মজিদ মাহমুদ
বিগত স্বৈরশাসন আমলে লেখক হিসাবে মুসলিম ঐতিহ্যের অন্যতম লেখক ছিলেন সোহেল হাসান গালিব। আওয়ামী বয়ানের পক্ষেও তাঁকে কখনো দেখা যায়নি। ’আমার খুতবাগুলি’ এবং ‘বাদ মাগরিব’ বই রচনার মাধ্যমে একই সঙ্গে তিনি সাহিত্যে মুসলিম বিষয়গুলো জারি রাখতে চেয়েছেন, আবার সমাজের নানা অসঙ্গতিগুলোর প্রতিও কটাক্ষ করেছেন। শুক্রবারে জুমার নামাজে গিয়ে ছবি পোস্ট করা, কোরবানির পশু কিনে ছবি পোস্ট করা– এসবও ছিল সমকালীন পশ্চিমা সেক্যুলারিজমের প্রতি তার ভ্রূকূটি। তাঁকে বহুবার দেখেছি মহানবী(স.)’র জীবনী নিয়ে, হাদিসের মর্মবাণী নিয়ে কবিতা লিখতে, এবং এসবের মধ্যে ছিল নবীজীর প্রতি তার অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা। আমার বিশ্বাস নবীজীর কালে এ ধারার কবিরা তাঁর প্রশংসা পেয়েছিলেন। কিন্তু এ সময়ে এসে সোহেল হাসান গালিবের পুরনো একটি দ্ব্যর্থবোধক কবিতা সামাজিক মিডিয়ায় নতুন করে প্রকাশিত হয়– যার দুএকটি শব্দ অবধানবশত শ্লীল নয় বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এটি তার দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছন। তারপরেও সোহেল হাসান গালিব নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মহানবীর সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে অবিশ্বাসী কবিগণ সারাজীবন কবিতা রচনার পরেও তাঁর ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হননি। অথচ আমরা যাঁরা তাঁর অনুসারী বলে দাবি করি তারা বিষয়টিকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখতে পারছি না– এটি ইসলামের সৌন্দর্য ও মহত্বের পরিপন্থী। এ দেশের একজন লেখক হিসাবে কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর প্রতি সদয় আচরণ এবং মুক্ত-স্বাধীন লেখক জীবনে সহায়তা করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। মধ্যযুগের মির্জা গালিব, মির, খৈয়াম, হাফিজ, রুমি– তারা আজ মুসলিম বিশ্বের গর্বিত কবি– তাঁরাও কবিতা রচনার জন্য তাদের কালে নিগৃহীত হয়েছেন; এটি খুব সাময়িক বিষয়।