spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদপ্রবন্ধজুলাই গণ অভ্যুত্থানে বিপ্লবী কবিগণ ও প্রাসঙ্গিক কথা : ২

লিখেছেন : তাজ ইসলাম

জুলাই গণ অভ্যুত্থানে বিপ্লবী কবিগণ ও প্রাসঙ্গিক কথা : ২

পর্ব : ২
……..

জুলাই বিপ্লব একদিনের ফসল বলে মনে করি না।এই বিপ্লব দীর্ঘ ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। দীর্ঘ আওয়ামী জুলুমের বিস্ফোরিত অবস্থা। আওয়ামী রেজিমের বিরুদ্ধে লড়েছেন গণতন্ত্রকামী জনতা দীঘ পনের বছর। কবিরাও লিখে যাচ্ছেন শিল্পের প্রচ্ছদে দ্রোহের কথা। মুর্শিদ-উল-আলম তাদের একজন।

…………
মুর্শিদ-উল-আলম
………….
কবি

মুর্শিদ -উল- আলম বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে একজন সক্রিয় কবি। অবশ্য তিনি এর আগেই আওয়ামী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছিলেন সবসময় সোচ্চার। তিনি গণতন্ত্রের পক্ষে,বাকস্বাধীনতার পক্ষে,ফ্যাসিজমের বিপক্ষে সক্রিয় ছিলেন আওয়ামী রেজিমের শাসনকালে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে মিছিলে, স্লোগানে সরব ছিলেন রাজপথে। ১৮ জুলাই ২০২৫ আওয়ামী সন্ত্রাসের প্রতিবাদে গর্জে ওঠে তার কলম। পোস্ট করেন কবিতা ‘ রাজপথ রক্তাক্ত দলীল’।

“এই রাজপথ আজ স্বাধীন সত্ত্বার রক্তাক্ত দলীল
এখানে বেড়াচ্ছে ঘুরে ঘুরে পদ্মলাল রক্ত ফোঁটা
যুবতীর প্রৌঢ়কুঁজো ভঙ্গিতে চিত্রিত হয় আইয়ামে জাহেলিয়াত।

রক্ত ফোঁটার উচ্ছ্বাসে, গুম খুণের সন্ত্রাসে নীলকণ্ঠ
পথ ছুটে যায় মুক্তির প্রণয় মোহনার খোঁজে “।

…………..
মুসা আল হাফিজ
…………..
কবি ও চিন্তক।

তিনি কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক।
মুসা আল হাফিজ আওয়ামী দুঃশাসনের সময়ও কথা বলেছেন।তিনি বিভিন্ন সভা -সমাবেশ,সেমিনার সিম্পোজিয়াম তার বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় প্রকাশ করেছেন নিজের অবস্থান। প্রবন্ধ নিবন্ধে উপস্থাপন করেছেন নিজের মতামত। তার কর্ম পরিসর বিস্তৃত।আমরা এই আলোচনা কবি হিসেবেই তার অবস্থান উল্লেখ করছি। কবিতাতেও ছিল তার কলম সচল। ফ্যাসিবাদ বিরোধী কবিতায় তিনি লিখেন,

“আজাদির ডাক

দিল্লির বিল্লিকে বলে দাও ভাগরে
ঈশা খাঁর সন্ততি আজ ফের জাগরে
বাংলার ছবি আঁকে ভারতের তুলিতে
ভরে ফেলে দেশটাকে খুনে আর খুলিতে!
দেশটাকে লুটে খায়, চেটে নেয় রক্ত
ঢাকা আজ কথা কয়- মার হবে শক্ত
দিল্লী না স্বাধীনতা? দিল্লী না ঢাকা?
আজাদীর সূর্যটা ফ্যাসিবাদে ঢাকা!
আর নয় কোনো দেরি,তিতুমীর ঘোষে
স্বাধীনতা কই গেলো? জেন জিরা রোষে! “

……………
ফারুক ওয়াসিফ
…………….
কবি ও সাংবাদিক।

ফারুক ওয়াসিফ সবসময় গণমানুষের পক্ষে কথা বলে আসছেন। আওয়ামী হুমকি ধামকিকে উপেক্ষা করে হাজির থেকেছেন কথা বলার মঞ্চে।১৬ জুলাই তার টাইমলাইন পোস্ট হয় ‘ এজাহার নামক কবিতাটি।

“কী দেশে এলাম!
প্রহারের পরে রক্ত জমে নীল,
মেয়েটির গায়ে কালশিটে দাগ
তরুণ শরীরে কালশিরা,
আকাশে আকাশে ঝলকায় বিদ্যুৎ
তবু জেনে রেখো মহারাণী
যদি ফিনকি দিয়ে রক্ত নামে ফের
প্রতিশোধের দাদন তুলবে সময়।”

………..
সাজ্জাদ সাঈফ
………..
কবি ও মনোরোগ চিকিৎসক।

তিনি জাতীয় ফ্যাসিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মঞ্চ’র আহ্বায়ক এবং
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক আন্দোলন নামক সংগঠনেরও দায়িত্বশীল।
ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী।
মাঠে ময়দানে লড়াকু সৈনিক। কবি তিনি,কবিতা তার জবাবি অস্ত্র। জুলাই বিপ্লবের তুমুল সময়ে সমস্ত ভয়কে উপেক্ষা করে লিখেন কবিতা।পোস্ট করেন তার টাইম লাইনে। কবিতার চরণ ভাইরাল হয়ে ভাসতে থাকে ওয়ালে ওয়ালে।

” শাসক ছলনা করে রীতিমতো আস্তাকুঁড়ে যাবে;
শহীদ লিখিত হবে, হৃদয়ে-বেদিতে র’বে যুগান্তরের কিতাবে!”
আন্দোলনের প্রেক্ষপটে তার কবিতার শিল্পমানের আগে বক্তব্যই গ্রহণ করি আমরা। পুরো কবিতাটা তুলে দিলাম :

গণহত্যা: ২০২৪

*
মেঘের ওপর বসে আজ সকাল এসেছে ঘরে।
কাহার ছলনা ঢাকা জোড়া ছাতিমের চারা
বেড়ে ওঠে অল্প চেনা শহীদের কবরের ধারে!
ছলনা হাসির গায়ে রক্তারক্তি ছিটিয়েছে কারা?

মেঘেরা জানে না আজ দিনটি কেমন যাবে;
বিক্ষোভ সবল হয়ে রাজপথে রোদ্দুর ছড়াবে
নাকি, রক্তরাঙা ফুল ফুটে বুকে হবে লাল আলপনা?
কেটে ফেলা মূল থেকে গজায় গাছেরা তাহা জানে না শাসক তাই না?

শাসক ছলনা করে রীতিমতো আস্তাকুঁড়ে যাবে;
শহীদ লিখিত হবে, হৃদয়ে-বেদিতে র’বে যুগান্তরের কিতাবে!

৩১ জুলাই ২০২৪।

………….
সরদার আব্বাসউদ্দীন
………….
কবি,নাট্যকর্মী ও আইনজীবী।

ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ছিলেন মিছিলের অগ্রভাগে।তিনি একজন সংগঠকও।কবিতায় প্রকাশ করেছেন দ্রোহ।৩ আগস্ট আমরা প্রেসক্লাবে দাঁড়িয়েছিলাম হাতে হাত রেখে।আব্বাস সে প্রোগ্রামে জ্বালাময়ী কবিতা আবৃত্তি করেন।

…………
এনামূল হক পলাশ
…………
কবি।

শুরুতেই আন্দোলনে একাত্ম হন।নিরস্ত্র ছাত্রদের গুলি করলে প্রতিবাদে নেমে আসেন কবিতা হাতে সোশ্যাল মিডিয়ার মাঠে ।লিখেন

‘আমি কীভাবে ভুলে যাব ভাই হারানোর বেদনা?
আমি কীভাবে ভুলে যাব পুত্র হারানোর বেদনা?
আমি কীভাবে বয়ে বেড়াবো এই ঝাঁঝরা মানচিত্র?
তুমি বুক পেতে নিরস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিলে
গাঢ় নীল অথবা হালকা জলপাই কালারের
সসস্ত্র কুকুরগুলোর মুখোমুখি।’

১৮ জুলাই ২০২৪

…………..
রাজা আবুল কালাম আজাদ
………….
কবি

আন্দোলনে ছিলেন সক্রিয়। কবিতা ছিল ক্ষোভ প্রতিক্রিয়া প্রকাশের মাধ্যম।
ফেসবুক এক্টিভিজমে ছিল পোস্ট ও কবিতা।
১৭জুলাই পোস্ট করেন একটি কবিতা, শিরোনাম
‘জাগো বাংলাদেশ জাগো’।
আমরা উদ্বৃত করছি তার কবিতাংশ।

‘জাগোরে বাংলাদেশ জাগো,
বাঁচতে যদি চাও এবার, বাঁচার জন্য জাগো,
জাগোরে বাংলাদেশ জাগো,
জাগোরে জাগো, জাগোরে জাগো।’

মহিউদ্দিন জুলহাস,আজাদুল হক আজাদ,সুলতান মাহমুদ এরা ফেসবুকে কবিতা ও পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অবিরত। আন্দোলন সংগ্রামে রচিত কবিতা প্রায় সময় কবিতা হয়ে ওঠে না। কবিতারা শিল্পমান ধারণ করতে ব্যর্থ হয়।তবে শক্তিমান কবিরা শিল্পমান বজায় রাখতে চেষ্টা করেন বরাবরই।

আমরা যখন কবিদের কথা বলছি তখন শিল্পমানের আলাপ করছিও না।আমরা খেয়াল রাখছি একটি জাতির অগ্নিগর্ভ সময়ে একজন কবির অবস্থানের কথা। জুলাই বিপ্লবে কবিদের একটা পক্ষ ছিল খুন,গুম,নির্যাতনকারী সরকারের পক্ষে।অপরপক্ষে ছিল বিপ্লবী কবিগণ।তাদের কবিতায় চিত্রিত হয়েছে সময়ের চিত্র।

‘লাশতান্ত্রিক রাজসভা’
সুলতান মাহমুদ ‘ র এমন একটি কবিতা।

‘এসো, আমজনতার মৃত শরীরে ঢুকে পড়ি–
সেখানে লাশ পাবো;
দগ্ধ-বিদগ্ধ লাশ
কাটাছেঁড়া-ক্ষতবিক্ষত লাশ
আইন-আদালত থেকে বেআইনি পাশ করা লাশ
পরিপক্ক-অপরিপক্ক লাশ
ধার্মিক-অসাম্প্রদায়িক লাশ
অসভ্য কিংবা অমায়িক লাশ
আত্মহননকারী যুবক-যুবতীর লাশ
লাশের খবর নিতে আসা লাশ
লাশে-লাশে দ্বন্দ্বে লিপ্ত লাশ
লাশের বিকট গন্ধে ক্ষিপ্ত লাশ
লাশগাড়ির চাকায় পিষ্ট লাশ
অভিশাপ বা আশীর্বাদে সিক্ত লাশ
চুম্বনে-আলিঙ্গনে তৃপ্ত লাশ! ‘

১ আগস্ট ২০২৪।

…………
মুহাম্মদ ইয়াকুব
….……..
কবি।

আন্দোলনের পুরো সময় ছিলেন তৎপর।১৬ জুলাইয়ে লিখেন,

‘চল এ‌গি‌য়ে বুক চে‌তি‌য়ে
ভয় ক‌রিস না, হে‌রে যা‌বি;
দেশের মা‌টি ‌তো‌দের ঘাঁ‌টি
রু‌খে দাঁড়া, বিজয় পা‌বি।’

তারপর বিজয় নিয়ে ফিরেছেন ঘরে।

মেছবাহ উদ্দিন মারুফ

দাবি আদায় করতে গিয়ে
মরলো বোন ও ভাই,
চোখের অশ্রু মুছে পেল
পাল্টা জবাব চাই।

১৬ জুলাই।

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপতৎপরতা রুখতে ৮১ লেখক শিল্পীর বিবৃতি

(ইত্তেফাক ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:১৫)

বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির অপতৎপরতা রুখতে ৮১ লেখক শিল্পীর বিবৃতি

মহান জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ক্রমাগত ষড়যন্ত্র করে আসছে দেশি-বিদেশি একাধিক চক্র। নিজেদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে এরা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল দেখতে চায়। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও শান্তি বিনষ্ট করতে চায়।

গণমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পারি, ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মহাসমাবেশ ঘিরে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভে ও জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। এ ঘটনায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাবেক ইসকন নেতা ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে (প্রকৃত নাম চন্দন কুমার ধর) আটক করে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু গতকাল মঙ্গলবার যথাযথ সুবিচার নিশ্চিত করার আইনি প্রক্রিয়াকে শ্রদ্ধা না করে এই চক্রের ব্যক্তিবর্গ চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে হাজির হয়ে উচ্ছৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। একপর্যায় সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করা হয়। এসব ঘটনা দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

এদিকে আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে হত্যা সকল ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্রদের ‘সংহতি সপ্তাহ’ ঘোষণার চক্রান্তমূলক একটা জবাব। কারণ, সংহতি সপ্তাহ যে একটা সঠিক ও শক্তিশালী কর্মসূচি, যা গণশক্তি সংহত ও শিক্ষাঙ্গনের অস্থিরতা কমাতে পারে। আমাদের আহ্বান, সংহতি সপ্তাহকে জাতীয় সংহতি করে তুলুন। সহিংস হবেন না।

আমরা উদ্বেগের সঙ্গে আরও লক্ষ করছি, বিভিন্ন দাবিদাওয়ার অজুহাতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘৃণাত্মক ও হিংসাত্মক বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটের বিপরীতমুখী বয়ান তৈরি করা হচ্ছে কিছু মহল থেকে। আ. লীগের ঘৃণ্য রাজনীতির সংখ্যালঘু ট্রামকার্ড ব্যবহার করে ভারতীয় মিডিয়াও ক্রমাগত মিথ্যা বয়ান তৈরি করছে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রোপাগাণ্ডা ছড়াচ্ছে দেশে-বিদেশে, যা আমাদের ভাবিত করছে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে।

এমতাবস্থায় দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে বাংলাদেশের সকল জনগণকে সচেতন ও সজাগ হওয়ার জন্য দৃঢ় আহ্বান করছে বাংলাদেশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কলমযোদ্ধাদের জোট বৈষম্যবিরোধী কবি-লেখক-শিল্পী ডায়াস। জোটের পক্ষ থেকে আমরা বাংলাদেশের জনগণকে যেকোনো মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার অনুরোধ করছি। কেউ যেন ষড়যন্ত্র করে দাঙ্গা সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য বিবেক, বিচক্ষণতা কাজে লাগিয়ে দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সচেতনতা জাগিয়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

পরিশেষে বাংলাদেশের জনজীবনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সমৃদ্ধি ও সংহতি কামনা করছি।

বিবৃতিদাতারা হলেন—
আবদুল হাই শিকদার, কবি
কাজল শাহনেওয়াজ, কবি ও কথাসাহিত্যিক
আহমেদ স্বপন মাহমুদ, কবি
সাখাওয়াত টিপু, কবি ও অনুবাদক
আ- আল মামুন, কলামিস্ট ও গবেষক
ফারুক ওয়াসিফ, কবি ও সাংবাদিক
এনামূল হক পলাশ, কবি ও অনুবাদক
লতিফুল ইসলাম শিবলী, কবি ও গীতিকার
এহসান হাবীব, কবি ও ‘অবরুদ্ধ সময়ের কবিতা’র সম্পাদক
আলতাফ শাহনেওয়াজ, কবি
ড. খান সুবায়েল বিন রফিক, গবেষক
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, লেখক ও গবেষক
সালাহ উদ্দিন শুভ্র, লেখক ও সাংবাদিক
এহসান মাহমুদ, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক
শওকত হোসেন, কবি ও সংগঠক
ডেরিল অদ্রি রায়, চিত্রশিল্পী
সেলিম আওয়াল, গল্পকার ও সাংবাদিক
আশরাফ জুয়েল, কবি
সালেহীন শ্রিপা, কবি
নকিব মুকশি, কবি
রাসেল রায়হান, কবি ও কথাসাহিত্যিক
সাইয়েদ জামিল, কবি
জব্বার আল নাঈম, কবি ও কথাসাহিত্যিক
চঞ্চল বাশার, কবি
আফসানা জাকিয়া, কবি
শাদমান শাহিদ, কবি ও কথাসাহিত্যিক
শামশাম তাজিল, কবি
মুসা আল হাফিজ, কবি ও চিন্তক
আসমা সুলতানা শাপলা, কথাসাহিত্যিক
আদনান আরিফ সালিম, লেখক ও গবেষক
শান্তা মারিয়া, কবি ও সাংবাদিক
হাসান জামিল, কবি
ফেরদৌস মাহমুদ, কবি
রোমেনা আফরোজ, গল্পকার ও নারীবাদী লেখক
জগলুল আসাদ, শিক্ষাবিদ ও চিন্তক
শতাব্দী জাহিদ, চিত্রশিল্পী
কাজী নাসির মামুন, কবি
মালেকুল হক, কবি
বহ্নি কুসুম, কবি ও সম্পাদক
ওয়াহিদ রোকন, কবি
জুননু রাইন, কবি ও সাংবাদিক
সাম্য শাহ, কবি
সুফি সুফিয়ান, শিশুসাহিত্যিক ও গীতিকার
মাহমুদুর রহমান, কবি
সাইদ উজ্জ্বল, সদস্য; জাতীয় নাগরিক কমিটি
শাহিন রিজভী, কবি
মাসুম মুনাওয়ার, কবি
মহসিন আহমেদ, গীতিকার
মঈন মুনতাসীর, কবি ও নাট্যাভিনেতা
মৃদুল মাহবুব, কবি
মুস্তাকিম বিল্লাহ, সংগঠক
নোমান প্রধান, অনুবাদক ও চিত্রনাট্য পরিচালক
পিন্টু রহমান, কথাসাহিত্যিক
রাজিয়া সুলতানা ঈষিতা, কবি
রিদওয়ান নোমানী, কবি ও ‘৩৬ জুলাই’ সম্পাদক
আবু সাঈদ বাহার, লেখক ও আইনজীবী
ফরিদুল ইসলাম নির্জন, কথাসাহিত্যিক
সাজ্জাদ সাঈফ, কবি ও চিকিৎসক
সানোয়ার রাসেল, কবি
সাঈদ হাফিজ, কবি ও উদ্যোক্তা
সাঈদ ইসলাম, কবি ও অনুবাদক
সাজ্জাদ বিপ্লব, কবি ও সম্পাদক
সাঈদ বারী, প্রকাশক; সূচিপত্র
তারিক ফিজার, কবি
তানভীর আহমেদ, কবি
বিপ্রতীপ মোস্তাক, কবি
ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম, কলামিস্ট ও সমাজসেবক
আকিব শিকদার, কবি ও অনুবাদক
সুলতান স্যান্নাল, কবি ও সংগঠক
আহমেদ ইসহাক, ছড়াকার ও কবি
ইস্রাফিল আখন্দ রুদ্র, কবি ও ‘জুলাইয়ের কথা’র সম্পাদক
তাহের সিদ্দিকী, গল্পকার
মাহবুব রহমান প্রকাশক, আদর্শ
কাফি কামাল, কবি ও সাংবাদিক
মঞ্জুরুল ইসলাম মেঘ, চলচ্চিত্র পরিচালক
রাজা আবুল কালাম আজাদ, গবেষক
আবুল কালাম আল আজাদ, পরিবেশবাদী
আবু বক্কর রাজু, প্রকাশক
মাহদী আনাম, প্রকাশক; ঘাসফুল
হানিফ রাশেদীন, কবি ও প্রকাশক
পলিয়ার ওয়াহিদ, কবি।

উক্ত তালিকার অনেকের নাম পূর্বেই আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করেছি। অবশিষ্ট সকলের পৃথক পরিচয় দিতে পারলে দায়িত্বের পরিপূর্ণতা আসতো। তবে ‘অ্যাপডা’ ব্যানারই তাদের উত্তম পরিচয়।তারা লেখালেখি ছাড়াও আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন সশরীরে।

……….
এহসান মাহমুদ
……….
কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক।

এই বিবৃতিতে অন্তর্ভুক্ত এহসান মাহমুদ কবি কথাসাহিত্যিক সাংবাদিক,শওকত হোসেন কবি ও সংগঠক। তাদের কার্যক্রম জুলাইয়ের আগে থেকেই আমি বা আমরা অবগত। শিমুল সালাউদ্দিন কবি ও সাংবাদিক, এমন বহু নাম আমার পরিচিত। তারা তাদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী যুদ্ধ জারি রেখেছিলেন ফ্যাসিস্টের শাসনকালেও।তারা কবি এবং সাহিত্যের অন্যান্য শাখায় আছে তাদের বিচরণ। জুলাই আন্দোলনে এরা ছিলেন সংগঠক।

এহসান মাহমুদকে আমি কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক হিসেবেই জানি।তিনি জুলাই আন্দোলনে ফেসবুকে বিভিন্ন স্ট্যাটাস ও দিকনির্দেশনায় ছিলেন প্রথম সারির যোদ্ধা। তার ছোট ছোট বাক্যের পোস্টগুলো আন্দোলিত করত আমাদের।৫ আগস্টে তার পোস্ট ‘ গণভবন ঘেরাও কর/ বাংলাদেশ মুক্ত কর।’ আমাদের এই নিবন্ধটি কবিদের নিয়ে।এহসানকে মনে হচ্ছিল তিনি জুলাইয়ের কবি। তার আবেগমিশ্রিত আরেকটি পোস্ট

‘হে পাকপরওয়ার দিগার, আপনি আমাকে বাংলাদেশের পক্ষে এবং চোরের বিপক্ষে একজন মোমিন রাজাকার বানিয়ে দিন।

এহসান মাহমুদ

১৫ জুলাই ২০২৪’
সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ কবি কি না এ জিজ্ঞাসায় যাইনি।তারা জুলাইয়ের লড়াকু সৈনিক।

………..
মাহবুব মোর্শেদ
……….

কবি,সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক।

এইসব নাম জুলাই আন্দোলনে অপরিহার্য। তাদের নাম প্রথম পর্বে বাদ পড়েছে। বাদ পড়েছে আরও বহু নাম।সারাদেশে গণজোয়ারে জেগে ওঠেছিল শত শত খ্যাত,অখ্যাত কবিকুল। মাহবুব মোর্শেদ আন্দোলনের সময়টায় ছিলেন সংগঠকের ভূমিকায়। তিনি সক্রিয় ছিলেন ফেসবুকেও।রাজপথেও ছিলেন ছাত্র জনতার কাতারে।

সবার কথা তুলে আনা সত্যই গবেষণালব্ধ কাজ এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।

এহসান মাহবুব, মাহবুব মোর্শেদদের প্রোগ্রামে আমি হাজির থেকেছি জুলাইয়ের আগে পরের নানা প্রোগ্রামে। নাম বাদ পড়াটা একান্তই স্মৃতিবিভ্রাট। বহু নামের ভিড়ে পরিচিত নামটাও ভুলে যাওয়া বিস্ময় হলেও জীবন চক্রের স্বাভাবিক নিয়মেরই অংশ।

………….
কাফি কামাল
………….
কবি ও সাংবাদিক।

আগস্ট পরবর্তী সময়ে গিয়েছিলাম ময়মনসিংহ। সেখানে কাফি কামালের নাম শুনেছি তার সহযোদ্ধাদের কাছে।
সত্যি কথা এর আগে কাফি কামালের নাম আমার জানা ছিল না।এটা একান্ত আমার সীমাবদ্ধতা। সেখানে গিয়ে তার ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের কথা জেনেছি।
আওয়ামী রেজিমের বিরুদ্ধে তার লড়াই ও এর পরিণতির কথা উচ্চারিত হয়েছিল বারবার। সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি তার সাথে যুক্ত নই বলে সেসবের অনেককিছুই জানি না।

মোস্তাকিম বিল্লাহ কবি ও সংগঠক। তিনি আমার সাথে ফেসবুকে যুক্ত।তার লড়াইটা কবিতা লেখার চেয়ে অন্যরকম।মাঠের সরাসরি কর্মী তিনি। আমরা যেহেতু বেছে নিয়েছি কবিদের, কাজেই এই আলোচনায় সচেতন ভাবেই অন্যদের যুক্ত করছি না। একজন সাংবাদিক,নাট্যকার,শিল্পী,কথাশিল্পী আন্দোলন করেছেন।স্লোগান, মিছিল, মিটিং করেছেন।তাদের নিয়েও আলোচনা হতে পারে।প্রাবন্ধিক, বুদ্ধিজীবী,রাজনীতিবিদদের কথাও আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। আন্দোলনে বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক জসিমউদ্দীন। ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী সাংস্কৃতিক অভিযাত্রা ‘ শিরোনামে প্রবন্ধ লিখছেন ড. ফজলুল হক তুহিন।কাজ হচ্ছে ও হবে। আমার সামনে, স্মৃতিতে, চেনাজানায় যারা আছেন তারা আলোচনায় গ্রন্থিত হচ্ছেন। যারা সক্রিয় ছিলেন অন্যদের মাধ্যমে লিপিবদ্ধ থাকবেন। এভাবেই লেখা হবে ইতিহাস।লিখিত থাকবেন ইতিহাসে একজন কর্মবীর।

জুলাই আন্দোলন করতে গিয়ে শাসক পাষণ্ডরা নির্দয় রক্তপাত করেছে রাজপথে। সেই রক্তপাতের কাব্য লিখেছেন ফজলুল হক মিলন।১৭ জুলাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাসে তার হুংকার
“এই দুঃসময়ের দহনকাল শেষে
প্রতিটি রক্তকনার হিসেব হবে,
হে সীমারের দল, তোমরা প্রস্তুত হও
তোমাদের বুকে অস্তিত্বের শেষ পেরেক ঠুকবে কোটি কোটি মুক্তিকামী জনতা।

আমি আবু সাঈদের ভাই বলছি
কসম রক্তে আলপনা আঁকা এই রাজপথের
তোমাদের স্বৈরিণী গদি খসে যাবে পাখির পালকের মতন।”

………..
[চলবে]

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

নয়ন আহমেদ on ১০ টি কবিতা
নয়ন আহমেদ on কবিতাগুচ্ছ
আমিনুল ইসলাম on কবিতাগুচ্ছ
শিকদার মুহাম্মদ কিব্রিয়াহ on কবিতাগুচ্ছ
নয়ন আহমেদ on কবিতাগুচ্ছ