মিনহাজুল ইসলাম মাসুম
দ্রোহ হচ্ছে মানুষের অন্তরাত্মার নীরব প্রতিবাদের ভাষা। অন্তরের এ প্রতিবাদকে কেউ জাহির করেন কলমের তুলিতে, আর কেউ নীরবে গুমরে মরে। আরেক দল আছেন তারা জনতাকে সংঘটিত করে সমাজ পরিবর্তনে ব্রতী হন। তাদের দ্রোহী, বিদ্রোহী বা বিপ্লবী বলা হয়। আল মাহমুদ প্রথমোক্তদের দলে। কী গদ্য, কী পদ্য সবখানে ছড়িয়ে আছে তাঁর দ্রোহ। এ দ্রোহ তাঁর মনে একদিনে তৈরি হয়নি। যারা একসময় প্রাণপ্রিয় বন্ধু ছিলেন, তাদের সাথে আদর্শিক দূরত্ব তৈরি হয়। ফলে তিনি হয়ে যান সাহিত্যের ত্যাজ্যপুত্র। অন্যদিকে ভিয়েতনাম যুদ্ধ, কাশ্মীর, আরাকান, বসনিয়া, ফিলিস্তিন ও ইরাক আগ্রাসনের বিরুদ্ধের তাঁর মনে প্রচণ্ড ক্ষোভ তৈরি হয়। এদিকে ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণআন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের উপর স্বৈরতন্ত্র চাপিয়ে বসায় তাঁর কবি মন বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। আসলে নানা ঘাত—প্রতিঘাত বেয়ে পথচলায় তাঁর কলমে বিদ্রোহাত্মকভাব নানাভাবে প্রকাশ পায়। তিনি বলেন, ‘আমার কবিতাকে নিজের প্রতিভার জোরে ঘৃণার ভেতর থেকে বের করে আনার প্রয়াস পেয়েছিলাম, লোকে এই প্রয়াসকে সফল বলে অভিহিত করেছিল, ভবিষ্যতই এর আসল বিচারক। ঘৃণার এক আকস্মিক ফুঁৎকারে আমার কবিতার শক্তি নির্বাপিত হবে না, বরং নির্বুদ্ধিতার আরও ঘৃণার মধ্যে মোটা মাথা নিয়ে ডুবে যাবে। প্রকৃত কবিরা কোনোদিনই কোনো মোটামাথার দাসত্ব করেনি, ঘৃণার তো নয়ই।’ (দশদিগন্তে উড়াল, আল মাহমুদ — পৃ : ২৪১)
‘দ্রোহের কবি আল মাহমুদ’ তরুণ কবি খোরশেদ মুকুলের গবেষণাধর্মী গ্রন্থ। এ গ্রন্থে কয়েকটি অংশ রয়েছে। এক. গ্রন্থের ভুমিকা, ফ্ল্যাপের লিখা ও গ্রন্থটি নিয়ে মতামত লিখে এর বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছেন দুই আল মাহমুদ গবেষক কমরুদ্দিন আহমদ এবং ড. ফজলুল হক তুহিন এবং দুই. গ্রন্থের অভ্যন্তরে আল মাহমুদের দ্রোহ নিয়ে লেখকের অতি চমৎকার আলোচনা। সেকথায় পরে আসছি। আল মাহমুদ কেন দ্রোহের কবি? প্রাবন্ধিক তাঁর দ্রোহসত্তাকে পুরো গ্রন্থে ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন দারুণভাবে। আল মাহমুদের দ্রোহ তাঁর স্বভাবগত। সাহিত্যজগতে নিজের খ্যাতি, অর্থ-বিত্ত ও প্রতিপত্তির বাড়াতে মত্ত অনেকে। সে-ই একনায়ক আয়ুব শাহী থেকে ফায়দা নিয়ে অনেকেই খ্যাতির শীর্ষে উঠেছেন। আপোষ করেছেন বহু বছরের লালিত আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে। দিনযাপন করছেন মেরুদণ্ডহীনের ন্যায়—তখনও আল মাহমুদের দ্রোহী কলম আপোষহীন। তার প্রতিফলন আমরা তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত দেখতে পাই। তিনি পরোয়া করেননি দেশি-বিদেশী কোনো অপশক্তিকে। তাঁর দেশপ্রেম ও দ্রোহ প্রশ্নাতীত! স্রোতস্রিনী সবুজ শ্যামল বাংলাদেশের নদীগুলোর উজানে বাঁধ দিয়ে যে আগ্রাসী শক্তি আষ্ঠেপৃষ্ঠে বেঁধে পানিতে মারতে উদ্যত ‘দেশ মাতৃকার জন্য’ কবিতায় তাঁর দ্রোহী উচ্চারণ করেন—
“চারদিকে শকুনির উড়াউড়ি দেখে ভাবি তোমার শস্য-শ্যামল প্রান্তর
হিংস্র মাংসাশী পাখির বিষ্ঠায় আকীর্ণ বটবৃক্ষের মত কেন?
আমরা কি তোমাকে রক্ষা করতে পারব? অযোগ্য সন্তান আমরা।
তবুও তো তোমার শস্য হাতছানি দিয়ে ডাকছে
তোমার রুদ্ধ নদীগুলোর ইশারায় আমরা কাঁপছি।”
‘মাৎস্যন্যায়’ কবিতায় তাদের স্বরূপ আরো প্রকটভাবে তিনি তুলে ধরেছেন—
“শক্ত চোয়ালওয়ালা রাঘবরা চায়
পদ্মা-যমুনার ভিতর দিয়ে হিমালয় পর্যন্ত একটা নিশ্চিত ট্রানজিট।
কিন্তু আমরা কালা-ধলা, সাদা ও সোনালীদের
হজম না করে তা কি করে সম্ভব?
… … … … … … … … …
কিন্তু রাঘববোয়ালদের শক্ত চোয়াল ছিদ্র করার মতো কাঁটাওয়ালা মাছের ঝাঁক
আমরা যে আগেই খেয়ে বসে আছি।”
আজ রাঘব বোয়ালদের পৃথিবীতে আমরা করুণভাবে হা-পিত্যেশ করছি। ইয়া নফসি, ইয়া নফসি করছি। ত্রাতা কেউ নেই, সব কালা-ধলাদের গিলে ফেলে নিঃশেষ করে দেয়া হয়েছে! যাতে কেউ বিরুদ্ধাচরণ করতে না পারে। প্রতিবাদ-প্রতিরোধ করতে না পারে। দ্রোহী সত্তা যাতে জেগে উঠতে না পারে। অদ্ভুত এক পৃথিবীতে বাস করছি আমরা!
বাংলা সাহিত্যে দ্রোহ-বিদ্রোহের কথা, মুক্তি ও জাগরণের কথা, সাম্যে ও মানবতার কথা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, ফররুখ আহমদ, মাহবুবুল আলম চৌধুরী, রফিক আজাদ, রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, মতিউর রহমান মল্লিক, হেলাল হাফিজ, হাসান আলীম ও মোশরাররফ হোসেন খানসহ আরও অনেকের লেখায় দেখতে পাই। যেমন রফিক আজাদের ‘ভাত হারামজাদা, নইলে মানচিত্র খাবো;’ ফররুখের আহমদের ‘লাশ’ কবিতা, মাহবুবুল আলম চৌধুরীর‘ কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবী নিয়ে এসেছি,’ হেলাল হাফিজের নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় ‘এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময় তার, মোশাররফ হোসেন খানের ‘ফিলিস্তিন—২০১৪।’ জাতীয় কবি আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে সদা তাঁর মসি চালিয়েছেন, তাদের ত্রস্ত করেছেন—তারাও কবির বিরুদ্ধে একশান নিয়েছেন, কারারুদ্ধ করেছেন। কারান্তরালেও তার লেখনি স্তব্ধ হয়নি, বরং আরও শাণিত হয়েছে। ‘ভাঙার গান’ কাব্যগ্রন্থে বজ্রনিনাদ গর্জে উঠে। তিনি লিখেন—
“কারার ঐ লৌহ কপাট
ভেঙ্গে ফেল কররে লোপাট
রক্ত জমাট
শিকল-পুজোর পাষাণ-বেদী!
‘অগ্নিবীনা’র আগুনে বিদ্রোহের বাণী তিনি ছড়িয়ে দেন, জুলুমশাহীর বিরুদ্ধে সে এক প্রচণ্ড নিঘোর্ষ—বিদ্রোহীসত্তা। অগ্নিবীণার কী অগ্নিশিখা! এই কাব্যগ্রন্থ নয় শুধু—বিষের বাঁশী, ভাঙার গান, সাম্যবাদী, সর্বহারা, ফণিমনসা, জিঞ্জির, প্রলয় শিখা প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থে সাম্রাজ্যবাদী শক্তিকে প্রচণ্ড আঘাত হেনেছেন।
‘মহা বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না।’ (বিদ্রোহী, অগ্নিবীণা)
অগ্রজ জাতীয় কবির দ্রোহ ধারণ করা কবি আল মাহমুদ দেশের সেরা বিদ্যাপীঠকে ‘ডাকাতদের গ্রাম’ বলায় তাঁকে নানাভাবে হেনস্থা করা হয়েছিলো তবুও তিনি তাঁর কথা থেকে একচুলও নড়েননি। কেন নড়বেন, এখানে তো কলমের পরিবর্তে মানুষ মারার অস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে দুষ্টের দাপটে শিষ্টের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা!
‘জগন্নাথ হলের পাশের রাস্তা থেকে ছিনতাই হলো। বুকের ওপর ছুরি রেখে
খুলে দে হারামজাদি, চুপ্।
আমরা তো চুপ করেই আছি, তবু হে পরোয়ারদিগার
জানতে সাধ জাগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি ডাকাতদের গ্রাম?
বাল্যে যেমন কোনো গাঁয়ের পাশ দিয়ে নাও বেয়ে ফিরতে গেলে
মুরুব্বীরা বলতেন, ওপথে যেও না অমুকটা হলো ডাকাতের গ্রাম।’
(কদর রাত্রির প্রার্থনা, এক চক্ষু হরিণ)
বিশ্বের অশান্তির উৎস ইহুদিদের বিরুদ্ধে জার্মান কবির ক্ষোভেও দ্রোহের কাব্য নিঃসৃৃত হয়। অবৈধ রাষ্ট্র ইসাইলের বিরুদ্ধে নোবেল জয়ী জার্মান কবি গুন্টার গ্রাসের কবিতা আধিপত্যবাদের কাঁপন ধরিয়ে দেয়। তিনি ‘যে কথা বলতেই হবে’ শিরোনামে কবিতাটি কয়েক চরণ দেয়া হলো। কবিতা প্রকাশিত হয় জার্মান দৈনিক “সুড ডয়েচে যাইটুং” এবং ইংরেজিতে ‘হোয়াট মাস্ট বি সেইড’ নামে। ফলে ইসরায়েল সরকার তাঁর প্রবেশাধিকার রদ করেছে ইসরাইলে। শুধু গুন্টার গ্রাস নয় বিখ্যাত লেখক ও সাংবাদিক নোয়াম চমস্কিকেও ইসরায়েলে প্রবেশ করতে নিষেধাজ্ঞা জানিয়েছিল ইহুদি এই দেশটি।
“কিন্তু কেন আমি এতদিন নীরব থেকেছি?
আমি তো ভেবেই নিয়েছিলাম আমার নিজের অতীত
যে কালিমায় নোংরা তা তো কখনোই মুছে যাবে না।
যে ইসরায়েলের সাথে আমি এতটা নিবিড় কিংবা থাকব আগামীতে.
খোলামেলা সত্যের ঘোষণা সে যে মেনে নেবে সে আশাও নেই।
কেন এখন এই বুড়ো বয়সে
দোয়াতের অবশিষ্ট কালি দিয়ে বলতে হবে
ইসরায়েলের পরমানুশক্তি বিপন্ন করে তুলবে
এরই মধ্যে ভঙ্গুর বিশ্বশান্তিকে?
কারণ যে কথা বলতেই হবে, কাল সেটা দেরি হয়ে যাবে।”
বাংলা সাহিত্যের গুন্টার গ্রাস যেন আল মাহমুদই। ইসরায়েলের এই দম্ভের মূলে আছে আমেরিকা ও জাতিসংঘ। আল মাহমুদ ইহুদি আগ্রাসনে নির্বিকার জাতিসংঘকে সমানভাবে দায়ি করে লিখেন।
‘জ্ঞানে বিষাদ এসে দাঁড়িয়েছে হত্যার বিজ্ঞানে
কেবল প্রযুক্তি খোঁজে শাদামাথা হত্যার নায়ক
সিদ্ধহস্ত খুনিদের নব্যতম বিশ্বের বিধানে
এক ঠ্যাঙে বসে আছে জাতিসংঘ বিবেকের বক।’
(ঈগল থাকবে না ইতিহাস থাকবে, উড়াল কাব্য)
কবি আল মাহমুদ মানেই দ্রোহের রূপকার। তাঁর কলম সর্বদাই আগ্রাসীদের বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন তার কলম থামেনি, পরবতীর্তে কোনো অন্যায়-অবিচারকেও তিনি মেনে নেন নি। জেলখানায় তার মনের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়। ঘুরে যায় জীবনের বাঁক। কিন্তু দ্রোহী মনোভাব আরো বেগবান হয়েছে তীব্রভাবে। তাঁর গল্প, ছড়া ও কবিতায় সময়ের প্রয়োজনে গর্জে উঠেছে। গবেষক ড. ফজলুল হক তুহিন তাঁর স্বরূপকে তুলে ধরেন এভাবে, ‘বাংলাদেশের মানুষের আত্ম পরিচয়ের সন্ধান, মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধোত্তর লড়াই আল মাহমুদকে শেকড়মুখী, লড়াকু ও দ্রোহী করে তোলে। বিশ্বব্যাপী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সাম্রাজ্যবাদীদের তুলোধুনো করেছেন তিনি কয়েকটি কাব্যগ্রন্থে।
আমি আগেই বলেছি এ গ্রন্থের বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কয়েকজন গুণীজনের মতামত এ গ্রন্থটিকে আরো সমৃদ্ধ করেছে। এরা হলেন, ‘আল হেলাল আদর্শ ডিগ্রি কলেজের কবি সেলিম উদ্দিন, আল মাহমুদ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি কবি আবিদ আজম, কবি ও সাংবাদিক কমরুদ্দিন আহমদ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ড. ফজলুল হক তুহিন।’ ‘দ্রোহের কবি আল মাহমুদ’ সম্পের্ক আবিদ আজম বলেন, ‘যথেষ্ট প্রাজ্ঞতা আর হুঁশিয়ারের সাথে তিনি ‘সাহিত্যাকাশের অদ্বিতীয় গ্যালাক্সি’র অণুসন্ধানে ব্রতী হয়েছেন। ফলে আল মাহমুুদ কেন আল মাহমুদ সে প্রশ্নেরও এক প্রামাণ্য বয়ান পাওয়া যাবে এতে।’ শঙ্খ পাড়ের কবি খ্যাত কমরুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গ্রন্থটিতে কবি আল মাহমুদের দ্রোহবিষয়ক কবিতাসমূহের বিষয়, প্রেক্ষাপট, কাব্যসৌন্দর্য ইত্যাদির আলোচনা আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে উঠে এসেছে।’ গবেষক ড. ফজলুল হক তুহিন বলেন, ‘প্রাবন্ধিক আল মাহমুদের কবিতার একটি ভাষ্য এখানে হাজির করেছেন, ফলে কবিকে সহজেই ‘মানবতাবাদী কবি’ ও ‘সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী কবি’ কবি হিসেবে অভিহিত করা যায়। কবির নারী, নিসর্গ ও স্বদেশভাবনা নিয়ে অনেক চর্চা হয়েছে; কিন্তু দ্রোহী পরিচয় নিয়ে আলোচনা—মূল্যায়ন কম হয়েছে। এক্ষেত্রে খোরশেদ মুকুলের প্রচেষ্টা, পরিশ্রম ও রচনা অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার।’ যার মনে প্রচণ্ড দ্রোহ আছে, সেই মন মানবতার জন্য সবসময় কাঁদে। মানবতবাদী কবিরা কখনো আপোষে বাঁচে না, আপোষকামিতা তাদের ধাতে নেই। নিজে জুলুমের শিকার হলেও তাদের কলম থামে না। আল মাহমুদ থামেননি, তাঁকে সরিয়ে দিতে যতই চেষ্টা করা হয়েছে, ততই তার অবস্থান শক্ত হয়েছে। আসলে সাহিত্য তো হবে মানবতার মুক্তির জয়গান গাওয়ার জন্যে, মানুষকে স্বপ্ন দেখানোর জন্যে। কবিরা আমাদেরকে নিত্য সেই স্বপ্ন ও সাহস যুগিয়ে যাচ্ছেন কলমের মাধ্যমে। প্রাবন্ধিক আল মাহমুদের দ্রোহের মালাগুলো একত্রিত করে পাঠক সমাজকে উপহার দিয়েছেন ‘দ্রোহের কবি আল মাহমুদ’—গ্রন্থের মাধ্যমে।
খোরশেদ মুকুল এ সময়ের তরুণ লিখিয়ের মধ্যে একটি সুপরিচিত নাম। তাঁর জন্ম চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানায়। ইতিমধ্যে সোনালী কাবিনের কবি আল মাহমুদকে নিয়ে গবেষণামূলকগ্রন্থ ‘দ্রোহের কবি আল মাহমুদ’ লিখে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন। ছড়িয়ে পড়ে আল মাহমুদ গবেষক হিসেবে তার নাম। নিজের যোগ্যতার জানান দেন সাহিত্যাঙ্গনে। তার সবলেখাই অতিকলেবরহীন, কাঠিন্যতা ও বাহুল্যবর্জিত। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বিবাহিত রাষ্ট্রের কান্না’ প্রকাশিত হয় ২০১৮’র বইমেলায়। এরপর আরো দু’টি কাব্যগ্রন্থ উপহার দেন পাঠক সমাজকে। সেগুলো হলো : মৃত বিবেকের সৎকার (২০১৯) এবং মাজির্নহীন খাতা (২০২০)। এভাবে তিনি পর্যায়ক্রমিকভাবে বুনন করে চলেছেন কাব্যভুবন এবং ঋদ্ধ করছেন সাহিত্যজগতকে। ‘দ্রোহের কবি আল মাহমুদ’ খোরশেদ মুকুলের এ যাবৎকালের সেরা সাহিত্যকর্ম। আশাকরি তার এই সৃষ্টিকর্মগুলো তাকে বাঁচিয়ে রাখবে দীর্ঘকাল।