দীপালি মাইতি
………
মা
………
সকালের চা টেবিলেই গলায় আটকে গেল
শ্বাস থেমে গেলে এমন হয়, না কি কেউ আমার কথা ভাবছে, কাশতে কাশতে দু’চোখে জল।
মা এখন সত্তর
কতবার বলেছি, ফুকলোলে আর ফু দিও না কাশিটা বাড়বে, তোমার হাঁপানি আছে,
হাড় কাঁপানো শীতে, তেমন কোনো শীত বস্ত্র নেই, পায়ে মোজাও
খাটিমুটি আগুন জ্বেলে শীত তাড়াও।
কতবার বলেছি, রোদ হাঁক দিয়ে উঠলে বিছানা ছেড়ো, পৃথিবীতে কেমন বয়স বাড়লে একা হয়ে যায়, কত অসহায় ছেঁড়া কম্বল মুড়িতে বাঁচতে হয়, পাটালি আর মুলো খেতে ভালোবাসে, তারও উপায় নেই, শরীরে মারণব্যাধি।
কত বাচাঁর ইচ্ছে, নাতবৌ দেখে যাবে,
পুকুরে মাছ বাড়বে, ঢিব ঢিপ তাল পড়বে, কালো গাইটা বাচ্চা দেবে, চৌদালাই চড়ে যাবে প্রস্থান পথে।
আশায় আশায় শরীরে বাসা বাঁধছে নীলবিষ
……….
আশ্রয়
………..
পদ্মা-তীর
অসংখ্য মানুষের ভীড়
মনখারাপ জলের নির্বাক নিশ্বাসের
শব্দ শুনি
শিশুদের আর্তনাদও
অস্থির মন চায়
সাতরঙা আশ্রয়
মায়ের কোলে শিশুর মতো
…………..
দাঁড়িয়ে আছি
……………
চারদিকে নানান শব্দ
রাস্তায় বুড়ো মানুষের কাশি
আমার বাবার মতো
হাঁক দিয়ে যায়
কত কি
মন যেন রশ্মি-টানাটানি
আকাশ -বাতাস-মাটি
আর আমি
আনমনে দাঁড়িয়ে আছি
………..
সকাল
………..
বসে আছি চা টেবিলে
জানালা দিয়ে হাঁক দেয় শীত
লালপথ, কচর কচর গরুর গাড়ির চাকা
কৃষককের বাঁকে পৌষের ধান
পাতায় পাতায় দুলে উঠছে মন
মাড়াধানের মাঠে পাখিদের পিকনিক
দূরে পাল্কিতে যাচ্ছে দুলেদের বউ
জানালা দিয়ে শীত নিউজ
ছুঁয়ে যায় সকাল
…………
এলোমেলো
………….
আজকাল
মন চায় না পড়তে
জোছনা-জানালায় উঁকি
দিয়ে দেখি
ভাঙা ভাঙা বলাকার সারি
ফুলের টবে নানা রঙের ফুল
গানে ছন্দে কথা নেই
পাখিদের ঠিকানা নেই
আমি কবিতা লিখতে লিখতে
গান ধরেছি