………………
যে ভূস্বর্গ এখন ‘ভূতের স্বর্গ’!
(কাশ্মিরের পেহেলগাম হত্যাকান্ডে শোক-সন্তাপ)
সালেম সুলেরী
………………
কাশ্মিরের সুদৃশ্য পেহেলগাম–
তোমার নামটি রক্ত-অক্ষরে বদলালাম।
বধ্যভূমি নয়, মানুষের পৃথিবী দেখার সখ,
মধ্যবিত্তও হতে পারে ভ্রামণিক, হৃদচোখে পর্যটক।
কিন্তু নিরাপত্তার বলয়, বাহুবল নেই,
অথচ পর্যটনের দোকানের ঝাপ খোলে নিমিষেই।
স্মৃতিপটে দু’হাজার উনিশ– কাঁদছে এসে।
‘পুলওয়ামার হত্যাকান্ড’ কি হারালো নিরুদ্দেশে?
চল্লিশচৌকষ নিরাপত্তারক্ষী আত্মঘাতী বোমাঘাতে হত
তারপর হে শাসন– নিরাপত্তা কতোটা উন্নত?
এইতো গেলোবছর গৃহমন্ত্রী বললেন—
কাশ্মির এখন জঙ্গীমুক্ত,
পযর্টকেরা ভাবলো– আহারে ভ্রমণ, কী সুখ তো ।
গিয়েছে আমার বোন, নতুন জামাই, হানিমুন,
চারিধার পরিবার, শিশু ও প্রবীণ, অকুস্থলে খুন।
তিরিশ লাশের শ্বাসে সন্ত্রাসের জিজ্ঞাস্য আগুন।
বিচার পরের কথা, শোকের ঝোঝারা বেশ ভারী,
যাতক চাতক পাখি, হত্যার নির্মম অহংকারী।
শকুনি ডানারা ওড়ে, ছোবলের মৃতুঝড় তোড়ে
আজ বেদনামিছিল স্বদেশে-বিদেশে, মোড়ে মোড়ে।
কার্যত দাঙ্গার জন্যে রাঙালো বিষয়, রাজনীতি।
হে মানুষ, ধর্মের অধিক চাই ধর্মীয়-সম্প্রীতি।
আমার কলম কাঁদে, বারুদের শক্তি চাই,
আর কতো মৃত্যুনাশ, হে শহীদ– বেদনা পোড়াই।
সমূলে বিনাশ হোক শত্রুসব, আগা ও গোড়াই।
এপ্রিল ২০২৫
…………….
নিজের সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছি
তৈমুর খান
……………..
সময় শেষ হয়ে আসছে
চা খেতে বেরিয়ে নতুন চা-দোকানের দিকে যেতে যেতে
পাখি উড়ে গেল
এসময় বাতাস উঠল, সতর্ক বাতাস
গান গাইবার চেষ্টা করলাম,কিন্তু কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে এল
রাস্তায় দীর্ঘ ছায়া পড়েছে কার?
ছায়ার কাছে দাঁড়িয়ে নির্বাক হয়ে গেলাম
সূর্য যেতে যেতে একবার হাসল দৈব করুণায় ভেজা হাসি
………………
ধর্মের নামে অধর্ম
জাসমিনা খাতুন
………………
শ্মশান থেকে কুড়িয়ে আনি কোরআন
কবর থেকে খুঁড়ে আনি বেদ
দেখিনি এদের মধ্যে ভেদ।
কিন্তু যারা এদের পাঠিয়েছে কবরে বা শ্মশানে—
এরা ধার্মিক নয়, এরা সন্ত্রাসী
এদের মস্তিষ্কে শয়তানের মেদ।
এদের জন্যই ধর্ম আজ কলঙ্কিত
ভাইয়ে ভাইয়ে নির্যাতিত
এটাই মানযুক্ত মানুষের লজ্জার খেদ।
শয়তানিরা বারবার ধর্মের নামে অধর্ম চালায়
দেখায় বড় জেদ।
আল্লাহ বা ভগবান সবকিছু দেখে যান
কেবল খুলতে আসে না মানুষের বানানো বর্বরতার পুথি,
তাই তো বুঝি না মানুষ বড়, না মানবিকতা, নাকি ধর্ম।
শয়তান আর অসুরের দেবতা বা আল্লাহ নামে সকাল-সন্ধ্যা তবুও ধর্মের অজুহাতে মাথায় তুলে নাচি।
হায় ; আমরা কি সত্যিই …!মানুষ হয়ে বাঁচি …?
রামপুরহাট, বীরভূম, ভারত
২৪/০৪/২০২৫