spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদপ্রবন্ধজুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিপ্লবী ছড়া ও ছড়াকার প্রসঙ্গ

লিখেছেন : তাজ ইসলাম

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বিপ্লবী ছড়া ও ছড়াকার প্রসঙ্গ


তাজ ইসলাম

ছড়াকারদের নিয়ে কথা বলার পূর্বে কবিদের নিয়ে কথা বলেছি ।
গণঅভ্যুত্থানে কবিদের নিয়ে একটা দীর্ঘ লেখা জনসমক্ষে পেশ করেছি। সাহিত্য মান, প্রবন্ধের শর্ত পূরণের চেয়ে তথ্যের সংযুক্তি, সময়ের স্বাক্ষ্য হিসেবে কবির অবস্থান, আন্দোলনে কবির তৎপরতার উপস্থিতির সত্যতা জানান দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য। ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা,বিকৃতির পথ রূদ্ধ করাই এই চেষ্টার উদ্দেশ্য। একজন কবি আন্দোলনে কাজ করেছেন কবিতা দিয়ে। কবিতায় প্রতিবাদ করেছেন। আন্দোলনকে সাপোর্ট করেছেন, আন্দোলনকারীদের উৎসাহ দিয়েছেন। আবার একই ব্যক্তি পোস্টের মাধ্যমেও সমর্থন জুগিয়েছেন। রাজপথেও থেকেছেন। আমরা তাদের নাম উচ্চারণ করতে চেষ্টা করেছি। এই উচ্চারণ করতে গিয়ে অনেকেই বাদ পড়েছেন। জানা নামও বাদ পড়েছে। অনেকের কর্মকাণ্ড আমাদের জানাশোনার পরিধির বাইরে থাকায় বাদ পড়েছেন। এই অপূর্ণতার জন্য কাজে এগিয়ে আসতে হবে অন্য কাউকে। অন্য কেউ নিজের জানাশোনাজনদের নিয়ে লিখতে পারেন। সহযোগিতা পেলে আমরাও ভিন্ন পর্বে সম্পূরক আরেকটি লেখা পেশ করতে পারি। আমরা তা পূর্বেই বলেছি।

পূর্বের পর্বে আমরা কেবল কবি ও কবিতা নিয়ে কথা বলেছি। ছড়াকারদের কথা কাজ নিয়ে কথা বলিনি। না বলার মাঝেও কোন কোন ছড়াকার আলোচনায় এসেছেন। বস্তুত আমরা ছড়াকারদের পরিকল্পিতভাবেই এই আলোচনায় আনিনি। তাদের নিয়ে যথাসাধ্য পৃথক একটি আলোচনার উদ্দেশ্য শুরু থেকেই।

এই আন্দোলনে সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, কবি, ছড়াকার সবার অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করার মতো। প্রতিটি পেশা বা শ্রেণীর আলোচনা আলাদা হওয়াই কাম্য।

ছড়া চব্বিশের আন্দোলনে বেগবান অনুসঙ্গ। ছড়া উচ্চারিত হয়েছে মুখে মুখে। ছড়া উচ্চারিত হয়েছে স্লোগানে, ছড়া উৎকীর্ণ হয়েছে দেওয়ালে-দেওয়ালে। কতক ছড়া এতটা ব্যাপকতা অর্জন করেছে যে তা ছড়াকারের নাম ছাপিয়ে স্লোগানে-স্লোগানে লোক ছড়ার আসনে পৌছে গেছে। স্লোগানের অনেক ছড়ার রচয়িতা অজানা গণমুখের কেউ । ‘ হাসিনার গদিতে, আগুন দে একসাথে’। কে তার রচয়িতা কেউ জানে না। এমন বহু বহু স্লোগান মিছিলে উচ্চারিত হয়েছে। প্রয়োজনেই ছড়া নির্মিত হয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে।

জুলাই আগস্টে পরিচিত, অপরিচিত শত ছড়াকার আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। তারা ছড়া লিখে, ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে, বিভিন্ন ওয়েবজিনে প্রচার করে সাহসের পরিচয় দিয়েছেন। তারা গণ জোয়ারে একাত্ম হয়ে গিয়েছিলেন। তখন, মানে জালিম হাসিনার রক্তচক্ষুর সামনে ছড়া লেখা, স্লোগান দেওয়া, পোস্টে প্রতিবাদ করা সবই ছিল প্রাণঘাতী। তারা দেশের পক্ষে, সত্যের পক্ষে অকতোভয় হয়ে ছিলেন। যার যার অবস্থানে থেকে তুমুল লড়ে গেছেন।
কবিদের আলোচনায় কেন ছড়াকারদের একত্র করিনি? কারণ ছড়া এখন সাহিত্যের একেবারেই স্বতন্ত্র একটি শাখা। ছড়া কবিতা কিনা এই প্রশ্নের সমাধান দেওয়া, কিংবা এই বিষয়ে আলোচনা করাও আমাদের আলোচ্য বিষয় নয়। ছড়া পৃথক ও স্বতন্ত্র শাখা। সাহিত্যের নিজস্বতায় স্থায়ী হয়ে আছে ছড়া শাখা।

আন্দোলনে ছড়া ও ছড়াকারদের আছে গৌরবজনক অংশগ্রহণ। কবি, কবিতা; ছড়া, ছড়াকার এখন বিভাজিত। ছড়া ও কবিতার মাঝখানে শক্ত দেওয়াল। তাই আমরা কবিদের সাথে ছড়াকারদের, ছড়াকারদের সাথে কবিদের গুলিয়ে ফেলাকে অপছন্দ করি। তাই আন্দোলনে তাদের অবদানকেও পৃথক গোত্রে, আলাদা পর্বে রাখার সিদ্ধান্ত নিই। কবিদের পর্বে কোন কোন ছড়াকারের নাম আবেগে উচ্চারিত হয়েছে।
এই পর্বে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছড়াকারদের অতি সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব। এটি একটি চাবির মতো। একজন ছড়াকারের ছড়া বিশ্লেষণ কিংবা সমগ্র কর্ম ব্যাখ্যার পর্ব নহে। মূলত জানিয়ে দেওয়া ও যুক্ত করে রাখা যে তিনি আন্দোলনের পক্ষের জনশক্তি। তার কাজ ছিল আন্দোলনের পক্ষে ছড়া লেখা, আন্দোলনের পক্ষে থাকা, সশরীরে ছিল কিনা তা উল্লেখ করা। এই সূত্রধরে কেউ বা পরবর্তীতে কারও পক্ষে সহজ হবে উল্লেখিত জন কতগুলো ছড়া লিখেছিলেন, বা কি কি ছিল তার অবদান।
কবিও ছড়া লেখেন, ছড়াকারও কবিতা লেখেন।বিতর্ক করলে তার শেষ নাই।
এই আলোচনা যখন লিখছি তখন স্মৃতির পর্দায় দোল খাচ্ছে অতীত। অতীত বলছে লেখকদের মধ্যে একদল ছিল আগাগোড়া ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিস্টের দোসর। একদল ছিল ফ্যাসিস্টের সাথে মিলেমিশে চলছে। শেষ পর্যন্ত তারা সরে আসছে। একদল লেখক বিগত পনের বছর ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে করেছে দ্রোহ। কেউ কেউ সারাবছর নিরাপদ বলয়ে ছিল। কেউ অন্তত শেষ দিকে এসেও দ্রোহ করেছে। আমরা ব্যক্তিগতভাবে চিহ্নিত করণে নামছি না। আমরা দেখব তার দ্রোহের অবস্থাটুকু। এই দেখার পরিধি আমাদের খুব সীমিত। দেশে শত শত লেখক। সবার খবর আমাদের দৃষ্টির সীমানায় নেই। কাজেই আমরা যতটুকু জানি, ততটুকু কাজ করে যাব। তাই বলে
আমাদের সীমানার ভিতরই বিচরণ করব এমন না, আমরা সীমানা দেওয়াল ডিঙ্গিয়ে যাব আপনাদের সহযোগিতায়। লেখা চলতে পারে পর্ব ভিত্তিক। প্রথম পর্যায়ে আমাদের জানাশোনা পরিধিকে লেখায় নিয়ে আসব। পর্যায়ক্রমে তথ্য আসতে থাকলে পর্বের বিস্তৃতিও বৃদ্ধি পাবে।

………….
জুলফিকার শাহাদাৎ

ছড়াকার।

তিনি জুলাই আন্দোলনের পূর্ব থেকেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সরব কণ্ঠ। অসংখ্য ছড়া লিখেছেন সময়ে সময়ে। তিনি লিখেন, “মুগ্ধ সাঈদ ডাকে আমায়, আমিও তাদের দলে/ আমি জেগে আছি লাল পতাকায়, মৃত্যুর অঞ্চলে।(বাংলাদেশের পতাকায়)। ১ আগস্ট।

………..
মিজানুর রহমান শামীম

ছড়াকার।

১৭ জুলাই লেখেন ‘কোটা নয় ‘ ছড়া।

‘ ছুরি কাঁচি টোটা নয়
পুলিশের তাড়া খেয়ে
জান নিয়ে ছোটা নয়
…..
দাম চাই মেধাবীর
আর কোন কোটা নয়।

এই কোটা আন্দোলনই শেষ পর্যন্ত রূপ নেয় হাসিনা পতন আন্দোলনে।

…………
জগলুল হায়দার

তার কথা আমরা পূর্বেই বলেছি। প্রবাসে আছেন।প্রায় প্রতিদিনই লিখতেন সময়োপযোগী ছড়া। তার ছড়া গান হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

………
আতিক হেলাল

ছড়াকার।

তিনি সব সময় প্রতিবাদী। আওয়ামী রেজিমে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তিনি আন্দোলনের তথ্য, প্রতি মূহুর্তে আপডেট দিয়ে আন্দোলনে একাত্ম ছিলেন। ছড়া লিখেছেন ছাত্র জনতার পক্ষে। তার ছড়ার ভাষা ‘ আমি আছি এই বাছাদের সাথে,/ শুনবো না এটা ওটা।( বৃথা যাবে না)।

………..
মামুন সরওয়ার

ছড়াকার ও প্রকাশক।

কোটা আন্দোলন দমন করতে সরকার নির্মম হত্যাকাণ্ড চালায় দেশব্যাপী।
দেশ যুদ্ধাবস্থায় রূপ নেয়। তখন সরকারের নিপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে দেশের জনগণ। কেবল আওয়ামীলীগ ছাড়া আর সবাই বিরোধিতা করে হাসিনার জুলুমের। মামুন সরওয়ার ২ আগস্ট নেমে আসেন রাজপথে। বিক্ষুব্ধ কবি লেখকদের ব্যানারে অবস্থান নেন রাজপথে । পরবর্তীতে তাকে প্রায় সময় দেখা যায় প্রতিবাদ, বিক্ষোভে মিছিলের অগ্রভাগে।

ছড়া থাকে আন্দোলনে স্লোগানে, মিছিলে, গ্রাফিতিতে। চব্বিশের জুলাই বিপ্লবেও ছড়া ছিল জন মানুষের মুখের ভাষা। প্রতিবাদের ভাষা। তরুণ ছড়াকাররা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল জানবাজি রেখে। আওয়ামী গুণ্ডাদের হুমকি, ধমকি, জেল, জুলুমের ভয়কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা রাজপথে, সোশ্যাল মিডিয়া, লেখালেখির মাধ্যমে জুলাইয়ে হয়ে উঠেছিলেন একেকজন মানবিক যোদ্ধা।
তাদের লেখালেখিতে ক্ষুব্ধ হয়েছে ফ্যাসিবাদী লেখক গোষ্ঠী। সারাদেশে শত শত ছড়াকার এ আন্দোলনে ছড়াযোদ্ধা। আমরা জানি বা চিনি তাদের অল্প ক’ জনকে।

সেসময় কিছু নাম ফেসবুকে গেলেই উজ্জ্বল হয়ে ভাসত। তাদের মাঝে–
জিসান মেহবুব,
সালমান হাবিব,
আলাউদ্দিন আদর,
মাহমুদ মেঘ,
আমিনুল ইসলাম হুসাইনী,
রাকিবুল এহছান মিনার,
মঈন মুসতাকিম,
পথিক ইদ্রিস,
রিতা ফারিয়া রিচি,
স্বরেআ কাদির, অন্যতম। এমন নাম জানা না জানা অসংখ্য ছড়াকারের শব্দে ছিল দ্রোহের আগুন।সবার ছড়াই উল্লেখ করার মতো। উল্লেখ করতে না পারা একান্ত আমার অক্ষমতা।

…………
তোরাব আল হাবীব

ছড়াকার।

তার দীর্ঘ ছড়ার অংশ এখানে উদ্ধৃতি দিচ্ছি।
.
‘শীসার মতো ঐক্য নিয়ে এগিয়ে যাব লক্ষ্যে
স্বৈরাচারের বুলেট-বোমা যতই আসুক বক্ষে। (বিজয় নিয়ে ফিরবো)’।
.২০ জুলাই
কনভয় , ডোনেগাল।

……….
মুহিব্বুল্লাহ ফুয়াদ

ছড়াকার।

তার ফেসবুক পোস্টটিও সেসময়ের একটি দলিল।

‘গতকাল থেকে ফেসবুকে ঢুকতে পারছি না। সব সফটওয়্যার ইউজ করা যাচ্ছে। শুধুমাত্র ফেসবুক ছাড়া।

আজ বিকেলে VPN চালু করেছি।
এই নিন! পড়ে দেখুন। সময়ের একটা বুলেট ছড়া।

এবার দাঁড়া ঘুরে
থাকিস নে আর বদ্ধ ঘরে
খুল রে ভয়ের তালা
স্বৈরাচারীর তক্ত ভেঙে
জয়ের মশাল জ্বালা’
(সংক্ষেপিত)
৯:০৫পিএম
১৭/৭/২৪ইং
কেরানীগঞ্জ ঢাকা।

মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম
তিনি সাহিত্যিক,ইতিহাস গবেষক। আন্দোলনে সংক্ষেপে মনের কথা প্রকাশ করতে গ্রহণ করেন ছড়া মাধ্যম। লিখেন,
‘ছড়া’

‘স্বৈরাচার
রাজ আকার
দেখ আকার
এক আকার
১৫ জুলাই’।

আরিফ বখতিয়ার,
আসাদ জোবায়ের,
আহমাদ স্বাধীন,
খন্দকার জাহাঙ্গীর হুসাইন,
সাইফুর রহমান লিটন,
শফিকুর রহমান সবুজ,
মুস্তাফা ইসলাহী,
নূরুজ্জামান শাহ্,
আব্দুস সামাদ আজিজ,
আমিনুল ইসলাম মামুন,
আসাদ সরকার,
মাহফুজ ইকরাম,
আমজাদ বিন মেহের,
শেখ মুহাম্মদ সোহেল রানা,
মোল্লা আলী আছগার,
রাসেল খান,
রুবেল মিয়া,
আবদুল্লাহ আল খায়ের,
ইমতিয়াজ ইফতি প্রমুখ ছড়াকারগণ জুলাই জুড়ে ছিলেন শব্দাস্ত্রের লড়াকু যোদ্ধা। ছড়া, স্ট্যাটাস, প্রতিবাদ, বিবৃতি, ঘটনার বর্ণনায় সবসময় ছিলেন সরব।

……….
নুরুজ্জামান ফিরোজ

ছড়াকার।

তিনি শুধু লেখালেখিতেই আবদ্ধ রাখেননি নিজেকে। সংবাদ সংগ্রহ, মিছিল, মিটিং, স্লোগানে রাজপথে দিয়েছেন নেতৃত্ব।

আরমান জিহাদ,
আকরাম সাবিত,
কিরমানী লিটন,
কুতুব রাহমান,
আবদুল হাই ইদ্রিছী,
নোমান শায়েরী,
জাহিদ মাহবুর,
জয়নব জোনাকি,
ছা‌দির হুসাইন,
কামরুজ্জামান দিশারি,
খায়রুল আলম রাজু,
বাসু‌দেব সরকার,
আশীষ বা‌ড়ৈ,
বিধান চন্দ্র দেবনাথ,বিপ্লবী
ছড়াকার হিসেবে এসব নাম অপরিহার্য।
জুলাই আন্দোলন, বিপ্লব বা অভ্যুত্থান যে নামেই ডাকুন, ভবিষ্যৎ ইতিহাসে আন্দোলনে ছড়াকারদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করতে হলে অপরিহার্যভাবেই চলে আসবে এসব নাম।

…………..
খান কাওসার কবীর

ছড়াকার।

ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে তিনি সব সময় ছিলেন সোচ্চার। প্রচুর ছড়া লিখেছেন। রাজপথেও ছিলেন সশরীরে।

শাহনেওয়াজ তাবিব
ছড়াকার ও কণ্ঠশিল্পী।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব ছিলেন। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে রাজপথে আহত হয়েছেন।

ওয়াজ কুরুনী সিদ্দিকী
তরুণ ছড়াকার।
তুমুলভাবে সক্রিয় ছিলেন আন্দোলনে।

সুমন রায়হান
ছড়াকার ও সংগঠক।

জুলাইয়ে ছিলেন রাজপথে। ছড়ায় প্রতিবাদ জারি রেখেছেন। প্রতিরোধে ছিলেন রাজপথে।

অভ্যুত্থানে কারও অবদানকেই খাটো করে দেখার সুযোগ নাই। ৫ আগস্ট হাসিনার পতন না হলে, পলায়ন না করলে একটি পোস্টের জন্যও জীবন ঝুঁকিতে পড়ত। বহুদিনের পরিচিত বন্ধুর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে লেখালেখির কারণে। গণঅভ্যুত্থানে আন্দোলনের পক্ষে ছিল মানবতাবাদী, গণতন্ত্রকামী সর্বস্তরের জনতা।বিপক্ষে ছিল ফ্যাসিস্ট ও তার দোসরেরা।লেখকেরা হন সাধারণত নরম অনুভূতির মানুষ।ফ্যাসিস্টের দোসর লেখকেরা ফ্যাসিস্টের মতোই পাষাণ ও অসভ্য। শিশু, বৃদ্ধ, ছাত্র জনতার রক্তপাতে তাদের মনকে ব্যথাতুর করেনি। উপরন্তু প্রতিবাদী লেখকদের করেছে কটাক্ষ। হুমকি ধামকি, আনফ্রেন্ড, ব্লক করেছে মুক্তিকামী লেখকদের। তালিকা করে পৌছে দিয়েছে বিশেষ বাহিনীর দফতরে। তাই ছড়াকারদের অংশগ্রহণ, ছড়া লেখাকে অগুরুত্বপূর্ণ ভাবার কোন সুযোগ নাই। আন্দোলনের পক্ষে কারা ছিল এই তালিকাটা ৫ আগস্ট পর পর করা প্রয়োজন ছিল। ব্যক্তি হিসেবে আমার সীমাবদ্ধতা আছে। তবু যতটুকু স্মৃতি ও সাধ্যে কুলিয়েছে গ্রন্থিত করেছি। সারাদেশে সচেতন কিছু মানুষ এগিয়ে আসলে বাদ পড়া অন্যরাও গ্রন্থিত হয়ে যাবে। ছড়াকারদের কাছে তথ্য প্রদানের আহবান জানিয়ে ছিলাম। আশানুরূপ সাড়া পাইনি।পরবর্তীতে আরও তথ্য পেলে এই লেখার আয়তন বৃদ্ধি পাবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী লেখক, ছড়াকার যেমন আছে ফ্যাসিবাদী লেখকও প্রচুর ছিল। বিগত পনের বছর ফ্যাসিস্ট দুঃশাসনের পা চাটা লেখক নামের অমানুষগুলো এখনও তাদের ঘৃণ্য মানসিকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে যাচ্ছে। এদেরও কুষ্ঠী লিপিবদ্ধ করে রাখা সময়ের দাবী। সময়ের কাজ সময়েই করে রাখতে হয়। নতুবা অসময়ে পস্তাতে হয়।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

সাদ আব্দুল ওয়ালী on ৩টি কবিতা
নয়ন আহমেদ on ৩টি কবিতা
নয়ন আহমেদ on ৩টি কবিতা
সাদ আব্দুল ওয়ালী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
সাদ আব্দুল ওয়ালী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
রাবেয়া আখুঞ্জী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
সাদ আব্দুল ওয়ালী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
সাদ আব্দুল ওয়ালী on লজ্জাবতী ও অন্যান্য কবিতা
শামসুল হক এস এইচ নীর on নাকাবা কিংবা বিপর্যয়ের দিনগুলো