐক্য নাই। আত্মশুদ্ধির চেষ্টা নাই। দেখা যাক, আগামী নির্বাচনে কারা আসে॥”
উৎস : সৈয়দ আবুল মকসুদ
ভাসানী কাহিনী ॥ পৃষ্ঠা: ৪৭-৪৮।

শুধু শ্লোগান নয়, বিএনপির নেতারা যদি মনে প্রাণে বিশ্বস করেন যে তারা শহীদ জিয়ার দল করেন, সেই রাজনীতি করেন তাইলে তো বাংলাদেশের এই অবস্থা হওয়ার কথা না। হতে পারে না। শুভ জন্মদিন প্রেসিডেন্ট।

রচনা কাল : ২০১৭

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

সাদ আব্দুল ওয়ালী on ৩টি কবিতা
নয়ন আহমেদ on ৩টি কবিতা
নয়ন আহমেদ on ৩টি কবিতা
সাদ আব্দুল ওয়ালী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
সাদ আব্দুল ওয়ালী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
রাবেয়া আখুঞ্জী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
সাদ আব্দুল ওয়ালী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
সাদ আব্দুল ওয়ালী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা