মহ: মহসিন হাবিব
……..
তারারা হারিয়ে গেছে
……..
মহাকাশ আজ শূন্য থেকে শূন্যতর হয়ে যাচ্ছে
গ্রহ,উপগ্রহ এমনকি স্যাটেলাইটরাও ক্ষোভে ফেটে পড়েছে
ক্রমাগত বিষোদ্গার করছে ব্রহ্মান্ডের দেওয়ালে।
রাতের আকাশে শুধু তারারাই গা ঢাকা দিয়ে মিটমিট শব্দে সরীসৃপের দলে নাম লিখিয়ে নৈঃশব্দের স্তনে মুখ বুজে আছে।
বাতাসে উঠেছে কালবৈশাখীর রণডঙ্কা
এমন দিনে সমস্ত অভিকর্ষ বল ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে অবারিত ধারায়
সেই উইপোকার দল শুধু কবরের মাটিতেই বানাতে চায় স্মৃতিস্তম্ভ!
জলের দাগ মিলিয়ে গেলেও তৃষ্ণার্থ বুকে তা অমৃত সমান।
থাক ওরা সুখে থাক;
রাতের আকাশ অন্ধকারে ডুবে যাক
নেই তাতে ক্ষতি
শুধু বিশ্বাস হারিয়ে গেছে তারাদের প্রতি।
………….
টিউলিপের মৃত্যু
…………
মিঠে রোদ মাখা স্বর্গের বাগানেই আদম আর ইভরা চিরকাল গায় ভালোবাসার গান
নৈঃশব্দের গলি বেয়ে ধেয়ে আসে আজন্ম শত্রু, সেই শয়তান!
ধারালো নখ, দাঁত দিয়ে অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্তের হোলি উৎসবে; মেতে ওঠে পান্ডেমোনিয়ামে আর অপবিত্র করে…
স্বর্গের মাটিকে মাটিতে মেশাতে সময় লাগেনা।
নিশানটা নেহাতই তুচ্ছ!
নির্মল ঢেউ খেলা টিউলিপদের হাসিখুশিই প্রধান অন্তরায়
দাও তবে গলাটিপে সেই টিউলিপের মৃত্যুদণ্ড।
……………
জমানো খেলা
…………….
সব আবেগগুলো প্রমিথিউজই একটি পাত্রে রাখতে পারে
ভাবনারা ডানা মেলে শুধুই পাহাড়ের পাদদেশে আছাড় খায়
ওড়ার হাত, পা গুলো টান টান করে জাদুকরী প্যান্ডোরার বাক্সে বিচরণ করে
অনুভবের বাতাসে বাত পতাকা শুধু দিক বদল করে
পড়ন্ত বিকেলে খেলতে হবে সেই খেলাটা
জমে উঠবে তবেই খেলা
নচেৎ রাত্রির গাঢ় অন্ধকার আসবে একটু পরেই।
……………
আমি ঘোড়াওয়ালা হয়ে
…………….
লেখা পড়া শিখে কি পেলাম
ভুবন মাঝে জমানো বিদ্বেষ জাপটে ধরে
চোখ খুলেই দেখি ঘৃণার প্রাতরাশ হাজির আমার ডাইনিং টেবিলে।
সন্দেহরা ঘুরপাক খাচ্ছে আমার কর্মক্ষেত্রের চারপাশে
বিকেলের খেলার মাঠও হিংসা প্রতিহিংসার ঘাসে ঢাকা
সাবধানে পা না বাড়ালে মচকাবে পাঁজরের সাথে ভিতরের হৃদযন্ত্রটাও
খেলবোনা;পড়বোনা;কাজে যাবোনা
শুধুই ঘোড়ার পিঠে চাপিয়ে তোমাদের স্বপ্নের পাহাড় দেখিয়ে যাবো।
…………
বৈধব্যের মধুচন্দ্রিমা
…………
আলবামের পাতাগুলো ওল্টাই আর হারিয়ে যায় রঙিন টিউলিপের সাজানো বাগানে; শুরু আর শেষ লুকোচুরি খেলাটা খেলি পাইনের বনে।
নীল সাদা পাহাড়ের গা বেয়ে আদিল হুসেনের ঘোড়ায় চড়ার আনন্দটা
পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদ গায়ে মাখতে পহেলগাঁয়ের সবুজ উপত্যকা সেরা।
ভূস্বর্গের বুকে এক আকুল আর্তনাদ
নিশানার নিশান এঁকে দিলো
এক বিধবা রাতের মধুচন্দ্রিমা।
…………..
পাইন বনে অকাল বৃষ্টি
………….
পাহাড়ের পাদদেশে নীল সামিয়ানার নিচে ধাঁধানো সবুজ রিসর্টের রূপালী তস্তরিতে মেহমানদের জন্য সাজানো উপভোগ্য তুষারের রাজমুকুট।
টইটম্বুর বেহেশ্তের স্বাদ
বিলোতে কার্পণ্য নেই!
এখানে চাঁদের মধুও পানসে…
বৈসরণ উপত্যকার গর্বিত বুক কাঁপলো বারুদের গন্ধে
ফুটে উঠলো লাল নিশান জাহান্নামের আগুন ছবি বানাতে!
নির্বাক পাইন পরিবারে ঝরে শুধুই ঝমঝম বৃষ্টি।
…………….
শেষ চুম্বন
…………….
ছোট্ট টিউলিপ
কর্পূর মাখা কপালে
এঁকে দিলো শেষ চুম্বন!
টাট্টু ঘোড়ার খুরের শব্দে
নিশ্চিন্তে পাহাড়ের কোলে ঘুমায়
প্রতিবাদের প্রতীক!
সন্ত্রাসের নিশান মেটাতে
কেয়ামতের প্রহর গোনা শুরু
আপেল বাগানের পাশে।
কবি গোলাম রসুলের কবিতা এক নতুন মাত্রার, পড়ি ও অনুসরণ করি।