…………….
ইভের কান্না
আবু জাফর সিকদার
……………..
কুকুরের মতো লকলকে জিভে লালা ঝরিয়ে
দশদিকে ওঁত পেতে থাকে দ্বিপদী জানোয়ার।
ইভের মেয়েরা ঠিক মতো ঘুমাতে পারে না।
প্রতিটি গোলাপেরও থাকে একটি নিরাপত্তা ব্যাষ্টনী,
কাঁটাগুলো অতন্দ্র প্রহরীর মতো জেগে থাকে শিয়রে।
আছিয়া ইভের গর্ভফুলের অধস্তন ভ্রূণ।
নাড়িছেঁড়া ধন,অথচ নিরাপত্তাহীন।
অপক্ক তনুমনে বেঁচে থাকাই যেন এক ভুল।
আছিয়ার চামড়া-রক্ত-মাংস-যোনি-স্তন- রূপ-রঙ-গন্ধ সবই অপ্রাপ্তবয়স্ক।
পথের ধারে অবহেলায় বেড়ে ওঠা ভাঁটফুলের মতো,
ছিঁড়েকুড়ে চেনাজানা পথিকের মনসুখ, অযথাই ছুঁড়ে ফেলে অনাদরে।
অথবা তার চেয়েও ভয়ংকর কোন পিশাচ
দুমড়েমুচড়ে পাঁজরের হাড়কে বানায় শাহীকাবাব, চিবিয়ে খায় অস্থিমজ্জা।
আদমের রক্ত ও ঘামে জন্ম নেয়া অমানুষ,
কলঙ্ক তিলক কাবিলের কাম, রিপুর উত্তরাধিকার।
কান্না ভেজা ইভের চোখ কেবল বাকরুদ্ধ তাকিয়ে থাকে।
…
ঢাকার পথে
১৫ মার্চ ২০২৫
………….
আছিয়া, মানুষ বাগানের অবোধ কলি
তাজ ইসলাম
…………..
মানুষ বাগানে হাসছে ফুলের নিষ্পাপ কলি।
বাবা মা তার নাম রাখলেন আছিয়া।
আছিয়ার দিকে তেড়ে আসল আঁধার
ধেয়ে আসছিল জাহেলিয়াত।
আছিয়াকে গ্রাস করছে
বর্বর, আদিম, যৌন পশু।
আছিয়া
মানুষ বাগানের অবোধ কলি।
তাকে ছিঁড়ে কুরে খেল
পাশবিক পুরুষ পশু।
সভ্যতা ও সভ্য পুরুষের চোখ ও বিবেক দারুণ লজ্জিত।
নত চোখে তারা পাঠ করছে ক্ষমার তসবিহ
সভ্য বিবেক জোড় হাতে বলছে ক্ষমা করিস মা আছিয়া এই দেশ ও সমাজকে।
……………
আছিয়ার মতো আর
জিয়া হক
……………
তরতাজা ফুল ঝরে হায়েনার থাবাতে
বুক ফাটে কান্নায়, চিনচিন গা বাতে
মাথা ঘুরে পড়ে যাই— টগবগে রক্ত
মেজাজটা সপ্তমে, চুপ থাকা শক্ত।
হাত-পাও কেঁপে ওঠে, কেঁপে ওঠে আত্মা
চারোদিকে মাথাচাড়া খুনি প্রেতাত্মা
‘আগে ভালো আছিলাম’ হাসে দাঁত কেলিয়ে
দুধে-ভাতে বাঁচবার সাধ কত তেলিয়ে।
আমাদের কাছে কারো দল-মত ভাই নাই
সেঞ্চুরি মানিকের ইতিহাস গাই নাই
অপরাধী যেই হোক সাজা উপযুক্ত
চিরতরে ভেসে গেছে ফ্যাসিবাদি যুগ তো।
আছিয়ার অভিশাপে হিটু শেখ মরবেই
সততার আদালতে টনক তো লড়বেই
ছাড় নেই একতিল ধর্ষক হায়নার
কোনো অলিগলি নেই বাঁচবার বায়নার।
আজাদির বাংলায় আছিয়ার মতো আর
দানবের দংশনে না না হোক ক্ষত আর
নিরাপদ আশ্রয়ে মাতা বোন কন্যা—
ফুলের বিছানে থাক সকল অনন্যা।
১৬. ০৩. ২০২৫ খ্রি.
ডেমরা, ঢাকা।