তাজ ইসলাম
প্রথম কথা হল সোহেল হাসান গালিবের মুক্তি চাই। তিনি ভুল স্বীকার করেছেন। আমার মতে তারপর বিষয়টি এখানেই শেষ হলেই ভালো হত।
তারপর কয়েকটা কথা বলি
ক।
১.
তার কবিতাটি পুরাণ ঢাকাইয়া ভাষার টোনে রচিত। তাদের মুখের ভাষা ও কথ্য প্রচলনে শ্ল্যাং আছে। কিন্তু কবিতায় ‘ঠাপানো’ শব্দটি অতিরিক্ত সংযোজন। এটি তার বিদ্বেষ প্রসূত নয়,শব্দ চয়নের অসতর্কতা।
সোহেল হাসান গালিবের পূর্বাপর অবস্থানে ধর্ম বিদ্বেষের নমুনা নাই। এটি তার ভুল চয়নই ধরে নিতে পারি। এটি ছিল শব্দ চয়নের ভুল।
২.
দ্বিতীয় যে ভুলটি গালিব করছেন তা হল উত্তপ্ত সময় কবিতাটি তিনি আবার তার টাইমলাইনে পোস্ট করেছেন। শতাব্দী ভবে’র কূটচালের সময় তৌহিদী জনতাকে কটাক্ষ করতে পুরোনো লেখাটি পুনরায় পোস্ট করেন।
৩.
এরপরেরটি তার ভুল না। সেটি কবির মত প্রকাশের স্বাধীনতা।
তিনি ‘তৌহিদী জনতা’ বলে একটা পক্ষকে চিহ্নিত করতে চেষ্টা করেছেন। যারা বাস্তবে ইসলামের নিষ্ঠাবান নন, কিন্তু প্রতিবাদে সরব। ময়লা টুপি দিয়ে তাদের পরিচিত করেছেন। একজন কবি বাস্তবতাকে তার কবিতায় তুলে ধরতেই পারেন।
খ।
এরপর কবি ও কবিতাটির প্রতিবাদে নেমেছেন দুটো পক্ষ দুটো ধারায়।
১.
তারা প্রতিবাদের নামে নিন্দা জানিয়েছেন। এটাও হতেই পারে। কেউ আহত হলে, ক্ষুব্ধ হলে নিন্দা জানাতেই পারে।
২.
তারা প্রতিবাদের নামে হুমকি দিয়েছেন, ফতোয়া জারি করেছেন। গ্রেফতার ও প্রাণনাশের উগ্রতা দেখিয়েছেন। এটা বাড়াবাড়ি, এদের বুদ্ধিসুদ্ধি বাড়াতে হবে। আচরণে সংযত হতে হবে।
গ।
১.
এইক্ষণে গালিব পড়েছেন বিপদে। হুমকির পর সুযোগ সন্ধানীরা অঘটন ঘটিয়ে দায় চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করতে পারতো।
অথবা মাথামোটা কোন একজন অঘটন ঘটিয়েও ফেলতে পারতো।
কাজেই কবির নিরাপত্তার জন্য হলেও তাকে হেফাজতে নেওয়া জরুরি ছিল। কোন রকম আক্রমণে পড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ হত।
ঘ।
১.
এই মূহুর্তে গালিবের পক্ষে দাঁড়িয়েছে কিছু মানুষ।তারা মানুষ গালিব, কবি গালবের পক্ষ নিয়েছেন।তারা মূলত কবি ও কবিতার মানুষ।
২.
আরেকটা পক্ষ গালিবের হয়ে কথা বলছেন। তারা মূলত গালিব ইস্যুটা আওয়ামীলীগের বাক্সে ক্যাশ করেছেন। তারা গালিবের পক্ষ নিয়ে সুযোগে ইসলাম, তৌহিদ, মুসলমান, মুসুল্লি, জুলাই, আন্দোলন সবকিছুকে একছের ধুইয়ে দিচ্ছেন।
সুতরাং সামনে বহুত হিসাব নিকাশের ভিতর দিয়ে সামনে যেতে হবে।
গালিব কবি, তিনি দেশ, জাতি, সমাজ, ধর্মের পক্ষের লোক। ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে সরব কবি।
আমরা অতি অবশ্যই তার মুক্তি চাই।