আমান আবদুহু
বত্রিশ নাম্বার ছিলো বাংলাদেশের চোরদের মনের অবচেতনে উৎসাহদাতা প্রতীক। বাংলাদেশে যে সর্বগ্রাসী ক্ল্যাপটোম্যানিয়া প্রচলিত, চুরিচামারি দুর্নীতির নর্মালাইজেশন এদেশে যেভাবে রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে, বাটপারদেরকে এই দেশে যেভাবে সফলতার চিহ্ন হিসেবে বিবেচনা করা হয়, বত্রিশ নাম্বার সেই সমাজের গোড়ার দিকের বিষয়। চৌর্য্যবৃত্তির বাংলাদেশী সংস্কৃতির পত্তনের সাথে জড়িত একটা স্থাপনা।
টুঙ্গিপাড়ার লতু পেশকারের পুত্র, পড়ালেখায় ফেউল্যা মজু কি এমন আলাদীনের প্রদীপ পেয়েছিলো যে সে ঢাকায় এসে ধানমন্ডিতে বাড়ি বানানোর আর্থিক সামর্থ্য অর্জন করেছিলো? এই একটা প্রশ্নই যথেষ্ট পুরা বিষয়টা বুঝতে। মজুর আদর্শ বাস্তবায়ন করে এবং মজু চোরের দেখানো পথে হেঁটেই পরবর্তীতে বাংলাদেশের ৯৯.৯৯% রাজনীতিবিদরা, যেখানে হালের রুমিন ফারহানা বা বিকাশ নুরু পর্যন্ত ইনক্লুডেড, এরা বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা বানিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ এই চোরদের রাজনীতিকে মেনে নিতে বাধ্য হয়ে গোলাম হয়ে গেছে। এই রাজনীতিতে বত্রিশ নাম্বার ছিলো আলীবাবা শেখ মুজিব এবং পলিটিশিয়ান চোরদের আদিম জন্মস্থান। যত চোরের জন্ম হয়েছে এই দেশের রাজনীতিতে, বত্রিশ নাম্বার তাদেরকে উৎসাহ যোগাতো। অথচ মজিব চোরা অথবা তার অনুসারী রাজনীতিবিদ চোরাদের সাথে সিদ্দিক চোরার কাজের পার্থক্য কি আসলে? বরং সিদ্দিক চোরা মানুষ হিসেবে ভালো। সে লাজুক হাসি হেসে ভুল স্বীকার করে। মজিব চোরায় তো সংসদে দাঁড়িয়ে লাল ঘোড়া দাবড়ে দেয়ার হুংকার দিতো। তার অনুসারীরা খেলা হবে চিৎকার দিতো। নানা খিস্তিখেউড়, কমেডি আর গান নাটক এইসব করতো।
মুজিব যেহেতু আপাদমস্তক একটা চোর ছিলো, তার সন্তান মজিবচোরেরা চৌর্যবৃত্তিকে এই দেশে স্বাভাবিক কাজ বানিয়ে নিয়েছে। সেই চোরের স্মৃতি আজ আর নাই। পাবলিকে একদম সমান করে দিয়েছে। সুতরাং এই ঘটনা আশা জোগায়, এভাবে হয়তো কোনদিন বাংলাদেশও সুস্থ এবং সৎ, স্বাভাবিক মানুষদের বাসযোগ্য একটা দেশ হয়ে উঠলেও উঠতে পারে। হয়তো বা। ডাইনি চুন্নি লেডি ফেরাউন হাসিনার পালানোর পর থেকে এখন আরো দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি দুনিয়াতে অসম্ভব বলে কিছু নাই। বাংলাদেশী রাজনীতিবিদদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে তাদের বাপদের অপরাধের জন্য ভালো মূল্য চুকাতে হবে ইনশাআল্লাহ। এই হারামখোরদের শরীরের প্রতিটা কোষ, শ্বেতকণিকা আর লোহিতকণিকা পর্যন্ত সাধারণ মানুষের টাকা চুরি করে খাওয়া খাবারে তৈরি। মানুষের হক্ব মেরে খাওয়া, তিপ্পান্ন বছর বয়সী একটা দেশের এবং কোটি কোটি মানুষের সমস্ত সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়া এই অভিশপ্ত প্রজাতিকে আমরা কেয়ামতের ময়দানেও জিল্লতির চুড়ান্ত সীমায় অধপতিত দেখতে চাই।
সুতরাং চুরিচামারির এইসব প্রতীক ধ্বংস করা বাংলাদেশের জন্য শুভ কাজ। উত্তম ভবিষ্যতের জন্য একটা সম্ভাবনাময় ঘটনা।