spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদকবিতামাদার অব এভ্রিথিং ও অন্যান্য কবিতা

লিখেছেন : মুসা আল হাফিজ

মাদার অব এভ্রিথিং ও অন্যান্য কবিতা

মুসা আল হাফিজ

১. আজাদির ডাক
………..

দিল্লির বিল্লিকে বলে দাও ভাগরে
ঈশা খাঁর সন্ততি আজ ফের জাগরে

বাংলার ছবি আঁকে ভারতের তুলিতে
ভরে ফেলে দেশটাকে খুনে আর খুলিতে!

দেশটাকে লুটে খায়, চেটে নেয় রক্ত
ঢাকা আজ কথা কয়- মার হবে শক্ত

দিল্লী না স্বাধীনতা? দিল্লী না ঢাকা?
আজাদীর সূর্যটা ফ্যাসিবাদে ঢাকা!

আর নয় কোনো দেরি,তিতুমীর ঘোষে
স্বাধীনতা কই গেলো? জেন জিরা রোষে!

তার লাগি জান দেবো, যতো লাগে নাও
ঢাকা ছাড়ো দিল্লি হে, বিল্লি পালাও!

২. মাদার অব এভ্রিথিং
…………..

আজকাল বৃষ্টি নেই।
রোদে পোড়া রাস্তা কাঁদে– পানি চাই
কিন্তু মেঘমালা বৃষ্টি ঝরাবে না !

মন্ত্রী পরিষদ পেরেশান;
তারা না চেনে বৃষ্টিকে, না জানে রোদের নামতা

হাসিনা আসলেন, হাসলেন।
বললেন–
বৃষ্টির কী দরকার?
পথে আছে সস্তার ছেলে-মেয়ে!
আমার আছে মহার্ঘ্য গুলি-গোলা
সোজা সল্যুশন !

এতো বেশি রক্ত ঝরাবো ,
বোকা রাজপথের কোনো তৃষ্ণা থাকবে না !

সংবাদ সম্মেলন করতালিতে ফেটে পড়লো
: কী সুন্দর সমাধান !

তিনি রোদেরও মা, রক্তেরও মা
তিনিই সমাধান!

৩. চলো
…………

শ্বাস নেওয়া বন্ধ , নিজে নিজে নাই হয়ে গেছে ইন্টারনেট
পলকে পলকে গুলি, মিথ্যা , মৃত্যু
পেছনে নৃশংসতা। কিন্তু চলছি, লড়ছি, কারণ
সামনে স্বাধীনতা।

সামনে আবু সাঈদের মুখ
আবরারের অনন্ত পথে মুগ্ধ পানি বিলাচ্ছেন
চলো, লড়াকুরা চলো ,

আমরা পিপাসায় শাহাদাত পান করবো
ওরা পান করবে হত্যাকাণ্ড
চলো , লড়াকুরা চলো

আমাদের হাতে হাতে গরাদের কড়া
প্রিজনভ্যানে লিখছি মাতৃডাক
লাশের খবরও হয়তো জানবে না জননী
তবুও চলছি আমরা, লড়ছি, যাচ্ছি নিশ্চিত মোহনায়!

আমরা জানি, জীবন নরক হয়ে গেলে
থাকে শুধু শাহাদাত। যা আমার বিনিময়ে সবাইকে
ফিরিয়ে দেবে বেদখল মাতৃভূমি।

জানের মূল্য ফেরত আনবো
ইনসাফকে দেবো মুক্তি
মরণের সাথে রাতের মোড়ে
এই আমাদের চুক্তি

চলো , শ্বাসরুদ্ধ প্রহরে
চলো, ডাইনিরজনী ছিন্ন করে
আয়নাঘরে অপেক্ষা করছে দাজ্জালের হাবিয়া , তবু চলো

গণহত্যা শা শা করে ধেয়ে আসছে, তবু চলো
কারণ জীবন হারাবার ভয়কে হরণ করার পরে
স্বাধীনতা ছাড়া সামনে কেউ থাকে না।

চলো, সামনে স্বাধীনতা

৪. মৃত্যুর বর্ণমালা
……………

আমি হাসলাম।
উন্নয়নের গল্পের উপর সওয়ার মহামারিকে
কটাক্ষ করেনি হাসি। কিন্তু তারা চাপিয়ে দিলো
হাসিনিরোধক আইন।

জানি, আইনকে যেখানে
যতবেশি পদদলিত করা হয়, ততবেশি
নতুন আইন বানাবার জরুরত। এমনকি
আইনের উপর মূত্র বিসর্জনের আইনও দরকার পড়ে তাহাদের।

হাসতে যখন পারছি না, কবিতা লেখি অন্তত।
কিন্তু আমার শব্দ কেড়ে নেবার আইন ছিলো তাদের পকেটে।

হৃদয়ের কালি, অস্তিত্বের কলমকেও জব্দ করা হলো।

এখন কবিতা লেখবে কেবলই ফ্যাসিবাদ।
ফ্যাসিবাদ কবিতা লেখছে, কাঁপছে টিভির পর্দা।
নাচছে বুদ্ধিজীবী। লাফাচ্ছে শুয়োরের ছানা-বুড়ো।

চারদিকে হৈ হৈ রৈ রৈ!

কবিতা রচিত হলো বটে। কিন্তু তার ছন্দের নাম পদদলন,
প্রতীকের নাম গুম, উপমার নাম পাচার, উৎপ্রেক্ষার নাম রাহুগ্রাস,
যমকের নাম জুলুম, অনুপ্রাসের নাম করাপশন
চিত্ররূপের নাম অধিকারনাশ এবং অর্থালঙ্কারের নাম
বিরতিহীন লুটপাট!

গোলাম কবিদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে
ফ্যাসিবাদ কবিতামঞ্চে এলেন: মহান কবিতা পড়বেন তিনি।

কবিতাটি পড়া হচ্ছে বটে! কিন্তু
মৃত্যুর বর্ণমালা ছাড়া কবিতাটি কিছুই বলছে না।

৫. ডায়াপারের গল্প
……….

ফ্যাসিবাদ সব কিছুতে বদল আনে। তার ঘোর লাগে যে জাদুকরের মনে,
তার জাদুর প্রিয় কৌশলটি হয় স্বাধীনতাকে অদৃশ্য করে দেওয়া।

একটি মইয়ের কথা ধরুন। তাকেও শেখানো হয় মন্ত্র ;
তোমার কাজ হলো– নিপীড়নকে উচ্চতায় পৌছানো
মানুষ বলে, ফ্যাসিবাদ বাক স্বাধীনতা দেয় না।

ভুল। সে আপনাকে ইনিয়ে-বিনিয়ে হলেও তার প্রশংসা
করার স্বাধীনতা দেয়।

লোকেরা মনে করে ফ্যাসিবাদ বই লিখে না।

ফ্যাসিবাদ লিখে বই; গল্প, উপন্যাস, জীবনী, নাটক
হাজারে হাজার। আপনি চাইলে সকল রচনা পাঠ করে
সমস্তকে একই সারকথায় জড়ো করতে পারেন।

যেন সকল লেখক-লেখিকা একটি কথাই লিখেছে
সকল বিষয়ে;-
কীভাবে সবকিছু খেয়ে ফেলা যায়!

ফ্যাসিবাদকে ডায়াপারের গল্প শুনালেই মজা ।

কারণ এতে সে শিউরে উঠে ভয়ে।ভাবে, মূত্র ও হাগুতে নষ্ট
ডায়াপারের মতো তাকে বদলানোর কথা বলা হচ্ছে!

আরও পড়তে পারেন

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

সৈয়দ সাইফুল্লাহ শিহাব on কবিতার স্ফুলিঙ্গ, স্ফুলিঙ্গের কবিতা