অনন্ত পৃথ্বীরাজ
১.
দুঃখ কুড়িয়ে খাই
হে কবি, কবিতা লিখো না আর !
বন্ধ্যা সময় এখন– ঊষর পৃথিবীতে
বেদনার চাষ করো ।
নীল খামে চিঠি আর আসবে না।
ভুলে যেয়ো রঙিন প্রচ্ছদ
সাদা-কালো প্যাকেটের ভাজে
দুঃখ কুড়িয়ে রেখো।
২.
বৃহস্পতিবার
নিজেকে হারিয়েছি কখন–
মাসকাবারি বিক্রিত সময়
গড়ের মাঠ শূন্য খাঁ খাঁ লাগে।
রিকশা হুড খোলা থাক
কামিজের ভেতর পার্ফিউমের ঘ্রাণ
মন চায় বৃহস্পতিবার আসুক।
৩.
ঘূর্ণি-বাতাস
পুরনো দিন খুঁজে ফিরি;
ভালোবাসা, জাত-কূল মানে না
ঘূর্ণি বাতাসে এলোমেলো দিন-তারিখ
হাতের রেখায় লেগে গেছে মেহেদির রঙ
সানাইয়ের সুর : ছারখার হলো বুকের পাজর।
৪.
হেমন্ত
শারদ প্রস্থানে জানান দেয় দূরাগত হিমকাল
কুয়াশা মেয়েরা ভোরের জানালায় কড়ানারে
ষড়ঋতু খেলায় হৈমন্তী গেয়ে যায় নবান্নের গান
কোমরের ভাঁজে লুকিয়ে রেখো ঠোঁট রাঙা পান
৫.
গ্যামোফবিয়া
বয়স তো বেশ হলো–
চাকরিটাও তো করছ ভালো
এবার তবে গাঁটছড়া বাঁধো–
মেয়ে দেখবো নাকি, বলো !
ছেলেটাকে খুব ইতোস্ত মনে হলো
কপোল লাল টুকটুকে হয়ে গেছে
রাজ্যের ভয় আর শঙ্কা ও চোখেমুখে
মনে হলো যেন পালালেই বাঁচে।
৬.
হলুদ ফুলের চাষ
কাকভেজা ঘাসের দেদ্যুলমান আনন্দ
ডাই পিঁপড়েদের মোলাকাত উবে যায়
সমুদ্রফেনিল উপতক্যায় উর্মিমেদুর খেলা
শিশিরের কোল জুড়ে বৃষ্টি নামে টুপটাপ।
জমিনে রবি শস্য হলুদফুলের চাষ দেয় কৃষাণ
সবুজ পাতার ডালে সরিষার ঘ্রাণ পেতে
মৌ, দলছুট ঈশান।
……………..
কবি পরিচিতি:
অনন্ত পৃথ্বীরাজ একজন কবি, কথাকার ও গবেষক। তিনি ১৯৮৭ সালের ৩০ শে অক্টোবর সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলাধীন চেংটিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সাংবাদিকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু হলেও বর্তমানে অধ্যাপনায় নিযুক্ত। ত্রৈমাসিক ‘পালকি’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ চারটি।
যোগাযোগ : ০১৭২৫৪১২১৮৬, ইমেল : anontoprithviraj@gmail.com