মাহবুব হাসান
মিথ
…….
আমি শকুন শব্দটিকে এমনভাবে বসালাম পঙক্তিতে যে
সে উড়তে থাকলো নিরবধিকাল!
কিংবা এমনও তো হতে পারে যে আমি তাকে
আমাদেরই ক্ষমতার শীর্ষে বসালাম।
জন্ম নিলো নতুন শ্যেনদৃষ্টি, সুশোভন ফাঁপা মানুষ,
তাদের হুঁশ কেবল বেহুঁশ বেহুলার মতো নৃত্যরত
ইন্দ্র- চত্তরে, বরে সিক্ত হবে বলে—-
তারপর
সে খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলো তার সহোদর গৃধ্নুকে।
সে একা একা বাস করছিলো হিমালয়-চূড়ায়,
নিঃসঙ্গ! মানুষ!
তারপর দুই ভাই
আকাশ থেকে সাই সাই শব্দে চারদিক কাঁপিয়ে নেমে এলো মাটির মানুষের দিকে, যেন তারা
চপার থেকে গুলি চালানো পুলিশ, সাউন্ড গ্রেনেডের ফলা, বিতাড়িত শয়তানের লোভ,
১৬ জুলাইয়ের পর রণক্ষেত্র বানালো তারা,
মহানগর রক্তের নদী হলো,
লাশের পাহাড় দেখলাম আমরা অসহায় মানুষ,
কিন্তু গর্জে উঠলো কিশোর-যুবক-নিরস্ত্র জনতা,
সাহস আর প্রতিবাদ মিলিত সংরাগে, নেতা নয় তারা, কেবল জনতা,
বিজয় আনলো অসম্ভব পাহাড় থেকে পেরে—
কোটা দিয়ে এক হেচকা টানে পতিত হলো ইতিহাস!
যেন তারা আজ নতুন প্রমিথিউস,
স্বাধীনতা,বর্গ, বয়ান—বন্দোবস্ত
ছিনিয়ে আনলো তারা
মিথের আকাশ থেকে রক্তাক্ত পৃথিবী।
আমরা গড়ে নিলাম নতুন স্বাধীনতা, নতুন মিথ।
০১/০৬/২৫
পার্সিফোন
…………
পার্সিফোন পৃথিবীতে এলে
ফাসিস্ট তার নিকেল করা দাঁত বের করে
হেসে ওঠে আর রাত সুবাশ ছড়ায়,
যেন সে নিজেই আলোর পায়রা,
কালো দুনিয়া জুড়ে অথৈ উৎসব
ওড়ে মিথ্যার বাতাশা, ভেঁপুর ভৈরবী—-
তাদের আজ্ঞাবহ মিডিয়া জাদুকর
বালুর সৌধ গড়ে তোলে,
দিবালোকে জ্বালে
খলবলে রাজনীতি , কদাকার জ্বালামুখ!
মিডিয়া সুন্দরীর কালো কুকড়া চুলে শতমুখী সাপ
পাপের পৃথিবী জুড়ে নাতিশীতোষ্ণ অপাপবিদ্ধ ঋষি
সুন্দরীদের ভীড়ের জটলায় খেলায় মজেছে আজ!
কৃষি সভ্যতার এই রমরমা যুগে
সুযোগের লাঠিখেলা , তপ্তরক্তের খুন আর গুমের গোমর দেখে দেখে ত্যক্ত মানুষ যুবক-যুবতীরা,
জানবাজ মিছিলে নামে!
তা দেখে ক্ষত্রিয় সেনারা হতবাক! mom
এমন কখনো দেখেনি তারা,
দেখেনি সুদূর অতীতে কখনো
গুলি খেয়ে ফিরে আসে মিছিলে ময়দানে।
গুলিতে ঝাজরা বুক, তবু আবু সাঈদ পেছন ফেরে না! মুগ্ধ, ওয়াসিম আর অগণন কিশোর জনতা
জানবাজ তারা বাঁচাতে চায়নি নিজের প্রাণ,
অক্ষৌহিনী ছত্রখান হলো ফ্যাসিস্টের,
জনরোষের বানে ভেসে গেলো তারা
সুনামির তোড়ে, ছত্রখান!
মিডিয়ার অবাক চোখ, বন্ধ হয়নি তার গতি, সে শ্যুট করে
রেখে দেয় সব,
দুই হাজার মৃত-রানে জেতার পর তার বোধ ফেরে!
সে শ্বাস নেয়, তাহলে
নতুন জীবন এলো!
সুন্দরীর চোখ কপালে আলো জ্বালে যেন সে তৃতীয় নয়ন পেয়েছে সহসাই,
নৃত্যরত শিবের তাতা থৈথৈ —-আমি জেগে উঠি
হেমন্তের রোদেলা বিকেলে,
পলায়নপর ফ্যাসিস্টের উড়াল দেখে; গুটিসুটি পায়ে
মিডিয়া সুন্দরী তার খোলস পাল্টে নেয় যেন সে ঋতুমতি
যতিচিহ্নহীন যুবতী! অনেক রক্তের বানভাসির পর
উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চাপাতে
সে পরাবাস্তব সত্য থেকে বাস্তবে ফেরে!
মায়াকান্নার জাল বিছাতে বিছাতে মিডিয়া
জাদুর বাক্সের হোলি খেলে!
হায়! পৃথিবী দেখো মানুষের শস্যময় জীবন-অতীত
আর তার কীর্তির মহিমা!
০১ /০৬/ ২৫
স্লাইস
………
সময় স্লাইস করেছি সকালে
ওয়াসরুম ৭:১২, ব্রেকফাস্ট ৭:৫৫,
চা খেতে খেতে তোমার ওয়েকআপ ভাবতে পারি—
অবিন্যস্ত চুলের নিচে তোমার
হালকা আঁধার লেপ্টে আছে যেন গুপ্ত ধন
পোষা বেড়ালের মতো;
তোমার চিবুকের মসৃণ আভা
আরো গভীরে নেমেছে
তোমার সারা অঙ্গ জ্বালাবে বলে!
তোমার স্তনের শোভা আমি ভাগ করে রেখেছি রাতেই,
স্লাইস সময় তরতর করে নেমে যায়
নিচের নিখাদ সঙ্গমের তরঙ্গময় জ্যোৎস্নায়
পায়ে তোমার রূপালি নেলপলিশের বিভা
আগুনের মতো জ্বলছে তোমার ক্ষুধা!!
ড্রেসআপের পর বেরিয়ে পড়ে সকাল সময়।
সে এখন অখন্ড টেকনো কাল,
মহাকাশে অন্তর্জালের মেমোরি চমকাচ্ছে,
যেন আষাঢ়ে বোয়াল
জায়ান্ট ঠিকানা চেক করে নেয়
তার নখ আর দাঁতের ধার।
অফিসের দোর থেকেই শুরু হয়
বাড়ি ফেরার অভিযান।
আসলে অফিস বলে কিছু নেই,
ও ছিলো একটি নয়নাভিরাম কল্পনার ছবি,
আর কাজের মাথার ঝুটি
নাচাতে নাচাতে আমি টিট্টিভের পায়ে
বেরিয়ে পড়ি পরীর ড্রেসিং টেবিলের ওপর।
সময় ভাগ করা আমার—
কোনো সমস্যা নেই মেঘার্ত আকাশ আর
নক্ষত্রহীন সময় নিয়ে।
ডালপালাহীন রাত
তোমারই আঙিনায় ফিঙের মতো দোল খায়!
১০/২৪/২০২০
নিউ ইয়র্ক








