spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদসাম্প্রতিকআসিফ নজরুল ও বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রসঙ্গে

লিখেছেন : আবু তাহের তারেক

আসিফ নজরুল ও বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রসঙ্গে

আবু তাহের তারেক 

আসিফ নজরুল যাদেরকেই যেইখানে বসাইছেন, তাদের বেপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করুন। স্বয়ং আসিফ নজরুলের বেপারেও সেইম কথা। 

উনি যেই ভুলগুলা করছেন, তা অমার্জনীয়। কুনু নীতি, কুনু গণতান্ত্রিক কমিটি ছাড়া তিনি একের পর এক লোক নিয়োগ দিছেন। বিএনপি এবং জামাতের মূর্খগুলা যখন ক্ষমতার রাজনীতির সেটাপ দিতে বিজি, তখন তিনি নিজ হাতে কালচারাল সেটাপটা দিছেন। 

মোহাম্মদ আজম, মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী, রাখাল রাহা বা মাহবুব মোর্শেদদের কুনু পলিটিকস নাই। এই কথা শুইনা অনেকে ভড়কায়া যাইতে পারেন! মাহবুব মোর্শেদদের পলিটিকস নাই! হ্যা, নাই। উনাদের কুনু বয়ান নাই। ফলে, তাদের নির্দিষ্ট রঙ নাই। তারা যেই পাত্রে যান, সেই পাত্রের রঙ সহজেই ধারণ করতে পারেন। 

মনে করুন, মাহবুব মোর্শেদের বন্ধু-বান্ধবদের নয়া সংবিধান বিরোধীতার কথা! তারা অনেকেই, একযোগে, নয়া সংবিধান রচনার বিরোধীতা করছেন। শুধু এইটা না, তারা আসিফ নজরুলের পক্ষে চউখ বন্ধ করি খাড়ানো ছাড়াও, অনেক অনেক এক্টিভিটিজ একযোগেই করেন। যেমন, রাখাল রাহার পক্ষে খাড়া হওয়া। বেপারখানা এমন, যেন একটা আসিফ নজরুল গ্যাং তৈয়ার হইছে। এই গ্যাং, যাদের অনেকেই হাসিনার বাকশালের বিরোধী আছিলেন, এখনকার সময়ে, তাদের রাজনীতি কি? আমাদেরকে কোথায় লিড করতে চাইতেছে, এই রাজনীতি? 

আসিফ নজরুলের নিয়োগ দেওয়া লোকদের লগে প্রথম আলো গোষ্ঠীর, যেমন, সাজ্জাদ শরিফের লগে দহরম মহরম খিয়াল করার মতন। এইটা মোটেও অলৌকিক কুনু ঘটনা নায়। সবগুলা তার বা সূত্ররে এক জায়গায় গাথলে, মিনিং তৈয়ার হইবেই। 

ইদানিং বাংলা একাডেমি দুই দুইটা পুরস্কার দিছে। এক, রাবেয়া খাতুন সাহিত্য পুরস্কার। দুই, বাংলা একাডেমি (সাহিত্য) পুরস্কার। এই দুই পুরস্কার কার কার ঘরে গেছে, যারা তা পাইছেন, তারা আল্টিমেইটলি কুন বয়ান ধারণ করেন, তা আমাদের না বুঝবার কথা না, (যদি আমরা বালক না হই)। এদের প্রায় সকলেই কলকাতার আধুনিকতাবাদী মনোভাবসম্পন্ন, বাকশালের পারপাস সার্ভকারী, বাংলাদেশের উদীয়মান নয়া সাহিত্যের বিপরীত ঘরানার মানুষ। এদেরকে, মোটাদাগে, ভাল বাকশালী, বা কালচারাল শাহবাগীও বলা যায়। খিয়াল করবেন, এদেরকে পুরস্কার দেওয়ার পরে, কালচারাল শাহবাগীদের ঘরে ঘরে ঈদের আনন্দ বইছে!

সলিমুল্লাহ খান লাল জুলাইয়ের পক্ষে মত দিলেও, অতীতে, শাহবাগের অন্যতম প্রধান চিন্তক ছিলেন। তার শাহবাগের রাজনীতি-ত্যাগ বিষয়ের মুসাবিদা কই! তা না হইলে, আমরা  কিভাবে নয়া রাজনীতি করতে পারব? কিভাবে জামাত-শিবিরকে মাফ চাইতে বলব, কিভবেই বা, বাকশালীদেরকে মাফ চাইতে বলব! 

বাংলাদেশ কবিদের দেশ। এইখানে কবির মেল। তাদের গুণও আছে বটে। মাসুদ খান, সেই মাটির সন্তান। তিনি আর দশজন ভালা কবির মতই, একজন ভালা কবি বটে। হইলে, তিনিই কি জীবিতদের মইদ্যে শ্রেষ্ট কবি! মনে হয় না, উনারে শ্রেষ্ট কবি বইলা, অন্তত, দেশের দশ পার্সেন্ট রাইটারও মানবে। ওয়েল, হযরত মোহাম্মদ আজম কি তা মানেন? যদি মানে, তাইলে ত উনার ফরহাদ মজহারের কবিতার চাইতে, মাসুদ খানের কবিতা নিয়া বেশী আলাপ ও লেখাজোকা থাকার কথা! (আদতে, হযরত আজম ফ.মরে নিয়াই বেশী লেখছেন)। কেন উনি ফ.মরে নিয়া বেশী লেখলেন? কেন মাসুদ খানরে নিয়া কম লেখছেন– এই প্রশ্ন এখন আমরা করতেই পারি। কারণ, তিনি মাসুদ খানরে বাংলা একাডেমি দিছেন। আমরা এর পলিটিকস জানতে চাই। 

হযরত আজমের পুরস্কার কমিটিতে কারা ছিলেন, আমরা তা জরুরী ভিত্তিতে জানতে চাই। এই কমিটির লং ও শর্ট সাজেশনে কারা ছিলেন, আমরা তাও জানতে আগ্রহী। উনারা যাদেরকে পুরস্কার দিলেন, আমরা তার লজিকও জানব বৈকী! 

দৃশ্যত, মোহাম্মদ আজম পুরাস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে, কুনু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই ফলো করেন নাই। যেইভাবে, আফিস নজরুল, গণতন্ত্ররে তোয়াক্কা না কইরা, আজম সহ অনেকরেই নিয়োগ দিছিলেন। 

আমাদের জাইনা রাখা দরকার, হাসিনার সরকাররে টিকায়া রাখার পিছনে রাইটার-এক্টিভিস্টদের বড় (আসলে, সবচাইতে বড়) ভূমিকা আছিল। কুনু না কুনুভাবে, এই ভাল বাকশালী, বা কালচারাল শাহবাগীদের টিকায়া রাখার কামটাই করতেছেন আসিফ নজরুল গ্যাংরা। চব্বিশের লাল জুলাইয়ের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হইল বাংলাদেশী কালচারের এক্সপ্লোরেশন, ও বাকশালী কালচারের লোপাট ঘটানো। বাংলা একাডেমির পুরস্কারগুলা আমাদের এই কামরে সুদূর পরাহত করতেছে। সাথে সাথে, জুলাইয়ের চ্যালেঞ্জরেও কঠিনতর করতেছে।

২.

বাংলা একাডেমির দায়িত্ব ডানপন্থী কাউরে দিলে বেস্ট হয়। যেমন, শিকদার আবদুল হাই। উনার আশেপাশে ইয়াং কিছু মোটিভেটেড ছেলেমেয়ে রাখা যাইতে পারে। 

আচ্ছা, একাডেমিতে কিভাবে বাকশালের দালালরা এখনো কর্মরত আছেন! এদেরকে সরাইলে, বেশকিছু পদ খালি হইবার কথা। তো, শিকদার আবদুল হাই আমার চয়েস মাত্র। অতীতেও, আমি, বাংলা একাডেমির জন্য কারো কারো নাম বলছিলাম। অনেকের মনে থাকবার কথা। 

বিষয় হইল, আপনাদেরও, অনেক সাজেশন এবং চয়েস থাকতেই পারে। এইগুলা সামনে আনার দরকার। আল্টিমেইটলি, একটা  গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নিয়োগ পদ্ধতি হওয়া উচিত। ঠিক যেমনটা, পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রেও দরকার। একটা সুষ্ঠু, স্বচ্ছ, বিচারিক দপ্তর থাকা উচিত। পুরস্কারের লং ও শর্ট লিস্ট করা দরকার। 

আপাতত, বাংলা একাডেমিকে বাকশালমুক্ত করার আন্দোলন সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন বলিই মনে হয়। বাকশালের, মতান্তরে, সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ টুল আছিল আর্ট কালচারের লগে জড়িত হোমরা চোমরারা। এদেরকে সাইড করতে না পারলে, চব্বিশ বৃথা যাবেই যাবে।

আস্তে আস্তে, অন্য খাতগুলাতেও এইভাবে আগাইতে হইব।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

নয়ন আহমেদ on কবিতাগুচ্ছ
নয়ন আহমেদ on মা দিবসের কবিতা
ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম on শিপা, আমি তোমার বয়ফ্রেন্ড হতে পারিনি
কাজী জহিরুল ইসলাম on কাজী জহিরুল ইসলাম এর কবিতা