তাজ ইসলাম
৩য় পর্ব
…………
১ কি ২ আগস্ট কথাশিল্পী নাসরিন জাহানের পোস্টে নিরীহ টাইপের একটা কমেন্টের সূত্র ধরে আক্রমণ করে কবি সৌমিত্র দেব। কথা কাটাকাটি চলে কমেন্টে। সৌমিত্র দেব আমাকে হুমকি দেয়। হত্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখায়। নাসরিন জাহানের পোস্টে আমাকে নানা রকম ভয় ভীতি দেখায়। সত্যি বলতে আমি ভয় পেয়ে যাই। ভয়ংকর কথাবার্তা বলতে থাকে।আমিও কথা বলতে থাকি।কমেন্ট থেকে ফিরে আসার পথও ছিল না। কয়েকজনের ইনবক্সে নক করি। কবি নকিব মুকশি আমাকে কমেন্টে সেইফ করে।কড়া ভাষায় প্রতিবাদ করে।নাসরিন জাহানকেও নক করি। তিনি আমার সাথে যা বলেন তাতে মনে হল তিনি সৌমিত্রের প্রতি একটু দুর্বল। তাৎক্ষণিক ভয় পেলেও মনে সাহস রাখি। ৩ আগস্ট আন্দোলন চলে আসে এক দফায়।ঘোষণা না হলেও এক দফার পর্যায়ে পৌছে যায়।ইতোমধ্যে পত্রপত্রিকায় একটি বিবৃতি প্রকাশ ও প্রচার হতে থাকে। আন্দোলনকারীদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। আন্দোলনরত কবি, সাহিত্যিক, এক্টিভিস্টগণ নিজ নিজ ওয়ালে মত প্রকাশ করতে থাকেন। প্রতিক্রিয়া দেখে অনেকে বিবৃতি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার করে নেন।অনেকে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেন। আমিও পোস্ট করি।এই ফাঁকে দেখি নাসরিন জাহান আমাকে ব্লক করেছেন। এই সৌমিত্র ৫ আগস্টের পর আওয়ামীলীগের কোন এক অঙ্গ সংগঠনের ব্যানারে দাঁড়িয়েছিল প্রেসক্লাবে। মনে হয় জনতার হাতে উত্তম মধ্যম খেয়ে পালায়। কবিদের কথা বলতে গিয়ে এসব স্মৃতি মনে পড়ল। ৫ আগস্ট হাসিনা না পালালে নিশ্চিত এই সৌমিত্র দেবেরা,
হয়রানির সকল চেষ্টাই চালিয়ে যেত। আর
নাসরিন জাহানেরা হয়ে যেত রাজসাক্ষী। অথবা আড়ালে মুখ লুকিয়ে রাখত নাসরিন জাহানেরা। কথা বলতে গিয়ে কত কথাই চলে আসল। যে বিবৃতি নিয়ে এত কথা সে বিবৃতিটা না হয় থাকুক এখানে। বিবৃতির অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল আওয়ামী দালাল হিসেবে। মীর রবিও আমার ফ্রেন্ডলিষ্টে ছিল। পরবর্তীতে জুলাই বিপ্লবীদের নিয়ে মীর রবি যথেষ্ট বাজে কথা বলেছে। আমিও তার লিষ্টে নাই। সে আমাকে ব্লক বা আনফ্রেন্ড করে চলে গেছে। আমরা ইতিহাসের অংশ হিসেবে পত্রিকার পাতা থেকে এখানে উপস্থাপন করছি। শীর্ষস্থানীয় সকল পত্রিকাতেই তা ছাপা হয়। কাজেই কোন পত্রিকার একক নাম উল্লেখ না করেই তা এখানে রাখলাম।
‘৩ আগস্ট ২০২৪
শিল্প-সাহিত্য দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ৩০ জন লেখকের বিবৃতি
কোটা সংস্কার আন্দোলন
দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে ৩০ জন লেখকের বিবৃতি
সারাদেশে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে দমাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকায় শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন লেখকরা। এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানান দেশের ৩০ জন লেখক।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকাসহ সারাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে দমাতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজিরবিহীন ভূমিকায় শিক্ষার্থীসহ দুই শতাধিক মানুষ শহীদ হয়েছেন, এবং অসংখ্য মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। যার ফলে দেশজুড়ে ভয়াবহ একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই নৃশংসতায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সময়ের লেখকগণ মর্মাহত ও বিক্ষুব্ধ। তারা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। লেখকরা সরকারকে দ্রুত জনগণ ও আন্দোলনকারীদের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে এমন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়ে রাষ্ট্রীয় এই সঙ্কটের সমাধানের লক্ষ্যে কিছু দাবি জানিয়েছেন।
তাদের দাবিগুলো হচ্ছে:
১. কোটা সংস্কার আন্দোলন দমনের নামে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য তদন্ত ও বিচার করা
২. আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতার বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার ও গণ মামলা বন্ধ করে অবিলম্বে আটককৃত ছাত্র-জনতাকে মুক্তি দেয়া
৩. কারফিউ তুলে নিয়ে জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা এবং অতিদ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা
৪. শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনগণকে হয়রানী বন্ধ করা
৫. কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত আন্দোলনকারীদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়া
৬. আন্দোলনকারীদের যৌক্তিক দাবিগুলো আমলে নিয়ে সংকট উত্তরণের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা
৭. এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সর্ব পেশা ও ধর্মের মানুষের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে একটি সংলাপের আয়োজনের উদ্যোগ গ্রহণ করা
বিবৃতি প্রদানকারী ৩০ জন লেখক হলেন–
কবি হাফিজ রশিদ খান,
কথাসাহিত্যিক নাসরীন জাহান,
কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার,
কথাসাহিত্যিক ইমতিয়ার শামীম,
কবি সুহিতা সুলতানা,
কবি ও কথাসাহিত্যিক শাহনাজ মুন্নী,
কবি জেনিস মাহমুন,
কবি চঞ্চল আশরাফ,
কবি আলফ্রেড খোকন,
কবি শোয়াইব জিবরান,
কবি হেনরী স্বপন,
কবি শিবলী মোকতাদির,
কবি শাহেদ কায়েস,
কবি কাজল কানন,
লেখক ও গবেষক জোবাইদা নাসরীন,
কবি খোকন মাহমুদ,
কবি নেহাল আহমেদ,
কবি ও সাংবাদিক জাহানারা পারভীন,
কবি আহমেদ শিপলু,
কবি সঞ্জীব পুরোহিত,
কবি ও শিক্ষক সাকিরা পারভীন,
কবি মনিরুজ্জামান মিন্টু,
কথাসাহিত্যিক ফজলুল কবিরী,
কবি রহমান মুজিব,
কবি রিঙকু অনিমিখ,
কবি জাহিদ সোহাগ,
কবি ইমরান মাহফুজ,
কবি সৌম্য সালেক,
কবি মীর রবি,
কবি শফিক সেলিম।’
এই বিবৃতি দাতাগণ আন্দোলনের পক্ষ বিপক্ষ তা নির্ণয়ের জন্য আমরা উপস্থাপন করছি না। এখানে নাম দেওয়া অনেকেই নিজের নাম প্রত্যাহার যেমন করেছেন, আমরাও জানি তারা আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। দুয়েকজন চিহ্নিত আওয়ামী পন্থীও আছেন। যা হোক আমরা কবিদের কথায় যাই।
……….
আমিনুল ইসলাম
………..
কবি
বিপ্লবের পক্ষে ছিলেন। জুলাই আগস্টে তিনি আন্দোলনকে ধারণ করেছেন। বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেছেন। স্ট্যাটাসে জুলাই আন্দোলনে আহত,নিহতদের প্রতি সমর্থন ও শ্রদ্ধামূলক পোস্ট দিয়েছেন।
কবিতা লিখেছেন একাধিক। জুলাইয়ে আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধের শাহাদাত মানুষের মানবিক হৃদয়কে আহত করে। কবির কলমে তার আর্তি ফুটে ওঠে।
“আসাদ বরকত নূর সাঈদ
কেউই একজন নয়
জনগণের কণ্ঠ তারা
তাই অকুতোভয়।”
(‘সাঈদ, তোমায় স্যালুট’)।
……….
কাজী নাসির মামুন
………..
কবি
কবিরা সময়ের দ্রষ্টা। সময়ের সাক্ষী। কবিরা সত্য ও সুন্দরের পক্ষের। জুলাইয়ে ছাত্র জনতার উপর সরকারের নির্মমতায় একজন প্রত্যক্ষ সাক্ষীর মতই সত্যকে তুলে ধরেন কবি কাজী নাসির মামুন। তিনি তার কবিতাকে নিজের ওয়ালে পোস্ট করতে থাকেন ভয়কে উপেক্ষা করে।আমরা তার একটি কবিতা পড়ি।
শিকার
……….
শিকারি বয়স মানে না পাখিদের।
পতন স্পর্ধার দিনে শিশুরাও গুলি খেয়ে মরে।
তরুণ যুবক আর বৃদ্ধদের কথা নাই-বা বললাম।
আসলে মরে নি কেউ, ত্যাগের পতাকা নিয়ে
আকাশে ঘুমায়।
পতাকাই স্বদেশ এখন।
গুলি ও খুলির সঙ্গে পত্ পত্ শব্দের মহড়া
বুকের পাঁজরে শুধু রক্ত হাসে
রক্তই প্রতিরোধ
সম্মিলিত জমাট সাহস
দুরন্ত রাস্তায়।
পাথরের মতো কুড়িয়ে নিলে
শিকারির দিকে ছুড়ে দেওয়া যায়।
তারপর কয়েকটি দৃশ্যে গল্পটা দানা বাঁধে–
পুকুরপাড়ে একটি কাঁঠাল গাছ
ডালে বসা একাকী পাখি
তাক-করা শিকারির বন্দুক
নিচে তড়পানো পিঁপড়েটাও পুকুরে ভাসছে।
পাখি পাতা ফেলে
পানির প্রহর ছেড়ে
পিঁপড়েও উঠে আসে কাঁঠাল পাতায়
তারপর একটি কামড়
লক্ষচ্যূত শিকারির বন্দুক।
আমাদের কামড়গুলো
শিকারির পায়ের দিকে ধাবমান।
৩১ জুলাই
………
আবু জাফর সিকদার
……….
কবি
জুলাইয়ে কথা বলা,কবিতা লেখা,মিছিল করা সবই ছিল আতঙ্কের বিষয়।তবু কবিরা ভয়কে উপেক্ষা করে লিখে গেছেন কবিতা।একটি পোস্টের জন্যও নেমে আসতো আওয়ামী নির্মমতা।সে সময় প্রচার করেন বাংলা রিভিউ কবির ১০ টি কবিতা। আমরা এখানে একটি পাঠকের জন্য পেশ করলাম।
বুক চিতিয়ে থাকো
……..
থাকো থাকো থাকো
বুক চিতিয়ে থাকো
গুলি এলে ভয় পেয়ো না
বুক চিতিয়ে থাকো।
সাঈদ, শান্ত, মুগ্ধরা সব
পেতে দিলো বুক
স্বাধীন দেশের স্বৈরাচারী
সবাই মিলে রুখ।
থাকো ও ভাই থাকো
বুক চিতিয়ে থাকো
গুলি এলে আসুক গুলি
বুক চিতিয়ে থাকো।
………..
তমিজ উদদীন লোদী
…………
কবি।
তিনি প্রবাসে থেকেও আন্দোলনে ছিলেন ছাত্রদের সমর্থনে। কবিতা,স্ট্যাটাস,ফেসবুকে মতামত দিয়ে ছিলেন সরব। অনেক কবিতা লিখেছেন। আমরা তার একটি এখানে পেশ করলাম।
সবুজ বাতিগুলো লাল হয়ে আছে
বারুদের স্তুপ বসে আছে
সুকান্তের দিশলাই কাঠির কথা মনে পডে
আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ টগবগ করছে
লাভা বেরিয়ে এলো বলে
পাদদেশে স্ট্রুক্কুরের খেলা
উষ্ণ প্রস্রবণ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে
সবুজ বাতিগুলো লাল হয়ে আছে।
২৯ জুলাই।
……….
টোকন ঠাকুর
………..
কবি
কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই সরব কবি তিনি। তারপর সমগ্র জুলাই জুড়ে ছিলেন তৎপর। কবিতা, স্ট্যাটাস,বিবৃতি দিয়ে ছিলেন সোচ্চার। পত্রপত্রিকায় লিখেছেন কবিতা।
তার একটি কবিতা
প্রজাপতি দুই ছত্র
…….
এক.
সন্ধ্যায়
প্রজাপতি
ঢুকে পড়ে
ঘরে
তাতেই তো ঘরখানা নড়ে
দুই.
আমার এমন বসবাস
ঘরে ফিরে দেখি–
বিছানায় পড়ে আছে
প্রজাপতির লাশ
প্রজাপতিটি নবম শ্রেণিতে পড়ত
আমার বিশ্বাস।
প্রথম পর্ব প্রকাশের পর অনেক তর্ক-বির্তক, আলোচনা সমালোচনার উদ্রেক হয়। অনেকে তার নাম অন্তর্ভুক্ত না থাকায় আপত্তি জানায়। আমরা শুরুতেই স্বীকার করেছি আমাদের সীমাবদ্ধতার কথা। সারাদেশে অসংখ্য কবি থাকায় আন্দোলনে সম্পৃক্ত অনেকে ছিলেন আমাদের দৃষ্টিসীমার বাইরে। স্বভাবতই বাদ পড়েছেন অনেকেই। অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ায় সহযোগিতা চেয়ে পোস্ট দিই। কবিদের পক্ষ থেকে তেমন সহযোগিতা পাইনি। তবে অনেক নামের প্রস্তাব এসেছে। সেসব নাম যাছাই করতে গিয়ে নানা রকম অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কোন লেখালেখি নাই। ৫ আগস্টের পর কবিতার খাতা খুলেছেন। আমরা চেষ্টা করেছি এদের এড়িয়ে যেতে। অনেকে ছিলেন তার আইডিতে আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। কবিতা না লেখলেও বিপ্লব ধারণ করেছিলেন। তাদের কবিতা না থাকলেও আমরা তাদেরকে আন্দোলনের পক্ষের কবি বলে সম্মান করি। এই নামগুলো অন্তর্ভুক্ত করতে কারও কারও আইডি ঘাঁটাঘাঁটি করা বিরক্তকরই ছিল। তবু ঘাঁটতে হয়েছে। এই লেখাটি আশা করি বই আকারে প্রকাশ হবে। তখন আরও তথ্য আসলে সেগুলো আমরা অন্তর্ভুক্ত করে নিব। অজ্ঞাতে যে সকল কবিগণ রয়ে গেছেন,তারাও অন্য কারও লেখায় সামনে চলে আসুক এই প্রত্যাশা আমার। কবিদের নিয়ে এই লেখাটি এখানেই শেষ করছি।
কবি তাজ ইসলাম এবং সম্পাদক সাজ্জাদ বিপ্লবকে এবং সকল কবি এবং লেখক সমাজকে রক্তিম শুভেচ্ছা, প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকার যে অসম সাহস তেজদীপ্ত লড়াকু মেজাজ কবি ও লেখক সমাজ দেখিয়েছেন তা সত্যিই অনন্য। সময়ের প্রযোজনে কবিরা এভাবে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের মশাল জ্বালিয়ে রাখেন। জয় হোক, কবিতার, জয় হোক মুক্তিকামী মানুষের।
খুব সুন্দর আলোচনা।
প্রতিটা পর্বই তথ্যবহুল ও সমৃদ্ধ।
লেখক ও প্রকাশ উভয়ের জন্য রইলো অসংখ্য শুভকামনা।