spot_imgspot_imgspot_imgspot_img
প্রচ্ছদকবিতাঅবাঞ্চিত বন্যা ২০২৪ ও অন্যান্য কবিতা

লিখেছেন : নূরুল হক, হাসান আলীম, স্বচ্ছ দে

অবাঞ্চিত বন্যা ২০২৪ ও অন্যান্য কবিতা


……………
অবাঞ্চিত বন্যা ২০২৪
নূরুল হক
……………

চারদিকে একি খেলা হলো শুরু ডুবে যায় নীড়
উজানের আকস্মিক জলে ভেসে যায় জনপদ
জল আর জল, জলে বাস যেনো হাঙ্গর কুমির
বেদখল গ্রামগুলো খেয়ে নেয় জলজ শ্বাপদ।

আমাদের গ্রাম শুধু নয়, শত শত বাড়ি ঘর
জলের আক্রোশে অতি বেসামাল মানুষ গবাদি
যতটুকু চোখ যায় শুধু জল, দক্ষিণা সাগর
এসব ইতিহাসের নেই কোন অন্ত কিংবা আদি।

হিংসার বেসাতি চলে অবিরাম ভাটিতে উজানে
তবু শান্তি বিষধর সাপ আজ মানুষের বন্ধু
তবু শান্তি ত্রাণ ভর্তি নৌকো আসে প্রতিবেশী টানে

আমরা কখনো করি নাই ভেদাভেদ, হে ধর্মেন্দু ।

………..
উজানের বাঁধ : উজানের কুমির
হাসান আলীম।
………..

আমরা ভাটির যোদ্ধা, ভাটি বাংলার লড়াকু মানুষ,
আমাদের উজানে কে দেয় বাঁধ, কে করে নির্মাণ মরণ ফাঁদ?
আমরা সকলে তা জানি,
তারা আমাদের কোন কথা শুনেনি এবং শুনবেওনা,
তা হলে কি করবে হে যোদ্ধা বাঙালি, হে অমিত তেজের তারুণ্য?

তোমরা তো অসম্ভবের সম্ভব,
রাক্ষস খোক্কস খেদানো সাহসী সৈনিক —
আমাদের উত্তরে, পশ্চিমে, পূর্বে ওরা দিয়েছে অনেক মৃত্যু ফাঁদ,
এসো ভাটি বাংলার সাহসী সৈনিক আমরাও প্লাবন জলোচ্ছ্বাস আঁটকে দেই
ওদের বাঁধের বিপরীতে, আরও ভাটিতে।

এসো কুমির তাড়িয়ে দেই,
রাসেলস ভাইপার শিকার করে
এসো সম্মিলিত শক্তি, এসো বৈষম্যবিরোধী
ছাত্র জনতার রয়েল বেঙ্গল টাইগার।
এসো তাড়িয়ে দেই লক্ষ্মণ সেনের বরকন্দাজ,
এসো বখতিয়ার খলজির সতেরো সওয়ারী
এসো মজনু শাহ, তিতুমীর,
হাবিলদার রজব আলী,
এসো আগুন মুখো অসীম সাহসী দুই হাত প্রসারিত বুক চেতানো বীরশ্রেষ্ঠ আবু সাঈদ
এসো লক্ষ কোটি ফিনিক্স পাখি!

এসো বঙ্গবাসী–বঙ্গভাষী সাতবোনের বিপ্লবী সন্তানেরা,
এসো হাতে হাত ধরে নির্মাণ করি সীসার প্রাচীর
ভাটি বাংলার রক্ষা বাঁধ,
অখণ্ড মৃত্তিকা–ভূমি প্রিয় জন্মভূমি।

…………….
জীবনযাপন
স্বচ্ছ দে
…………….

এই যে বৃষ্টি হচ্ছে,আমি ভিজছি।
হেঁটে হেঁটে যাচ্ছি সুদূর রাস্তায়।
রাস্তার পাশে পুরাতন বইয়ের দোকান।
ত্রিশ পঁয়ত্রিশ টাকার বই কিনলাম দুটো।
একটি উপন্যাস ও একটি কবিতার বই।
হাঁটছি বই গুলো নিয়ে,ভিজে যাচ্ছে বইগুলোও।

দেখা হচ্ছে পুরাতন নতুন বন্ধুদের সাথে।
হাত মিলাচ্ছে মিলাচ্ছি।
কিন্তু তাদের সাথে থাকছি না।
দূরে দূরে একা একা সরে যাচ্ছি।
হাঁটতে হাঁটতে মাথায় কবিতার ঝড় আসছে।
বাসায় গিয়ে লিখবো।

বৃষ্টিতে ঘর ডুবে গেলো– কৃত্রিম বন্যা।
ওপার বাঙলা ইলিশ পায়নি
তাই বলে বাঁধ খুলেছে।
কেউ ঘুমাতে পারছে না,গরু ছাগল মুরগি
কুকুর বিড়াল ইঁদুর মরছে।
কত মানুষ মরছে–কবর দেওয়ার জায়গা নেই।
এইগুলো নিয়ে ভাবছি না।
ভাবার অনেকেই আছে– এই বলে আবার পিছু সরে এলাম।

নিজে নিজে কথা বলি।
কবিতা আবৃত্তি করে নিজেই শুনি।
নিজেই হাসি,একা একা রান্না করি।
রাতভরে চোখে জল আসে।
কেন আসে জানি না–
ঘুমিয়ে পড়ি,আবার উঠি–
আবার বৃষ্টিতে ভিজি।বই কিনি।
হাত মিলাই,দূরে সরে আসি।
চলছে চক্রের মতো।

এ জীবনকে তুমি কি নাম দিবে?
একাকীত্ব নিয়ে বেঁচে থাকা– নাকি
দূরে দূরে মেরুদন্ড ভেঙে বেঁচে থাকা।

২২ আগষ্ট ২০২৪
ময়মনসিংহ।

আরও পড়তে পারেন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

spot_imgspot_imgspot_imgspot_img

জনপ্রিয়

সাম্প্রতিক মন্তব্য সমূহ

Adv. Shahanara on যুদ্ধশিল্প
নয়ন আহমেদ on যুদ্ধশিল্প
কাজী জহিরুল ইসলাম on কবিতার জন্য নির্বাসন